জামেয়া ওয়েবসাইট

রবিবার-৪ঠা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি-৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নামাজে জানাজা

আল্লামা যাকারয়িা আল-আযহারী

 

الحمد لله وكفىٰ، وسلام علىٰ عباده الذين اصطفىٰ، أما بعد!

أعوذ بالله من الشيطان الرجيم، بسم الله الرحمٰن الرحيم: [وَاِنَّ مِنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَمَنْ يُّؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكُمْ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْهِمْ خٰشِعِيْنَ لِلّٰهِ١ۙ لَا يَشْتَرُوْنَ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ ثَمَنًا قَلِيْلًاؕ ۰۰۱۹۹] {آل عمران: 199}.

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، «أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ نَعَىٰ لِلنَّاسِ النَّجَاشِيَّ فِي الْيَوْمِ الَّذِيْ مَاتَ فِيْهِ، فَخَرَجَ بِهِمْ إِلَى الْـمُصَلَّىٰ، وَكَبَّرَ أَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتٍ» {رواه مسلم: ٩٥١}.

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী দীনী দরসেগাহ আজিজ মাদরে ইলমী আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনের সম্মানিত সভাপতি, ওস্তাদে মুহতারাম আল্লামা আমিনুল হক সাহেব (হাফি.), উপস্থিত দূর-দূরান্ত থেকে আগত সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম মুরব্বি ও যুবক ভাইয়েরা!

হামদ ও সালাতের পরে আমি আপনাদের সামনে কুরআনের একটি আয়াতের সামান্য অংশ তেলাওয়াত করেছি। সাথে সাথে সরকারে দুজাহান তাজেদারে মদীনা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা, আহমাদ মুজতবা, সাইয়িদুল মুরসালীন (সা.)-এর অসংখ্য হাদীস থেকে একটি হাদীস পাঠ করেছি। পরওয়ারদেগারে আলম তাওফীক দান করলে, আপনারা দোয়া করলে, আমি নির্ধারিত বিষয় বস্তুর ওপর অল্পসময়ে কিঞ্চিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

আজকে আমার নির্ধারিত বিষয়বস্তু হলো নামাজে জানাজা সংক্রান্ত। মূলত নামাজে জানাজা সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা আজকের এই মহতি মজলিসে সময়ের সংকীর্ণতার কারণে সম্ভব নয়। তবুও তার কয়েকটি দিক নিয়ে আপনাদের সামনে আলোচনা করার প্রয়াস পাবো। আর এই সংক্ষিপ্ত আলোচনাকে আমি তিনটি ধাপে সাজানোর চেষ্টা করবো।

প্রথম ধাপে আমরা আলোচনা করবো যে, এই নামাজের উৎপত্তি কখন থেকে হয়েছে। এই নামাজ কি শুধুমাত্র আমাদের শরীয়তের বিধান, নাকি আমাদের পুর্ববর্তী শরীয়তেও জানাজার বিধান ছিলো?

কিতাবে অধ্যয়ন করলে আমরা পাই যে, এই জানাজার নামাজ মানবজাতির পিতা, সর্বপ্রথম নবী সাইয়িদুনা হযরত আদম (আ.)-এর যুগ থেকেই আরম্ভ হয়েছে। আদম (আ.) এর যখন ইন্তিকাল হলো, তখন জিবরাইল (আ.)-এর নেতৃত্বে ফেরেশতাদের একটি দল দুনিয়াতে আগমন করলেন। এবং হযরত আদম (আ.)-এর জন্য কাফন-দাফন ও জানাজার ব্যবস্থা করলেন। তারপরে একটি কবর খনন করে তাঁকে দাফন করলেন।

দাফন করার পরে ফেরেস্তারা হযরত আদম (আ.)-এর ছেলে হযরত শীস (আ.)-কে বললেন যে, যদি আগামীতে আপনাদের কোনো সন্তান-সন্ততি মারা যায়, তাহলে তাদের এভাবে কাফন-দাফন ও গোসলের ব্যবস্থা করবেন, আর জানাজার নামাজের ব্যবস্থা করবেন। এভাবে হযরত আদম (আ.)-এর যুগ থেকেই জানাজার নামাজের উৎপত্তি ঘটেছে।

আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া কিতাবে তার বর্ণনা এভাবে এসেছে,

