বুধবার-২১শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি-২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তা’লীম ও শিক্ষাদানের গুরুত্ব

হাকীমুল উম্মত, মুজাদ্দিদুল মিল্লাত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.

আল্লাহ তাআলা বলেন : “আর মুমিনদের জন্য সংগত নয় যে, তারা সকলে একসঙ্গে অভিযানে বের হবে। অতঃপর তাদের প্রতিটি দল থেকে কিছু লোক কেন বের হয় না, যাতে তারা দীনের গভীর জ্ঞান আহরণ করতে পারে এবং আপন সম্প্রদায় যখন তাদের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে, তখন তাদেরকে সতর্ক করতে পারে, যাতে তারা (গুনাহ থেকে) বেঁচে থাকে।”1
এই আয়াত থেকে জানা যায়, আহকাম তথা দীনি বিধি-বিধান শেখানো এবং তা শেখার প্রয়োজনীয়তা (অর্থাৎ দীনি বিধি-বিধান শেখা) এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য যে, চূড়ান্ত জিহাদে লিপ্ত থাকা অবস্থাতেও এটি ফরজ। তাই জিহাদের দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে একটি দলকে এই দায়িত্ব আঞ্জামে রত থাকতে হবে। সুতরাং অন্য সময়ে তো অবশ্যই তার প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে।
কারণ সুস্পষ্ট, একটি ইবাদত যতই মহৎ এবং প্রয়োজনীয় হোক না কেন, এটি তখনই নির্ভরযোগ্য এবং গ্রহণীয় হতে পারে, যখন এটি শরীয়াহ আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আর শরীয়াহ মোতাবেক হওয়া নির্ভর করে প্রথমে সেগুলো জানার ওপর। এর দুটি রূপ রয়েছে : হয়তো বিশেষ পদ্ধতিতে তার তা’লীম দেওয়া হবে, কিংবা সাধারণভাবে তা’লীম ও তাবলীগ তথা শিক্ষা দেওয়া এবং প্রচার করা হবে।2
মনে রাখবেন, তা’লীমের বিষয়টি সকল কাজের মূল। তা’লীম তথা শিক্ষা অধিদপ্তর না থাকলে ভবিষ্যতের কর্মকর্তা কী করে সৃষ্টি হবে?3
সুতরাং আপনি জেনে নিলেন যে, দীনের ইলম কী? এর ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।4
দীনি ইলমে ব্যস্ত থাকার ফজিলত
বর্তমানে দীনি ইলমের সেবা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যস্ততা। দীনি তা’লীমের চেয়ে উত্তম সেবা আর নেই। আল্লাহ তাআলা যাকে ইলম দান করেন, তার জন্য এর চেয়ে ভালো ব্যস্ততা আর নেই। কারণ, এটি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এর পুণ্য এতই অধিক যে, খুব কমই এর ধারেকাছে আছে অন্য কোনো আমল। যতদিন তা’লীমের ধারা চলতে থাকবে, কিয়ামত পর্যন্ত তার আমলের তালিকায় সওয়াব বৃদ্ধি পেতে থাকবে।5
তা’লীম ও ওয়াজের প্রয়োজন
দু’টি জিনিস মনে আসছে। হয় তা’লীম দেওয়া শুরু করুন বা ওয়াজ করুন। উভয়টারই প্রয়োজন। এটা উপযুক্ত যে, অবিরাম তা’লীমি কাজ চলতে থাকবে এবং কখনও কখনও ওয়াজও করা উচিত। ওয়াজ বেশি দরকারি বলে মনে হয়। কারণ এর সুফল ব্যাপক।6
আলেমদের শ্রেষ্ঠত্ব
গর্ব যদি করতে চান, তবে আলেমরা গর্বিত হতে পারেন। কারণ তারা নিজেরাও সঠিক পথে রয়েছেন এবং তারা অন্যদের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছেন। যদি সম্পদকে বিবেচনা করা হয়, তবে তার অনুপস্থিতি গর্বের কারণ হতে পারে। কারণ সম্পদের অবস্থা এমন, যেমন একটি সাপ। এর চেহারা খুবই মোহনীয়, আকর্ষণীয়, মসৃণ, চকচকে। কিন্তু ভেতরটা রয়েছে মারাত্মক বিষে পরিপূর্ণ।
অনুরূপভাবে, সম্পদ—যদিও এটি বাহ্যিকভাবে আরাম ও আয়েশের উৎস, কিন্তু এর ভেতরেই রয়েছে সমস্ত মন্দ, অনিষ্ট ও কষ্টের মূল। ধন-সম্পদের অহংকার করা এমন, যেমন কারও সারা শরীরজুড়ে সাপ লেপ্টে রয়েছে, আর সে এটা নিয়ে গর্ব করছে!
