আধুনিক ইসলামি রাষ্ট্রের ধারণা
মু. সগির আহমদ চৌধুরী
২.১. ইসলামি রাজনীতি
আধুনিক ইসলামি রাষ্ট্রের আদি উৎস হচ্ছে খিলাফত। যা নুবুওয়াতি ধারাপ্রস্রবণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। বর্তমানে ধর্মকে বিরাষ্ট্রীকরণ বা ধর্মের রাজনীতিক সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করা হচ্ছে। এটা অন্যান্য ধর্মসমূহের ক্ষেত্রে সঠিক হলেও হতে পারে, কিন্তু ইসলামের নিজস্ব নীতি-আদর্শ ও দর্শন অনুযায়ী ধর্মের এ-বিরাষ্ট্রীকরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ নুবুওয়াত ও সিয়াসত বা রাজনীতি দুটোর মধ্যে অঙ্গাঙ্গি সম্বন্ধ, পরস্পরে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত, দুটোর মাঝে ঘনিষ্ট সম্পর্ক। মহানবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পূর্ববর্তী সকল নবীবর্গ রাজনীতি করেছেন। খিলাফত তার ধারাপ্রস্রবণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। সেই খিলাফতই হচ্ছে আধুনিক ইসলামি রাষ্ট্রের আদি উৎস। হাদীস শরীফে পরিষ্কার এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: كَانَتْ بَنُوْ إِسْرَائِيْلَ تَسُوْسُهُمُ الْأَنْبِيَاءُ، كُلَّمَا هَلَكَ نَبِيٌّ خَلَفَهُ نَبِيٌّ، وَإِنَّهُ لَا نَبِيَّ بَعْدِيْ، وَسَيَكُوْنُ خُلَفَاءُ فَيَكْثُرُوْنَ قَالُوْا: فَمَا تَأْمُرُنَا؟ قَالَ: فُوْا بِبَيْعَةِ الْأَوَّلِ فَالْأَوَّلِ، أَعْطُوْهُمْ حَقَّهُمْ، فَإِنَّ اللهَ سَائِلُهُمْ عَمَّا اسْتَرْعَاهُمْ.
‘আবু হুরায়রা (রাযি.) থেকে বর্নিত, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘বনি ইসরাইলের নবীগণ তাঁদের উম্মতকে শাসন করতেন। যখন কোনো একজন নবী ইন্তিকাল করতেন, তখন অন্য একজন নবী তাঁর স্থলাভিসিক্ত হতেন। আর আমার পরে কোনো নবী হবেন না। তবে অনেক খলিফা হবেন।’ সাহাবাগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাদেরকে কি নির্দেশ করছেন? তিনি বললেন, ‘তোমরা একের পর এক করে তাদের বায়আতের হক আদায় করবে। তোমাদের ওপর তাদের যে হক রয়েছে তা তোমরা আদায় করবে। অবশ্য তাঁরা তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব বিষয়ে আল্লাহর কাছে জবাবদেহি করবেন।’’
এখানে ‘তাসূসুহুমুল আম্বিয়া, কুল্লামা হালাকা নাবিয়্যুন্ খালাফাহু নাবিয়্যুন’ (নবীগণ তাঁদের উম্মতকে শাসন করতেন। যখন কোনো একজন নবী ইন্তিকাল করতেন, তখন অন্য একজন নবী তাঁর স্থলাভিসিক্ত হতেন।) বয়ানটুকু গুরুত্বপূর্ণ। নবীগণ উম্মতকে শাসন করতেন, একাদিক্রমে প্রত্যেক নবীই তাঁদের উম্মতকে শাসন করেছেন। অর্থাৎ রাজনীতি, রাষ্ট্রপরিচালনা এবং দেশ-শাসন নুবুওয়াতি ধারাবাহিকতারই অংশ। নবীজির আগমনের মাধ্যমে নুবুওয়াতের ধারা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। তাঁর পর আর কোনো নবী আসবে না। তবে এই রাজনীতিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে তাঁর খলীফাদের মাধ্যমে। হাদীসে সে-বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে, বলা হয়েছে যে, ‘ওয়া ইন্নাহু লা নাবিয়্যা বা’দী, ওয়া সায়াকূনা খুলাফা ফায়াক্সুরূনা’ (আর আমার পরে কোনো নবী হবেন না। তবে অনেক খলীফা হবেন)। খলীফার নিকট আনুগত্যের বায়আত করা মানুষের কর্তব্য। উপর্যুক্ত হাদীসে সে-নির্দেশও স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। অতএব ইসলামে রাজনীতি নেই বা ইসলাম ও রাজনীতি পৃথক একথার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মহানবী (সা.)