মুহাম্মদ কবীরুল ইসলাম
আনন্দ উচ্ছলতায় ভরা, ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও সহমর্মিতার অম্লান আলোকমালায় সুশোভিত ‘ঈদুল ফিতর’ মুসলমানদের অন্যতম আনন্দ উৎসব। প্রতিবছর মাহে রমজানের পরে অনাবিল খুশির বার্তা নিয়ে আগমন করে ‘ঈদুল ফিতর’। ঘরে ঘরে বয়ে যায় খুশির বান। আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে মুসলিম জাহান। স্বল্প সময়ের এই পার্থিব জীবনে ‘ঈদ’ একটি উপঢৌকনের মতই আসে। প্রতিদিনের ধরাবাঁধা জীবন-যাত্রার মধ্যে ঈদের দিনটি নতুন ব্যঞ্জনায় মুখরিত হয়। সেদিনের প্রত্যুষকে অন্যদিনের প্রত্যুষের চেয়ে ভিন্নতর মনে হয়।
পৃথিবীর সকল জাতির জন্য আনন্দ-উৎসব রয়েছে। মুসলিম জাতির আনন্দ উৎসব দু’টি। ‘ঈদুল ফিতর’ ও ‘ঈদুল আযহা’। অন্যান্য জাতির আনন্দ-উৎসব থেকে ‘ঈদ’ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এতে উৎসবের নামে অনাচার, কদাচার ও নৈতিকতা বিবর্জিত বল্গাহীন অনুষ্ঠান ও আড়ম্বরের কোনো স্থান নেই। ঈদ হচ্ছে একটি সুশৃঙ্খল অথচ প্রাণোচ্ছল উৎসব। এতে মুসলিম জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে শিখে, পরষ্পরকে ভালবাসতে শিখে, বিশ্বাস করতে শিখে, শিখে একে অন্যের প্রতি সহমর্মী হতে, শিখে পরষ্পরের সহযোগী হতে।
ঈদ ধর্মীয় তাৎপর্যমণ্ডিত, সৌহার্দ ও সম্প্রীতিপূর্ণ সামাজিক এবং সুশৃঙ্খল এক অনুপম আনন্দানুষ্ঠান। ঈদের এ আনন্দ সংযমের ও আনুগত্যের। এ আনন্দ রমজানের মতো মহাসুযোগের মাসকে জীবনে পুনর্বার ফিরে পাবার। এ আনন্দ রমজানের মাসব্যাপী সিয়াম পালন করে সোনালি ফসল ‘নেকী’ অর্জন করতে পারার। এ আনন্দ হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম লায়লাতুল কদরে এক রাত ইবাদত করতে পারার। এ আনন্দ জীবনের সকল পাপ-পঙ্কিলতাকে ঝেড়ে-মুছে ফেলে পূত-পবিত্র হতে পারার। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্যরূপ ষড়রিপু ও শয়তানকে পরাভূত করে অন্তত ত্রিশটি দিনের জন্যে হলেও সম্পূর্ণ বিজয়ী হতে পারার এ আনন্দ। দেহযন্ত্রকে একটি বছরের জন্য রমজানের আগুনে পুড়িয়ে পুনরায় শাণিত করতে এ আনন্দ। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনকে তুষ্ট করে তাঁর অবারিত রহমত লাভ করতে পারায় এ আনন্দ। এ আনন্দ জীবনের পূর্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারার এবং স্বজনদের নিয়ে একত্রে উপাদেয় আহার গ্রহণ, আমোদ, আহলাদ ও পুনর্মিলন করতে পারায়।
তাই এ দিনে মানুষ সকল প্রকার ব্যস্ততা পরিহার করে, সকল দুঃখ-যাতনার ঊর্ধ্বে উঠে একই আনন্দের মধ্যে শরীক হওয়ার এক স্থানে মিলিত হবার চেষ্টা করে। কর্মক্ষেত্রে মানুষের পারষ্পরিক যে মিলন ঘটে সেটা প্রথাসিদ্ধ। সেখানে অসহিষ্ণুতা আছে, ক্ষোভ আছে, হতাশা আছে। আছে শক্তি ও পৌরুষের দম্ভ। কিন্তু এই ধর্মীয় মিলনে একটি অভাবনীয় অভিব্যক্তি আছে। এই মিলনে অহমিকা নেই, ঔদ্ধত্য নেই; বরং স্বর্গীয় অনুভূতি আছে, আছে একটি নিবেদনের উপলক্ষে সকলের মাঝে সাম্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা। এ মহীয়ান ‘ঈদুল ফিতর’ সম্পর্কে এ নিবন্ধে আলোচনার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