قَالَ: مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ: وَلَـمَّا حَضَرَتْ آدَمَ الْوَفَاةُ عَهِدَ إِلَىٰ ابْنِهِ شِيثَ، وَعَلَّمَهُ سَاعَاتِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَعَلَّمَهُ عِبَادَاتِ تِلْكَ السَّاعَاتِ، وَأَعْلَمَهُ بِوُقُوْعِ الطُّوْفَانِ بَعْدَ ذَلِكَ. قَالَ: وَيُقَالُ إِنَّ أَنْسَابَ بَنِيْ آدَمَ الْيَوْمَ كُلُّهَا تَنْتَهِيْ إِلَىٰ شِيْثَ، وَسَائِرُ أَوْلَادِ آدَمَ غَيْرَهُ انْقَرَضُوْا وَبَادُوْا، وَاللهُ أَعْلَمُ.

وَلِـمَا تُوُفِّيَ آدَمُ n، وَكَانَ ذَلِكَ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ جَاءَتْهُ الْـمَلَائِكَةُ بِحَنُوْطٍ، وَكَفَنٍ مِنْ عِنْدِ اللهِ b مِنَ الْـجَنَّةِ، وَعَزُّوا فِيْهِ ابْنَهُ، وَوَصِيَّهُ شِيْثَ n.

قَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ، وَكَسَفَتِ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ سَبْعَةَ أَيَّامٍ بِلَيَالِيْهِنَّ.

وَقَدْ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْإِمَامِ أَحْمَدَ: حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنِ الْـحَسَنِ، عَنْ عُتَيٍّ هُوَ ابْنُ ضَمْرَةَ السَّعْدِيُّ، قَالَ: رَأَيْتُ شَيْخًا بِالْـمَدِيْنَةِ يَتَكَلَّمُ، فَسَأَلْتُ عَنْهُ. فَقَالُوْا: هَذَا أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ، فَقَالَ: إِنَّ آدَمَ لَـمَّا حَضَرَهُ الْـمَوْتُ قَالَ لِبَنِيهِ: أَيْ بَنِيَّ إِنِّي أَشْتَهِي مِنْ ثِمَارِ الْـجَنَّةِ، قَالَ: فَذَهَبُوْا يَطْلُبُوْنَ لَهُ فَاسْتَقْبَلَتْهُمُ الْـمَلَائِكَةُ، وَمَعَهُمْ أَكْفَانُهُ وَحَنُوْطُهُ، وَمَعَهُمُ الْفُئُوْسُ وَالْـمَسَاحِي وَالْـمَكَاتِلُ، فَقَالُوْا لَـهُمْ: يَا بَنِيْ آدَمَ! مَا تُرِيْدُوْنَ وَمَا تَطْلُبُوْنَ؟ أَوْ مَا تُرِيْدُوْنَ وَأَيْنَ تَطْلُبُونَْ؟ قَالُوْا: أَبُوْنَا مَرِيْضٌ، وَاشْتَهَىٰ مِنْ ثِمَارِ الْـجَنَّةِ، فَقَالُوْا لَـهُمْ: ارْجِعُوْا فَقَدْ قُضِيَ أَبُوْكُمْ، فَجَاءُوْا، فَلَمَّا رَأَتْهُمْ حَوَّاءُ عَرَفَتْهُمْ فَلَاذَتْ بِآدَمَ، فَقَالَ: إِلَيْكِ عَنِّيْ، فَإِنِّي إِنَّمَا أُتِيْتُ مِنْ قِبَلِكِ فَخَلِّيْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ مَلَائِكَةِ رَبِّي فَقَبَضُوْهُ، وَغَسَّلُوْهُ، وَكَفَّنُوْهُ، وَحَنَّطُوْهُ، وَحَفَرُوْا لَهُ، وَأَلْـحَدُوْهُ، وَصَلَّوْا عَلَيْهِ، ثُمَّ دَخَلُوْا قَبْرَهُ فَوَضَعُوْهُ فِيْ قَبْرِهِ، ثُمَّ حَثَوْا عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالُوْا: يَا بَنِيْ آدَمَ! هَذِهِ سُنَّتُكُمْ. إِسْنَادٌ صَحِيْحٌ إِلَيْهِ. [1]

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.)-এর বর্ণনায় এসেছে, হযরত জিবরাইল (আ.)-কে হযরত আদম (আ.)-র ছেলে শীস (আ.) বললেন, যে আপনি জানাজার নামাজের ইমামতি করুন। তখন হযরত জিবরাইল (আ.) বললেন, أَنْتَ مُقَدَّمٌ অর্থাৎ আপনিই জানাজার ইমামতির হকদার, আপনার অধিকারই বেশি। কারণ তিনি আপনার পিতা। অতঃপর শীস (আ.) জানাজার ইমামতি করলেন।