-এর ওফাতের পর নুবুওয়াতের ধারাবাহিকতায় খিলাফতে রাশিদা (৬৩২-৬৬১ খ্রি.) ৩০ বছর, খিলাফতে উমাইয়া (৬৬১Ñ৭৫০ খ্রি.) ৮৯ বছর, খিলাফতে আব্বাসিয়া (৭৫০Ñ১২৫৮ খ্রি.) ৫০৮ বছর ও খিলাফতে উসমানিয়া (১২৯৯Ñ১৯২৪ খ্রি.) ৬২৫ বছর মিলিয়ে সুদীর্ঘ ১ হাজার ৫২ বছর স্থায়ী ছিল। সাড়ে এক সহস্র বছরের সুদীর্ঘ খিলাফত-ইতিহাসের সর্বশেষ নিদর্শন ছিল তুরস্কের খিলাফতে উসমানী। ৩ মার্চ ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে নব্য তুর্কি জাতীয়তাবাদী নেতা মোস্তাফা কামাল পাশার নেতৃত্বে তুরস্কের ন্যাশন্যাল অ্যাসেম্বলির পঞ্চম বার্ষিক অধিবেশনে গৃহীত একই আইনের মাধ্যমে খিলাফতের বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরদিন প্রত্যুষের পূর্বেই একদল পুলিশ ও সামরিক কর্মচারী খলীফা দ্বিতীয় আবদুল মজীদের প্রাসাদে হানা দিয়ে তাঁকে সপরিবারে গাড়িতে পুরে এক থলে কাপড় ও পাথেয়স্বরূপ কয়েকটি টাকা খয়রাত দিয়ে সুইজারল্যান্ডের দিকে হাকিয়ে দেয়। এভাবে ৩ মার্চ ইসলামের ইতিহাসে এক কুখ্যাত ও ভয়াবহ দিন হয়ে রইল।
১৯২৪ সালে খিলাফত-ব্যবস্থার অবলুপ্তির পর মুসলিমঐক্য প্রকাশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বিষয়ে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়। মুসলিম ঐক্যের প্রতীক সর্ববৃহৎ এই প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের বিলোপের পর নির্বাসিত খলীফা সুলতান আবদুল মজীদ সুইজারল্যান্ডে এক সংবাদ-সম্মেলন আহ্বান করেন এবং খিলাফত অবলুপ্তি সংক্রান্ত তুরস্কের সংসদীয় অধ্যাদেশকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে খিলাফত-অবলুপ্তির কারণে মুসলিমবিশ্বের ঐক্য ও সংহতির ক্ষেত্রে যে অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে-বিষয়ে আলোচনার জন্য বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃত্বের প্রতি জোর আহ্বান জানান এবং খিলাফত পুনঃস্থাপনের জন্য একটি লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করেন। ফলে ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে মে মাসে কায়রোতে ইসলামি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ওলামা ও বিদ্বান ব্যক্তির উদ্যোগে খিলাফত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে খিলাফতকে ‘ইসলামের জন্য অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণা করা হয়।
সউদী বাদশাহ আবদুল আযীয ইবনে সউদের আমন্ত্রণে ১৯২৬ সালের জুন মাসে আরও একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র মক্কানগরীতে। এ-সম্মেলনে আলোচিত বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল একটি স্থায়ী সংগঠন স্থাপনের মাধ্যমে এ-উদ্যোগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদান। সম্মেলন ‘ইসলামি বিশ্বের কংগ্রেস’ নামে একটি সংগঠন স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যা প্রতি বছর পবিত্র মক্কায় এক সভায় মিলিত হবে। কায়রো ও মক্কা-সম্মেলনের পর নবতুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফা কামাল যিনি খিলাফত-ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করেন এ-ব্যবস্থা অবলুপ্তির ফলে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণে উত্থাপিত বিভিন্ন প্রস্তাবনার প্রতি অনুকূল মনোভাব ব্যক্ত করেন। ১৯২৭ সালের অক্টোবর মাসে নিজস্ব রাজনীতিক চিন্তাধারার সমর্থনে ছয় দিনব্যাপী আয়োজিত যে-বিস্তৃত বক্তৃতা প্রদান করেন সেখানে তিনি বলেন,
