জামেয়া ওয়েবসাইট

রবিবার-৪ঠা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি-৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীর নারীই থাকা উচিত

নারীর নারীই থাকা উচিত

নারীর নারীই থাকা উচিত

তানভীর সিরাজ

 

নারী সমাজ একটি মর্যাদাবান সমাজ। নারী জাতি একটি আদর্শবান সুরক্ষিত জাতি। নারী সমাজ আমাদের মা-বোন এবং স্ত্রী ও মেয়েদের গোষ্ঠী।

সেই সমাজের স্থান, অবস্থান আর কর্মস্থান কী হবে? কোথায় হবে তাদের সম্মানযোগ্য স্থান, অবস্থান আর আবাসনসহ নির্ধারণ করেই বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক নারীকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। অনেকদিন আগের কথা। কোথায় যেন লিখেছিলাম।

নীরবে সহ্য করে যাওয়া মানুষ বলতে আমরা বুঝি যাদের, তারাই আমাদের মা-বোন, আমাদের নারীসমাজ।

এখন কথা হল, তারা কী সহ্য করে দিনাতিপাত করছেন হারদম?

আবার বিভিন্ন গোষ্ঠীর অভিনব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথায় কেমন যেন তারা দিশেহারা প্রায়!

কমিউনিস্টরা বলে, তারা সমাধিকারে নির্যাতিতা। পুঁজিবাদীরা বলে, সঞ্চয়ে তারা টেবু! মুক্তমনারা বলে, সমকামীতায় বাধা কেন?

একে অপরকে ভালোবাসতে পারে! ছেলে ছেলে হোক, মেয়ে মেয়ে হোক, তাতে কী আসে-যায়!

পশ্চিমা সভ্যতায় অসভ্য ভাইয়েরা বলে, বয়-ফ্রেন্ডের সাথে ওপেনিং মেলামেশাতে বাধা কেন তাদের।

বেগম রোকেয়াও বলেন, ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক।’

এসব কমিউনিস্ট, পুঁজিবাদ, মুক্তমনা আর পশ্চিমা সভ্যতায় লালিত ভাইয়েরাসহ বেগম রোকেয়ার মতো যতো অযৌক্তিক আবেদন আর দাবিদাওয়া উত্তাপক আছেন, তাদের উত্তর যেভাবে দিয়েছেন তিনি, পৃথিবীতে জীবৎকাল আহারের ব্যবস্থা করেই প্রত্যেক প্রাণীকে দুনিয়ার বুকে ছেড়ে দিয়েছেন যিনি।

আমরা প্রতিটি বিষয়ে নীতিমালার কথা চিন্তা করি আর বাস্তবায়ন করার চেষ্টাও করি, তবে অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছি। অস্থানে নিয়মকানুন প্রয়োগ করে সীমালঙ্ঘন করেছি। না-মালুম কাজে হাত দেয়া যে বোকামি। প্রগতিশীলদের ভ্রান্ত চিন্তাকে ‘না-বলে’ অবহিত করেছেন দুনিয়া-আখেরাতের বিধাতা। তিনি বলেছেন, মেয়েসমাজের আরামদায়ক অবস্থান হল আপন ঘর। বলেন তিনি,

وَقَرْنَ فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْاُوْلٰى وَاَقِمْنَ الصَّلٰوةَ وَاٰتِيْنَ الزَّكٰوةَ وَاَطِعْنَ اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗؕ ۰۰۳۳

‘নিজ গৃহে অবস্থান কর (পরপুরুষকে) সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বেড়িও না, যেমন প্রাচীন জাহেলী যুগে প্রদর্শন করা হত।’ (সূরা আল-আহযাব: ৩৩)