ঈদুল ফিতর অর্থ ও নামকরণ
‘ঈদুল ফিতর’ ‘ঈদ’ ও ‘ফিতর’ শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। ‘ঈদ’ অর্থ খুশি, আনন্দ (عود) শব্দমূল হতে উদ্ভূত ঈদ (عيد)-এর অন্য অর্থ হচ্ছে প্রত্যাবর্তন করা, ফিরে আসা। প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে আসে বলে একে ঈদ বলা হয়। আর ‘ফিতর’ অর্থ হচ্ছে ছিয়াম সমাপন, উপবাস ভঙ্গ করা ইত্যাদি।[1]
সুতরাং ‘ঈদুল ফিতর’ অর্থ হচ্ছে রমজান পরবর্তী উৎসব। বিভিন্ন অভিধানে বলা হয়েছে, ‘ঈদুল ফিতর’ সেই আনন্দ উৎসবকে বলে, যা রমজানের পরে আসে’।[2]
রমজানের পর শাওয়ালের প্রথম তারিখে রমজানের সিয়াম সমাপন উপলক্ষে যে আনন্দ-উৎসব পালিত হয় তাকে ‘ঈদুল ফিতর’ বলা হয়। কারো মতে, মুসলমানদের জীবনে নিয়মিত ভাবে প্রতি বছরই দিনটি ঘুরে ঘুরে আসে বরে একে ঈদের দিন বলা হয়। কারো মতে, এ দিনের সালাতে তাকবীরসমূহ একের পর এক পুনঃপুনঃ উচ্চারণ করা হয় বলে একে ঈদের দিন বলা হয়।[3]
ঈদুল ফিতরের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
সৃষ্টির আদি থেকে প্রত্যেক জাতি এক বা একাধিক দিনে স্বীয় জাতীয় আনন্দ-উৎসব পালন করে আসছে। হযরত আদম (আ.) ও তাঁর বংশধরগণ তওবা কবূলের দিনকে এবং নমরূদের অগ্নিকুণ্ড থেকে ইবরাহীম (আ.)-এর মুক্তিলাভের দিনকে তাঁর অনুসারীরা ঈদের দিন হিসাবে পালন করত। ফিরআউনের কবল থেকে মুসা (আ.)-এর পরিত্রাণ লাভের দিনকে বনী ইসরাঈলরা ঈদের দিন হিসেবে উৎযাপন করত। হযরত দাঊদ (আ.)-এর অনুসারীরা জালূতের বিরুদ্ধে বিজয় লাভের দিনকে, হযরত ইউনুস (আ.)-এর অনুসারীরা তাঁর মাছের পেট থেকে মুক্তি প্রাপ্তির দিনকে, খ্রিস্টানরা ‘মায়েদা’ (খাদ্যভর্তি খাঞ্চা) নাযিলের দিন ও ঈসা (আ.)-এর জন্মের দিনকে ঈদের দিন হিসাবে পালন করে থাকে। ইরানীরা জরথুস্ত্রের শিক্ষা বিলীন হওয়ার পর শরতের পূর্ণিমায় ‘নওরোজ’ এবং বসন্তের পূর্ণিমায় ‘মিহরিজান’ উৎসব পালন করত। ভারতে বসন্ত ও শরতের আগমনে বিভিন্ন নদীতে স্নানোৎসব ও হোলির উৎসবও পালিত হয়।[4] বর্তমানে দুর্গাপূজা বাঙালী হিন্দু সমাজে একটি বিশিষ্ট উৎসব। ঐতিহাসিক হেরোডাটাসের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, রোমানদের মধ্যে ইদিস (Ides) বা উৎসবের প্রচলন ছিল। যুদ্ধ জয়ের পরে তারা এসব ইদিস-এ লিপ্ত হত।[5] জাহেলী যুগে আরবরাও বিভিন্ন উৎসব পালন করত। পারসিক প্রভাবে মদীনাবাসীগণ ‘নওরোজ’ ও ‘মিহরিজান’ উৎসব পালন করত।[6]