‘ভবিষ্যতে ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার মুসলিম সম্প্রদায়গুলো যখন স্বাধীনতা অর্জন করবে তখন তাদের দেশের প্রতিনিধিরা একটি সম্মেলনে মিলিত হয়ে একটি উচ্চ পর্ষদ গঠন করবে। … যে একটি ‘প্যান-ইসলামী’ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার গোড়াপত্তন হবে তাকে ‘খেলাফত’ নাম দেয়া যেতে পারে এবং যে ব্যক্তি উচ্চ পর্ষদের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হবেন তাকে ‘খলিফা’ উপাধি দেয়া যেতে পারে। … (তবে) সমগ্র বিশ্বের সমস্যা মোকাবেলা ও সমাধানের দায়িত্ব কোনো এক ব্যক্তি বা এক রাষ্ট্রের ওপর ছেড়ে দেয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক বা সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত হতে পারে না।’
২. আধুনিক ইসলামি রাষ্ট্র: সাবেক সুলতানতের আধুনিক সংস্করণ
হিজরী গণনানুসারে প্রায় ১৩ শতাব্দী ধরে খিলাফত-ব্যবস্থা অব্যাহত ছিল। এর সর্বশেষ নির্দশন খিলাফতে উসমানিয়ার আয়তন ছিল ৫ কোটি ২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। বিপুল আয়তনের এ-দীর্ঘ শাসন-ব্যবস্থা কতটা ইসলামি ছিল তা একটি প্রশ্ন। ইসলামি ছিল কি ছিল না তা নির্ভর করে দুটো বিষয়ের ওপর; এর ১. বিচার-ব্যবস্থা ও ২. আইনি ভিত্তির ওপর। পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ খিলাফতের অবলুপ্তির পূর্বপর্যন্ত এর বিচার-ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণ শরীয়া-সম্মত এবং এর আইনি ভিত্তি ছিল পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ। খিলাফত-ব্যবস্থার অবলুপ্তির অব্যবহিত পর সাবেক উসমানিয়া সাম্রাজ্যসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভাষা, বর্ণ ও অঞ্চলভিত্তিক প্রায় ৫৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট আধুনিক রাষ্ট্রের অভ্যূদয় ঘটে। যার অধিকাংশই একসময় উসমানিয়া সাম্রাজ্যের অংশ ছিল, পরে ব্রিটিশ উপনিবেশ কায়েম হয় সেসবে।
ব্রিটিশ উপনিবেশ ও খিলাফতের যৌথ উত্তরাধিকারসূত্রে এসব রাষ্ট্রে পশ্চিমা ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ রাজনীতিক ও ইসলামি চিন্তাবিদ দু’তরফে যথাক্রমে আধুনিক রাষ্ট্র-কাঠামো গৃহীত হয় এবং বিচার ও আইনে শরীয়া বাস্তবায়নের আন্দোলন গড়ে ওঠে। ঠিক এভাবে আধুনিক ইসলামি রাষ্ট্রধরণা তৈরি হয়। ইসলামি রাষ্ট্রের আরবি الدَّوْلَةُ الْإِسْلَامِيَّةُ। এ যৌগিক শব্দটি পবিত্র কুরআন-সুন্নাহে নেই, এটি নবউদ্ভাবিত নিশ্চয়। কিন্তু ধারণাটি একেবারে নতুন নয়। ইসলামি ইতিহাসে এর অস্তিত্ব ছিল। বিশ্বজনীন খিলাফত-ব্যবস্থার মতো কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বাইরেও মুসলমানদের আঞ্চলিক নেতৃত্ব ছিল। এসব নেতৃত্ব সুলতানত হিসেবে ইতিহাসে পরিচিত। সুলতানত বলা হয় খলীফা কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন নয় এমন স্বাধীন আঞ্চলিক নেতৃত্বকে। এ-প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ ড. আবদুর করিম বলেন,