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
رضينا قسمة الجبار فينا
لنا علم وللاعداء مال
فان المال يفنى عن قريب
وان العلم باق لا يزال
ধন-সম্পদ বিনষ্ট হবে এবং ইলম চিরকাল থাকবে। ইলম যার কাছে আছে, গোটা দুনিয়া থেকে সে অমুখোপেক্ষী। তার জন্য বন্ধু বা সতীর্থের প্রয়োজন নেই। কোনো রাজাই সেই সুখ ও তৃপ্তি পায় না। রাজা তো তার মোসাহেব-সঙ্গীদের থেকেই নিরাপদ নন! পাছে তারা তাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতে পারে। পক্ষান্তরে আলেমের সন্তুষ্টি ও নির্ভাবনার অবস্থা এই যে, তিনি বনে-জঙ্গলে একা থাকলেও নিরাপদ। তিনি রাজার চেয়ে বেশি নিশ্চিন্ত। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ ইলমের ফল আরও বেশি উপকারী।7
ইলমের সংজ্ঞা
পাপের কারণে ইলম হারিয়ে যায়। পাপী তা পায় না। অভিধানের শব্দ জানার নাম যদি ইলম হতো, তাহলে তা পাপের সাথেও মিলিত হতো। এমনকি কুফরির সাথেও। অন্যথায় বৈরুত ও জার্মানিতে খ্রিস্টান আরবি লেখক আছেন। তাদের স্মৃতিশক্তিও প্রবল এবং মেধা প্রখর।
সুতরাং বুঝা গেল, ইলম এর নাম নয়। ইলমের হাকীকত হচ্ছে সেই আলো, যা কুরআনে বর্ণিত আছে,
قَدْ جَاءَ كُمُ مِّنَ اللهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِين
বাস্তবে এটাই ইলম। ইমাম আবু হানিফা রহ. অনেক কিতাব পড়েননি। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাঁর অন্তরে আলো দিয়েছিলেন। তিনি যা বর্ণনা করতেন তা সঠিক বলতেন। এখন যার যতই অভিজ্ঞতা থাকুক না কেন, ইমাম সাহেবের যে ইলম ছিল, তারা তা পাননি।8
গর্বিত ইলম একটি আলো
কিন্তু ইলমের অর্থ এই নয় যে, তিনি قال دراصل قـوـل بود বাক্যগুলো জানেন। বরং ইলম হলো একটি আলো যা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ جَعَلْنَا لَهُ نُورا يَمْشِي بِهِ فِى الناسِ
“আমরা জ্ঞানকে এমন একটি আলো বানিয়েছি যার দ্বারা তোমরা মানুষের মধ্যে চলাফেরা কর।” এই আলোর সাহায্যে হৃদয়ের অবস্থা এমন হয় যে, চারদিক থেকে তরবারি দ্বারা তাকে পরিবেষ্টিত করা হলেও হৃদয়ে তার কোনো প্রভাব পড়ে না।
একদা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে ছিলেন। দুপুরের সময় তিনি একটি গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে এলেন। গাছে তরবারি ঝুলিয়ে গাছের নিচে শুয়ে পড়লেন। এক শত্রু এটাকে মহাসুযোগ মনে করল। ধীরপায়ে এসে তরবারি ধরল। খুব ধীরে ধীরে তা কোষ থেকে বের করে নবীজির কাছে এসে দাঁড়ালো। সে নবীজিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
مَن يعْصِمُكَ مِنِى
“এই মুহূর্তে আপনাকে আমার কাছ থেকে কে বাঁচাতে পারে?”