মহানবী (সা.) মদীনায় আগমন করে মদীনাবাসীদেরকে উক্ত দু’দিন উৎসব পালন করতে নিষেধ করেন এবং ‘ঈদুল ফিতর’ ও ‘ঈদুল আযহা’ মুসলমানদের জন্য আনন্দের দিন নির্ধারণ করেন।[7] এ মর্মে হাদীস বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ الْـمَدِيْنَةَ وَلَـهُمْ يَوْمَانِ يَلْعَبُوْنَ فِيْهِمَا، فَقَالَ: مَا هَذَانِ الْيَوْمَانِ؟ قَالُوْا: كُنَّا نَلْعَبُ فِيْهِمَا فِي الْـجَاهِلِيَّةِ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: «إِنَّ اللهَ قَدْ أَبْدَلَكُمْ بِهِمَا خَيْرًا مِنْهُمَا: يَوْمَ الْأَضْحَىٰ، وَيَوْمَ الْفِطْرِ».
‘হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন মদীনাবাসী দুই দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ-উৎসব করত। রসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, ‘এ দুটি দিন কি জন্য?’ তারা বলল, জাহেলী যুগে এ দু’দিনে আমরা খেলাধুলা (আনন্দ-উৎসব পালন) করতাম। মহানবী (সা.) বললেন, ‘এ দুই দিনের পরিবর্তে আল্লাহ তোমাদের জন্য উত্তম দুটি দিন দান করেছেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা।’’[8]
শরীয়তের দৃষ্টিতে অন্যান্য উৎসব
‘ঈদুল আযহা’ ও ‘ঈদুল ফিতর’ ব্যতীত ইসলামে অন্য কোনো নতুন উদ্ভাবিত ঈদের স্থান নেই। ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘শরয়ী ঈদের অনুসরণ (পালন) ওয়াজিব। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত ঈদের অনুসরণ করা যাবে না।’[9] শায়খ মুহাম্মদ ইবনে সালেহ আল-উসাইমীন বলেন, ‘হে মুসলিম সমাজ! মুশরিক ও বিদআতীদের ঈদ আমাদের ঈদ নয়; বরং আমাদের ঈদ তিনটি; সাপ্তাহিক ঈদ অর্থাৎ জুমুআ, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এ তিনটি ছাড়া ইসলামে অন্য কোনো ঈদ নেই। রসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবীগণের নিকটে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ছিলেন অথচ তাঁরা মহানবী (সা.)-এর জন্মবার্ষিকী পালন করেননি। বদর, ইয়ারমুক, কাদেসিয়াসহ অন্যান্য বহু যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হয়েছিল, কিন্তু সেদিনকে তাঁরা উৎসবের দিন হিসাবে গ্রহণ করেনি। হযরত আবু বকর (রাযি.), হযরত ওমর (রাযি.), হযরত ওসমান (রাযি.), হযরত আলী (রাযি.) ছিলেন মুসলমানদের নিকটে সর্বাধিক সম্মানিত খলীফা। অথচ তাঁদের খেলাফতে অধিষ্ঠিত হওয়ার দিনকে কেউ ঈদ হিসেবে গ্রহণ করেনি। যদি এ ধরনের বিষয়কে উৎসব হিসাবে গ্রহণ করা উত্তম হত, তাহলে তাঁরাই এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন, যারা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবী ও আইম্মায়ে মুসলিমীনের মধ্যে ইলম ও আমলে আমাদেরকে অতিক্রম করে গেছেন।[10]
হযরত ওমর (রাযি.) বলেন,
اجْتَنِبُوْا أَعْدَاءَ اللهِ فِيْ عِيدِهِمْ.