‘আব্বাসী খিলাফতের পতনের যুগে মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে ইসলামী রাষ্ট্রের অবিভাজ্যতার নীতির প্রতি হুমকি দেখা দেয়। এই সংকটকালে মুসলিম আইনবিদরা মত প্রকাশ করেন যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুলতানেরা খলিফার সনদ বা স্বীকৃতি পেলে তাঁদের শাসন আইনসম্মত হবে। এই রাষ্ট্রগুলির শাসকেরা নিজেদের সুলতান রূপে দাবী করতেন, খলিফার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে সনদ বা স্বীকৃতি লাভ করতেন। বুওয়াইহীদ আমীরেরা এবং গজনীর সুলতান মাহমুদের মত রাষ্টনায়কেরা খলিফার চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান হলেও তাঁরা খলিফার সনদ লাভ করে তাঁদের শাসন আইনসম্মত করে নেন। পরবর্তীকালে মুসলিম শাসন আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে, অন্যদিকে খলিফার ক্ষমতা আরও ক্ষীণ হয়ে পড়ে। এই সময়ে সুলতানেরা খলিফার সনদ প্রাপ্তির চেষ্টা না করে, সনদ ছাড়াই তাঁদের মুদ্রায় খলিফা ও খিলাফতের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতেন। আইনবিদরা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মত প্রকাশ করেন যে খলিফা যা নিষেধ করেন না তাই বৈধ আইন সম্মত।’
প্রশ্ন হচ্ছে শরীয়তে এ-ধরনের একাধিক মুসলিম নেতৃত্বের অবকাশ আছে কিনা। মনে রাখতে হবে যে, মুসলিমবিশ্বের কেন্দ্রীয় নেতা হবেন একজনই, তিনি খলীফাতুল মুসলিমীন—এ-বিষয়ে সকল ওলামায়ে কেরাম একমত। অবশ্য ইসলামি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইমাম আবুল হাসান আল-মাওয়ারদীর মতে, ‘কোনো কোনো ওলামায়ে কেরামের অভিমত হচ্ছে, যদি মুসলিমবিশ্বের সীমানা এতোটা দূর-দূরান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হয় যায় যে পুরো বিশ্বকে একজন নেতার অধীনে রাখা কার্যত অসম্ভব তা হলে এ-ধরনের পরিস্থিতিতে মুসলিমবিশ্বকে বিভিন্ন দেশে বিভক্ত করে তাতে ভিন্ন ভিন্ন নেতৃত্ব মনোনয়ন করা যেতে পারে।’ ইমাম আবদুল কাহির আল-বাগদাদী ও ইমামুল হারামাইন আল-জুওয়াইনী একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইমাম শামসুদ দীন আল-কুরতুবী এ-অভিমতের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এবং আল্লামা আবদুল আযীয আল-ফারহানী এ-মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
উপর্যুক্ত ওলামায়ে কেরামের মতামতের আলোকে বলা যায় যে, আধুনিক ইসলামি রাষ্ট্র-ধারণা একটি অনস্বীকার্য বাস্তবতা। বর্তমান মুসলিমবিশ্বের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শায়খুল ইসলাম আল্লামা তকী উসমানী তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন,
ایک مثالی اسلامی ریاست کی اصل کوشش یہی ہونی چاہئے کہ پوری دنیا میں ایک ہی امام ہو۔لیکن موجودہ حالات میں جہاں عالم اسلام پچاس سے زیادہ حکومتوں میں منقسم ہے, عملی طور پر ایسا کرنے کيلئے ضروری ہے کہ ان ممالک کے حکمران متفق ہوں، ورنہ مسلمان ملکوں کے درمیان جنگ کے بغیر یہ مقصد حاصل نہیں کیا جا سکتا جو یقینا زیادہ بڑی برائی ہے۔اس لئے مجبوری کی حالت میں ان حکومتوں کو تسلیم کئے بغیر چارہ نہیں ہے، ورنہ شدید خلفشار لازم آئے گا۔ماضی میں بھی حکومتیں کئی کئی رہی ہیں اور علماء امت نے ان کے احکام کو نافذالعمل سمجھا ہے۔
