থাইল্যান্ডের সৈকতে-নগরে
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
বিগত ২৭ সেপ্টেম্বের’১৭ দশ দিনের জন্য সস্ত্রীক থাইল্যান্ড ভ্রমণ করি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শিল্পায়িত রাষ্ট্র থাইল্যান্ড। এ দেশটি যুদ্ধকালীন সময় ব্যতীত কখনও কোন ইউরোপীয় বা বিদেশী শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ১৭৮২ সাল থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত দেশটিতে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল। ১৯৩২ সালে বিদ্রোহীরা একটি অভ্যুত্থান ঘটায় এবং দেশে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত থাইল্যান্ড বহু সামরিক ও বেসামরিক সরকারের অধীনে শাসিত হয়েছে (উইকিপেডিয়া)। থাইল্যান্ডের আয়তন ৫,১৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার । চাল, শিল্প, পর্যটন, খনিজ পদার্থ, কৃষি, ব্যবসা, হোটেল-রে¯েঁÍারা ও যোগাযোগ খাতই থাইল্যান্ডের মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রধান চালিকা শক্তি। মাথাপিছু আয় ৫,৩৯০ মার্কিন ডলার। পুরো দেশ জুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ উর্বর ভূমি, পাহাড় ও সমভূমি। চাও ফ্রায়া দেশের প্রধান নদী। খুব সুন্দর দেশ, পরিবেশ বেশ মনোরম। আবহাওয়া বাংলাদেশের মত বিষুবীয় এবং মৌসুমি বায়ু দ্বারা প্রভাবিত। থাইদের ব্যবহার বেশ মার্জিত। রাস্তাঘাট বড়সড় হওয়ার পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। ব্যাংকক শহরে অফিস সময়ে কিছুটা যানজট থাকলেও অন্য সময়ে চলাফেরা বেশ আরামদায়ক। প্রচুর ফ্লাইওভার থাকায় চলাচলে কর্মঘন্টা নষ্ট হয় না।
Nothing to declare
থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে কাস্টমস এরিয়ার বিভিন্ন স্থানে একটি ঘোষণা চোখে পড়ল ঘড়ঃযরহম ঃড় ফবপষধৎব অর্থাৎ আগমন ও প্রস্থানকারী কোন যাত্রীকে নিজের কোন মালামালের জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে না। কেবল মাত্র আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক বহন করা যাবে না। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ব্যবহারও চমৎকার। বিমান বন্দরে যাত্রী হয়রানি নেই বললেই চলে।
থাইল্যান্ডে মুসলমানদের দিনকাল
থাইল্যান্ড মূলত বৌদ্ধদের দেশ। ৯০ শতাংশ জনগোষ্ঠী তেরাভাদা বুদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী। ইসলাম এ দেশে বিকাশমান ধর্ম। ৭ কোটি জন অধ্যুষিত থাইল্যান্ডে মুসলমানের সংখা প্রায় ৪০ লাখ। দক্ষিণাংশের Yala, Pattani, Satun I Narathiwatএ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। ওখানে বেসরকারি পর্যায়ে মাদরাসা শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। অধিকাংশ মুসলমান সুন্নি মতাদর্শে বিশ্বাসী। মুসলমানরা ইসলামী সংস্কৃতি ও তাহযিব-তামাদ্দুন পালনে অভ্যস্ত। গোটা থাইল্যান্ডে মসজিদের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৪টি। কেবল ব্যাংককে রয়েছে ১৭০টি মসজিদ। নামাজীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতও চলছে পুরোদমে। অবশ্য দক্ষিণাংশে কিছুটা অস্থিরতার রেশ আছে। থাইল্যান্ডে ধর্মচর্চা ও ধর্মপ্রচারে কোন বাধা নেই। রাজকীয়ভাবে ৫টি ধর্মকে সহযোগিতা করা হয়। এগুলো হল বৌদ্ধ, ইসলাম, খ্রিস্টান, হিন্দু ও শিখ।
১৩৫০-১৭৬৭ সময়কালে আরব, ইরান, মালয় ও ইন্দোনেশিয়া হতে মুসলমানগণ থাইল্যান্ডে আসতে থাকে। পরবর্তীতে পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশ থেকেও অনেক মুসলমান এখানে আসেন।
বেপর্দার দেশে পর্দানশীন মহিলা