সুতরাং স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, আদম (আ.)-এর সময়কাল থেকেই জানাজার নামাজের সূচনা হয়েছে।

ইবনুল আসীর (রহ.) বলেন,

قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: لَـمَّا مَاتَ آدَمُ قَالَ شِيْثٌ لِـجَبْرَائِيْلَ: صَلِّ عَلَيْهِ، فَقَالَ: تَقَدَّمْ أَنْتَ فَصَلِّ عَلَىٰ أَبِيْكَ، فَكَبَّرَ عَلَيْهِ ثَلَاثِيْنَ تَكْبِيْرَةً، فَأَمَّا خَمْسٌ فَهِيَ الصَّلَاةُ، وَأَمَّا خَمْسٌ وَعِشْرُوْنَ فَتَفْضِيْلًا لِآدَمَ. [2]

দ্বিতীয় ধাপে আমরা আলোচনা করবো যে, আমাদের ইসলাম ধর্মে জানাজার বিধান কখন থেকে আরম্ভ হয়েছে।

তো হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যে যখন আল্লাহর হাবীব (সা.) সাহাবাদের নিয়ে মদীনা শরীফে হিজরত করলেন, তখন হিজরতের পরে প্রথম হিজরীতে তিনি সর্বপ্রথম সাহাবাদের নিয়ে জানাজার নামাজ আদায় করেছেন। আল্লাহর রসুল (সা.)-এর সাহাবী হযরত বারা ইবনে মা’রুর (রাযি.) নবীজি (সা.)-এর মদীনা অভিমুখে হিজরতের একমাস পূর্বে ইন্তেকাল করেছিলেন। রসুল (সা.) হিজরতের পরে সাহাবাদেরকে নিয়ে তাঁর কবরে হাজির হন এবং সাহাবাদেরকে নিয়ে জানাজার নামাজ আদায় করেন।

সুতরাং ইসলামে জানাজার নামাজ প্রথম হিজরীতেই সংঘটিত হয়।

وَرَوَىٰ يَحْيَىٰ بْنُ عَبْدِ اللهِ بنِ أَبِيْ قَتَادَةَ، عَنْ أُمِّهِ، عَنْ أَبِيْهِ، أَنَّ الْبَرَاءَ بنَ مَعْرُوْرٍ أَوْصَىٰ بِثُلُثِهِ لِلنَّبِيِّ ﷺ وَكَانَ أَوْصَىٰ بِثُلُثٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَأَوْصَىٰ بِثُلُثٍ لِوَلَدِهِ، فَقِيْلَ لِلنَّبِيِّ ﷺ، فَرَدَّهُ عَلَى الْوَرَثَةِ، فَقَدِمَ النَّبِيُّ ﷺ، وَقَدْ مَاتَ فَسَأَلَ، عَنْ قَبْرِهِ فَأَتَاهُ فَصَفَّ عَلَيْهِ وَكَبَّرَ وَقَالَ: «اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَأَدْخِلْهُ الْـجَنَّةَ وَقَدْ فَعَلْتَ».[3]

أَخْرَجَ الْـحَاكِمُ فِي «الْـمُسْتَدْرَكِ» بِسَنَدٍ حَسَنٍ مُرْسَلٍ، عَنْ قتادَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ: أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ حِيْنَ قَدِمَ الْـمَدِيْنَةَ سَأَلَ عَنِ الْبَرَاء بْنِ مَعْرُوْرٍ، فَقَالُوْا: تُوُفِّيَ، وَأَوْصَىٰ بِثُلُثِ مَالِهِ لَكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَأَوْصَىٰ أَنْ يُوَجَّهَ إِلَى الْكَعْبَةِ لَـمَّا احْتُضِرَ، فَقَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ: «أَصَابَ الْفِطْرَةَ وَقَدْ رَدَدْتُ ثُلُثَهُ عَلَىٰ وَلَدِهِ»، ثُمَّ ذَهَبَ فَصَلَّىٰ عَلَيْهِ، فَقَالَ: «اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ وَأَدْخِلْهُ جَنَّتَكَ، وَقَدْ فَعَلْتَ».[4]

وَكَانَتْ وَفَاتُهُ h فِيْ صَفَرٍ قَبْلَ قُدُوْمِ الرَّسُوْلِ ﷺ الْـمَدِيْنَةَ بِشَهْرٍ. [5]

