বুধবার-২১শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি-২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল্লামা পালনপুরী (রহ.): কাছ থেকে দেখা কিছু স্মৃতি ও অনুভূতি

যুবাইর হানীফ

 

শরীর স্বাস্থ্য ও সুঠাম দেহের অধিকারী, প্রসস্ত ললাটে, ডিমাকৃতির গোলাকার চেহারা, লালচে দাড়ি ও লাল কেশে সুশোভিত, লম্বা অবকাঠামো, সরু নাক আর হরিনী চোখ বিশিষ্ট কালজয়ী কিংবদন্তি এক মহান পুরুষ৷ যবানে স্পষ্টতা, সততা ও বাকপটুতা, চাহনিতে মায়াবী এক আকর্ষণ, দৃষ্টিতে তীক্ষ্ণতা ও বিচক্ষনতা, চলনে-বলনে নম্রতা ও ভদ্রতা এমন বহু গুনে গুনান্বিত এক বীর পুরুষ৷

যার কদমে কদমে রয়েছে সুন্নতের অনুস্মরণ, আকাবির আসলাফের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা-ভালোবাসা, আযমতে সাহাবার ক্ষেত্রে যিনি পুরো সচেতন, দেওবন্দীয়াতের চলমান স্তম্ভ ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআ’তের তরজুমান, ফিকহে হানাফীর ভাষ্যকার৷ ফিকরে নানুতাভির বিশ্লেষক, ফাহমে ওয়ালিউল্লাহির মূর্তিমান ভাষ্যকার, শিরক-বিদআতের কট্টর সমালোচক, মুফাসসিরে কুরআন, তরজুমানে আকাবিরে দেওবন্দ এমন অসংখ্য গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিত্ব আর কেউ নন৷ তিনি হলেন আমাদের উস্তাযে মুহতারম, দারুল উলুম দেওবন্দের সদরুল মুদাররিসীন ও শায়খুল হাদীস মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.)।

জীবনের দীর্ঘ ৫২ বছর পার করেছেন দারুল উলুম দেওবন্দের চৌহদ্দিতে৷ ৪ বছর পড়াশোনা ও ৪৮ বছর খেদমত করেছেন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এ প্রতিষ্ঠানে৷ প্রিয় পাঠক! চলুন, ঘুরে আসি দারুল উলুম দেওবন্দের এ মহীরুহ মনীষীর জীবন চরিত্রতে। তাঁর সাথে পরিচিত হই, কিছু স্মৃতি ও কিছু অনুভূতি আদান-প্রদান করি৷

যেভাবে চেনা শুরু করি

আজ থেকে প্রায় একযুগ পূর্বে আমি তখন মিযানের ছাত্র৷ সে বছরই সর্বপ্রথম হযরতুল উস্তাদ সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.)-এর নাম জানতে পারি৷ তাও তাঁর রচিত কিতাব আসানে সরফ কিতাবের মাধ্যমে৷ কিতাবটি উস্তাদের টেবিলে দেখে হাতে নিলাম৷ দেখি তার উপর হুযুরের নাম ও দেওবন্দ মাদরাসার নাম লেখা আছে৷ এটুকুই জানতাম, ব্যস৷ তখনও বিশদভাবে কিছু জানতাম না৷ পরের বছর ২০১০ সাল আমার নাহবেমীরের বছর৷ উক্ত বছর মালিবাগ মাদরাসার ৩০ সালা দস্তারবন্দী জলসা অনুষ্ঠিত হয়৷ মাহফিলের মাসখানেক পূর্বে কয়েকটা বিশাল আকারের পোস্টার মাদরে ইলমী আল-জামিয়া আল-মাদানিয়া সিলোনিয়া ফেনী (মাদরাসা)-র গেইটে লাগানো দেখতে পাই৷ পোস্টারে দেশ-বিদেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামের নামের লম্বা তালিকা ছিল৷ সে তালিকায় আজকের মধ্যমণি হযরতুল উস্তাদ সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.)-এর নাম সর্বাগ্রে ছিল৷ পোস্টারে মেহমানদের নাম দেখে উপরের জামাতের কিছু সাথী হযরতুল উস্তাদের কথা আলোচনা করছেন৷ আমি ছোট মানুষ৷ শোনাই একমাত্র অবলম্বন ছিল তখন৷ সেই শোনার মাধ্যমেই জীবনের সর্বপ্রথম স্বল্পবিশদ আকারে পরিচয় লাভ করি৷ জানতে পারি তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের স্বনামধন্য শায়খুল হাদীস৷ সফল উস্তাদ৷ অনেক কিতাবের লেখক৷ আরও অনেক কিছু৷

এরপর হাফতুমে তায়সীরুল মানতিকের তাসহীল আসান মানতিক, শাশুমে কাফিয়ার শরাহ আল-ওয়াফিয়াহাদিয়া শরহে কাফিয়া, ছাহারুমে সিরাজীর শরাহ তিরাযী ও বাংলাদেশে দাওরার বছর বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ তুহফাতুল-কারী ও তিরমিযীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ তুহফাতুল আলমায়ীর মাধ্যমে হুযুরকে আরও গভীরভাবে চেনার সুযোগ হয়৷ হযরতুল উস্তাদের কিতাব থেকে যেকেউ সহজে উপকৃত হতে পারে৷ সহজ-সরলভাবে প্রতিটি মাসআলা বিশদাকারে উপস্থাপন করেন৷ সে ছোট থেকে হুযুরের কিতাব পড়ে পড়ে দূর থেকে তাঁর আশিকে খালিস হয়ে যাই৷ তখন থেকেই পালনপুরী শব্দটা শুনলেই হৃদয়ের ভেতর থেকে একটা শ্রদ্ধা বেরিয়ে আসত৷

তা ছাড়া আমাদের হাস্তুম, পনজুম, সিউম ও উলার বছর হযরতুল উস্তাদ মুফতি আহমদুল্লাহ (হাফি.) ও মুফতি নূরুল্লাহ (হাফি.) (দাগনভূইয়াঁ হুযুর) উস্তাদ্বয়ের মুখে হুযুরের অগণিত আলোচনা শোনার মধ্যমে আরও বিশদ আকারে চেনার সুযোগ হয়৷ হুযুরের রুচি ও স্বভাবের বিষয়ে জানতে পারি৷ আল-হামদু লিল্লাহ৷ তখন থেকে শুধু ভাবতাম কীভাবে হুযুরকে দেখব, কবে দেখব? আমার নসিবে দারুল উলুম দেওবন্দে হুযুরের ছাত্রত্ব গ্রহণের সুযোগ হবে তো! ইত্যাদি বিষয়ে খুব খু–ব ভাবতাম৷ আর দোয়া করতাম৷ মিশকাতের বছর দৃঢ় সংকল্প করি যে, যেকোনো মুল্যে আমাকে দেওবন্দ যেতে হবে৷

অবশেষে জীবনের সে কাঙ্ক্ষিত আশা পূরণের স্বপ্ন দেখি৷ মাদরে ইলমী আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ায় দাওরা শেষ করে ১০ রমজান ১৪৩৮ হিজরী- ৬ জুন ২০১৭ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে এগারটার দিকে দারুল উলুম দেওবন্দের এরিয়ায় পৌঁছাই৷

اللهم لك الحمد كما أنت أهله ووليه وكما ينبغي لجلال وجهك وعظيم سلطانك. اللهم لك الحمد حمدًا لا ينفد أوله ولا ينقطع أخره. اللهم لك الحمد فأنت أهل أن تحمد وتعبد وتشكر.

পূর্ব থেকে দেওবন্দ গিয়ে যেসব মহীরুহ মনীষীদের সরাসরি দেখার তীব্র আগ্রহ ছিল তাদের অন্যতম ছিলেন হযরতুল উস্তাদ সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.)৷

মাদরাসায় পৌঁছামাত্রই হুযুরের খবর নিলাম৷ খবর নিয়ে জানতে পারলাম ইদানীং প্রতি বছর রমজানে লন্ডনে অবস্থান করেন৷ এরপর থেকে দেখার আগ্রহটা দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে৷ বলা যায় এক প্রকার প্রবণতা বেড়েই চলছে৷ মনের ভেতর শুধু কল্পনা-জল্পনা কবে আসবেন হুযুর৷ কবে যিয়ারত হবে৷ কেমন হবে হুযুরের অবয়ব৷ কেমন কণ্ঠস্বর হবে৷ কেমন লম্বা হবেন৷ কেমন সুন্দর হবেন ইত্যাদি মনের ক্যানভাসে আঁকতে থাকি৷

উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে হুযুরকে সরাসরি দেখা কিংবা তাঁর কোনো ছবি বা ভিডিও দেখারও সুযোগ হয়নি৷ নেটের জগত তখন কী জিনিস জানতামই না৷ তখন একটা সময় গিয়েছে মোবাইল, নেট ইত্যাদি না বুঝাই ভালো ছাত্রের পরিচয় ছিল৷ আর এখন…!

হযরতুল উস্তাদকে নিয়ে কল্পনার জগতে বাস করতে করতে অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটল৷

দেওবন্দে ভর্তি পরীক্ষা, ভর্তি সবকিছু স্বাভাবিকভাবে ঠিকঠাকমতো সম্পন্ন হয়৷ এবার শুধু অপেক্ষায় দরস শুরু হওয়ার৷ যিলকাদ মাসের প্রথম সপ্তাহে (সম্ভবত ২/৩ তারিখে) দরস হবে এ মর্মে তালিমাত থেকে এলান আসে৷ সাথে ১ যিলকদ মাগরিবের পর মাসজিদে রাশিদে ইফতিতাহী মজলিসের (নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে মাদরাসার সকল ছাত্রদের একত্রিত করে যে মজলিস হয়) এলান আসে৷ হযরতুল উস্তাদ ইফতিতাহী মজলিসের দুয়েকদিন পূর্বে দেশে আসেন৷ তিনি মাদরাসার অদূরে নিজ বাসায় থাকতেন৷ বাসার পাশে অবস্থিত মসজিদে নামায পড়তেন৷ তখন দারুল উলুম দেওবন্দে হুযুরের কোনো কক্ষ ছিল না৷ তাই দেখা করার সুযোগ নেই৷ ইফতিতাহের অপেক্ষা৷ সেখানেই দেখার সুযোগ হবে৷

নির্ধারিত তারিখে দুপুর বেলায় ছাত্রদের পক্ষ থেকেও ইফতিতাহের ইলান আসল৷ তাতে বলা হল, আজ মাগরিবের পর মসজিদে রাশিদে দারুল উলুমের ছাত্র-উস্তাদের ইফতিতাহী মজলিস হবে৷ তাতে প্রধান মেহমান হিসেবে থাকবেন শায়খুল হাদীস ও সদরুল মুদাররিসীন দারুল উলুম দেওবন্দ হযরত মুফতি সাঈদ পালনপুরী (রহ.)।

এলানটা দেখে আমি পুরো উদগ্রীব হয়ে আছি৷ কখন মাগরিব হবে৷ কখন হযরতুল উস্তাদকে দেখব৷ মাগরিবের পর ইফতিতাহী মজলিস আরম্ভ হল৷ দেওবন্দের সকল উস্তাদ উপস্থিত হলেন৷ কিন্তু পালনপুরী (রহ.)-কে এর পূর্বে যেহেতু সরাসরি, ছবিতে কখনও দেখিনি, তাই উপস্থিত উস্তাদদের মাঝে খোঁজাখুঁজি শুরু করেছি কিন্তু আমার হৃদয়ে অঙ্কিত ও কল্পিত পালনপুরী (রহ.)-কে কারো সাথেই মিলাতে পারছি না৷ এদিকে মজলিস শুরু হয়ে গেল৷ মনে মনে প্রশ্ন জাগল৷ প্রধান অতিথি ব্যতীত মজলিস শুরু হয়ে গেল! পালনপুরী (রহ.) তাহলে আসবেন না নাকি? পাশে বসা দেওবন্দের এক পুরাতন সাথীকে জিজ্ঞাসা করলাম, পালনপুরী সাহেব হুযুর কি আসেননি? সে ইশারা দিয়ে বলল, ওই যে পাগড়ি পরা লাল দাড়িবিশিষ্ট, চেয়ারে উপবিষ্ট ব্যক্তিটিকে দেখছেন, তিনিই পালনপুরী সাহেব৷

এ সর্বপ্রথম দেখলাম৷ ভরা লালচে গোঁফ বিশিষ্ট মুখমণ্ডল৷ মাথায় সাদা পাগড়ি৷ গায়ে নিসফে সাক সাদা গোল জামা ও পায়জামা৷ দেখে মনে হল ৪৫ বছরের কোনো পুরুষ! কিন্তু তখনও হুযুরের বয়স ৮০ ছুঁইছুঁই৷

জন্ম

আনুমানিক তাঁর জন্মসন ১৩৬০হিজরী, ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ। তিনি কালিড়া নামক স্থান, জেলা, বানাস কাঁঠায় (উত্তর গুজরাট) জন্মগ্রহণ করেন। এ জেলারই কেন্দ্রীয় শহর পালনপুর, যা ভারত স্বাধীনের পূর্বে মুসলিম নবাবদের স্টেট ছিল। সেখানে একটি আরবি মাদরাসা সুল্লামুল উলুম নামে প্রতিষ্ঠিত আছে, যাতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠদান হয়।

