دَارُ الافتاء جامعہ اسلاميہ پٹیہ، چاٹگام
ফতওয়া বিভাগ
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
ইমেইল: daruliftapatiya@gmail.com
পেইজলিংক: Facebook.com/Darul-ifta-Jamia-Patiya
তাহারত-পবিত্রতা
সমস্যা: মুফতি সাহেবের নিকট একটি মাসআলা জানতে চাই যে, আমাদের বাড়িতে নিচের ফ্লোর টাইলস লাগানো। জানার বিষয় হচ্ছে, যদি টাইলসের ওপর বাচ্চা প্রস্রাব করে অথবা অন্য কোনো নাপাক পড়ে, তা হলে কীভাবে পবিত্র করবো? জানিয়ে বাধিত করবেন।
জসিম উদ্দিন
আনোয়ারা
সমাধান: টাইলস যদি আয়নার মতো সমান হয় এবং নাপাকি ধরে রাখার মতো না হয়, তা হলে কাপড় জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে মুছে দিলে পবিত্র হয়ে যাবে। আদ-দুররুল মুখতার: ১/৫৬২, আন-নাহরুল ফায়েক: ১/১৪৪
সালাত-জানাযা
সমস্যা: আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে, সেই ব্যক্তির জানাযা পড়া হবে কি না? এ নিয়ে সমাজের মানুষের মাঝে মতবিরোধ দেখা যায়। পরে কয়েক জনমানুষ মিলে তার জানাযা পড়ে তাকে দাফন করা হয়। এখন জানতে চাই, আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির জানাযা পড়া এবং তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করার কী হুকুম?
মোহাম্মদ আবদুস সালাম
কক্সবাজার
সমাধান: আত্মহত্যা অনেক বড় গুনাহ। শরীয়তের দৃষ্টিতে আত্মহত্যাকারী ফাসেক, তবে সে কাফের নয়। কিন্তু ফাসেক হলেও তার জানাযা পড়তে হবে। হযরত ইমরান (রহ.) বলেন,
عَنْ عِمْرَانَ، قَالَ: سَأَلْتُ إِبْرَاهِيْمَ النَّخَعِيَّ عَنْ إِنْسَانٍ قَتَلَ نَفْسَهُ أَيُصَلَّىٰ عَلَيْهِ؟ قَالَ: نَعَمْ، إِنَّمَا الصَّلَاةُ سُنَّةٌ.
আমি ইবরাহীম নাখায়ী (রহ.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আত্মহত্যাকারীর জানাযা পড়া যাবে কী? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নামাজ পড়াটাই নিয়ম। (মুসান্নাফে ইবনে আবু শায়বা, ৩/৩৫, হাদীস: ১১৮৬৮)
অবশ্য জানাযা আদায়ের জন্য উপযুক্ত লোক থাকলে সমাজের কোনো বড় আলেম এবং নেতৃস্থানীয় কোনো লোক জানাযায় অংশগ্রহণ করবে না, যেন অন্যরা তা দেখে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকে। হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রযি.) থেকে বর্ণিত আছে এক ব্যক্তি ধারালো বস্তু দিয়ে আত্মহত্যা করল, তার ব্যাপারে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,
«أَمَّا أَنَا فَلَا أُصَلِّيْ عَلَيْهِ».
‘আমি এর জানাযা পড়বো না।’
সূরা আন-নিসা: ৪৮, সূরা আত-তওবা: ১০৩, মুসান্নাফে ইবনে শায়বা: ৩/৩৩০, আদ-দুররুল মুখতার: ৩/১২৭, নাসায়ী: ২১০২
সমস্যা: আমার আব্বু ইন্তেকাল করার আগে এক বুজুর্গ আলেমের মাধ্যমে জানাযা পড়ানোর অসিয়ত করেছিলেন, আমরা কোনো কারণে ওই আলেমের মাধ্যমে জানাযা পড়াতে পারিনি। জানার বিষয় হচ্ছে, আমাদের আব্বুর অসিয়ত মতে ওই আলেমের মাধ্যমে জানাযা পড়ানো আমাদের ওপর জরুরি ছিল কি না?