তৃতীয় ধাপে আমরা জানাজার নামাজ সহীহ-শুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্তাবলি রয়েছে তা আলোচনা করবো।

  1. জানাজার নামাজ সহীহ হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম শর্ত মৃত ব্যক্তি অবশ্যই মুসলমান হতে হবে। ফলে মুসলমান ব্যাতীত কোনো কাফের-অমুসলিম জানাজার যোগ্য নয়। কারণ হলো, জানাজার নামাজ যদিও বিভিন্ন শর্তাবলির ক্ষেত্রে নামাজের সামঞ্জস্য রাখে, কিন্তু মূলত জানাজার নামাজ মৃত ব্যক্তির জন্য ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা। অর্থাৎ যারা জানাজার নামাজ আদায় করেন, সেসব মুসল্লীরা মূলত মৃত ব্যক্তির জন্য সুপারিশ ও দোয়া করেন যে, আল্লাহ এই মুসলমান ব্যক্তির জীবনের সকল ত্রুটি ক্ষমা করে দিন। এবং তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকান দান করুন। সুতরাং বুঝা গেলো যে, জানাজা হলো দোয়া বা ইস্তিগফার। আর কোনো কাফের বা অমুসলিম মুসলমানের দোয়ার যোগ্য নয়। তাই জানাজা বিশুদ্ধ হওয়ার প্রথম শর্ত হলো, মৃত ব্যক্তি মুসলমান হওয়া।
  2. পবিত্র হতে হবে। বিধায় কোনো নাপাক বা অপবিত্র ব্যক্তির জানাজার নামাজ শুদ্ধ হবে না।
  3. যেই মায়্যিত বা মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ আদায় করা হচ্ছে, তার লাশ লোকসম্মুখে উপস্থিত থাকতে হবে। কারণ জানাজার নামাজে বাহ্যত শিরকের সামঞ্জস্যতা রয়েছে। কারণ জানাজার নামাজে একটি লাশকে সামনে রেখে দোয়া করা হয়, যেরূপ হিন্দুরাও দেবতাকে সামনে রেখে উপাসনা ও পূজা করে থাকে। ফলে সালাতুল জানাজা শিরকের সামঞ্জস্যতা রাখে। তবুও ইসলাম জানাজের বিধান আরোপের হিকমত বা প্রজ্ঞা হলো, একথার শিক্ষাদান যে একজন মুসলমান যেরূপ তার জীবিতাবস্থায় সম্মান প্রদর্শনের যোগ্য ছিলেন, মৃত্যুর পরেও তিনি সম্মান প্রদর্শনের যোগ্য। যেমন- আমরা স্বীয় মুসলমান ভাইদেরকে সালাম প্রদান করে সম্মান প্রদর্শন করি। মাতাপিতা ও উস্তাজদের সম্মান করি। ফলে আমার উস্তাজ বা মাতাপিতা যেরূপ জীবিতাবস্থায় সম্মানের যোগ্য। তারা যদি মৃত্যুবরণ করেন তখনও সম্মানের যোগ্য।

একটি শিক্ষণীয় বিষয় হলো: অনেক সময় দেখা যায় যে, মানুষকে জীবিতাবস্থায় মূল্যায়ন করা হয় না, সম্মান করা হয়না। কিন্তু মৃত্যুর পরে সবাই আক্ষেপ ও আফসোস করে যে লোকটা খুবই সৎ ও ভালো ছিলো। জীবিতাবস্থায় কারো মনে তার প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ থাকলেও মৃত্যুর পরে তা আর বাকি থাকে না। আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে ইরশাদ করেছেন,

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِاِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْاِيْمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِيْ قُلُوْبِنَا غِلًّا لِّلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا رَبَّنَاۤ اِنَّكَ رَءُوْفٌ رَّحِيْمٌؒ۰۰۱۰

‘যে আল্লাহ! আমার যেসব ভাইয়েরা আমার পূর্বে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, আপনি দয়া করে তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। তাদের প্রতি আমাদের অন্তরে কোনো হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না। নিশ্চয়ই আপনি দয়ালু ও ক্ষমাশীল।’[6]

ফলে বুঝা গেলো যে, মৃত ব্যক্তিদের জন্য জানাজা তাদের প্রতি সম্মানসূচক হয়। সুতরাং যার প্রতি আমি সম্মান প্রদর্শন করবো সে যদি আমার সামনে উপস্থিত না থাকে, তাহলে আমি কাকে সম্মান করবো?।

একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও তার উত্তর। কেউ প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারেন যে, জানাজার নামাজে আমরা যে মায়্যিতকে সামনে রেখে নামাজ আদায় করি তা তো শিরকের সামঞ্জস্যতা রাখে। যেভাবে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের দেবতাকে সামনে রেখে পূজা-উপাসনা করে।

জবাবে বলবো যে, আমরা যেরূপ নামাজ পড়ি, চাই পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ হোক বা ওয়াজিব ও নফল। সকল প্রকারে নামাজেই রুকু, সিজদা রয়েছে। রুকু, সিজদা আদায় না করলে নামাজ হবে না। পক্ষান্তরে যদি কেউ জানাজার নামাজে রুকু, সিজদা আদায় করে তবে তা শিরকে পরিণত হবে।

তাই আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন যে, জানাজার নামাজে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া, সুফারিশ ও সম্মান প্রদর্শন করা যেতে পারে, কিন্তু সিজদা, রুকু দেওয়া যাবেনা। কেননা তখন তা শিরকের সামঞ্জস্যে পরিণত হবে।

তাই জানাজার নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সমীপে মুসলমান ভাইয়ের তরে দোয়া করা হয়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির লাশের সামনে সিজদা করা হলে তা মূলত তার লাশের জন্য হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। তাই রুকু-সিজদা ইত্যাদি নিষেধ।

মাজারে সিজদা দেওয়া

পরিতাপের বিষয় হলো, আমাদের অনেক ভাইয়েরা দরগাহ-মাজার ইত্যাদিতে গিয়ে সিজদা দেয়। তারা মূলত মৃত ব্যক্তির লাশকে সামনে রেখে সিজদা দেয়। যদিও তারা বলে যে আমরা সিজদা মৃত ব্যক্তি বা পীর ও মাজারকে করছি না বরং আমরা আল্লাহকে সিজদা করছি। তবুও সেখানে সিজদা শিরকে পরিণত হয়। তাই সিজদা করা হারাম। স্মারকথা হলো, জানাজার লাশ সামনে উপস্থিত থাকতে হবে।

গায়েবি জানাজা

আমাদের দেশে ও বিভিন্ন দেশে গায়েবি জানাজার একটি প্রথা রয়েছে। আমাদের অনেকেই গায়েবি জানাজা আদায় করে। যে বিদেশে পিতা বা পুত্র বা অন্য কারো মৃত্যু হয়েছে। আর তার আত্মীয় বা সমর্থকেরা স্বীয় দেশে দলবদ্ধ ভাবে মাঠে বা মসজিদে তার আত্মীয় বা আপনজনের গায়েবি নামাজ আদায় করে। এটা আমাদের দেশে প্রথা হয়ে গেছে।

আমাদের দেশের কিছু আলেমরাও এ জানাজাকে বৈধ বলেছেন এবং নিজেদের দাবিকে হাদীস দ্বারা প্রমাণিত করার ব্যার্থ চেষ্টা চালিয়েছেন।

তারা নিজেদের মতের পক্ষে একটি হাদীস দ্বারা দলিল পেশ করেন যে, সিহাহ সিত্তায় কোনো এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) ইরশাদ করেছেন, যে হাবশা যার বর্তমান নাম ইতিওপিয়া বা আবিসিনায় যা আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত। আবিসিনিয়ার বাদশাদেরকে নাজাশী বলে উপাধী দেওয়া হয়। তৎকালীন সেখানকার বাদশা আসআমা (রাযি.)-এর কাছে যখন আল্লাহর রসুল (সা.) ষষ্ঠ হিজরীতে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে বার্তা প্রেরণ করলেন। তখন হযরত আসআমা ওই চিঠির প্রতি খুবই সম্মান প্রদর্শন করলেন আর চিঠিকে চুমু দিলেন। আর তিনি যেই সিংহাসনে ছিলেন, তা থেকে নিচে নেমে বসে গেলেন। আর আল্লাহর রসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ প্রেরণ করে বললেন যে, আপনি আমাকে যেই কালিমার দাওয়াত প্রেরণ করেছেন আমি তা গ্রহণ করে নিলাম। আর বললেন, أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ  অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর সত্য রসুল ও বার্তাবাহক।

আরও বললেন যে, ইয়া রসুলুল্লাহ! যখন আপনার চাচাতো ভাই হযরত জাফর ইবনে আবু তালেব (রাযি.) তাঁর সাথীদের নিয়ে হাবশার দিকে হিজরত করেছিলেন। তখন আমি তাঁর হাতে আপনার বায়আত গ্রহণ করেছিলাম।