‘আল্লাহর শত্রুদের উৎসব তোমরা পরিহার কর।’[11]
নিজেকে পরিশুদ্ধ ও পূত-পবিত্র করতে পেরেছে, তাদের জন্যই এই ঈদের আনন্দ। এ আনন্দের হক্বদার তারাই, যারা আল্লাহর আযাবের ভয়ে রমজানের সিয়াম পালনের পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল ছিল। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী সিয়াম পালন করত নিজেকে কলুষমুক্ত করতে পারল না, পারষ্পরিক ভেদ-বৈষম্য ভুলে একে অপরের আপন হতে পারল না, তাদের ঈদের আনন্দে যোগ দেওয়ার কোনো অধিকার নেই।[12]
ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সংক্ষেপে নিম্নরূপে ব্যক্ত করা যায়:
- ঈদুল ফিতরের দিন মুসলমানদের জাতীয় জীবনে সাম্য-মৈত্রীর যে বাস্তব নিদর্শন প্রকাশিত হয়, তা থেকে প্রমাণিত হয় যে, ঐক্যের মধ্যেই সুনিশ্চিত শান্তি সুধা বিদ্যমান।
- ইসলাম ত্যাগ ও তিতিক্ষার এবং ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দের যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, ঈদুল ফিতর মুসলমানদের অন্তরে সেই শিক্ষার চেতনাকে নতুন করে জাগিয়ে তোলে।
- দীন-দরিদ্র, ইয়াতীম, নিঃস্ব ও ছিন্নমূল মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার যে বাস্তব প্রশিক্ষণ মুমিন রমজান মাসে অর্জন করেছে, তার সোনালী ফসল দর্শনের দিন হচ্ছে ঈদুল ফিতরের দিন।
- ঈদের এই দিনে পারষ্পরিক সম্পর্ক মজবুত ও দৃঢ় করার এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন শক্তিশালী করার আকুল আবেদন আসে চতুর্দিক থেকে।
- পূর্ববর্তী নবী-রসুলগণের দীর্ঘায়ুপ্রাপ্ত উম্মতের সাথে নেকীর প্রতিযোগিতায় আমরা যাতে পরাজিত না হই, সেজন্য আল্লাহ তাআলা রমজানে লায়লাতুল কদর দান করে যে মহা সুযোগ প্রদান করেছেন, তার জন্য দু’রাকআত বিশেষ সালাত আদায় করে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন ঈদুল ফিতর।
- ঈদুল ফিতর সামাজিক আদব-কায়দা ও শৃঙ্খলাবোধ শিক্ষা দেয়।
- মানব স্রষ্টা আল্লাহর আইন পার্থিব জীবনে মেনে চললে ইহকালের ন্যায় পরকালেও এরূপ আনন্দময় জীবন ও প্রশান্তি লাভ করা যাবে, তার বাস্তব জ্ঞান দান করে ঈদুল ফিতর।
- রমজানের স্পর্শ পেয়েও মানুষের যে অংশ পুরোপুরি কলুষমুক্ত হয়নি, ঈদুল ফিতর সেই অংশের কলুষতা মুক্ত করে সমাজকে সজীব করে তোলে।
- ঈদুল ফিতর মানুষকে বিনয়ী, নম্র ও হৃদয়বান করে তোলে। যেন ঈদের প্রভাব থেকেই মানুষ অপরের সুখে সুখী হবার তাকীদ অন্তরে অনুভব করে। ছোটদের প্রতি স্নেহ-মমতা এবং বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তির প্রাণপ্রবাহে তাদের হৃদয়-মন ভরে যায়। স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসার সাথে সাথে তারা যেন সৃষ্টির সাথেও সদ্ব্যবহার করতে পারে, যেন সৃষ্টিকে ভালবেসে সন্তুষ্ট করতে পারে।
বস্তুত নিছক এক দিনের হৈচৈ ও মাতামাতির মধ্যেই ঈদের সার্থকতা নিহিত নয়; বরং প্রত্যেক ব্যাপারে পরিচ্ছন্ন মন ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হওয়াতেই ঈদ উৎসবের সার্থকতা ও সফলতা।[13]
ঈদুল ফিতরের প্রকৃত তাৎপর্য হল ব্যক্তি জীবনের নানাবিধ কুপ্রবৃত্তি বা নফসানিয়াতের দমনের সাথে সাথে নানা প্রকার দান ও দাক্ষিণ্যের মাধ্যমে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার দ্বারা মানুষ যে শিক্ষা লাভ করেছে, দান-খয়রাত হচ্ছে তার প্রায়োগিক প্রমাণ। কাজেই ঈদুল ফিতরে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করার পাশাপাশি অন্যান্য দান, সাদাকা এবং আপনার ব্যক্তিগত জীবনের সমূহ কুপ্রবৃত্তির উৎপাটন করার সাধনার মধ্যেই সিয়াম পালনের সফলতা। আর এরই সার্থকতার প্রমাণ হচ্ছে ঈদুল ফিতর।[14]