যদি আমরা বিধাতার এই বিধানকে কথাকথিত অর্ধাঙ্গীদের (স্ত্রীদের) জন্য নিরাপত্তার নিশানা মনে না করি, অন্যদিকে কমিউনিস্ট, পুঁজিবাদ আর মুক্তমনাদের বস্তাপঁচা গবেষণাকে গ্রহণ করি তাহলে নব্য জাহিলিয়্যাত এসেছে তো এসেছে, আরও একধাপ এগিয়ে আসবে। মা-মণিদের যারা সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির দিকে ডাকছে নানা অভিনব কায়দায়, পাশ্চাত্য সভ্যতার ন্যায় আর নারীসমাজকে যারা সমাধিকারের নামে ধ্বংসাত্মক পথেরদাবী দাওয়ায় নামিয়ে রাস্তার কুকুর বানিয়েই ছাড়তে চায় আর করতে চায় তাদের নিয়ে যাচ্ছেতাই, তারাই ইসলামি সংস্কৃতির আসল শত্রু নকল পথিক হয়ে। হতে পারে তারা ঘরের ইঁদুর, বা ভিনদেশি গোলামির শিখলে আবদ্ধ থেকে এজেন্ট হয়ে কাজ করছে। সোজাভাবে বলছি, ইহুদি আর খ্রিস্টানদের পা-চাটা গোলাম তারা।

যুগের চাহিদার প্রতি সময়মত সচেতন ছিলেন সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন গবেষকগণ। অথচ তারাই বলছেন, মায়ের জাতের নিরাপদ আবাস মানে আপন নিবাস।

এমন দুয়েকটি মতামত নীচে পেশ করা হল।

ক. আবু তাহের মিসবাহ বলেন, ‘এই দিকনির্দেশনা (নারী নীতিমালার শুরুতে বেগম রোকেয়ার একটা কথা উদ্ধৃত করা হয়েছে, ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক।’ তার এ আহ্বানে নারীর অধিকার অর্জনের পন্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে …) ভুল, যদি তা শাব্দিক অর্থে গ্রহণ করা হয়। শুধু ভুল নয়, আত্মঘাতি ভুল। কুরআন-সুন্নাহের দৃষ্টিতে এটা নারীর ওপর যুলুম। পাশ্চাত্যে নারীর ওপর এ যুলুমটা হচ্ছে। ইসলাম সকল অবস্থায় এ কঠিন দায়িত্ব, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা, নিজের ও সন্তানের ভরণপোষণ, এসব রুক্ষ-কঠিন দায়িত্ব থেকে নারীকে অব্যাহতি দিয়েছে। কারো অধিকার নেই নারীর ওপর এটা চাপানোর। যদি কেউ চাপাতে চায় তাহলে রাষ্ট্রশক্তিকে নারীর পক্ষে দাঁড়াতে হবে এবং সবার আগে দাঁড়াতে হবে আলেমসমাজকে।’ (মাসিক আল-কাউসার, এপ্রিল ২০১১)

খ. ঊনিশ শতকের খ্যাতনামা মনীষী স্যামুয়েল স্মাইলস তার অমূল্য গ্রন্থ The character-এ নারী স্বাধীনতা আন্দোলন প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘প্রাচীন রোমকদের দৃষ্টিতে শালীন মেয়েদের সবচেয়ে প্রশংসনীয় উঁচুস্তরের কাজ হচ্ছে ঘরকন্না চালানো এবং বাইরের টানা-হেঁচড়া থেকে মুক্ত থাকা। (নারী উন্নয়ন কোন পথে, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, পৃ. ৭৯)

গ. অধ্যাপক জিওম ফ্রেয়ারো ১৮৯৫ খ্রিস্টব্দে রিভিউজে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে অত্যন্ত আবেগেপূর্ণ ভাষায় আধুনিক নারীর শোচনীয় অবস্থা চিত্র এঁকেছেন। তিনি বলেন, ‘যেসব নারী সমাজ জীবনের মূল ভিত্তি দাম্পত্য জীবনের প্রতি তীব্র ঘৃণা রাখছে, স্রষ্টা যে জন্য তাদের সৃষ্টি করেছেন আর যে প্রয়োজনে তাদের এ ধরণের দৈহিক ও মানবিক রূপদান করেছেন, তারা তাকেই বেমালুম ভুলে গেছে। তাদের মেজাযে আল্লাহর দেওয়া সেই বৈশিষ্ট আর অবশিষ্ট নেই, যা সেই বয়সের নারীদের ভেতরে স্বভাবত পাওয়া যায়। তারা আজ এমন এক স্তরে এসে পৌঁছেছে, যাদের নপুংসক ছাড়া আর কিছুই বলা চলে না। বস্তুত তাদের পুরুষ বলবার যেরূপ জো নেই, তেমনি নারী বলবারও সাধ্য থাকে না। ওপরন্ত, তারা উভয় প্রকৃতির সংমিশ্রণে তৃতীয় এক আজব জীব হয়ে পড়েছে। (প্রাগুক্ত, পৃ. ৭৮)