এ হাবশার বাদশা হযরত আসআমা যখন (রাযি.) মৃত্যুবরণ করেন তখন আল্লাহর রসুল (সা.) মদীনা শরীফে ছিলেন। আল্লাহর রসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে মৃত্যু সংবাদ দিয়ে বললেন যে তোমরা আমার পেছনে এসো, আমরা মাঠে যাবো আসআমা মৃত্যুবরণ করেছে আমরা তাঁর জানাজার নামাজ আদায় করবো। আর আল্লাহর রসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে পেছনে চার তাকবীরের সহিত আসআমার জানাযার নামায আদায় করলেন।

এ হাদীস সেসব ওলামায়ে কেরামের স্বপক্ষে দলীল যারা বলে যে গায়েবি জানাজা জায়েজ। যে আল্লাহ রসুল (সা.) তখন মদীনা শরীফে ছিলেন আর আসআমা মৃত্যুবরণ করেছেন আবিসিনিয়ায়। মদীনা থেকে আবিসিনিয়া অনেক দূরে কিন্তু আল্লাহর রসুল (সা.) আসআমার গায়েবি জানাযার নামায আদায় করলেন। সুতরাং গায়েবি জানাজা যেহেতু সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত তাই আমরাও গায়েবি জানাযার নামায আদায় করি।

আমাদের জবাব

  1. কিন্তু আমরা বলবো যে শুধু হাদীসের দিকে লক্ষ করলে হবে না বরং আল্লাহর রসুল (সা.)-এর কাজ ও আমালের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আমরা হাদীস গ্রন্থে অন্বেষন করলে জানতে পারি যে, এমন অনেক কাজ রয়েছে যা আল্লাহর রসুল রসুল (সা.) বিশেষ কোনো কারণে পুরো জীবনে শুধু একবার করেছেন। আর পরে কোনো দিনই করেননি। তদ্রূপ গায়েবি জানাজার নামাজও বিশেষ কোনো কারণে আল্লাহর রসুল (সা.) শুধুমাত্র একবার আদায় করেছেন।
  2. দেখুন, আসআমা সাহাবী কিনা তাতেও মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু জানাজার সময় আল্লাহর রসুলের বিপুল পরিমানে সাহাবী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। যাদের অনেকেই পরে বিভিন্ন জিহাদে শাহাদাত বরণ করেছেন। কিন্তু আল্লাহর রসুল (সা.) কোনো সাহাবীর গায়েবি জানাজা পড়েছেন বলে কোনো হাদীস বা ইতিহাসের গ্রন্থে উল্লেখ নেই। এমনকি আপনারা জানেন যে, বি’রে মাঊনা নামক যুদ্ধে আল্লাহর রসুলের এমন ৭০জন সাহাবী শহিদ হয়েছিলেন, যারা তাঁর নিকট অত্যন্ত স্নেহভাজন, হাফেজ ও কুরআনের কারী ও বিজ্ঞ আলিম ছিলেন। আল্লাহর রসুল (সা.) এই ঘটনার কারণে এতই মর্মাহত হয়েছিলেন যে যারা এসব শোহাদার রক্তে নিজেদের হাত রঙ্গিন করেছিলো, আল্লাহর রসুল (সা.) তাদের নাম ধরে ধরে বদদোয়া করেছেন। আর একমাস যাবত কুনুতে নাজিলা পাঠ করেছেন। কিন্তু বি’রে মাঊনার যুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী কোনো সাহাবীর গায়েবি জানাজা আল্লাহর রসুল (সা.) পড়েছেন বলে পাওয়া যায়নি।
  3. চার ইমামের মধ্যে ইমাম আবু হানীফা (রহ.), ইমাম মালিক (রহ.) ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-এর বিশুদ্ধ মতানুসারে গায়েবি জানাজার নামাজ জায়েজ নেই। আর ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এ ব্যাপারে দুইটি মত প্রদান করেছেন, একটি পক্ষে অন্যটি বিপক্ষে। সুতরাং চার মাযহাবের ইমামদের মতানুযায়ীও গায়েবি জানাজার নামাজ জায়েজ নেই। যদিও ইমাম শাফেয়ী (রহ.) কর্তৃক গায়েবি জানাজার পক্ষে মত রয়েছে, কিন্তু তিনিও কোনো দিন এ ধরনের নামাজ আদায় করেননি। ফলে বুঝা গেলো, চার ইমামের কেউই এ নামাজ আদায় করেননি।
  4. আল্লাহর রসুল (সা.) এর সাহাবা, খোলাফায়ে রাশেদার কেউই গায়েবি জানাজার নামাজ আদায় করেননি। হ্যাঁ আল্লাহর রসুল (সা.) একবার আদায় করেছেন। সুতরাং রসুল (সা.) চিরাচরিত সুন্নত হলো, মায়্যিতকে সামনে রেখে জানাজার নামাজ আদায় করা।
  5. আর গায়েবি জানাজার পক্ষের হাদীসটি তিনজন সাহাবী থেকে বর্ণিত। হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.), হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাযি.), হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযি.)। আর লক্ষ করা উচিত যে, হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) এ ঘটনার পরে ৫৯ বছর, আর হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাযি.) ৭০, আর হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযি.) ৪৮ বছর জীবিত ছিলেন। কিন্তু এ হাদীসগুলোর কোনো বর্ণনাকারী কোনো দিন গায়েবি জানাজা পড়েছেন বলে উল্লেখ নেই।
  6. তাছাড়া হাদীস বিশারদগণ নিজেদের কিতাবাদিতে লিখেছেন যে আল্লাহর রসুল (সা.) যখন আসআমার গায়েবি জানাজা আদায় করেছিলেন তখন তা গায়েবি জানাজা ছিলনা বরং তা ছিল হুজুরি জানাজা অর্থাৎ জানাজার সময় তার লাশ আল্লাহর রসুল (সা.)-এর সামনে উপস্থিত ছিল। তার কারণ হলো আল্লাহ তাআলা রসুল (সা.)-এর মুজিযাস্বরূপ হযরত আসআমার লাশের যে খাটিয়া ছিল তা আল্লাহর রসুল (সা.)-এর সামনে উপস্থিত করে দিয়েছিলেন।

