কওমি দীনী শিক্ষা
সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম
আধুনিক ও মুক্তিবাদের শিক্ষানীতির আরেক নাম জীবনবাদ
শিক্ষাজীবী বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদের বিশ্বাস বস্তুবাদ।
মূর্তিপূজা সূর্যপূজা অগ্নিপূজার বিশ্বাস শিরিকবাদ
বস্তু থেকে হয় না কিছু বিশ্বাসের নামি একত্ববাদ।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের চরম কথা বস্তু ছাড়া বেকার সব ভিত্তিহীন
যুক্তিতর্ক দেখায় তারা বিজ্ঞান অচল, মানলে এক ধর্মদীন।
সার্বজনীন ধর্মনীতি, শিক্ষা দেয় এক ইসলামই আসলবাদ
সর্বকালের রাজনৈতিক মত, সব আদর্শ মিথ্যে ও ভ্রান্তবাদ।
জীবনবাদের প্রবক্তা সব মগ্ন আজি ওই বাদের প্রতিষ্ঠায়
জীবন-যৌবন ভোগের পক্ষে ধর্মকে তাই, আজ আফিম বলতে চায়।
আমরা কট্টর ইসলামবাদী বস্তুত্যাগী একবাদ একত্ববাদ
আমরা বুঝি ধর্মনীতিই মূলনীতি আর সবি মরণফাঁদ।
ধর্মহীন শিক্ষানবিস, হবেই যে সে, ধারাল শাকের করাত
সমাজরাষ্ট্রে বিদ্যাপীঠে শক্তি প্রভাব, আর ঘটায় রক্তপাত।
ধর্মনীতির ঊর্ধ্বে যারা, তারাই ধর্মহীন শ্রেষ্ঠ সমাজপতি
চরিত্রহীন ব্যক্তি যে, সে; গুরুজনের পৃষ্ঠে মারে লাথি।
মানববাদের পরম শিক্ষা, দীনী শিক্ষা এক ইলমে ইলাহী
সম্মানের তাজ মাথায় পড়ে পৃথিবীতে করেন বাদশাহী।
মানববাদের শিক্ষাগুরু নয়কো মানব, স্রষ্টা আল্লাহ মহান
সার্বজনীন মানবজাতির, শিক্ষানীতির এটাই এক উৎস প্রাণ।
কওমি দীনী শিক্ষানীতির, মূল কেন্দ্র সেই মসজিদে সুফ্ফাহ
যারা কঠিন নির্যাতনেও অটল ছিল থাকতো অতি ভুখাহ।
আসমানি সে ফল ও ধারা জ্ঞানের প্রদীপ বক্ষে ধারণ করে
বিলিয়ে দেন মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়া-চীন সাত সমুদ্র পারে।
মদীনার সেই সুফ্ফাহ থেকে শুরু হল দীনের যে তা’লীম
ইলমে দীনের আকর্ষণে দলে-দলে হিন্দুরা হয় মুসলিম।
কওমের মানুষ মক্তব-খানকায়, ঈমান শিখে, শিখে আল্লাহর দীন
মূর্তিপূজা কুসংস্কার আর দূর হয় শিরিক, শয়তানি ও বদদীন।
১৩০৯ হি.
শরফুদ্দীনের প্রতিষ্ঠিত দীনী শিক্ষাকেন্দ্র সোনার গাঁয়ে
শুধু ভারত এশিয়া নয়, প্রভাব পড়ছে বিশ্বপ্রান্তে গিয়ে।
তিলে তিলে গড়া এরূপ আশি হাজার, দীনের সব শিক্ষাগার
ধ্বংস করে ব্রিটিশ সরকার আর ফাঁসি দেয়, শ্রেষ্ঠ উলামার।
১২৮৩ হি.
নির্মম পীড়ন তীব্র দহন, জ্বালাসয়ে গড়লেন, কাসেম দেওবন্দ
আধ্যাত্মিক সে মহান পুরুষ, মুক্ত অসি করলেন খাপে বন্দ।
জ্বালিয়ে দেন জ্ঞানের প্রদীপ-ইলমের আলো সমস্ত এ বিশ্বময়
গভীর রাতের করুণ কান্না, কাঁপায় ব্রিটিশ, আর হয় সে পরাজয়।
১৯০১ ইং | ১৯২৫ ইং | ১৯৩৬ ইং | ১৯২০ ইং |
বাংলাদেশের হাটহাজারী ইসলামিয়া বড় কাটরা জিরি
চারিয়া কাসেমুল উলূম, গওহরডাঙ্গা, পটিয়া জমীরী।
১৯৪৪ ইং | ১৯৪৯ ইং | ১৯৩৮ ইং |
বার হাজার কওমি দীনী শিক্ষালয়ে হচ্ছে তা’লীম দীনী
বাংলাদেশের মুসলিম মিল্লাত চিরদিনটি তাদের কাছে ঋণী।
আজ যারা যুদ্ধংদেহী বদলাতে ফের দীনের আলোকধারা
চিরতরে হবে তারা দীনের শত্রু, দীন আর ঈমানহারা।
দীন-ধর্মহীন মানুষের যে, নেই পরিচয়, সে শিরিকবাদী
মাতৃ-পিতৃহীন অবোধ সে, মূলকাটা সে, পিতায় অংশবাদী।
খোদার শত্রু নবীর শত্রু নমরুদ ছিল, ছিল ফিরউন শাদ্দাদ
জানিনে ওই বংশধারা চিরকালটি থাকবে আরও মুরতাদ।
সাদ্দাদ নমরুদ ফিরউন ওরা, হোক না যত, সবার চেয়ে কঠিন
পরিণাম ওই আসছে ধেয়ে দিব্য চোখে দেখবে ওরা সেদিন।
তাই ভুলে যাও অন্ধবধির জ্ঞানপাপীরা, সব মিথ্যে মতবাদ
মহামুক্তির মহাসনদ আল-কুরআনই এক বিশ্বসাম্যবাদ।
চিরসংগ্রাম বিপ্লব মোদের দীনের জন্যে, আর ইজ্জত ও সম্মান
শহীদ হবার জন্যে বলকায় রক্ত মোদের, আজ হাজার লক্ষ-প্রাণ।
স্বর্গীয় হুর বেহেশতি ফুল
মাহমুদুল হাসান নিজামী
তব রূপের আভায় পূর্ণচন্দ্র হয়ে যায় ম্লান
দৃষ্টিরা নব উল্লাসে গেয়ে যায় সৃষ্টির জয়গান,
হুরের অবয়বে কে করিলে গো এই মহা সৃজন
এই যেন মহা তরিৎ চুম্বক তাহারি দুই নয়ন।
কপোলে জোছনা হাসে
অসীম নীলে চাঁদ ভাসে,
শিল্প তুলি যেন অঙুলি তার
মায়াবি কায়ায় দেখে থাকি বারবার।
তাহারী অনুপম অপরূপে স্বপ্নেরা রঙ্গিন
স্বর্গীয় হুর অদূরে হাসে সেতো মেহজাবিন,
অনুক্ত আরাধনায় নব ঝংকারে মধুসুর বাজে
তাহারি অপরূপ সাজে।
ধন্য ধরনী তোমারী জন্য ধন্য রমনীকুল
দ্যুতিময় করিলে তিমিরে ওগো বেহেশতি ফুল।