গতকাল সন্ধ্যায় সস্ত্রীক থাইল্যান্ডের পাতায়া সমুদ্র তীর ধরে শীতল হাওয়া উপভোগ করছিলাম। হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর গেলাম। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য হাঁটাহাটি মহৌষধ। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষদের দৌঁড়তে দেখলাম। এ দেশে অধিকাংশ মেয়ে স্বল্পবসনা। যে যত শরীর দেখাতে পারে তার এক প্রচ্ছন্ন প্রতিযোগিতা। ফুটপাতে বেশ অস্থায়ী খাবারের দোকান আছে। এক দোকানে দেখি কালো বোরকায় আচ্ছাদিত ত্রয়োদশী এক মহিলা দোকানি। মাথায় সাদা হিজাব। অত্যন্ত চটপটে অথচ শালীন। ঘিয়েভেজে ফ্রেশ ডিম পরোটা বিক্রি করছেন। বেশ ভীড়। প্রায় আধা ঘন্টা অপেক্ষা করে ডিম পরোটা বানিয়ে নিলাম। ভাল লাগল। ধর্মীয় সংস্কৃতি পালনে কেবল ইচ্ছে শক্তিই যথেষ্ট, পরিবেশ যতই বৈরী হোক।
কক্সবাজার ও কুয়াকাটাকে থাইল্যান্ডের পাতায়ার মত বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলা সম্ভব। একটি সমন্বিত পরিকল্পনা নিলে কক্সবাজার ও কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক রিসোর্ট সেন্টার রূপে গড়ে তোলা যাবে। থাইল্যান্ড উপসাগরের তীরে অবস্থিত পাতায়া সৈকত মাত্র ৪ কিলোমিটার বিস্তৃত। ৬০ বছর পূর্বে ছিল এটি জেলে পল্লী। আর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ ১২০ কিলোমিটার। কক্সবাজার শহর থেকে ইনানি পর্যন্ত বালুকাময় তীর পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ১৮কিলোমিটার দৈর্ঘ। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত নির্বিঘেœ কুয়াকাটা থেকে অবলোকন করা যায়।
পাতায়া সৈকতে বালির উপরিভাগে পর্যটকদের নির্বিঘœ হাঁটার জন্য রয়েছে প্রশস্ত পাকা রাস্তা; দু’পাশে নারিকেল ও পাম বৃক্ষের সারি। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, প্রশান্ত প্রতিবেশ, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা, রকমারি হোটেল, খাবারের দোকান ও বাণিজ্য বিতান ভ্রমণ ও বিকিকিনির জন্য উপযুক্ত স্থান। ¯িপডবোটে নৌবিহার, রৌদ্রস্নান, সমুদ্রস্নান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বড় ছাতার তলে খাটিয়ায় বসে নাশতা ও জলযোগ করার মজাই আলাদা। পাতায়া রাজধানী ব্যাংকক থেকে ১০০ কি. মি. দূরে।
বিভিন্ন জাতি ধর্মের ৩কোটি ২৫লাখ লোক প্রতি বছর থাইল্যান্ডে বেড়াতে আসে। এর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ৬৫ লাখ। পর্যটন খাতে থাইল্যান্ডের বার্ষিক আয় ৩ ট্রিলিয়ন বাথ।
ব্যাংককের রাস্তায় পুলিশের আচরণ
‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ এ প্রবচনটি আশৈশব শুনে আসছি। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে পুলিশের বন্ধুসুলভ আচরণ প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হয়নি। বরং আমার মত অনেকের মনে ভেসে উঠে পুলিশ মানে অজানা আতংক, ভীতিপ্রদ বিভীষিকা, ঘুষ বাণিজ্য ও রিমান্ডের নামে পৈশাচিকতার তাণ্ডব। পুলিশ হেফাযতে মৃত্যুর ঘটনা অহরহ। এসব কারণে কত পুলিশের শাস্তি হয়েছে, চাকরি গেছে। রক্তের দামে কেনা একটি সার্বভৌম দেশের জনগণের সাথে পুলিশ শত্রুসুলভ আচরণ করবে কেন? তাইতো ‘বাঘে ছুঁলে এক ঘা আর পুলিশে ছুঁলে দশ ঘা’ অথবা ‘থানার পাশে কানাও হাঁটে না’ জাতীয় প্রবচন সাধারণ্যে ব্যাপকতা লাভ করে। পুলিশতো বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা নয়? তারা আমাদের ভাই, আমাদের সন্তান। এরা তো পাঞ্জাবী নয়, সাদা চামড়ার বিলেতি সেনাও নয়। তারপরও কেন মারমুখো? এর পেছনে অনেক কারণের মধ্যে আছে প্রথমত