মুজিযা আল্লাহ প্রদত্ত দান

আল্লাহর রসুল (সা.)-কে আল্লাহ তাআলার এমন কিছু মুজিযা দান করেছিলেন যে অনেক দূরের বিষয়ও তাঁর কাছে একদম নিকটবর্তী মনে হতো। উদাহরণস্বরূপ মিরাজের ঘটনার পরে আল্লাহর রসুল (সা.)-কে মক্কার মুশরিকরা প্রশ্ন করেছিলেন যে আপনি তো বললেন আপনি মসজিদুল আকসায় গিয়েছেন আচ্ছা বলুনতো দেখি সেই মসজিদের দরজা, জানালা কয়টি?

অবশ্যই এটি ছিলো একটি জটিল প্রশ্ন। আপনারাই বলুন, আজ আপনারা পটিয়া মাদরাসার মাহফিলে উপস্থিত হয়েছেন। সময়মতো মসজিদে নামাজও আদায় করবেন। আপনারা কি মসজিদের জানালা এবং দরজার সংখ্যা কত, তা গণনার প্রয়োজন মনে করবেন?

নবীজি (সা.) মিরাজের রজনীতে ওখানে নামাজ আদায় করেছিলেন, কিন্তু তিনি তো বায়তুল মুকাদ্দাসের দরজা-জানালা গণনা করেননি।

ফলে এ প্রশ্ন শুনে তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে গেলেন। তখন আল্লাহ তাআলা নিজের হাবিবকে বললেন আমার হাবিব! আপনি মর্মাহত হবেননা। আপনার এই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিতে হয় তার ব্যবস্থা আমি করে দেব।

আল্লাহ তাআলা মুজিযাস্বরূপ আল্লাহর সামনে বায়তুল মুকাদ্দাসকে উপস্থিত করে দিলেন আল্লাহর হাবিব বায়তুল মুকাদ্দাসকে স্বচক্ষে দেখে দেখে সেখানকার জানালা দরজার সংখ্যা তাদের সামনে বিবরণ দিলেন।

যেভাবে উক্ত ঘটনায় আল্লাহ তাআলা বায়তুল মুকাদ্দাসকে রসুল (সা.)-এর সামনে এনে দিয়েছিলেন তদ্রূপ আসআমার সেই লাশের খাটিয়াকেও আল্লাহ তাআলা রসুল (সা.)-এর সামনে উপস্থিত করে দিয়েছিলেন।

সুতরাং এটা গায়েবি জানাযা নয়, বরং হুজুরি জানাজা। সুতরাং এ হাদীস দিয়ে দলীল উপস্থাপন করা শুদ্ধ হবে না।