এটা দেখে তিনি তার জায়গা থেকে নড়লেনও না। লোকটির প্রশ্নের উত্তরে তিনি অত্যন্ত নিশ্চিন্তে বললেন, আল্লাহ! অর্থাৎ আল্লাহ আমাকে রক্ষা করবেন।
এমন করে কি কেউ বলতে পারবে? পারলে আমাকে দেখাও! আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছাড়া কেউ এটা করতে পারে না। এটার নামই ইলম। অন্যথায়, শয়তান নিছক কথার ফুলঝুড়ি তো খুব ভালো করেই জানে।
এর রহস্য হচ্ছে নিখুঁত ইলমের সাথেই নিখুঁত মারিফাত হয়ে থাকে। সে জানে :
عَسَى أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَكُمُ
“আপনি কোনো বস্তুকে হয়তো খারাপ মনে করতে পারেন, কিন্তু সেটা আপনার পক্ষে ভালো।” তাই তিনি ঘাবড়ে যান না। বুঝতে পারেন যে, এটি আমার চিকিৎসা এবং গোনাহ মাফের মাধ্যম। এছাড়া তা এটাও বোঝায় যে, আমরা আল্লাহর, নিজেদের নই। তিনি আমাদের জন্য যা উপযুক্ত বলে মনে করেন, আমাদের সেই অবস্থায় রাখার অধিকার রাখেন।9
প্রকৃত ইলমের মর্ম এবং এর শ্রেষ্ঠত্ব
এই হলো ইলমের হাকীকত—যা তাকওয়া দ্বারা অর্জিত হয়। এটি সেই ফিকহ যা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
فَقِيةٌ وَاحِدٌ أَشَدُّ عَلَى الشَّيْطَانِ مِنْ الْفِ عَابِدِ
“একজন ফকীহ শয়তানের কাছে হাজার আবেদের চেয়েও কঠিন।” এর অর্থ দারসী ফিকহ উদ্দেশ্য নয়। কারণ শয়তানের কৌশলগুলো কেবল কিতাব পড়ে বোঝা যায় না; বরং এটি এমন ইলম যা তাকওয়ার মাধ্যমে অর্জিত হয়। এই ইলমের ফজিলতে এই হাদীসটি উদ্ধৃত হয়েছে :
من يرد الله به خيرا يفقهه فی الدین
“আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তিনি তাকে দীনের বুঝ দান করেন।”
এই প্রকৃত ইলম কিতাব পড়ে অর্জিত হয় না। কারণ সাহাবায়ে কেরামের নিরক্ষর স্বভাবের জন্য মহানবী ﷺ গর্ববোধ করতেন। তিনি বলতেন :
نحن امة اميون لا نكتب ولا نحسب
“আমরা উম্মী। লিখতে জানি না। গুণতে জানি না।”
বলুন, সাহাবায়ে কেরাম কি লেখাপড়া করেছেন? কিছুই লিখেননি এবং পড়েননি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ তো স্বাক্ষরও করতে পারতেন না। কিছু সাহাবীকে তাবিয়ীদের হাতে সোপর্দ করতেন। কিন্তু তাঁরা সকল ইলমে ছিলেন সেরা। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সাহাবাদের ব্যাপারে বলতেন :
اعمقهم علما
“সাহাবীদের ইলম উম্মাহর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গভীর।”
সর্বোপরি, এটি কী ধরণের ইলম ছিল? একাডেমিক বা বইয়ের ইলম? না, এটি মোটেও ছিল না। বরং ইলমটি ছিল কুরআনের ওই উপলব্ধি যা আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে মহানবী ﷺ-এর সাহচর্যের বরকতে দান করেছিলেন। যার মাধ্যমে তাঁরা তাকওয়ায় উন্নতি করতে থাকেন। এটি সেই ইলম যা সম্পর্কে ইমাম শাফেঈ রহ. বলেছেন,
شكوت الى وكيع سوء حفظی
فاوصانى الى ترك المعاصی
“আমি আমার মুখস্থশক্তি না থাকার ব্যাপারে ওয়াকি’র কাছে অভিযোগ করি। তিনি আমাকে গোনাহ ত্যাগ করার ওসিয়ত করলেন।”