ঈদুল ফিতরের দিনে আমাদের করণীয়
ঈদের দিনে আনন্দের পাশাপাশি মুসলমানদের জন্য কিছু করণীয় রয়েছে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হল:
(১) তাকবীর পাঠ করা: রমজান মাসের শেষ দিন সূর্যাস্তের পর অর্থাৎ ঈদের রাত থেকে শুরু করে ঈদের সালাত আদায় পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করা। আল্লাহ বলেন,
وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰى مَا هَدٰىكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ۰۰۱۸۵
‘যাতে তোমরা গণনা পূর্ণ কর এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার জন্য তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব বর্ণনা কর। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।’[15]
তাকবীরের শব্দসমূহ হচ্ছে,
اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ وَلِلهِ الْـحَمْدُ.
পুরুষের জন্য উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর বলা সুন্নাত। তবে মহিলারা নিঃশব্দে তাকবীর বলবে।[16]
(২) খেজুর খাওয়া: সালাতের জন্য ঈদগাহের দিকে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে তিনটি, পাঁচটি বা তদূর্ধ্ব বেজোড় সংখ্যক খেজুর খাওয়া সুন্নাত। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাযি.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন সকালে বেজোড়সংখ্যক খেজুর খেতেন।
(৩) সজ্জিত হওয়া: পুরুষের জন্য সুন্নাত হল গোসল করে, সুন্দর পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি মেখে, সুসজ্জিত হয়ে ঈদগাহ অভিমুখে রওয়ানা হওয়া। মহিলারা সুসজ্জিত হয়ে এবং সুগন্ধি মেখে সৌন্দর্য প্রদর্শণী করে বের হবে না। বরং তারা পর্দা সহকারে বের হবে। যেমন রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,
«لِتُلْبِسْهَا أُخْتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا».
‘তার অন্য বোন যেন তাকে স্বীয় চাদর পরিধান করায়।’[17]
(৪) ঈদগাহে গমন: ঈদের মাঠে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং ভিন্ন পথে ফিরে আসা সুন্নাত। হযরত জাবির (রাযি.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) ঈদের দিন পথ পরিবর্তন করতেন।
(৫) সালাত আদায় করা: মহানবী (সা.) ঈদের দিন সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঈদগাহে জামাআতবদ্ধ হয়ে প্রথম রাকআতে সাত ও পরের রাকআতে পাঁচটি তাকবীর দিয়ে দুই রাকআত হালাত আদায় করতে হবে। অতঃপর ইমাম সাহেব শরীয়তের বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ সংবলিত খুতবা প্রদান করবেন। হাদীসে আছে,
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْـخُدْرِيِّ، قَالَ: «كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَخْرُجُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَالْأَضْحَىٰ إِلَى الْـمُصَلَّىٰ، فَأَوَّلُ شَيْءٍ يَبْدَأُ بِهِ الصَّلاَةُ، ثُمَّ يَنْصَرِفُ، فَيَقُومُ مُقَابِلَ النَّاسِ، وَالنَّاسُ جُلُوسٌ عَلَى صُفُوفِهِمْ فَيَعِظُهُمْ، وَيُوصِيهِمْ، وَيَأْمُرُهُمْ، فَإِنْ كَانَ يُرِيْدُ أَنْ يَقْطَعَ بَعْثًا قَطَعَهُ، أَوْ يَأْمُرَ بِشَيْءٍ أَمَرَ بِهِ، ثُمَّ يَنْصَرِفُ».
‘হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাযি.) বলেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন রসুলুল্লাহ (সা.) ঈদগাহে গিয়ে সর্বপ্রথম সালাত আদায় করতেন। অতঃপর তিনি মানুষের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন। এমতাবস্থায় লোকজন তাদের সারিতে বসে থাকত। মহানবী (সা.) তাদের উপদেশ দিতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ের নির্দেশ দিতেন। যদি তিনি কোথাও কোনো সৈন্যদল পাঠাতে ইচ্ছা করতেন, তাহলে পাঠাতেন। অথবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্দেশ দিতে চাইলে নির্দেশ প্রদানের পর (স্বীয় গৃহে) প্রত্যাবর্তন করতেন।’[18]
(৬) সাদাকাতুল ফিতর প্রদান: ঈদুল ফিতরের দিনে অন্যতম প্রধান করণীয় হচ্ছে, ফিতরা প্রদান করা। নর-নারী, ছোট-বড়, স্বাধীন-গোলাম সকলের ওপর ফিতরা আদায় করা ফরয। এ মর্মে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদীস:
عَنِ ابْنِ عُمَرَ k: «أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ فَرَضَ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ عَلَىٰ كُلِّ حُرٍّ، أَوْ عَبْدٍ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَىٰ مِنَ الْـمُسْلِمِيْنَ».
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযি.) বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের ফিতরা এক সা’ খেজুর অথবা যব প্রদান করা প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ-মহিলা, ছোট-বড়, স্বাধীন-গোলাম সকলের ওপর ফরয করেছেন।’[19]
প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির পক্ষ থেকে এক সা’ পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য ফিতরা হিসাবে প্রদান করতে হবে। হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাযি.) বলেন,
«كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ».
‘আমরা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে এক সা’ খাদ্য দ্রব্য ফিতরা হিসাবে প্রদান করতাম। আর আমাদের খাদ্য দ্রব্য ছিল যব, কিসমিস, পনীর এবং খেজুর।’[20]
ঈদের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করতে হবে। হযরত ইবনে ওমর (রাযি.) বলেন,
«أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ أَمَرَ بِزَكَاةِ الفِطْرِ قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ».
‘মহানবী (সা.) ঈদের মাঠে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।’[21]
তবে ঈদের ১/২ দিন পূর্বে প্রদান করাও বৈধ। হযরত নাফে’ (রাযি.) বলেন, ইবনে ওমর (রাযি.) ঈদুল ফিতরের এক-দুই দিন পূর্বে ফিতরা আদায় করতেন।[22]
হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে ‘যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে ফিতরা আদায় করবে তার ফিতরা কবুল হবে। আর যে সালাতের পরে দেবে সেটা সাধারণ দান হিসাবে গণ্য হবে (সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে ইবনে মাজাহ)।
সাদাকাতুল ফিতর প্রবর্তনের কারণ
- দরিদ্রদের প্রতি করুণা এবং তাদেরকে ঈদের দিনে হাত পাতা থেকে বিরত রেখে ধনীদের সাথে তাদেরকেও আনন্দ-উৎসবে শরীক করা। যাতে করে ঈদ হয় সমাজের সকলের জন্য।