সুতরাং বুঝা গেল এটি নবীজি (সা.)-এর বৈশিষ্ট্য ও মুজিযা। বর্তমান যারা গায়েবি জানাজার পক্ষে কথা বলে তাদের মধ্যে কি মুজিযার যোগ্যতা রয়েছে। আজকাল কেউ কি বলতে পারবে যে যেই অনুপস্থিত মানুষের জানাজার নামাজ পড়েছি তার লাশের খাটিয়া আমার সামনে অদৃশ্যভাবে উপস্থিত আছে।

একটি সন্দেহের নিরসন

এখন প্রশ্ন হলো আল্লাহর রসুল (সা.) আসআমার গায়েবি জানাজা কেন আদায় করেছিলেন আমরা যদি চারটা হাদীসের দিকে লক্ষ করি তাহলে আমাদের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর সুন্দর ভাবে প্রকাশ পায়।

তার কারণ হলো চার হাদীসের ব্যাখ্যাকারীগণ বলেছেন, যে তিনি যখন হাবশায় ইন্তেকাল করেন তখন ওই নগরীতে কোনো মুসলমান এমন ছিলনা, যে আসআমার জানাজার নামাজ পড়াবে।

তাছাড়া যেসব মুসলমান আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন তারাও মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।

তাই আল্লাহ রসুল (সা.) মদীনা শরীফ থেকে আসআমার গায়েবি জানাজা আদায় করেছিলেন।

বিজ্ঞান ও কুরআন সাংঘর্ষিক নয়

বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তি আল্লাহ রসুল (সা.)-এর বৈশিষ্ট্যগুলো বুঝা এবং অনুধাবন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত সহজ করে দিচ্ছে। আপনি নিজের ঘরে বসে বসে পটিয়া মাদরাসায় বসেই সৌদি আরবে যারা হজব্রত পালন করছেন, আপনি তাদেরকে দেখতে সক্ষম হচ্ছেন।

আমাদের পটিয়া মাদরাসার মাহফিল হচ্ছে, এটা অনেকেই ফেসবুক একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভের মাধ্যমে দেখছে এবং এদের পাশে যে সুন্দর দৃশ্য রয়েছে চারিপাশে সবাই দেখতে সক্ষম হচ্ছে এগুলো শুধুমাত্র বিজ্ঞানের কারণেই।

সুতরাং বুঝা গেল এগুলো বিজ্ঞানের কারণেই হয় তাহলে বিজ্ঞান কোনোভাবে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয়, বিজ্ঞান ইসলামের মুখাপেক্ষী, ইসলাম বিজ্ঞানের মুখাপেক্ষী নয়।

কত অনেক রয়েছে সময়ের স্বল্পতার কারণে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে আল্লাহ পাক রব্বুল আনন্দ সবাইকে আমল করার তওফিক দান করুন।

আলোচক: মুহাদ্দিস ও নায়েবে নাজেমে তা’লিমাত, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

অনুলিখন: মুহাম্মদ ইসামুদ্দীন

জামায়াতে উলা

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

[1] ইবনে কসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, দারু ইয়াহইয়ায়িত তুরাস আল-আরাবী, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪০৮ হি. = ১৯৮৮ খ্রি.), খ. ১, পৃ. ১০৯-১১০

[2] ইবনুল আসীর, আল-কামিল ফিত তারীখ, দারুল কিতাব আল-আরবী, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১৭ হি. = ১৯৯৭ খ্রি.), খ. 1, পৃ. 48

[3] আয-যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, মুআস্সিসাতুর রিসালা লিত-তাবাআ ওয়ান নাশর ওয়াত-তাওযী’, বয়রুত, লেবনান (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪০৫ হি. = ১৯৮৫ খ্রি.), খ. 1, পৃ. ২68

[4] আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহাঈন, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১১ হি. = ১৯৯০ খ্রি.), খ. 1, পৃ. 505, হাদীস: 1305

[5] মুসা আল-আযিমী, আল-লুলুউল মাকনূন ফী সীরাতিন নাবিয়িল মামূন, আল-মাকতাবাতুল আমিরা লিল ই’লান ওয়াত তাবাআ ওয়ান নাশর ওয়াত তাওযী’, কুয়েত সিটি, কুয়েত (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩২ হি. = ২০১১ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ১২৮

[6] আল-কুরআন, সুরা আল-হাশর, ৫৯:১০

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