‘একটি আদর্শ ইসলামি রাষ্ট্রের মূল প্রচেষ্টাই হওয়া উচিত যে, পুরো বিশ্বে একজনই নেতা হবেন। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেখানে মুসলিমবিশ্ব পঞ্চাশের অধিক রাষ্ট্রে বিভক্ত সে-অবস্থায় ‘এক নেতা-ব্যবস্থা’ বাস্তবায়ন করতে করতে হলে এসব দেশের শাসকদের ঐক্যমত জরুরি। অন্যথায় মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ ছাড়া এ-উদ্দেশ্য হাসিল করা সম্ভব নয়, যা নিশ্চতই বড় খারাপ পরিণতি বয়ে আনবে। সুতরাং অপারগবশত এসব রাষ্ট্রব্যবস্থাসমূহের অনুমোদন ছাড়া কোনো উপায় নেই। তা না হলে সাংঘাতিক বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। অতীতেও অনেক রাষ্ট্রব্যবস্থার অস্তিত্ব ছিল এবং উম্মতের সর্বজানমান্য ওলামায়ে কেরামও সেসব রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থাকে গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছেন।’
৩. কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হিসেবে খিলাফত পুনঃস্থাপনের উপায়
মুসলিমবিশ্বের আয়তন অনেক দূর-দূরান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হলে কিংবা দুটো অঞ্চলের মাঝখানে মহাসাগর অন্তরায় হলে যা উপর্যুক্ত দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এমন পরিস্থিতিতে মুসলিমবিশ্বকে বিভক্ত করে একাধিক খলীফার শাসনক্ষমতা বিন্যস্ত করার পক্ষে কোনো কোনো ওলামায়ে কেরাম নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তবে ‘সীমানার দূরত্ব ও মহাসাগরের অন্তরায়’ ইত্যাদির কারণে আঞ্চলিক বিভাজনের বিষয়টি খুব একটা যৌক্তিক নয়। এ-প্রসঙ্গে শায়খুল ইসলাম তকী উসমানী বলেন,
خلافت راشدہ کے دور میں بھی اسلام تقریبًا ایک تہائی دنیا تک پہنچ چکا تھا، اور بعد میں آدھی دنیا اُس کے زیر اثر آگئی تھی،اس کے باوجود ایک امام کے تحت کام چلتا رہا اور ہمارے دور میں تو مواصلات کی ترقی نے اس کو کوئی قابل لحاظ مسئلہ نہیں رہنے دیا۔اس لئے ایک مثالی اسلامی ریاست کی اصل کوشش یہی ہونی چاہئے کہ پوری دنیا میں ایک ہی امام ہو۔
‘খিলাফতে রাশিদার যুগেও মুসলিম সাম্রাজ্যের সীমানা পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশে পৌঁছেছিল এবং পরবর্তীকালে অর্ধপৃথিবী তার আঁচলতলায় এসেছিল। তা সত্ত্বেও একজন কেন্দ্রীয় নেতার অধীনে কাজ চলেছে। আর আমাদের এ-যুগে যোগাযোগ-ব্যবস্থার উন্নত হওয়ার কারণে এটি এখন কোনো সমস্যাই নয়। কাজেই একটি আদর্শ রাষ্ট্রের মূল প্রচেষ্টাই হওয়া উচিত যে, পুরো বিশ্বে একজনই নেতা হবেন।’
বস্তুত ইসলাম যে-বিশ্বভ্রাতৃত্বের দাওয়াত দেয় এবং তাতে যেভাবে পুরো মুসলিম উম্মাহকে একই সূত্রে গাঁথতে জোর গুরুত্ব দিয়েছে তার দাবিই হচ্ছে পুরো মুসলিমবিশ্বের কেন্দ্রীয় নেতা হবেন একজনই, তিনি হলেন খলীফাতুল মুসলিমীন। তবে প্রশ্ন হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুনঃস্থাপনের কাজটি কিভাবে আনজাম দেওয়া হবে? খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ কী হতে পারে বর্তমান বিশ্বমুসলিম পরিস্থিতিতে? শায়খুল ইসলাম তকী উসমানী প্রথমত একটি مثالی اسلامی ریاست (আদর্শ ইসলামি রাষ্ট্র)-এর কথা বলেছেন। ‘আদর্শ’ বলতে রাষ্ট্রের বিচার-ব্যবস্থা ও আইনি ভিত্তি হবে অবশ্যই কুরআন-সুন্নাহ, সেই সঙ্গে এ-রাষ্ট্র সামরিকভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিধর হবে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে উৎকর্ষতার শীর্ষে পৌঁছাবে এবং অর্থনীতিতে বিপুলভাবে সুসমৃদ্ধ হবে। এ-ধরনের একটি ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধান প্রচেষ্টা হবে পুরো মুসলিমবিশ্বের জন্য একটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সৃষ্টি করা। শায়খ তকী উসমানীর মতে এটি হচ্ছে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার দ্বিতীয় পদক্ষেপ।