শিক্ষাঙ্গনে যৌন নিপীড়ন

এই ব্যাপারে রেফারেন্স টানার প্রয়োজন মনে করছি না। কারণ আজকাল স্কুল কলেজ, ইউনিভারসিটিসহ ধর্মের নামে পরিচালিত ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানেও ছাত্রী আর শিক্ষিকারা ষাঁড়দের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, কে জানে না তা? জানে। বুঝে। বলে না, নীরবে সয়ে যায় লজ্জার মাথা খেয়ে। অথচ আল্লাহর আইনের অনুসারী হওয়াতেই নারীপুরুষের নিরাপত্তা আর শান্তির।

আল্লাহ বলেন, ঘরে থাকতে, আর আমরা থাকি বাইরে! আর যখনই আমরা তাঁর বিধানের তোয়াক্কা না করে মুক্তমনাদের বস্তাপঁচা যুক্তির আশ্রয় নিই, তখনই হই যতসব লাঞ্চনা আর বঞ্চনার শিকার এবং নরপিশাচরাও এই সুযোগে লোপে নেয়, যা নেয়ার। সুতরাং যে পাঠ্যক্রমে ইসলামি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হবে না, সেই শিক্ষা মানবপ্রসূত শিক্ষাই বটে, হবে না কোনো গঠনমূলক শিক্ষাব্যবস্থা। আমি নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে বলছি না। বলছি শিক্ষার অবক্ষয় নিয়ে। প্রসূতির মহিলা ডাক্তার হলে ১০০% থেকে ৯৯% মানসিক সান্ত্বনা পায় রোগীটি। তা আমরা খুব ভালো বুঝি। তাই শিক্ষায় মহিলার গুরুত্ব অপরিহার্য। তবে প্রতি ক্লাসে ইসলামি শিক্ষাকে ১০০ মার্কের পরীক্ষা নিশ্চিত না করার অভাবে তাদের সম্ভ্রমহানির আশংকা ৯০ ভাগ থেকেই যাচ্ছে। ইসলামি শিক্ষা এক জিনিস আর শিক্ষাঙ্গনে যৌন নিপীড়ন অন্যজিনিস।

আজ কতিপয় বিদ্যাপীঠ হয়ে পড়েছে যৌন নিপীড়নের আস্তানা। গাধা ঘোড়া যেখানে স্বাধীন, পরাধীন নয় তারা দীনী শিক্ষার! তবেই তো তারা হায়েনাদের শিকার হত না।

পাশ্চাত্যের স্কুল-কলেজগুলোর ওপর পরিচালিত এক জরিপ থেকে জানা গেলো, শতকরা ২৩ থেকে ৪৪.৮ ভাগ ছাত্রী তাদের ছেলে বন্ধুদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। (অ্যাসেসমেন্ট অফ ফ্যামিলি ভায়োলেন্স, দ্বিতীয় সংস্করণ, পৃ. ২১২, প্রাগুক্ত, পৃ. ১২৪)

অনেককাল আগের রিপোর্টে যদি এ অবস্থা হয় তাহলে বর্তমান সময়ে এর সংখ্যা কত হবে? পাঠকসমাজ ভালো জানবেন, কারণ আপনারা গণমাধ্যমে নজর দেন বলে। দেখেন যে, দুই বছরের ছাত্রী আর মেয়ে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধারাও লম্পটদের হাত থেকে রেহাই পেয়ে নিজেকে উদ্ধার করতে পারছে না।