ঔপনিবেশিক মানসিকতা(Colonial Mentality), দ্বিতীয়ত পুলিশ কনস্টেবলের বেতনও অনুষঙ্গিক সুবিধে কম, তৃতীয়ত আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাব এবং চতুর্থত ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক পুলিশকে বিরোধী ও প্রতিপক্ষ দমনের উদ্দেশ্যে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার। ফলে পুলিশ বেপরোয়া। নিজেদেরকে আইনের উর্ধে মনে করে। অথচ ভুটান, সুইডেন, ফিনল্যন্ড, ব্রিটেন ও নরওয়ের মত দেশে ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ এ কথাটি অনেকাংশে সত্য। আমাদের কাছের দেশ ভুটানে কোন আসামীর সাথে পুলিশ খারাপ আচরণ করে না, পুলিশী হেফাযতে নির্যাতন করে না। অসদাচরণ যদি প্রমাণিত হয় তা হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশের পদোন্নতি, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি(Increment) ও বিদেশে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে(Peace Keeping Mission of UN) যাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের হাতে আটক হলেই মানুষ দোষী বা অপরাধী হয় না। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, পুলিশের ভাল ও কল্যাণকর দিকও আছে। তাঁরা জীবন বাজি রেখে আমাদের নিরাপত্তা দেন, দুর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনেন। আইন শৃঙ্খলা দেখভাল করেন। পুলিশের মধ্যে সৎ, নিষ্ঠাবান, ন্যায়পরায়ন, দেশপ্রেমিক, মানবিক চেতনাসম্পন্ন মানুষও আছেন। তবে তাদের সংখ্যা কত তা বলা বেশ মুশকিল। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী Tony Blair বলেন, Anywhere, anytime ordinary people are given the chance to choose, the choice is the same: freedom, not tyranny; democracy, not dictatorship; the rule of law, not the rule of the secret police| অক্টোবরের ১তারিখ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যংককের ব্যস্ততম শপিং সেন্টার ‘চাতুচাক’ থেকে শপিং সেরে সুকুমভিত ম্যানহাটন হোটেলে ফেরার জন্য মার্কেটের গেটে দাঁড়িয়েছি। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হওয়ায় যানজট প্রবল। ট্যাক্সি পাওয়া কঠিন ছিল। সংখ্যায় আমরা তিনজন। ছোট ছেলে তালহা মোবাইলে গ্রেব কার(Grab car) বুক করল। ড্রাইভার জানাল মার্কেটের সামনে প্রচণ্ড ভীড়, আপনারা পুলিশ পার্কের সামনে আসেন, আমি এখানে আছি। স্থানটি খুঁজে পেতে আমাদের বেগ পেতে হল। ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা নিলাম। তিনি রোড দেখিয়ে বললেন এখান থেকে সোজা কোয়ার্টার কি.মি. গেলে পুলিশ পার্ক। এক পর্যায়ে পুলিশ রাস্তায় সিগন্যাল দিয়ে একটি খালি মাইক্রো দাঁড় করালেন এবং ড্রাইভারকে বললেন উনারা বিদেশি, পুলিশ পার্ক চিনেন না, তোমার যাত্রাপথে তাঁদের নামিয়ে দেবে, ভাড়া নেবে না। পুলিশ গাড়ির দরজা খুলে আমাদের ভেতরে বসার ব্যবস্থা করে দিলেন। মুহূর্তেই আমরা ওই গাড়িতে করে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে গ্রেব কার পেলাম। পেছনে ফিরে দেখি পুলিশ সার্জেন্ট স্কুটার নিয়ে হাযির। দেখতে এলেন অচেনা ড্রাইভার আমাদের কাঙ্খিত স্থানে নামিয়ে দিল কিনা। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমরা বিদায় নিলাম। পুলিশের এ আচরণ কল্পনা করা যায়! এসব পুলিশ আসলে জনগণের বন্ধু।
আসলে আমাদের ভাল হতে হবে, মানবিক হতে হবে। বদলাতে হবে দৃষ্টিভঙ্গি, অভ্যাস পাল্টাতে হবে। অবৈধ অর্থ বিত্তের লোভ-লিপ্সা ত্যাগ করতে হবে। তাহলে সমাজ পাল্টে যাবে। পুলিশও ভাল হয়ে যাবে।