মুহাম্মদ জাকের উল্লাহ
মুরাদপুর, চট্টগ্রাম
সমাধান: জানাযার নামাজ পড়ানোর হকদার মৃতের অলিগণ, তারা চাইলে মৃত ব্যক্তি যার ব্যাপারে জানাযা পড়ানোর অসিয়ত করেছে তাকে দিয়েও জানাযা পড়াতে পারবে, কোনা কোনো সাহাবী, তাবেয়ী নিজের জানাযা পড়ানোর জন্য অসিয়ত করে গেছেন এবং পরবর্তীতে তার অলিরা তা পূর্ণও করেছেন। তবে অলিরা চাইলে অসিয়তকৃত ব্যক্তি ছাড়া অন্যকে দিয়ে কিংবা নিজেরাও জানাযা পড়াতে পারবে। সুতরাং আপনাদের পিতার অসিয়ত পালন না করাতে কোনো অসুবিধা হয়নি। ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২২৪, রদ্দুল মুহতার: ২/৬১৯, খুলাসাতুল ফতাওয়া: ১/২২২, আল-মুহীতুল বরহানী: ২/৩৩৮
সমস্যা: এক ব্যক্তি গতকাল এশারের নামাজ একাকী আদায় করছিল। সে কিরাআত উচ্চস্বরে পাঠ করছিল, নামাজ শেষে তাকে কিরাআত উচ্চস্বরে পড়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে সে উত্তরে বলল, উচ্চস্বর বিশিষ্ট নামাজ একাকী আদায় করলে আস্তেও পড়া যায় উচ্চস্বরেও পড়া যায়। জানার বিষয় হলো সেই ব্যক্তির কথা কতটুকু সঠিক?
আবদুর রহমান
চট্টগ্রাম
সমাধান: ওই ব্যক্তি ঠিক বলেছে। যেসব ফরজ নামাজে উচ্চস্বরে কিরাআত পড়া হয় তা যদি একা আদায় করা হয় তাহলে তাতে উচ্চস্বরে ও নিম্নস্বরে দুভাবেই কিরাআত পড়া যাবে। তবে উচ্চস্বরে পড়াই উত্তম। রাতের নফল নামাজে কিরাআতের নিয়ম ও একই। অর্থাৎ উচ্চস্বর ও নিম্নস্বর দুভাবেই পড়া যায়। তবে উচ্চস্বরে পড়া উত্তম। মুসান্নাফে ইবনে আবু শায়বা: ১/৩৯৯, আদ-দুররুল মখতার: ২/৩০৬, মাজমাউল আনহুর: ১/১৩৬, আল-মুহীতুল বুরহানী: ২/৫৯
সমস্যা: শেষ বৈঠকে একাধিকবার তাশাহহুদ পড়লে নাকি সাহু সাজদা ওয়াজিব হয় না একথাটি কি ঠিক?
আবদুল আজিজ
চট্টগ্রাম
সমাধান: হ্যাঁ। উক্ত কথাটি সঠিক, শেষ তাশাহহুদ একাধিকবার পড়া হলেও এ কারণে সাহু-সাজদা ওয়াজিব হয় না। ফতহুল কদীর: ১/৫২১, ফতওয়ায়ে কাযীখান: ৭/৭৬, আল– বাহরুর রায়েক: ২/১৭৩, আল-মুহীতুল বুরহানী: ২/৬১
ঈদ
সমস্যা: ঈদের নামাজে এক রকআত ছুটে গেলে ইমাম সালাম ফেরানোর পর প্রথম রকআত আদায় করার জন্য দাঁড়ালে প্রথম রকআতের তাকবীর কখন আদায় করবে?
আবদুল খালেক
পটিয়া, চট্টগ্রাম
সমাধান: ঈদের নামাজে এক রকআত ছুটে যাওয়া ব্যক্তি ইমামের সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে সানা ও কিরাআত ইত্যাদি শেষ করে রুকুর পূর্বেই অতিরিক্ত তিন তাকবীর আদায় করবে। অতঃপর রুকু-সাজদা ইত্যাদি করে নামাজ শেষ করবে। প্রখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরী (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈদের নামাজে এক রকআতের মাসবুক হয়েছে, সে যে রকআত পেয়েছে তাতে ইমামের সাথে তাকবীর বলবে আর যে বাকাত পায় নি তাতে ইমাম সাহেবের দ্বিতীয় রকআতের ন্যায় (অর্থাৎ রুকুর আগে) অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলবে। মুসান্নাফে ইবনে আবু শায়বা: ৫৮৬৩, আদ-দুররুল মখতার: ৩/৬৪, ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২১২, ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১২/৪৬৮
সমস্যা: সম্মানিত মুফতি সাহেবের নিকট একটি মাসআলা জানতে চাই যে, ঈদের নামাজে রুকুতে শরীক হলে অতিরিক্ত তাকবীর কিভাবে আদায় করবে?
আবদুল করীম
সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
সমাধান: ঈদের নামাজে ইমামকে রুকুতে পেলে করণীয় হল, তাকবীরে তাহরীমার পর ইমামের সাথে রুকু ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা না হলে দাঁড়ানো অবস্থায় অতিরিক্ত তিন তাকবীর আদায় করে রুকু করা। আর রুকু ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলে রুকুতে গিয়েই তাকবীরগুলো আদায় করবে। রদ্দুল মুহতার: ৩/৬৪, ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২১২, আল–বাহরুর রায়েক: ২/২৮২, ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ২/৬১৮
হায়েজ
সমস্যা: মাসিক ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে যিকির-আযকার করতে পারবো কি না?
আয়েশা সাদিয়া
ডেমরা, ঢাকা
সমাধান: হ্যাঁ, ঋতুস্রাব অবস্থায় মহিলাগণ হাদীসে বর্ণিত দোয়া, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পড়তে পারবে। কিন্তু কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না। তবে কুরআনে বর্ণিত দোয়াসমূহ কুরআনের আয়াত হিসেবে না পড়ে দোয়া হিসেবে পড়ার ও সুযোগ আছে। মুসান্নাফে আবদুর রয্যাক: ১/৩৩৫–৩৩৬, রদ্দুল মুখতার: ১/৫৩৫, আল–মাউসুআতুল ফিকহিয়া: ১৮/৩২১
সমস্যা: হুযুর! আমি একজন মহিলা। মহিলাদের বিষয়ে একটি মাসআলা জানতে চাই, গতকাল আমি যোহরের নামাজ পড়ার সময় আমার মাসিক স্রাব শুরু হয়ে যায়। জানার বিষয় হচ্ছে, স্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কি আমার ওই দিনের যোহরের নামাজ কাযা করে দিতে হবে?
নার্গিস সুলতানা
পটিয়া, চট্টগ্রাম
সমাধান: ফরজ নামাজ পড়া অবস্থায় যদি মহিলাদের মাসিক স্রাব শুরু হয়ে যায়, তাহলে পরবর্তীতে সে ফরজ কাযা করতে হয় না। সুতরাং আপনার ওই নামাজ কাযা করতে হবে না। তবে নফল নামাজ পড়া অবস্থায় এমনটি হলে পরবর্তীতে ওই নামাজ কাযা করতে হবে। কেননা নফল নামাজ শুরু করার পর তা সম্পন্ন করা ওয়াজিব হয়ে যায়। রদ্দুল মুখতার: ১/৫৩৩, ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৯২, ফতওয়ায়ে সিরাজিয়া: ১/৮৭
যাকাত
সমস্যা: হুযুর! আমার ফার্মেসিতে দিনকয়েক পরপর লাখ-দুই লাখ টাকার ওষুধ আনতে থাকি এই শর্তে, টাকা দুবছর পর পরিশোধ করবো। তো জানতে চাই যে, উক্ত ওষুধ ও ওষুধ বিক্রেতা দুবছর পর যে টাকা পাবে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে কি না? হলে আদায় করার পদ্ধতি কী?
আবু সিদ্দিক
চকরিয়া
সমাধান: আপনার ফার্মেসিতে যে ওষুধ আছে তা যাকাতযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। বছর শেষে ওই ওষুধের পাইকারি মূল্য হিসাব করে তার ২.৫% যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিদের মাঝে বণ্টন করে দেবেন। আর ওষুধ বিক্রেতা আপনার থেকে যে পরিমাণ টাকা পাবে সে পরিমাণ টাকা বাদ দিয়ে যাকাতের হিসাব করবেন। আবু দাউদ: ২/২১৮, আল–ফিকহুল হানাফি ওয়া আদিল্লাতিহি: ১/৩৩৩, আদ-দুররুল মুখতার: ৩/২০৫
সমস্যা: আমাদের এলাকায় যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত অনেক গরিব লোক আছে। আর আমার এক বোনকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের অঞ্চল থেকে অনেক দূরে, সেও অনেক অভাবী। এখন আমার জন্য কাকে যাকাত দেওয়া উত্তম হবে?
আবদুল্লাহ
কুমিল্লা
সমাধান: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার জন্য আপনার বোনকেই যাকাত দেওয়া উত্তম হবে। কেননা নিজের কোনো আত্মীয়স্বজন গরিব থাকলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো গরিব লোককে যাকাত দেওয়ার তুলনায় নিজের সেই গরিব আত্মীয়কে যাকাত দেওয়াই উত্তম। এতে যাকাত আদায় করা এবং আত্মীয়তার খোঁজ নেওয়া উভয়টির সাওয়াব পাওয়া যাবে। তিরমিযী শরীফ: ৬৫৮, আদ-দুররুল মুখতার: ৩/৩০৪, মুরাকিল ফালাহ: পৃ. ৭২২
সওম-ইতিকাফ
সমস্যা: রোজা অবস্থায় ইঞ্জেকশন নিলে রোজা ভাঙবে কি না?
মাহদী হাসান
রাজশাহী
সমাধান: না, রোজা অবস্থায় ইঞ্জেকশন নিলে রোজা ভাঙবে না। তবে, একান্ত ওজর ছাড়া গ্লুকোজ জাতীয় ইঞ্জেকশন (যা খাবারের কাজ দেয়) দেওয়া মকরুহে তাহরীমী। রদ্দুল মুহতার: ৩/৩৬৮, আল–বাহরুর রায়েক: ২/৪৭২, ফতহুল কদীর: ২/৩৩৫
সমস্যা: হুজুরের নিকট একটি মাসআলা জানতে চাই, আমার স্বামী সৌদিপ্রবাসী, কয়েক মাসের জন্য আমার স্বামী আমাকে বিদেশে তার কাছে নিয়ে যেতে চাচ্ছে, হুজুরের নিকট জানতে চাই যে, কয়েক মাসের জন্য ওষুধ সেবনের মাধ্যমে আমার মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ রেখে রোজা এবং হজ পালন করতে পারবো কি না? এবং স্বামীর সাথে থাকতে পারবে কিনা?
জাকিয়া জুঁই
ফুলবাড়ি, দিনাজপুর
সমাধান: ওষুধ সেবনের কারণে হলেও একজন মহিলা যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে অর্থাৎ তার মাসিক স্রাব চালু না হবে, ততক্ষণ তাকে নামাজ রোজা আদায় করে যেতে হবে এবং এ অবস্থায় সে তাওয়াফ ও করতে পারবে। আর সে যেহেতু পবিত্র অবস্থায় নামাজ রোজা ইত্যাদি পালন করেছে তাই পরবর্তীতে তাকে এ সময়ের নামাজ-রোজার কাযা করতে হবে না এবং এ সময়ে স্বামীর সাথে সহবাস ইত্যাদিও করতে পারবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। এ জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতে নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু এটি কোনো উত্তম পন্থা নয়। বিশেষ ওজর না থাকলে স্বাভাবিক নিয়মে চলাই উচিত, আর এ ধরনের ওষুধ ব্যবহারের পূর্বে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। এ জাতীয় ওষুধ সেবনের কারণে কারও শারীরিক কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পরবর্তী জটিলতা এড়ানোর জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। রদ্দুল মুহতার: ১/৫৫৯, আল–মুহীতুল বুরহানী: ১/২৪১, বাদায়িউস সানায়ি: ১/১৫৩
সমস্যা: আমাদের বাড়ির পাশে একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ আছে। ওই মসজিদে ইতিকাফ থাকা সহীহ হবে কিনা? জুমার দিন জুমার নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে জামে মসজিদে যেতে পারবো কিনা?