বস্তুত এটি একটি বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের দু’সেরা পরাশক্তি। পুরো বিশ্বজুড়েই তাদের প্রভাব, ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশসমূহ তাদেরকে সমীহ করে চলে এবং সবকিছুতে তাদেরকেই মুরব্বি জ্ঞান করে চলে। এমনকি এ-রাষ্ট্রদুটোর মূল্যবোধ, কৃষ্টি-কালচার ও সংস্কৃতিকে উন্নতির মাপকাঠি জ্ঞান করে অন্যান্য দেশসমূহের জনগণ সেসব আত্মস্থ করতে এবং সেসবে নিজেদেরকে সুসজ্জিত করতে প্রাণপণ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকছে। বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে। এটা বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী লিপ্সা হাসিলের কর্মপরিকল্পনারই অংশ। এভাবেই হয়তো বিশ্বেজুড়ে নয়া কোনো উপনিবেশ তৈরি হবে। ১৮ শতকের পূর্বে মুসলিমবিশ্বের অবস্থা ছিল এমনই, তুরস্কের উসমানি সাম্রাজ্য ঠিক এভাবেই সারা পৃথিবীজুড়ে মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব দিয়েছে।
অতএব মুসলিমবিশ্বের জন্য একটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুনঃস্থাপন করতে হলে প্রথমে একটি আদর্শ ইসলামি রাষ্ট্রের বুনিয়াদ তৈরি করতে হবে। যা হবে সামরিকভাবে শক্তিধর, বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে উন্নত এবং অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ। তা না করে কয়েক লাখ মুসলমানের একটি গ্রুপ বানিয়ে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে খিলাফত কায়েমে বেরিয়ে পড়বেন এবং নিজেকে আল্লাহর প্রতিনিধি ঘোষণা করে পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিজের খিলাফত বিশ্বকে মানতে বাধ্য করবেন এমন ধারণা যারা পোষণ করে তারা মূলত একটি ঘোর অমানিশার মধ্যে দিগভ্রান্ত হয়ে ছুটে চলছে। বর্তমান বিশ্বপ্রেক্ষাপটে মুসলমানদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হিসেবে খিলাফত-ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনে কর্মকৌশল হিসেবে প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা আবু আম্মার যাহিদ আর-রাশিদী কিছু নিজস্ব চিন্তাধারা তুলে ধরেছেন এভাবে,
آج کے دور میں خلافت کے قیام کی میری طالب علمانہ رائے میں ممکنہ صورت یہ ہے کہ:
- مسلم ممالک میں اسلامی نظام و قوانین کا نفاذ عمل میں لایا جائے،
- مکمل اسلامی نظام کو اپنانے والے مسلم ممالک مل بیٹھ کر عالم اسلام کی سطح پر اپنی کنفیڈریشن کے قیام کا اعلان کریں،
- اس کنفیڈریشن کا سربراہ خلیفۃ المسلمین کہلائے،
- کنفیڈریشن میں شامل تمام مسلم ممالک اسلامی امارات کی حیثیت سے خلافت اسلامی کے داخلی طور پر خود مختار یونٹ ہوں جنہیں دفاع، کرنسی، بین الاقوامی مواصلات، شرعی قوانین، اور خارجہ پالیسی کے علاوہ باقی تمام امور میں مکمل خودمختاری حاصل ہو۔
‘বর্তমান বিশ্বপ্রেক্ষাপটে খিলাফত কায়েমে একজন শিক্ষার্থীরূপে আমার বিবেচনা মতে সম্ভাব্য পদক্ষেপ এই হতে পারে যে,
- মুসলিম দেশসমূহে ইসলামি নীতিমালা ও আইন বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হোক,
- পুরোপুরিভাবে ইসলামি নীতি-আদর্শের অনুসারী দেশসমূহ সম্মেলন করে মুসলিমবিশ্বব্যাপী একটি নিজস্ব কনফেডারেশনের ঘোষণা করবে।