- সাদাকাতুল ফিতরের মাধ্যমে উদারতা ও সহমর্মিতার মত উত্তম চারিত্রিক গুণাবলি মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়।
- সিয়াম পালন অবস্থায় ঘটে যাওয়া ত্রুটি-বিচ্যুতি, অনর্থক কথাবার্তা ও কর্ম এবং পাপ কাজ থেকে সায়েম (রোযাদার)-কে মুক্ত ও পবিত্র করার জন্যই সাদাকাতুল ফিতরের বিধান প্রবর্তিত হয়েছে। হাদীসে এসেছে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, রসুলুল্লাহ (সা.) সিয়াম পালনকারীকে সিয়াম অবস্থায় সংঘটিত অশ্লীলতা, অনর্থক কর্ম থেকে পবিত্র করার জন্য এবং দরিদ্রদের খাদ্য দানের জন্য ফিতরা ফরয করেছেন (আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ, দারাকুতনী, হাকেম)।’
- সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের মাধ্যমে রমজান মাসের সিয়াম পূর্ণরূপে পালন, রাতের ইবাদত সমাপন এবং অন্যান্য সৎ আমল সহজ করে দিয়ে আল্লাহ যে সুযোগ দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায় করা হয়।
ঈদুল ফিতরের শিক্ষা
অখণ্ড মুসলিম মিল্লাত নানা দল ও মতে বিশ্বাসী হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে পারষ্পরিক মায়া-মমতা ও ভালোবাসা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে পারষ্পরিক ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহ-বিবাদ। ঈদুল ফিতর যাবতীয় হিংসা-দ্বেষ ও কলহ-বিবাদ ভুলে গিয়ে ঐক্য ও সংহতির বন্ধন সুদৃঢ় করতে শিক্ষা দেয়। দল ও মত নির্বিশেষে ঈদগাহে সমবেত হয়। একই কাতারে দাঁড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সালাত আদায় করে। ঈদের সালাতের এ মহামিলন থেকে মুসলমানগণ ‘একই উম্মাহ’ হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা লাভ করে থাকে। ঈদগাহে মহামিলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়াই ঈদুল ফিতরের অন্যতম প্রধান শিক্ষা।[23]
উপসংহার
পরিশেষে আমরা বলতে পারি, মুসলিম জাতির আনন্দ-উৎসব ‘ঈদ’ শুধু অনুষ্ঠান সর্বস্ব নয়; বরং ঈদ পালিত হয় আনন্দ ও কর্মের সমন্বয়ে। এটা অনন্য ভাবধারা ও পৃথক জৌলুস নিয়ে পালিত হয়। তাৎপর্য, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং আচরণে মুসলিম উম্মাহ্র এ ঈদ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। পূত-পবিত্র, ক্লেদ ও খাদ বিমুক্ত অনাবিল পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় মুসলিম মিল্লাতের ঈদ। এ উৎসব ধর্মের নির্মল সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে; থাকে পুণ্যকর্মের সংযোগ। এতে থাকে না কোনো হৈ হুল্লোড়, পাপাচার ও ব্যভিচার।
প্রত্যেক মুসলিমকে তাই ঈদুল ফিতরের এই দিনটির মত বছরের প্রতিটি দিন সৎকর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে অতিবাহিত করার চেষ্টা করা উচিত। এ দিনের মতই সারা বছর নির্ঝঞ্ঝাট জীবন-যাপনের অঙ্গিকারাবদ্ধ হওয়া উচিত। আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব, তাৎপর্য, শিক্ষা অনুধাবন করত সে মোতাবেক চলার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেন,
‘দীন কাঙ্গালের ঘরে ঘরে আজ দেবে যে সব তাগিদ
কোথা সে মহান শক্তি-সাধক আনিবে যে পুনঃ ঈদ?
ছিনিয়া আনিবে আসমান থেকে ঈদের চাঁদের হাসি
ফুরাবে না কভু যে হাসি জীবনে, কখনো হবে না বাসি।
সমাধির মাঝে গণিতেছি দিন, আসিবেন তিনি কবে?
