দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাত প্রদানের গুরুত্ব ও বাস্তবায়ন থাকা চাই
মাহমুদুল হক আনসারী
ইসলাম, মানবতা, শৃঙ্খলা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার ধর্ম। ইসলাম বিশ্বমানবতার জন্য চিরকল্যাণকর এক পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় সুখী, সমৃদ্ধশীল, ভারসাম্যপূর্ণ মানবিক জীবন গঠনই ইসলামের প্রতিশ্রুত বিষয়ের অন্তর্গত। ধনী-দরিদ্রের পর্বতসম পার্থক্য দূরীকরণ ও সমাজের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অক্ষুন্ন রাখার ক্ষেত্রে অনন্য এক নাম যাকাত। ধনী-দরিদ্রের সেতুবন্ধন তৈরিতে এ বিধান দিয়েছে ইসলাম।
ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের মাঝে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্তম্ভ হচ্ছে যাকাত। সকল ধর্মেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা গরীব, দুর্বল, অক্ষম ও বঞ্চিতদের প্রতি সহযোগিতার হাত সম্প্রসারণের মাধ্যমে সামাজিক ভারসাম্য স্থিতিশীল রাখার উপদেশ ও নির্দেশ রয়েছে।
ঐশী জীবনবিধান ইসলাম তার সূচনালগ্ন থেকেই এ ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করে আসছে। মাদানি জীবনে এসে সুনির্দিষ্টভাবে যাকাতের বিধান কার্যকর করে দরিদ্র ও নিঃস্ব শ্রেণির লোকদেরকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুণর্বাসিত করার এক ফলপ্রসূ ও বাস্তববধর্মী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ধনীদের সম্পদে অসহায় ও বঞ্চিতদের সুনির্দিষ্ট অধিকার নিশ্চিত করে যাকাত ব্যবস্থা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভিনব অবদান রেখেছে।
বর্তমান বিশ্বে একটি বহুল আলোচিত বিষয় হলো আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। উন্নয়নশীল দেশের দারিদ্র বিমোচন এবং সার্বিক উন্নতি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নিঃস্ব ও দরিদ্র শ্রেণিকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসিত করা অপরিহার্য। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সে কারণেই চিরন্তন ও শাশ্বত ধর্ম ইসলাম যাকাতের ন্যায় একটি ফলপ্রসু ও কার্যকর বিধানের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী রূপরেখা প্রদান করেছে। যা মানব রচিত সব অর্থনৈতিক মতবাদের ওপর ইসলামি অর্থব্যবস্থার সার্বজনীনতা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে।
যাকাত নির্ধারণ বণ্টন ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কী ভূমিকা পালন করে তা সকলের জানার প্রয়োজন আছে। সেটা সমাজে বাস্তবায়ন জরুরি।
যাকাত সংগ্রহের মূল উদ্দেশ্যই হলো সমাজের অসহায়, গরিব-এতিম ও নিঃস্ব লোকদের পুনর্বাসিত করা। এটি এককভাবে এবং সামষ্টিগতভাবে সামাজিক কল্যাণ বৃদ্ধি করে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮২ সালে শরীয়া আইনে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে যাকাত বোর্ড গঠন করেছে।
এই নিবন্ধে যাকাতের শাব্দিক, পারিভাষিক পরিচয়, বিভিন্ন নবীদের সময়ে যাকাত আদায় যাকাত দেওয়া সম্পদের ব্যয়ের খাতসমূহ এবং যাকাত সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
সর্বোপরি বিনিয়োগ ও ব্যবসায় গতিসঞ্চার, মজুদদারি হ্রাস, পুঁজিবাদের মূলোৎপাটন, অর্থের ঘূর্ণায়মানতা বৃদ্ধি, বেকারত্ব হ্রাস ও ধনী-দরিদ্রের পর্বতসম বৈষম্যের অবসানের মধ্যদিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যাকাত যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে তা বিশুদ্ধভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
সমাজের ধনী ও পুঁজিপতিদের সম্পদে দরিদ্রের বৈধ হক যাকাত সংক্রান্ত অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে এবং তা যথাযথভাবে উৎপাদনমূখী কল্যাণকর খাতসমূহ তথা হস্তচালিত ও তাঁতশিল্প, মৎসচাষ, পোলট্রি ফার্ম, গোবাদি পশু-পাখি পালন, মৌমাছি চাষ, বাঁশ ও কাঠের সামগ্রী উৎপাদনের মত ক্ষুদ্র-কুটির শিল্প বিনিয়োগ করতে পারলে একদিকে যেমন এসব শিল্পে বহুলোকের কর্মসংস্থান হবে অন্যদিকে দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে; যা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
যাকাতের পরিচয়