সমাজবাদী দার্শনিক মনীষী প্রুধোঁ স্বীয় ইবতিকারুন নিযামে লিখেন,

‘প্রকৃতির বিধানই নারীকে মানবের সাংস্কৃতিক জীবনের উন্মুক্ত ময়দানে অংশগ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। সে শিক্ষার দুর্গম পথ অতিক্রম করতে চায়, কিন্তু শিক্ষা তাকে সহায়তা করতে নারাজ। তাই তাদের বর্তমান পদক্ষেপের ভয়াবহ পরিণতির আশংকায় আমরা দিন গুণছি। (নারী উন্নয়ন কোন পথে, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, পৃ. ৭৮)

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমি যৌবন বলছি প্রবন্ধটি প্রকাশ পেয়েছে মাসিক আত-তাওহীদের জানুয়ারি’১৯ সংখ্যায়।

নারীদের বই নির্বাচন

কোমলমনা মানুষের কথা যদি বলি তাহলে মেয়েসমাজের কথাই প্রথমকাতারে বলতে হবে, তবে তারা বুদ্ধিমত্তার দিক দিয়ে মাঝামাঝি, কিংবা শেষ কাতারে। যাদেরকে খুব সহজে পাঠানো যায় বা ভুল পথের পথিক বানানো যায়। মন তাদের খুব দয়াপরবশ, যেজন্যে তারা কারণে-অকারণে বিপদের সম্মুখীন হয়। সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে ক্ষণস্থায়ী স্বাদের তরে নিজেদের বিলিয়ে দেয়। কখনো তাদেরকে নির্বাসিত অশ্লীল লেখিকা, হুমায়ুন আযাদ আর শামসুর রহমানসহ যত বামপন্থি লেখক আছেন তাদের বই পড়ে ধর্মহীনতার প্রতি ঝোঁকে পড়বার জন্য আজকের নারীসমাজ নিয়ে চেষ্টা চালানো হয়।

লাইব্রেরিতে নারীদের জন্য কেমন বই থাকা উচিৎ, এমন প্রশ্নের উত্তরে লর্ড বায়রণ অভিমত পেশ করে বলেন, ‘মেয়েদের লাইব্রেরীতে ধর্মগ্রন্থ ও পাকপ্রণালী ছাড়া আর কোনো বই থাকা অনুচিত।’ (প্রাগুক্ত, পৃ. ৭৯)

ইসলামে নারীর দায়িত্ব

নারীর দায়িত্বে জগতের কোনো ব্যক্তির সেবা করা ওয়াজিব নয়। না তার যিম্মায় কোনো দায়িত্ব আছে, না তার কাঁধে কোনো জিম্মাদারির বোঝা চাপানো হয়েছে। স্রেফ একটি বিষয়, তোমরা নিজ ঘরে স্থির থাকো, স্বামীর আনুগত্য করো আর সন্তানদের মানুষরূপে গড়ে তোলো। এই তোমাদের করণীয়। এর মাধ্যমে তোমরা জাতিগঠনে ভূমিকা রাখো এবং জাতির ফাউন্ডারে পরিণত হও। আল্লাহর রাসুল (সা.) তোমাদেরকে মর্যাদার এই আসন দান করেছেন। ইসলাম তোমাদেরকে সম্মানের এই আসনে বসিয়েছে। আসন গ্রহণ করো, যার ইচ্ছা হয় লাঞ্ছনার পথ বেছে নাও। (ইসলাম আমাদের জীবন, আল্লামা তাকী উসমানী, ৫/১৫৭)

বন্ধ হোক সেইসব রংতামাশা

নারী শিক্ষার শিক্ষা আমরা নবীর যুগ থেকেই শিক্ষা পেয়েছি। অনেক নারী সাহাবিরাও উঁচুমাপের জ্ঞানী ছিলেন। তাই তাকে অস্বীকার করা যাবে না। তবে তাঁরা যেমন নারী ছিলেন তেমনি নারী থেকেই গভীর জ্ঞানের অধিকারিণী হয়েছিলেন। আজকাল শিক্ষার নামে যে বেহায়াপনা প্রচলিত হলো তার মাশুল দিতে হচ্ছে বিয়ের আগে-পরে। নারী অঙ্গন একটি পবিত্র অঙ্গন। এই অঙ্গনকে অপবিত্র করছে (OSCARS) অস্কার, মিস ওয়ার্ল্ড আর লাক্স-চ্যানেল আই সুন্দরী প্রতিযোগিতার নামে নারী প্রদর্শন যতদিন সমাজে চলতা থাকবে ততদিন নারী নির্যাতন বন্ধ হবে না।

