হে রাহবার
ওস্তাদে মুহতারম, আল্লামা মুফতি ও শায়খুল হাদীস শাহ আবদুল হালীম বোখারী (রহ.)
সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম
অধ্যাপক, বাংলা সাহিত্য ও ইসলামি গবেষণা বিভাগ
জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
দুর্গম দুস্তর পথের যাত্রী মুসাফির ঐ সমরখন্দ বোখারার
উত্তরসূরী ইলমে দ্বীনের আলোকবাহী ছিলেন যে দুনিয়ার।
ইলমের তুমি ঝাণ্ডাবাহী পথ প্রদর্শক বাংলা ও এশিয়ার
হাযার যোজন পথ পার হয়ে ধরেছিলে হাল এ জামিয়ার।
কুরআন হাদীছ শাস্ত্রের সুধা বিলিয়েছ তুমি সারা জীবন
ধন্য তুমি ধন্য তোমার মাতা-পিতা ধন্য তোমার যৌবন।
আল্লাহর জন্যে নবীর জন্যে দীনের জন্যে সঁপেছ হৃদয়-মন
তুমি মোদের মাথারি তাজ আবদে গনীর এক নন্দিত নন্দন।
তুমি রাহবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক মহাসচিব তুমি আঞ্জুমানের
চিন্তাশীল আর শ্রেষ্ঠ বক্তা, তুমি বাংলার দরদী মানুষের।
বিনয়-নম্র শ্রদ্ধাবোধ আর আনুগত্যে ছিলে যে বেনজীর
তাই তো সকল বাধা-বিঘ্ন ও ষড়যন্ত্রেও হয়েছ বিজয়ী বীর।
শায়খুল হাদীস আদিব তুমি, তুমি বাগ্মী ছিলে জননেতা
মোকাবেলায় মেনেছে হার বাতিলপন্থি নেতা-অভিনেতা।
ধৈর্যের পাহাড় ছিলে তুমি আল্লাহপ্রেমিক সুন্নাত অনুসারী
জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলে করনিকো মায়া জীবনেরী।
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া লাখোজনের ছিলে তুমি উস্তাদ
জনপদের সব কুসংস্কার ভুল আকীদা করেছ দূর বিদআত।
রাহবার ছিলে, তুমি আরব আর আজমের এ বাংলার ওলামার
আহলে হাদীস কাদিয়ানি ভ্রান্ত বাদের ওগো ছিলে তুমি হুংকার।
হায়! কেমনে সহিব আজ যন্ত্রণা মোর ব্যথাতুর হৃদয়ের
আঁখি জলে ভেসে যায় আজ, হৃদয় আমার উপস্থিত শ্রোতাদের।
হায়! এ ভাবে যাবে ছেড়ে কাঙ্গাল করে জামিয়ার পরিবার
কাঁদে পথ-ঘাট দারুল হাদীস পদ চিহ্ন শিষ্যরা অনিবার।
হে মোর প্রভু খোদা রহমান দাওগো তারে সুসজ্জিত জান্নাত
কবরে দাও শান্তির হাওয়া ফুলের মালা সুখে কাটে দিন-রাত।
মোদেরে দাও পূর্ণ ঈমান রসুলের প্রেম প্রাণে অসীম হিম্মত
নবীর প্রেমে দেব যে প্রাণ জীবন যৌবন জীবনের সব সম্পদ।
হে প্রভু মোর ওবায়দুল্লাহ হামযাকে দাও অসীম সাহস ও বল
বিপদ-সংকুল বাধার প্রাচীর পার হয়ে যায় মিটে সব কোলাহল।
ইউনুস-হারুন-বোখারীর জ্ঞান দাও গো প্রভু এই তরুণ ওবায়দকে
ইলমের আলো বিলায় যেন অকাতরে বিশ্বের দিকে দিকে।
নতুন করে সাজাও আবার এলেমের এই সুরভিত গুলবাগ
বিশ্ব মুসলিম ব্যথিত প্রাণ নর-নারী হয় যেন বাগেবাগ।
এই গুলবাগের অলিকে সব, স্থান দাও প্রভু জান্নাতের ফুল বাগে
অনন্ত সুখ হুর-গেলমান আর অমীয় সুধা দাও গো সবার আগে।
-
কবিতাটি স্বরবৃত্ত ছন্দে রচিত,
-
চার পর্বে বিভক্ত,
-
প্রথম তিন পর্ব চার মাত্রার (৪+৪+৪ = ১২),
-
শেষ পর্বটি ছয় মাত্রার (৬+১২ = ১৮),
-
মোট ১৮ মাত্রা।
প্রযুক্তির অবনতি
নূরুদ্দীন খাঁ
এই ছোট্ট মুঠোফোন যবে এলো ভাই দেশে,
টেলিফোনে যোগাযোগ বন্ধ করলো অবশেষে,
জলছাপ কাগজে আঁকা চিঠি যে আসে না আর
প্রযুক্তির উন্নয়নে সমাজ বিচিত্রাকার।
ছেলে কিবা মেয়ে-আছে ফোন সকলের হাতে
লেখাপড়া ছেড়ে-প্রেম জমায় গভীর রাতে,
হেসে হেসে মিষ্টি সুরে মিথ্যা অনর্গল বলে
নবীর আদর্শ ভুলে পাপ রথে গেছে চলে।
পরকিয়া প্রেম-কত সংসার ভাঙলো যে আজ
নগ্ন ছবি দেখে দেখে হারিয়েছে সবে লাজ,
উঠতে বসতে দেখা যায় হেডফোনটা রাখে কানে
আজকের ছেলে মেয়েরা কারো কথা নাহি মানে।
সারাক্ষণে গেম খেলে তোমার আমার ছেলে
অবেলায় হারিয়েছে প্রাণ এই গেম খেলে,
কোন সংস্কৃতিতে চলছে আমাদের ছেলে মেয়ে?
দুষ্ট স্বভাব তাদের অভ্যাসেতে গেছে ছেয়ে।
বলিউডের সকল গান জানে দেখি তারা
পর্নগ্রাফি দেখে এই দেশ হচ্ছে মেধা হারা,
যৌবন শক্তি বিয়ের পূর্বে নষ্ট করে ফেলে
মুঠোফোন পাপ কাজে সকল কে দিলো ঠেলে।