যাকাত আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো-পবিত্র হওয়া, বৃদ্ধি হওয়া। যাকাত দিলে যাকাতদাতার মাল পবিত্র হয় এবং সাওয়াব বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ١ؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ١ؕ وَاللّٰهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ۰۰۱۰۳
‘(হে নবী!) তাদের মালামাল থেকে যাকাত গ্রহণ কর যাতে তুমি সেগুলোকে পবিত্র করতে এবং সেগুলোকে বরকতময় করতে পার এর মাধ্যমে। আর তুমি তাদের জন্য দোয়া কর, নিঃসন্দেহে তোমার দোয়া তাদের জন্য সান্ত্বনাস্বরূপ। বস্তুত আল্লাহ সবকিছুই শোনেন, জানেন।’[1]
শরীয়তের পরিভাষায়, জীবন-যাত্রার অপরিহার্য প্রয়োজন পূরণের পর পূর্ণ এক বছরকাল সুনির্দিষ্ট পরিমাণ সঞ্চিত সম্পদের শরীয়ত নির্ধারিত পরিমাণ মোতাবেক শতকরা আড়াই ভাগ (২.৫০%), শরীয়ত নির্ধারিত খাতে কোনো প্রকার বিনিময় ব্যতিত স্বত্ব হস্তান্তর করাকে যাকাত বলে। অর্থাৎ যাকাত হলো সম্পদের সেই নির্ধারিত অংশ যা আল্লাহ তাআলার নির্দেশে নির্ধারিত খাতে ব্যয় করা নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী সব মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَالْمَسٰكِيْنِ وَالْعٰمِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغٰرِمِيْنَ وَفِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ١ؕ فَرِيْضَةً مِّنَ اللّٰهِ١ؕ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ۰۰۶۰
‘যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্য ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্য, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’[2]
স্বচ্ছল মুসলিম নর-নারীর বাধ্যতামূলকভাবে সামাজিক সহায়তা দান, জনকল্যাণ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার সঞ্চিত সম্পদের যে সুনির্দিষ্ট অংশ নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে আল্লাহর হুকুম পালনার্থে প্রদান করে তাই যাকাত।
শরীয়তে যাকাতের বিধান নাযিল হওয়ার আগেও আরবি ভাষায় এ শব্দটির প্রচলন ছিল। জাহেলি যুগের বিভিন্ন কাব্যমালায় শব্দটির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। ইসলাম ব্যতিত অন্যান্য আসমানি গ্রন্থে এবং পূর্ববর্তী সব নবীগণের ওপর যে যাকাতের বিধান কার্যকর ছিল তা পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতগুলো থেকে জানা যায়, আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহীম (আ.), হযরত ইসহাক (আ.) ও হযরত ইয়াকুব (আ.) সম্পর্কে বলেন,
وَجَعَلْنٰهُمْ اَىِٕمَّةً يَّهْدُوْنَ بِاَمْرِنَا وَاَوْحَيْنَاۤ اِلَيْهِمْ فِعْلَ الْخَيْرٰتِ وَاِقَامَ الصَّلٰوةِ وَاِيْتَآءَ الزَّكٰوةِ١ۚ وَكَانُوْا لَنَا عٰبِدِيْنَۚۙ۰۰۷۳
‘আমি তাঁদেরকে নেতা করলাম। তাঁরা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করতেন। আমি তাঁদের প্রতি ভালো কাজ করার, নামাজ প্রতিষ্ঠার এবং যাকাত আদায় করার জন্য অহী পাঠিয়েছি। মূলত তাঁরা আমার ইবাদতে নিয়োজিত ছিল।’[3]
হযরত ইসমাইল (আ.) সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে,
وَاذْكُرْ فِي الْكِتٰبِ اِسْمٰعِيْلَ١ٞ اِنَّهٗ كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ وَكَانَ رَسُوْلًا نَّبِيًّاۚ۰۰۵۴ وَكَانَ يَاْمُرُ اَهْلَهٗ بِالصَّلٰوةِ وَالزَّكٰوةِ١۪ وَكَانَ عِنْدَ رَبِّهٖ مَرْضِيًّا۰۰۵۵
‘এ কিতাবে ইসমাইলের কথা বর্ণনা করুন, তিনি প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং তিনি ছিলেন রসুল, নবী। তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে নামাজ ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে পছন্দনীয় ছিলেন।’[4]
وَاِذْ اَخَذْنَا مِيْثَاقَ بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ لَا تَعْبُدُوْنَ اِلَّا اللّٰهَ١۫ وَبِالْوَالِدَيْنِ۠ اِحْسَانًا وَّذِي الْقُرْبٰى وَالْيَتٰمٰى وَالْمَسٰكِيْنِ وَقُوْلُوْا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَّاَقِيْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ١ؕ ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ اِلَّا قَلِيْلًا مِّنْكُمْ وَاَنْتُمْ مُّعْرِضُوْنَ۰۰۸۳