- উপর্যুক্ত কনফেডারেশনের যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন তাকে খলীফাতুল মুসলিমীন উপাধিতে ভূষিত করা হবে।
- কনফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ ‘ইসলামি ইমারত বা রাজ্য’ হিসেবে খিলাফত যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার একটি ইউনিটের মর্যাদায় স্বাধীন হবে। যারা প্রতিরক্ষা, মুদ্রা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, শরীয়ী আইন ও পররাষ্ট্র নতি ছাড়া অন্যান্য সকল বিষয়ে পরিপূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করবে।’
হ্যাঁ। প্যান-ইসলামি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রয়োজন। যার রাজধানী হবে পবিত্র মক্কা ও মদীনা নগরীসহ পুরো হিজাযভূমি। তাঁর ইমামতিতে মসজিদে হারামে নামায, জুমুআ ও হজ পালিত হবে। তিনি হবেন মুসলিম উম্মাহর প্রধান ধর্মীয় নেতা। ন্যাটোর আদলে একটি সামরিক জোটের সর্বাধিনায়ক হবেন তিনি। মার্কিন ডলারের বিপরীতে মুসলিমবিশ্বের সর্বত্র ব্যবহার উপযোগী ঐতিহ্যবাহী দীনার-দিরহামের মতো স্বর্ণমুদ্রা থাকবে তাঁর নামে। মুসলিম-অমুসলিম সকল রাষ্ট্রে তাঁর নিজস্ব দূতাবাস থাকবে। মুসলিমবিশ্বের পবিত্র ভূমি, স্থাপত্য ও ঐতিহ্যসমূহ সংরক্ষণে তাঁর পরিচালনায় পৃথক সংস্থা থাকে। বর্তমান ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কেই প্রস্তাবিত খিলাফত কনফেডারেশন বা প্যান-ইসলামি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আদলে পুনর্গঠন করা যেতে পারে।
লেখক: ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, মাসিক আত-তাওহীদ
সূত্র:
আল-বুখারী, আস-সহীহ, দারু তওকিন নাজাত, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪২২ হি. = ২০০১ খ্রি.), খ. ৪, পৃ. ১৬৯, হাদীস: ৩৪৫৫
সগির চৌধুরী, খিলাফতে উসমানিয়া (কেন্দ্রীয় সম্মেলন স্মারক ২০১৫), ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা (প্রথম প্রকাশ: ১৪২১ হি. = ২০১৫ খ্রি.), পৃ. ৯৫
আবদুল কাদের, তুরস্কের ইতিহাস, জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশন, ঢাকা (প্রথম প্রকাশ: ১৪১৫ বা. = ২০০৮ খ্রি.), পৃ. ২৪৭–২৪৮
একমেলেদ্দিন ইহসানোগলু (অনুবাদ: মোঃ আমানুল হক), নব্য শতকে মুসলিম বিশ্ব: ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (১৯৬৯Ñ২০০৯), দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা (প্রথম প্রকাশ: ১৪১৯ বা. = ২০১৩ খ্রি.), পৃ. ১৪–১৭
একমেলেদ্দিন ইহসানোগলু (অনুবাদ: মোঃ আমানুল হক), নব্য শতকে মুসলিম বিশ্ব: ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (১৯৬৯Ñ২০০৯), পৃ. ১৭
ড. আবদুল করিম, ফুতূহাত-ই-ফীরূজশাহী (প্রথম অধ্যায়: প্রসঙ্গ-কথা), জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, ঢাকা (প্রথম প্রকাশ: ১৪২৪ বা. = ২০১৭ খ্রি.), পৃ. ৪
আল-মাওয়ারদী, আদাবুদ দুন্য়া ওয়াদ দীন, দারু ওয়া মাকতাবাতুল হিলাল, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করন: ১৪২১ হি. = ২০০০ খ্রি.), পৃ. ১৫১: তিনি বলেন,
فَأَمَّا إقَامَةُ إمَامَيْنِ أَوْ ثَلَاثَةٍ فِيْ عَصْرٍ وَاحِدٍ، وَبَلَدٍ وَاحِدٍ فَلَا يَجُوْزُ إجْمَاعًا، فَأَمَّا فِيْ بُلْدَانَ شَتَّىٰ وَأَمْصَارٍ مُتَبَاعِدَةٍ فَقَدْ ذَهَبَتْ طَائِفَةٌ شَاذَّةٌ إلَىٰ جَوَازِ ذَلِكَ.