পিতা-মাতা তাঁর নাম শুধু আহমদ রেখেছিলেন। কেননা, তার একজন বড় মা-শরিক ভাই ছিলেন আহমদ নামে। তারই স্মরণে সম্মানিত মাতা তার নাম রাখেন আহমদ। সাইদ আহমদ নামটি তিনি নিজেই রেখেছিলেন, যখন সাহারানপুর মাজাহিরুল উলুম মাদরাসায় ভর্তি হন। সে সময় থেকে এ নামেই তিনি বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধি লাভ করেন। বংশের বয়স্ক মরব্বিরা তাকে আহমদ ভাই নামে ডাকতেন। যদিও এমন বৃদ্ধ দুচারজনই বাকি আছেন।

তার সম্মানিত পিতার নাম, ইউসুফ। দাদার নাম: আলি। যাকে সম্মানস্বরূপ আলীজি বলা হত।

শিক্ষাজীবন

৫ বছর বয়সে সম্মানিত পিতা ও মক্তবের মধ্য দিয়ে শিক্ষাজীবনের যাত্রা আরম্ভ করেন৷ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি নিজ মামা মাওলানা আবদুর রহমান (রহ.)-এর সাথে ছাপি গমণ করেন এবং দারুল উলুম ছাপিতে মামাসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের কাছ থেকে ফারসির প্রাথমিক কিতাবাদি ছয় মাস পর্যন্ত অধ্যায়ণ করেন। ছয়মাস পর মামা দারুল উলুম ছাপি ছেড়ে নিজ বাড়ি ফিরে আসলে তিনিও তার সাথে জোনি সিন্ধনিতে চলে আসেন এবং ছমাস পর্যন্ত তার কাছে ফার্সির কিতাবাদির পাঠ গ্রহণ করেন। এরপর মুসলিহে উম্মাহ হযরত মাওলানা মুহাম্মদ নজির মিয়া পালনপুরী কুদ্দিসা সিররুহুর মাদরাসায় (যা পালনপুর শহরেই অবস্থিত) ভর্তি হন এবং চার বছর পর্যন্ত আরবির প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক কিতাবগুলোর শিক্ষা গ্রহণ করেন। শরহে জামি পর্যন্ত এখানে শিক্ষা লাভ করেন৷

মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরে

পালনপুরে শরহে জামি পর্যন্ত শিক্ষা লাভের পর ১৩৭৭ হিজরী সনে সাহারানপুর (ইউপি) সফর করেন এবং সেখানে ভর্তি হয়ে তিন বছর পর্যন্ত ইমামুন নাহু ওয়াল মানতিক, হযরত মাওলানা সিদ্দিক আহমদ জমোভী (রহ.)-এর কাছে নাহু, মানতিক ও ফালসাফার অধিকাংশ কিতাব পড়েন। হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইয়ামিন সাহারানপুরী, হযরত মাওলানা মুফতি ইয়াহয়া সাহারানপুরী, হযরত মাওলানা আবদুল আজিজ রায়পুরী এবং হযরত মাওলানা ওয়াকার আলী বিজনুরী (রহ.)-এর কাছেও কিতাবসমূহ পড়েন।

দারুল উলুম দেওবন্দে

১৩৮০ হিজরী সনে দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। প্রথম বছর হযরত মাওলানা নাসির আহমদ খান বুলন্দশহরী (রহ.)-এর কাছে তাফসীরে জালালাইন (আল-ফওযুল কবীরের সাথে), হযরত মাওলানা সাইয়েদ আখতার হুসাইন দেওবন্দী (রহ.)-এর কাছে হিদায়া প্রথম দুই খণ্ড এবং হযরত মাওলানা বশির আহমদ খান বুলন্দশহরী (রহ.)-এর কাছে তাসরীহ বসতে বাব, শরহে চোগমোনী, রিসালায়ে ফাতহিয়ারিসালায়ে শামসিয়া ইত্যাদি ইলমে হাইয়াতের কিতাবসমূহ পড়েন। পরের বছর মিশকাত শরীফ, হিদায়া আখিরাইনতাফসীরে বায়যাওয়ী ইত্যাদি কিতাবাদি অধ্যয়ণ করেন৷

১৩৮২ হিজরী সনে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। এ বছরটি দারুল উলুম দেওবন্দের ঐতিহাসিক বছরগুলোর একটি ছিল৷ শতবার্ষিকীর বছর৷

উল্লেখ্য যে, দেওবন্দের শতবর্ষ উপলক্ষে খতীবুল ইসলাম কারী তাইয়িব (রহ.)-এর তত্ত্বাবধানে যে সুবিশাল শতবর্ষ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় তা এই বছর হয়নি, বরং ৮ জুমাদাল উলা ১৪০০ হিজরী – ২৬ মার্চ ১৯৮০ ইংরেজিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ সে দস্তারবন্দী মাহফিলে দারুল উলুমের ফাযেল লাখ লাখ আলেম-ওলামা একত্রিত হয়েছিল৷ শুধু উপমহাদেশের নয়, বহির্বিশ্বের অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্বও তাশরীফ এনেছিলেন৷ মাহফিলের যে স্টেইজ ছিল তা এত বড় ছিল যে, তিন হাজার মানুষ একসাথে সংকুলন হত৷

অনেকের ভুল ধারণা যে তা ১৩৮২ হিজরীতে হয়েছে৷ তারা কারণ হিসেবে মনে করেন যে শতবছর পূর্ণ হয় ১৩৮২ হিজরীতে তাহলে এই বছরই হওয়ার কথা কিন্তু বাস্তবতা এমন নয়৷ (ইজলাসের তাফসীল জানতে শায়খ তকী উসমানীর সফরনামার দারুল উলুম দেওবন্দের শতবর্ষ বিবরণ দেখা যেতে পারে)

দেওবন্দে তাঁর শিক্ষকবৃন্দ 

তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে যেসমস্ত আসাতিযাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তারা হলেন হযরত মাওলানা সাইয়েদ আখতার হুসাইন দেওবন্দী, হযরত মাওলানা বশির আহমদ খান বুলন্দশহরী, হযরত মাওলানা সাঈদ হাসান দেওবন্দী, হযরত মাওলানা আবদুল জলিল কিরানভী, হযরত মাওলানা আসলামুল হক আজমী, হাকিমুল ইসলাম হযরত মাওলানা কারী মুহাম্মদ তায়্যিব দেওবন্দী, হযরত মাওলানা ফখরুল হাসান মুরাদাবাদী, হযরত মাওলানা মুহাম্মদ জাহুর দেওবন্দী, ফখরুল মুহাদ্দিসীন মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমদ মুরাদাবাদী, ইমামুল মাকুল ওয়াল মানকুল আল্লামা মুহাম্মদ ইবরাহিম বালয়াভী, মুফতিয়ে আজম হযরত মাওলানা মুফতি সাইয়েদ মাহদী হাসান শাহজাহানপুরী, শায়খ মাহমুদ আবদুল ওয়াহহাব মাহমুদ মিসরী ও হযরত মাওলানা নসির আহমদ খান বুলন্দশহরী প্রমুখ (রহ.)।

শিক্ষাজীবনের সফলতা

তিনি বাল্যকাল থেকেই ছিলেন প্রখর মেধাবী ও সমঝদার। কিতাব অধ্যয়ন ও পরিশ্রমে অভ্যস্ত ছিলেন। পাশাপাশি দারুল উলুমের আসাতিযায়ে কেরামের শিক্ষা-দীক্ষা ও তাঁদের অন্তরদৃষ্টি তাঁর যোগ্যতাকে বাইশ বছর বয়সে উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছে দেয়। দারুল উলুম দেওবন্দের মতো বিশ্ববিদ্যায়লে বার্ষিক পরীক্ষায় তিনি প্রথমস্থানে সফলতা অর্জন করেন। অথচ সেই বছর পাকাপোক্ত যোগ্যতার অধিকারী অনেক ফারেগীন শুধু প্রথমস্থান অধিকারের জন্যই দাওরায়ে হাদীসে ভর্তি হন। যেহেতু বছরটি ছিল শতবর্ষের বছর৷

দারুল ইফতায় ভর্তি ও তাঁর প্রথম ছাত্র

হযরতুল উস্তাদ দাওরায়ে হাদীস শেষ করে শাওয়াল ১৩৮২ হিজরী সনে তাকমিলে ইফতায় আবেদন করলে তা মঞ্জুর র হয়। হযরত মুফতি সাইয়েদ মাহদী হাসান শাহজাহানপুরী (রহ.)-এর তত্ত্বাবধানে ফতওয়ার কিতাবাদি মুতালাআ ও ফতওয়ার অনুশীলনের সূচনা করেন। হযরত নিজ ভাই-বোনদের মাঝে সবচেয়ে বড় ছিলেন। এজন্য দাওরায়ে হাদীস থেকে ফারেগ হওয়ার পর নিজের ভাইদের শিক্ষা-দীক্ষার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেন৷ ইফতার বছর হুযুর হিফয সম্পন্ন করেন৷

যেভাবে হুযুর হিফয সম্পন্ন করেন

এ বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের বর্তমান মুহতামিম হযরতুল উস্তাদ আবুল কাসিম নুমানী (হাফি.) বলেন, তাঁর ইফতার বছর দেওবন্দের সদর গেইটের উত্তরে, মাসজিদে কদীমের পূর্ব পাশে, মেহমান খানার গেইটের বিপরিতে আজকাল শুবায়ে সাফাঈর (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বিভাগ) দফতর যে রুমে সে রুমেই মুফতি সাঈদ আহমদ (রহ.)-এর সিট ছিল৷ উক্ত রুমে তিনি একা থাকতেন৷ এটা তার ইফতার বছর ছিল৷ যা সম্ভবত ১৩৮৩-১৩৮৪ হিজরী ছিল৷ খুব একাগ্রতার সাথে নির্জনে তিনি মুতালাআয় ব্যস্ত থাকতেন৷

রাত যখন ১২টা বাজত তখন রুমের সামনে যে সিঁড়ি আছে তার সামনের চত্বরে বসে হিফয করতেন৷ তিনি প্রতিদিন রাতে এভাবে পড়ে পড়ে পূর্ণ কুরআনে পাক হিফয করেছেন৷ হাফেজ হয়েছেন ইফতার বছরই৷ সারা দিন দরসি ব্যস্ততা থাকত তাই রাতেই হিফযের সময় নির্ধারণ করেন৷ শায়খ মাহমুদ আবদুল ওয়াহহাব মাহমুদ মিসরী (রহ.)-এর কাছে কুরআন কারীমের হিফযের সবক শোনাতেন। তিনি অত্যন্ত ভালো হাফেজ এবং মিসরী কারী ছিলেন। তিনি জামিয়াতুল আযহার কায়রোর পক্ষ থেকে দারুল উলুম দেওবন্দে প্রেরিত ছিলেন। হযরত (রহ.) মিসরী কারী সাহেবের খেদমত করতেন সে সুবাদে হিফযের সবকও শোনাতেন৷ সেই সময় ছোট ভাই তাঁর সাথে ছিল৷ সে ছোট ভাই হলেন আজকের মুফতি আমিন পালনপুরী (হাফি.) যিনি বর্তমানে দারুল উলুমের উস্তাদুল হাদীস ও ইফতা বিভাগের উস্তাদ, বর্তমানে দারুল উলুম দেওবন্দের ফতওয়া সংকলনের জিম্মাদার তিনি৷ মূলত আমিন পালনপুরী (রহ.)-কে ১৩৮২ হিজরী সনে নিজের সাথে দেওবন্দে নিয়ে আসেন এবং তার হিফযে কুআনের সম্পূর্ণ জিম্মাদারি নিজেই গ্রহণ করেন।

১৩৮২-১৩৮৩ হিজরী সনে তিনি একদিকে ফতওয়ার কিতাব মুতালাআ করতেন, অন্যদিকে ছোটভাইকে কুরআন হিফয করাতেন পাশাপাশি নিজেও কুরআন হিফয করতেন। হিফয ও মুতালাআর কাজে তিনি এতটাই ব্যস্ত ও মগ্ন থাকতেন যে, এ বছর রমজানুল মোবারকেও বাড়ি যাননি। রমজানের পর নিজের আরেক ভাই মৌলভী আবদুল মজিদকেও পড়ার জন্যে দেওবন্দে নিয়ে আসেন।

ইফতা কর্তৃপক্ষ তাঁর যোগ্যতা দেখে দারুল ইফতায় আরও এক বছর পড়ার সুযোগ করে দেয়। ১৪৮৩-৮৪ হিজরীতে আমিন সাহেবের হিফযের সাথে ছোট ভাই মৌলভী আবদুল মজিদকে ফার্সি কিতাবসমূহ পড়াতেন৷ অন্যদিকে ফতওয়ার অনুশীলন করতেন। তিনি ফতওয়া প্রদানে এতটা যোগ্যতা অর্জন করেন যে, ছয় মাস পর দারুল উলুম দেওবন্দের পরিচালনা কমিটি তাঁকে মুঈনে মুফতি (সহকারী মুফতি)-এর মর্যাদায় দারুল উলুম দেওবন্দে নিয়োগ দিয়ে দেয়।

কর্মজীবনের

যিলকদ ১৩৮৪ হিজরী থেকে শাবান ১৩৯৩ হিজরী পর্যন্ত নয় বছর দারুল উলুম আশরাফিয়া রান্দীরে খেদমত করেন৷ এ দীর্ঘ সময়ে আবু দাউদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, তাহাওয়ী শরীফ, আশ-শামায়িল, মুয়াত্তাইন, নাসায়ী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ (আল-ফওযুল কবীরসহ), তরজমায়ে কুরআন, হিদায়া আখিরাইন, শরহুল আল-আকাইদুন নাসাফিয়াহুসামী ইত্যাদি কিতাবসমূহের দরস প্রদান করেন। সাথে সাথে লেখালেখির ময়দানেও সরব হয়ে ওঠেন। এই সময়ে তিনি দাড়হি আওর আম্বিয়া কি সুন্নাতেঁ, হুরমাতে মুসাহারাতআলআওনুল কবীর রচনা করেন। সে সময় তিনি কাসিমুল উলুমি ওয়াল খায়রাত মাওলানা মুহাম্মদ কাসেম নানুতভী (রহ.)-এর কিতাবসমূহ ও তার উলুম-মাআরিফের ব্যাখ্যা ও সহজকরণের কাজের সূচনা করেন এবং একটি প্রবন্ধ ইফাদাতে নানুতভী শিরোনামে কিস্তি আকারে আল-ফুরকান লাখনো-এ প্রকাশিত হয়েছিল। যা অত্যন্ত মূল্যবান নিবন্ধ। (কিন্তু এর কাজ আর সামনে অগ্রসর হয়নি, তিনি অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।)

দারুল উলুম দেওবন্দে

পালনপুরী (রহ.)-এর উস্তাদ হযরত মাওলানা মুহাম্মদ হাশেম বুখারী (রহ.) যিনি প্রথমে জামিয়া হুসাইনিয়া রান্দীরে পড়াতেন। অবশেষে দারুল উলুম দেওবন্দে তার নিয়োগ হয়। তিনি ১৩৯৩ হিজরীতে চিঠির মাধ্যমে তাঁকে অবহিত করলেন যে, দারুল উলুম দেওবন্দে একজন শিক্ষকের জায়গা খালি আছে, অতএব আপনি শিক্ষকতার আবেদন পাঠিয়ে দিন। তিনি হযরত জনাব মাওলানা হাকিম মুহাম্মদ সাদ রশিদ (রহ.)-এর সাথে পরামর্শক্রমে আবেদন করেন। এদিকে এ বছরই শাবানে মজলিসে শুরার বৈঠকে আরবি বিভাগের জন্য একজন শিক্ষক নিয়োগের আলোচনা আসলে হযরত মাওলানা মুহাম্মদ মনজুর নুমানী (রহ.) তাঁর নামই প্রস্তাব করেন। ওই মজলিসেই তাঁর নিয়োগ সম্পন্ন হয়। হযরতকে শাবানেই এ বিষয়ে অবগত করা হয়। রমজানের পর তিনি দারুল দেওবন্দে তাশরীফ আনেন। সে সময় থেকে মত্যু অবধি দারুল উলুম দেওবন্দে পাঠদানের খেদমত আনজাম দিয়েছেন।

দেওবন্দে পাঠদান

হযরতুল উস্তাদ দারুল উলুম দেওবন্দে যেসব কিতাব পড়িয়েছেন তার বিস্তারিত বিবরণ সন আকারে নিম্নে দেয়া হল:

১৩৯৩-৯৪: মুসাল্লামুস সুবুত, হিদায়া (প্রথম), সুল্লামুল উলুম, হাদিয়ায়ে সাইদিয়া, জালালাইন (প্রথম) আল-ফওযুল কবীর, মোল্লা হাসান।

১৩৯৪-৯৫ হি.: মুসাল্লামুস সুবুত, শরহুল আকাইদ, মোল্লা হাসান, জালালাইন (দ্বিতীয়) আল-ফওযুল কবীর।

১৩৯৫-৯৬ হি.: আল-মুসামারাহ, দিওয়ানে মুতানাব্বী, মায়বুযী, তাফসীরে বায়যাওয়ী ২১-২৫ তম পারা।

১৩৯৬-৯৭ হি.: দিওয়ানে মুতানাব্বী, তাফসীরে বায়যাওয়ী (২৬-৩০পারা), মোল্লা হাসান ও মিশকাতুল মাসাবীহ (সাময়িক)।

১৩৯৭-৯৮ হি.: মিশকাতুল মাসাবীহ (দ্বিতীয়), নুখবাতুল ফিকার, হুসামী (কিয়াস) মোল্লা হাসান, সাবয়ে মুআল্লাকাত, হিদায়া, আল-মুয়াত্তা লিল ইমামে মালেক।

১৩৯৮-৯৯ হি.: দিওয়ানে হামাসা, সাবয়ে মুআল্লাকাত, তাফসীরে বায়যাওয়ী (সুরা বাকারা), মিশকাতুল মাসাবীহ (দ্বিতীয়) নুখবাতুল ফিকার, তাফসীরে মাযহারী (১৬-২০পারা), মুয়াত্তা মালেক, আস-সিরাজী ও সুনানে নাসায়ী।

১৪০০ হিজরী: মিশকাতুল মাসাবীহ (দ্বিতীয়) নুখবাতুল ফিকার, তাফসীরে বায়যাওয়ী (২১-২৫ পারা), দিওয়ানে হামাসা, সাবয়ে মুআল্লাকা, মুয়াত্তা মালেক, আস-সিরাজী।

১৪০১ হি.: মিশকাতুল মাসাবীহ (দ্বিতীয়) নুখবাতুল ফিকার, তাফসীরে বায়যাওয়ী (২৬-৩০ পারা), তাফসীরে মাদারিকুত তানযীল (৬-১০ পারা), আস-সিরাজী, মুয়াত্তা মুহাম্মদ।

১৪০২ হি.: সুনানে তিরমিযী (প্রথশ) তাফসীরে বায়যাওয়ী (সূরা বাকারা), সুনানে আবু দাউদ, সহীহ বুখারী (দ্বিতীয়), মুয়াত্তা মালেক ও মুয়াত্তা মুহাম্মদ।

১৪০৩ হি.: সুনানে তিরমিযী (প্রথম) তাফসীরে বায়যাওয়ী (সূরা বাকারা), সহীহ মুসলিম (প্রথম) মুকাদ্দিমাতু ইবনিস সালাহ, সুনানে ইবনে মাজাহ।

১৪০৪ হি.: সুনানে তিরমিযী (১ম খণ্ড) তাফসীরে বায়যাওয়ী (সূরা বাকারা) হিদায়া (চতুর্থ) ও শরহু মাআনিল আসার।

১৪০৫ হি.: সুনানে তিরমিযী (প্রথম), তাফসীরে বায়যাওয়ী (সূরা বাকারা) হিদায়া (তৃতীয়), সহীহ বুখারী (প্রথম) ও শরহু মাআনিল আসার।

১৪০৬ হি.: সুনানে তিরমিযী (প্রথম), তাফসীরুল কুরআন, হিদায়া (চতুর্থ) ও শরহু মাআনিল আসার।

১৪০৭ হি.: তালখীসুল ইতকান, সুনানে তিরমিযী (প্রথম), তাফসীরুল কুরআন, হিদায়া (চতুর্থ) ও শরহু মাআনিল আসার।

১৪০৮-১৪০১০ হি.: সুনানে তিরমিযী (প্রথম), তাফসীরুল কুরআন, হিদায়া (চতুর্থ), শরহু মাআনিল আসার, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা।

১৪১১-১৪২৭ হি.: সুনানে তিরমিযী (প্রথম), তাহাওয়ী শরীফ ও হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা।

১৪২৭ হি. থেকে মৃত্যু অবধি সহীহ বুখারী (প্রথম)-এর দরস প্রদান করেন।

অন্যান্য খেদমতসূমহ

উল্লেখিত পাঠদানের খেদমতসহ তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে যেসব খেদমত আনজাম দিয়েছেন এর বিস্তারিত আলোচনা এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্ভব নয়। শুধু কিছু মোটা দাগের খেদমতের কথা আলোচনা করা হল:

  1. ১৪০২ হিজরীতে হযরত মাওলানা মুফতি নেজাম উদ্দীন (রহ.) দীর্ঘ দিনের ছুটি নেন। হযরত মাওলানা মুফতি মাহমুদ গঙ্গুহী (রহ.)ও সাহারানপুরে চলে যান। আরও কিছু মুফতিয়ানে কেরাম দারুল উলুম থেকে পৃথক হয়ে যান। এজন্য কর্তৃপক্ষ হযরতুল উস্তাদে ইফতার সম্পর্কিত কিতাবসমূহ পাঠদানের সাথে সাথে ইফতা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক এবং ফতওয়া প্রদানের নির্দেশ দেয়। হযরত তা সুচারুভাবে আনজাম দেন।
  2. যখন দারুল উলুম দেওবন্দে মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নুবুওয়ত প্রতিষ্ঠা লাভ করে তখন তিনি এর নাজিম নিযুক্ত হন। ১৪১৯ হিজরীতে তিনি এই পদ থেকে মজলিসে শুরা বরাবর অব্যাহতির আবেদন করেন। কিন্তু মজলিসে শুরা তা গ্রহণ করেনি।
  3. উল্লেখিত খেদমতের পাশাপাশি হযরত মুহতামিম (কারী মুহাম্মদ তায়্যিব রহ.) দামাত বারকাতুহুম তাঁকে লিখিত অথবা মৌখিক বক্তব্য প্রদানের জন্যে বলতেন। তিনি তা সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে আনজাম দিতেন, যার ইতিহাস দীর্ঘ৷
  4. মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ১৪২৮ হিজরী থেকে শায়খুল হাদীস ও সদরুল মুদারিসীন ছিলেন তিনি৷ চলবে

লেখক: শিক্ষক, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