‘যখন আমি বনি ইসরাইলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম ও নিঃস্ব-দরিদ্রদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত প্রদান করবে, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে তোমরাই অগ্রাহ্যকারী।’[5]
উপর্যুক্ত আয়াতগুলো থেকে এটিই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, সমাজের ধনী-দরিদ্রের মাঝের ভারসাম্য রক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আগের সব উম্মতের ওপরই যাকাতের বিধান ছিল। ইসলামের এ মৌলিক স্তম্ভটির গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে পবিত্র কুরআনুল করীমের ৮২ স্থানে যাকাতের আলোচনা এসেছে। এর মধ্যে নামাজের সঙ্গে যাকাতের কথা এসেছে ৩৭ বার।
আর্থ-সামাজিক সমস্যার সমাধানকল্পে ইসলাম যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, গরীব ও নিঃস্ব শ্রেণি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেছে, ইসলামের শুভ সূর্যোদয়কালীন মক্কার অবস্থাই তার বড় প্রমাণ।
অল্প সংখ্যক নতুন মুসলিমগণ ছিল প্রচণ্ড বাধার সম্মুখীন ও বিপদগ্রস্ত। তাদের হাতে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক শক্তি বলে কিছুই ছিল না। তখনও এ মানবিক সামষ্টিক গরিব-মিসকিনদের বিষয়টি মোটেই উপেক্ষিত হয়নি, বরং গুরুত্বের সাথে বিষয়টি বিবেচিত হয়েছে।
ইসলাম তার জন্য বিশেষ ও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আল-কুরআন এ পর্যায়ে কখনো মিসকিনদের খাদ্যদান ও সে জন্য অন্যদের উৎসাহিত করণের গুরুত্ব দিয়েছে, কখনো আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে ব্যয় ও বণ্টনের কথা বলে উৎসাহিত করেছে। কখনো বলেছে এ হচ্ছে (সাহায্য) প্রার্থী, বঞ্চিত, দরিদ্র, নিঃস পথিকের অধিকার আদায়। কোথাও সুস্পষ্ট ভাষায় যাকাত দেয়ার তাগিদ করেছে। পাশাপাশি এ বিধান লঙ্ঘন ও অমান্য করলে কঠোর শাস্তির ভয় দেখিয়েছে।
নগদ টাকা, কৃষি সম্পদ, সোনা-রূপা, ব্যবসায়ী সম্পদ, খনিজ সম্পদের যাকাত এবং পশু সম্পদের যাকাত-এ ছয় প্রকারে যাকাত দেওয়া হয়।
আল্লাহ তাআলা যাকাতের ব্যায়ের খাতগুলো নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلْفُقَرَآءِ وَالْمَسٰكِيْنِ وَالْعٰمِلِيْنَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوْبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغٰرِمِيْنَ وَفِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَابْنِ السَّبِيْلِ١ؕ فَرِيْضَةً مِّنَ اللّٰهِ١ؕ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ۰۰۶۰
‘যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’[6]
যাকাত দেওয়ার বিধান হলো একজন নিঃস্ব বা ফকিরকে এমন পরিমাণ যাকাতের অর্থ প্রদান করতে হবে যাতে সে সাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে এবং পরবর্তীতে তাকে যেন যাকাতের মুখাপেক্ষী হতে না হয়।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বলতে এমন একটি পক্রিয়া বুঝায় যার দ্বারা সমাজে বসবাসকারী ব্যক্তিবর্গের আশা-আকাঙ্ক্ষা মেটানোর সুযোগ সৃষ্টি করে।
অন্য কথায়-সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষের জীবন মানের সার্বিক উন্নয়ন, তাদের সাংস্কৃতিক ভাবধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সাধনকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বলে।
মানবজীবনে আল্লাহর হুকুম মেনে চলার নামই ইবাদত। ইবাদত প্রধানত-দুইভাগে বিভক্ত। আর তাহলো:
- দৈহিক: দৈহিক ইবাদাতের মধ্যে নামাজ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
- আর্থিক: আর্থিক ইবাদাতের মধ্যে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম।
ইসলামি জীবন দর্শনের মূল কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা উভয়টি ফরজ হিসেবে সাব্যস্ত এবং অবশ্যক পালনীয় কাজ। এ কারণেই হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) বলেন, ‘তোমাদের নামাজ ও যাকাতের ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে যাকাত আদায়
পৃ. ১৬-এর ২য় কলামে দেখুন
[1] আল-কুরআন, সুরা আত-তওবা, ৯:১০৩
[2] আল-কুরআন, সুরা আত-তওবা, ৯:৬০
[3] আল-কুরআন, সুরা আল-আম্বিয়া, ২১:৭৩
[4] আল-কুরআন, সুরা মারয়াম, ১৯:৫৪-৫৫
[5] আল-কুরআন, সুরা আল-বাকারা, ২:৮৩
[6] আল-কুরআন, সুরা আত-তওবা, ৯:৬০