‘একই সময়ে একই দেশে দুই বা তিনজন ব্যক্তিকে (খিলাফতের) নেতা হিসেবে মনোনীত করা সর্বসম্মতভাবে অবৈধ। অবশ্য ভিন্ন অঞ্চল ও দূরবর্তী দেশে হলে কিছু কিছু ওলামায়ে কেরামের নিক তা বৈধ।’
বিস্তারিত দেখুন: (ক) আবদুল কাহির আল-বাগদাদী, উসূলুদ দীন, মাদরাসাতুল ইলাহিয়াত, ইস্তানবুল, তুরস্ক (প্রথম সংস্করণ: ১৩৪৬ হি. = ১৯২৮ খ্রি.), পৃ. ২৭৪; (খ) ইমামুল হারামাইন আল-জুওয়াইনী, কিতাবুল ইরশাদ ইলা কাওয়াতিয়িল আদিল্লা ফী উসূলিল ই’তিকাদ, মাকতাবাতুস সাকাফাতিদ দীনিয়া, কায়রো, মিসর (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩০ হি. = ২০০৯ খ্রি.), পৃ. ৩২৬Ñ৩২৭; (গ) আল-কুরতুবী, আল-জামি লি-আহকামিল কুরআন, দারুল কুতুব আল-মিসরিয়া, কায়রো, মিসর (১৩৮৪ হি. = ১৯৬৪ খ্রি.), খ. ১, পৃ. ২৭৩; (ঘ) আবদুল আযীয আল-ফারহানী, আন-নিবরাস আলা শারহিল আকায়িদ, মাকতাবায়ে রশিদিয়া, করাচি, পাকিস্তান, পৃ. ৫১৩
(ক) তকী উসমানী, ইসলাম আউর সিয়াসী নযরিয়াত, মাকতাবাতু মাআরিফিল কুরআন, করাচি, পাকিস্তান (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩১ হি. = ২০১০ খ্রি.), পৃ. ২৪৬; (খ) তকী উসমানী (অনুবাদ: মুহাম্মদ আবদুল আলীম), ইসলাম ও রাজনীতি, মাকতাবাতুল হেরা, ঢাকা (সপ্তম সংস্করণ: ১৪৩৮ হি. = ২০১৬ খ্রি.), পৃ. ২৫৬
অনেক রাষ্ট্রব্যবস্থার অস্তিত্ব ছিলা একথা দ্বারা এখানে শায়খ তকী উসমানী ইসলামের রাজনীতিক ইতিহাসের সুলতানতগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
(ক) তকী উসমানী, ইসলাম আউর সিয়াসী নযরিয়াত, পৃ. ২৪৫Ñ২৪৬; (খ) তকী উসমানী (অনুবাদ: মুহাম্মদ আবদুল আলীম), ইসলাম ও রাজনীতি, পৃ. ২৫৬
যাহিদ আর-রাশিদী, আজ কে দওর মেঁ খেলাফত কে কিয়াম কী আমলী সূরত, রোজনামা আওসাফ, ইসলামাবাদ, পাকিস্তান, ৯ আগস্ট ১৯৯৯, দেখুন: