আমি সেই বাঙালি
মাহমুদুল হাসান নিজামী
আমি সেই বাঙালি সেই বয়স যার
সাড়ে সাত হাজার বর্ষ সাড়ে সাত হাজার
আমি সেই বাঙালি যার পূর্বপুরুষ নূহ নবী
হেমিটিক জাতির হাম সন্তান তার হামের বংশধর
বঙ্গ-বাঙালির প্রসূতি ঘর
আমি বাঙালি—নূহ নবীর বংশ বঙ্গেরর বংশধর।
আমি সেই বাংলাদেশি
যার মানচিত্র ছিল হিমালয় থেকে মেঘালয়
আমার স্বাধীন প্রথম বাংলাদেশ
ছয়শত দশকের বঙ্গদেশ
যশোধর্মনের বঙ্গদেশ
উপমহাদেশে যখন ছিল না কোন দেশ
তখনি হিমালয় থেকে মেঘালয় ছিল একটি দেশ বঙ্গদেশ।
আমার বাংলাদেশ
আমার স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় জনক
তেরশো শতকের সুলতানি শাসক
ফখরুদ্দীন মোবারক শাহ
আমার গৌরবের সেই রাজধানী সোনার গাঁ
আমার প্রথম বাঙালি শাহে বাঙ্গাল
তেরশো শতকের সুলতানি রাজা ইলিয়াছ শাহ
আমরা সবাই বাঙালি হিমালয় থেকে মেঘালয়।
আমার বাংলাদেশ
হেমিটিকের উত্তর পুরুষ বঙ্গ
আমার বাঙালি জাতির জনক
আমি যশোধর্মন-বিজয় সেন
শরৎচন্দ্র বসু-ফখরুদ্দীন মোবারক শাহ
শাহে বাঙ্গাল ইলিয়াছ শাহ
নজরুল, নবাব আলী বদি খান।
সোহরাওয়ার্দি, শেরে বাংলা, ভাসানী
মুজিব, জিয়া আমরা সবাই বাঙালি সবাই বাংলাদেশি
হিমালয় থেকে মেঘালয় আমার দেশ।
আমার বাংলাদেশ
যুগে যুগে আমি হেরে গেছি
হারিয়েছি স্বাধীনতা সর্বশেষ
পলাশীর প্রান্তরে
তেইশে জুন সতেরো শো সাতান্ন সালে শেষেরবারে
আমি বিজয়ী কতবার
শেষ বাংলাদেশ আমার বিজয় একাত্তরে।
আমি সেই বাঙালি।
নুরের রবি
ইমরান বিন তালিব
আঁধার কালো অন্ধকারে
ছেয়ে ছিল ধরা,
জুঁই চামেলী গোলাপেরা
ছিল তবে ঝরা।
মিটিমিটিয়ে হাসতো না যে
সূর্যমুখী ফুল,
খুকুর কানে পেত না শোভা
ঝুমকো জবার দুল।
শিউলি বকুল কাঠবেলিতে
ছিল না কোনো বাস,
কৃষ্ণচূড়ার রক্তে লেখা
আরবের ইতিহাস!
বাবার স্নেহ মায়ের মমতা
বঞ্চিত কত ফুল,
পিতার রচিত কবর গহীনে
শত শত বুলবুল।
শিশুকন্যারা মিনতি জানতো
বাঁচিবার প্রত্যয়ে,
ছেড়ে দিন বাবা বাঁচিব না ভবে
আপনার পরিচয়ে!
পাথুরে পাহাড়ে আছড়ে পড়েছে
কত যে করুন সুর!
কত যে আকুতি মিলিয়ে গেছে,
নির্মম, নিষ্ঠুর!
কিশোরীর কেসে মিশ্রিত ছিল
রক্তের পঁচা ঘ্রাণ,
তরুণীর ভরা তারণ্য ছিল
পঙ্কিলতায় ম্লান।
অসভ্য সেই ভ্রষ্ঠ জাতি
পরশ পাথর ছুঁয়ে
খোদার প্রিয় বান্দা হলেন
সেজদায় মাথা নুইয়ে।
মরুর বুকে আঁধার চিরে
উঠল নুরের রবি,
ধরার বুকে এঁকে দিলেন
জান্নাতের এক ছবি।