সমুদ্রের তলদেশে আল্লাহর কুদরতের বিস্ময়কর নিদর্শন
পৃথিবীর উপরিভাগে যা কিছু দৃশ্যমান তা আমাদের চোখে ও উপলব্ধিতে ধরা পড়ে কিন্তু মাটির অভ্যন্তরে বা সমুদ্রের অথৈ জলরাশির তলে কি আছে তার অনেকটা আমাদের জ্ঞান গবেষণার বাইরে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের প্রাণকেন্দ্রে Sea Life নামে বিশাল এক সংগ্রহশালা ও একুয়ারিয়াম রয়েছে যেখানে সমুদ্রের বিভিন্ন প্রজাতির জলজপ্রাণী ও তলদেশের নানা আকৃতির শৈবাল ও বর্ণিল বৃক্ষের সংগ্রহ রয়েছে। কিছু মাছ দেখা গেল যাদের মুখ কুকুর, ভাল্লুক ও ঘোড়ার মত। নিচের অংশটি মৎস্যাকৃতির। রীতিমত আশ্চর্য! এগুলো দেখলে আল্লাহ তায়ালার অপার মহিমা ও কুদরতের কথা মনে পড়ে। পবিত্র কুরআনের ভাষায় ‘মা খালাকতা হাযা বাতিলা (প্রভু তুমি নিরর্থক কিছু সৃষ্টি করনি)।’
৩দিকে পানি পরিবেষ্টিত কাঁচের শক্ত আবরণে আচ্ছাদিত বিশালায়তনের একুয়ারিয়ামের মাঝখানে হাঁটার সুপরিসর পথ আছে। একুয়ারিয়ামের উপরিভাগে রয়েছে স্বচ্ছ কাঁচ, যার উপর দিয়ে নির্বিঘেœ হাঁটা চলা যায়। হাঙ্গর, কোরাল, সরিসৃপ, শ্বেত কচ্ছপ, ঈল, পেঙ্গুইনসহ নানা সামুদ্রিক প্রাণী খোলামনে সন্তরণ করে কখনো কখনো কাঁচের সাথে মুখ লাগিয়ে খেলা করে। এ সব দৃশ্য মনেপ্রাণে শিহরণ জাগায়। অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে।
থাইল্যান্ডে ইসলামী ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
থাইল্যান্ড মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দেশ হলেও মুসলিম জনগোষ্ঠীর মাঝে সূদমুক্ত ইসলামী ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ক্রমান্বয়ে। ২০০২ সালের ২১ অক্টোবর ইসলামিক ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের যাত্রা শুরু। রাজধানী ব্যাংককের সুকুমভিত বাণিজ্যিক এলাকায় এর সদর দফতর অবস্থিত।
এ ব্যাংকের নেট আয় ৯.৫ বিলিয়ন বাথ আর এসেটের পরিমাণ ১০৯.৭ বিলিয়ন বাথ। ইসলামিক ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের ৪৮.৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক থাই অর্থ মন্ত্রণালয়।
শরীয়াহ আইনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়ে আসছে। গোটা থাইল্যান্ডে এর শাখা রয়েছে ১৩০টি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ ব্যাংকে লেনদেন করতে কোন বাধা নেই।
থাইল্যান্ড বিমানবন্দরে পর্যটকের অনুভূতি বিষয়ে জরিপ
ব্যাংককের সূবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছি ঢাকার ফ্লাইট ধরার জন্য। এ মুহূর্তে Tourism Authority of Thailandথেকে এক কর্মী এসে আমার সাথে পরিচিত হন। তিনি জরিপ কাজ পরিচালনা করছেন। আমাকে অনেক প্রশ্ন করেন এবং আমার অনুভূতি জানতে চান। কেন ছুটি ভোগ করতে থাইল্যান্ড এসেছি? থাইল্যান্ড দেশ হিসেবে কেমন? আবহাওয়া পরিস্থিতি? কী কী শপিং করেছি? মোট কত ডলার ব্যয় করেছি? বাজারের মূল্যমান? পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কেমন? কোথায় কোথায় গিয়েছি? কী কী দেখেছি? ধর্মীয় উপাসনালয় পরিদর্শন করেছি কিনা? এ বছর কোন কোন দেশ পরিভ্রমণ করেছি? এগুলো ছিল মূলত তাঁর প্রশ্ন। পর্যটকদের মতামত ও অনুভূতিগুলো সমন্বয় করে পর্যটন কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবেন। কীভাবে অধিকহারে পর্যটক আকর্ষণ করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করা যায় এটাই তাদের লক্ষ্য। বিদায়ের সময় আমাকে একটি ছোট্ট উপঢৌকন দিয়ে গেলেন।
লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ওমর গনি এম.ই.এস কলেজ, চট্টগ্রাম