আতাউল্লাহ
রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম
সমাধান: ইতিকাফ সহীহ হওয়ার জন্য শরয়ী মসজিদ হওয়া শর্ত। আপনাদের এলাকার পাঞ্জেগানা মসজিদটি যদি শরয়ী মসজিদ অর্থাৎ ওয়াকফিয়া হয় তাহলে তাতে ইতিকাফ থাকা সহীহ হবে এবং জুমার দিন জুমার নামাজের উদ্দেশ্যে নিকটস্থ জামে মসজিদে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে জুমার উদ্দেশ্যে এ পরিমাণ সময় হাতে নিয়ে বের হবেন যাতে করে তাহিয়াতুল মসজিদ ও জুমার পূর্বের সুন্নত পড়তে পারেন। উল্লেখ্য যে, পাঞ্জেগানা মসজিদে ইতিকাফ থাকার তুলনায় জামে মসজিদে ইতিকাফ থাকাই উত্তম। সুনানে বায়হাকী: ৮৫৭২, মুসান্নাফে আবদুর রয্যাক: ৮০০৯, ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২৭৪
তালাক
সমস্যা: জনৈক স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তিন তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হওয়ার পরও তারা তারা অনেক দিন একসাথে বসবাস করে এবং শারীরিক মেলামেশা হয়। এখন তাদের ইদ্দতের হুকুম কী? কখন থেকে ইদ্দতের সময় হিসাব করবে?
হুসাইন
ঢাকা
সমাধান: প্রশ্নোক্তক্ষেত্রে, স্বামী যদি বৈধ মনে করেই স্ত্রীর সাথে সহবাস করে থাকে অর্থাৎ তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়ার বিষয়টি যদি স্বামীর জানা না থাকে, তাহলে সর্বশেষ শারীরিক সম্পর্কের পর থেকে ইদ্দতের গণনা শুরু করবে। আর যদি বিয়ে বিচ্ছেদের বিষয়টি জেনে শুনেই সহবাস করে থাকে তাহলে তা সম্পূর্ণ যেনা ও ব্যভিচার হিসেবে গণ্য হবে। এর দ্বারা ইদ্দতের গণনার মধ্যে কোনা প্রভাব পড়বে না। তালাক দেওয়ার পর থেকেই ইদ্দতের গণনা শুরু হবে। আদ-দুররুল মুখতার: ৫/২০৩, আল–বাহরুর রায়েক: ৪/২৩৫
বিবিধ
সমস্যা: আমাদের এলাকায় মসজিদ পুনরায় নির্মাণ করার সময় এলাকার মানুষদের মাঝে এখতেলাফ হয়ে গেছে। একদল বলেছে, দ্বিতীয় মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ছাদে ফাঁকা রাখতে হবে। অন্যথায় জামায়াত সহীহ হবে না। আরেক দল বলেছে, মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ফাঁকা রাখা জরুরি নয়। এ ব্যাপারে শরয়ী সমাধান কী? জানতে চাই।
ওবাইদুল্লাহ
ময়মনসিংহ
সমাধান: ইমামের পিছনে এক্তেদা সহীহ হওয়ার জন্য মসজিদের উপরের তলাসমূহের ছাদে ফাঁকা রাখা জরুরি নয়। তবে একাধিক তলা বিশিষ্ট মসজিদের প্রত্যেক তলায় ইমামের আওয়াজ ভালোভাবে পৌঁছার ব্যবস্থা করা জরুরি, যেন প্রত্যেক তলা থেকে মুসল্লিগণ নির্বিঘ্নে ইমামের অবস্থা জানতে পারে এবং যথাযথভাবে ইমামের অনুসরণ করতে পারে। বর্তমান মাইক বা লাউডস্পিকার দ্বারা এ প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু কখনো বিদ্যুৎ চলে গেলে কিংবা মাইকে কোনো সমস্যা হলে, সেক্ষেত্রে অন্যান্য তলার মুসল্লিগণ ইমামের অবস্থা জানতে পারবে না, ফলে তাদের নামাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তাই এমন সময়ও যেন ইমামের অবস্থা ওপর থেকে ভালোভাবে জানা যায় এজন্য ইমাম বরাবর প্রত্যেক তলার ছাদে কিছু অংশ ফাঁকা রাখা ভালো। আল–মুহীতুল বুরহানী: ১/৪৭৫, রদ্দুল মুহতার: ১/৫৮৬, ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৪৫x +