রোজা এফতার করিব সকলে, সেই দিন ঈদ হবে’।
[1] (ক) অগ্রপথিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জানুয়ারি ২০০০, পৃ. ২৩; (খ) অধ্যাপক সাঈদুর রহমান, মাহে রামাযানের শিক্ষা ও তাৎপর্য, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকা (১৪০৫ হি. / ১৯৮৫ খ্রি.), পৃ. ৫৪
[2] (ক) ড. ইবরাহীম আনীস ও সহযোগীবৃন্দ, আল-মু’জামুল ওয়াসীত, আল-মাকতাবুল ইসলামিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক, খ. ২, পৃ. ৬৯৪; (খ) আবু হাবীব সাঈদী, আল-কামূসুল ফিকহী, আল-উলূমুল ইসলামিয়া, করাচি, পাকিস্তান, পৃ. ২৬৬
[3] অগ্রপথিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জানুয়ারি ২০০০, পৃ. ২৩
[4] অগ্রপথিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জানুয়ারি ২০০০, পৃ. ২৩-২৪
[5] অধ্যাপক দেওয়ান মুহাম্মদ আজরফ, ইসলাম ও মানবতাবাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (দ্বিতীয় প্রকাশ: ১৪১৫ হি. = ১৯৯৫ খ্রি.), পৃ. ৭৭-৭৮
[6] অগ্রপথিক, পৃ. ২৪
[7] আল-কাসীম ছাত্রসংস্থা, আল-মুখতার লিল হাদীস ফী শাহরি রামাযান, পৃ. ৪৪২
[8] আবু দাউদ, আস-সুনান, আল-মাকতাবাতুল আসরিয়া, বয়রুত, লেবনান, খ. ৪, পৃ. ২৯৫, হাদীস: ১১৩৪
[9] ইবনে তায়মিয়া, ইকতিযাউ সিরাতিল মুস্তাকীম লি-মুখালিফাতি আসহাবিল জাহীম, দারু আলিমিল কিতাব, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১৯ হি. = ১৯৯৯ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ১২৩
[10] ইবনে উসায়মীন, আয-যিয়াউল লামি’ মিনাল খুতাব ওয়াল জাওয়ামি’, আর-রিয়াসাতুল আম্মা লি-ইদারাতিল বুহুসিল ইলমিয়া, রিয়াদ, সউদী আরব (প্রথম সংস্করণ: ১৪০৮ হি. = ১৯৮৮ খ্রি.), পৃ. ১৮৩
[11] আল-বায়হাকী, আস-সুনানুল কুবরা, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান, খ. ৯, পৃ. ৩৯২, হাদীস: ১৮৮৬২
[12] অগ্রপথিক, পৃ. ২৩
[13] মাহে রামাযানের শিক্ষা ও তাৎপর্য, পৃ. ৫৪-৫৫
[14] অধ্যাপক দেওয়ান মুহাম্মদ আজরফ, ইসলাম ও মানবতাবাদ, পৃ. ৮২
[15] আল-কুরআন, সুরা আল-বাকারা, ২:১৮৫
[16] (ক) আল-বুখারী, আস-সহীহ, দারু তওকিন নাজাত, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪২২ হি. = ২০০১ খ্রি.), খ. ৫, পৃ. ১৩৩, হাদীস: ৪২০৫; (খ) মুসলিম, আস-সহীহ, দারু ইয়াহইয়ায়িত তুরাস আল-আরবী, বয়রুত, লেবনান, খ. ১, পৃ. ২৮৭, হাদীস: ৩৭৯
[17] (ক) আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ১, পৃ. ৭২, হাদীস: ৩২৬; (খ) মুসলিম, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ৬০৬, হাদীস: ৮৯০
[18] (ক) আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ১৮, হাদীস: ৯৫৬; (খ) মুসলিম, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ৬০৫, হাদীস: ৮৮৯
[19] (ক) আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ১৩০, হাদীস: ১৫০৪; (খ) মুসলিম, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ৬৭৭-৬৭৮, হাদীস: ৮৮৪
[20] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ১৩১, হাদীস: ১৫০৬
[21] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ১৩১, হাদীস: ১৫০৯
[22] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ২, পৃ. ১৩১, হাদীস: ১৫১১
[23] অগ্রপথিক, পৃ. ৩৩