এটা কী ধরনের ইলম? যে ইলম পাপ দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়? তা কি বইয়ের জ্ঞান? না, বইয়ের জ্ঞান নয়। কেননা যার স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী, তিনি অনেক বেশি মনে রাখতে পারেন। একজন পাপিষ্ঠ ও বদকার লোক অনেক বড় বড় মুত্তাকী থেকেও বেশি কুরআন মুখস্থ করতে পারেন। এমনকি অনেক কাফেরও আমাদের চেয়ে বেশি মাসআলা ও হাদীস মনে রাখতে পারেন। তাই দেখা যায়, বৈরুতের খ্রিস্টানরা আমাদের হাদীস এবং ফিকহ সম্পর্কে খুব জ্ঞানী।
জার্মানির একটি মাদরাসার অবস্থা একজন পর্যটকের কাছ থেকে উদ্ধৃত করে বলেছেন যে, সেখানে ইসলামিক জ্ঞান-বিজ্ঞান পড়ানো হয়। সেখানকার একটি কক্ষের নাম দারুল ফিকহ, অন্যটির নাম দারুল হাদীস। সেখানে বুখারী ও হেদায়াসহ সব কিতাব পড়ানো হয়। যারা পড়ে এবং যারা তা’লীম দেয়, সবাই খ্রিস্টান কাফের।
সুতরাং ইমাম শাফেঈ রহ. কিতাবী ইলমে মুখস্থশক্তি মন্দ হওয়া সম্পর্কে অভিযোগ করেননি। ইমাম ওয়াকী’র উত্তর থেকে এটি স্পষ্ট যে, তিনি অন্য ইলমের দুর্বল মুখস্থশক্তি সম্পর্কে অভিযোগ করছিলেন, যেগুলোতে পাপ মিশ্রিত ছিল। এটিই ইলমের হাকীকত। এটিই কারণ, যার মাধ্যমে মুজতাহিদীন মুজতাহিদ হয়েছেন। অন্যথায়, দৃষ্টির বিশালতা এবং তথ্যের প্রাচুর্যের মধ্যে ইলম থাকলে তো অনেকে মুজতাহিদগণের চেয়ে এগিয়ে থাকতো।10
দীনের ইলম স্বতন্ত্রভাবে লক্ষ্য নয়, এর জন্য আমল ও আল্লাহর ভয় আবশ্যক
আমাদের অবস্থা হলো : আমরা ইলম অর্জন করে তারপর পড়া-পড়ানোতে নিয়োজিত হই এবং এটাকেই লক্ষ্য মনে করি, আল্লাহর ভয় অর্জনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করি না। যে ইলম আল্লাহর ভয় বর্জিত তা মোটেই ইলম নয়।
ভদ্র মহোদয়গণ!
ইলমকে বলা হয় নবীদের উত্তরাধিকার। তো, এখন দেখুন কোন্ ইলম নবীদের উত্তরাধিকার। নবীদের ইলমও কি নাউযুবিল্লাহর এমন? যাতে শুধু মাসআলা এবং পরিভাষা উচ্চারিত হয়, যার মধ্যে আল্লাহর ভয়ের কোনো নাম নেই? একেবারেই না! সেখানে তো এমন অবস্থা যে, ইলম যত বাড়বে, আল্লাহর ভয় তত বাড়বে। হাদীসে বলা হয়েছে :
اَنَا اَعْلَمُكُم بِاللهِ وَاخْشَاكُمُ الله
“আমি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আল্লাহ সম্পর্কে জ্ঞানী এবং সবচেয়ে বেশি আল্লাহভীরু।” সুতরাং শেখা ও শেখানোকে স্বতন্ত্রভাবে লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা সীমা অতিক্রমের নামান্তর।11
অনুবাদ: আল-ইলম ওয়াল উলামা অবলম্বনে মাসিক আত-তাওহীদ রিসার্চ ডেস্ক।


(পাদটীকা)
1 সূরা তাওবাহ : আয়াত ১২২।
2 তাজদীদে তা’লীম ওয়া তাবলীগ : পৃ. ১৯১।
3 আত-তাবলীগ : ১৬/৮৪।
4 দাওয়াতে আবদিয়্যাত : ৭/৬৯।
5 হুসনুল আযীয : ৪/২০০।
6 হুসনুল আযীয : ৪/৭২।
7 দাওয়াতে আবদিয়্যাত : ৭/৬৯।
8 রিসালাহ আয়নায়ে মাযাহিরে উলূম, হযরত থানভীর সূত্রে : পৃ. ১৭।
9 দাওয়াতে আবদিয়্যাত : ১২/৭৬।
10 আত তাবলীগ : ১২/১৩০।
11 তাজদীদে তা’লীম ওয়া তাবলীগ : পৃ: ১৬০।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