আবুল কাসেম আদিল সুন্দর বলেছেন, ‘মিস ওয়ার্ল্ড, লাক্স-চ্যানেল আই সুন্দরী প্রতিযোগিতাসহ নারীকে চামড়া দিয়ে মূল্যায়নের এসব অবমাননাকর রীতি সভ্য সমাজে চলতে পারে না। এসব প্রতিযোগিতা স্রেফ চামড়া-ব্যবসা ছাড়া কিছু নয়। চতুষ্পদ পশুরা নিজেদের চামড়া নিজেরা বিক্রি করে না। পশুর চেয়ে অধমেরা নিজেদের চামড়া নিজেরা বিক্রি করে।’

জি, তাই বলছিলাম, নারীর নারী থাকাই বাঞ্ছনীয়। আর না হয় যা হবার তাই হয়।

ফিরে এসো আপন নীড়ে

নারী, জানেন কি আপনি? কার আপনি? জন্মের আগে মায়ের কোলের সবুজ পাখি। জন্মের পর বাবার ঘরের রঙিন ফুল। বিয়ে, অতঃপর আপনি স্বামীর নীড়ের বাঁশী-বীণা এবং বংশপরম্পরায় নারী আপনি, সন্তানের মেহমান হয়ে থাকবেন আজীবন।

কেন আপনি বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যান!

জানেন কি আপনি আপনার দায়িত্ববোধ নিয়ে? আপনার দায়িত্ব শুধু শরীয়ত মুতাবেক স্বামীকে আরাম পৌঁছানো আর সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলা। বাদবাকি ঐচ্ছিক।

আজকের উন্মুক্তনারী হযরত মুসা (আ.)-এর উম্মতের মতো। বলেছিলো সেই উম্মত,

يٰمُوْسٰى لَنْ نَّصْبِرَ عَلٰى طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُخْرِجْ لَنَا مِمَّا تُنْۢبِتُ الْاَرْضُ مِنْۢ بَقْلِهَا وَقِثَّآىِٕهَا وَفُوْمِهَا وَعَدَسِهَا وَبَصَلِهَاؕ ۰۰۶۱

‘হে মুসা, আমরা একই ধরনের খাদ্য-দ্রব্যে কখনও ধৈর্য্যধারণ করব না। কাজেই তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট আমাদের পক্ষে প্রার্থনা কর, তিনি যেন আমাদের জন্যে এমন বস্তুসামগ্রী দান করেন যা জমিতে উৎপন্ন হয়, তরকারী, কাকড়ি, গম, মসুরি, পেঁয়াজ প্রভৃতি।’ (সূরা আল-বাকারা: ৬১)

তারা যেমন আসমানি মেহমানদারি জান্নাতের খাবারকে অপছন্দ করেছে হামখেয়ালি হয়ে, তেমনি আজ আমাদের সমাজের মেয়েরাও বাবার, স্বামীর, আর ছেলের মেহমানদারিকে নাকচ করে কিছু কমিউনিস্ট আর স্যেকুলারের ফাঁদে পড়ে অবাস্তব ভাবনায় মেতে উঠছে! অথচ তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক খাবার!

আল্লাহ তাআলা সবদিক থেকে নারীসমাজকে নারী হয়েই থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, যেন তাদের বেয়াড়া, বেহায়া হতে না হয়, কিন্তু আজ কী হচ্ছে এসব! পরাধীনতায় স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেন!!! আল্লাহ নারীসমাজকে আপন নীড়ে ফিরিয়ে সুন্দর, সুখময় দাম্পত্য জীবন যাপন করার তওফিক দান করেন। আমীন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