জামেয়া ওয়েবসাইট

রবিবার-৪ঠা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি-৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের পটভূমি

ড. এমাজউদ্দীন আহমদ

 

পাকিস্তানের নেতারা পাকিস্তানের বহুবাচনিক সমাজে (Plural Society) ঐক্যবদ্ধ সাংস্কৃতিক নীতি (Assimilationist Cultural Policy) প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত কেন গ্রহণ করলেন? যে পূর্ব পাকিস্তানে সমগ্র পাকিস্তানের ৫৪ শতাংশ জনসমষ্টি বসবাস করত এবং যেখানে উর্দুর প্রচলন ছিল না, সেখানকার জনসমষ্টিতে এর ফলে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো চিন্তাভাবনা না করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত কেন গ্রহণ করলেন? যেহেতু পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের বেশির ভাগের ধর্ম ইসলাম, তাই কি তারা ভাবলেন যে ইসলামী জীবনব্যবস্থা তথা ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐতিহ্যের মাধ্যম হিসেবে উর্দুকে উপস্থাপিত করলে জনগণ বিনাদ্বিধায় তা মেনে নেবে? এসব কথা ভাবলে যেমন বিস্মিত হই, তেমনি হই দুঃখিত। ইতিহাসের গতি-প্রকৃতির দিকে লক্ষ করলে ক্ষমতাশ্রয়ী, অদূরদর্শী নেতারা এ ভ্রান্ত পথে কখনো পা বাড়াবেন না। বেশি দূরে যেতে হবে না। মধ্যপ্রাচ্যের দিকে তাকালেই তাঁরা দেখতে পেতেন, আরব বিজয়ীরা ইরান দখল করলে ইরানের প্রায় সব অধিবাসী আরবদের কাছ থেকে ইসলাম গ্রহণ করে আনন্দের সঙ্গে বটে, কিন্তু আরবি ভাষাকে গ্রহণ করেনি। ইরান বিজয়ের পরে প্রায় ৩০০ বছর আরবি ভাষা ইরানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে কার্যকর থাকলেও শেষ পর্যন্ত ফার্সির বিজয় সুনিশ্চিত হয়। কুরআন-হাদীসের ভাষা আরবিকে পর্যন্ত ইরানিরা প্রত্যাখ্যান করে। তুরস্কের ইতিহাসেও তাই। তুরস্কেও দীর্ঘদিন আরবি ছিল রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু কালে তুরস্ক থেকেও আরবিকে ফিরে যেতে হয়। ধর্মের প্রতি প্রায় প্রত্যেক মানুষের রয়েছে একধরনের আত্মিক যোগাযোগ ও গভীর সংশ্লিষ্টতা। ধর্মের জন্য যুগে যুগে মানুষ নিজের জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছে। ধর্মের অবমাননা সবার কাছেই অসহ্য। কিন্তু নিজের ভাষার প্রতি দুর্বলতা আরও গভীর। ভাষাকে তাই কোনো সময় কোনো ব্যক্তি ধর্মের বিকল্প হিসেবে চিন্তা করে না। ধর্ম ধর্মের স্থানে, মাতৃভাষা তার স্থানে। ইরান ও তুরস্কে মুসলমানরা কুরআন-হাদীসের প্রতি গভীর বিশ্বাস পোষণ করেও আরবিকে প্রত্যাখ্যান করতে দ্বিধাবোধ করেননি। এ সত্য পাকিস্তানের নেতাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়নি কেন?

বাংলাদেশেও রয়েছে ইরান ও তুরস্কের মতোই নিদর্শন। সেন রাজাদের আমলে এ দেশেও প্রবর্তিত হয় সংস্কৃতের রাজত্ব। সংস্কৃত ছিল রাষ্ট্রভাষা। এ ভাষায়ই কাব্য-সাহিত্যের চর্চা হয়েছে। সংস্কৃতির সর্বস্তরে ছিল সংস্কৃত ভাষার একাধিপত্য। কিন্তু সেন রাজাদের দিন শেষ হলে, এমনকি সেনদের আমলেও রাজধানীর বাইরের গ্রামাঞ্চলে জনগণ বরাবর চর্চা করেছে বাংলার। এ দেশে যুগ যুগ ধরে ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছেন বহু মনীষী। পীর, ওলামা-মাশায়েখ কুরআন-হাদীসের কথা জনগণের মধ্যে ব্যাখ্যা করেছেন। এ দেশের অমুসলিমরা দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করেছে, কিন্তু আরবি ভাষা গ্রহণ করেনি। পীর-মুরশিদ যাঁরা ইসলাম প্রচার করেছেন তাঁরাও এ দেশি ভাষা লিখে জনসাধারণকে ধর্মের নামে আহ্বান জানিয়েছেন। এ দেশেও প্রায় কয়েক শ বছর রাষ্ট্রভাষারূপে বিরাজ করেছিল ফার্সি। জনগণের কাছে তাও গ্রহণযোগ্য হয়নি। বাংলাকে আঁকড়ে থেকেই তারা মুসলমান হয়েছে। এমনকি সমাজে পাকিস্তানের শাসকরা শুধু ইসলামী ঐক্যের সঙ্গে জনগণের ওপর উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন জোর করে। তা যে কার্যকর হওয়ার নয়, তা তাঁরা অনুধাবন করলেন না কেন?

এর সঠিক উত্তর হয়তো কোনো দিন মিলবে না। তবে এটুকু বলা যায়, পাকিস্তানের নীতিনির্ধারণের এ অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের মূল নিহিত রয়েছে অবিভক্ত ভারতের ধর্মকেন্দ্রিক, সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িকতা দোষে দুষ্ট কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের নেতৃত্বের অনৈতিহাসিক চিন্তাভাবনায়। ১৯২৯ সালের নেহরু রিপোর্টে সর্বপ্রথম এ সমস্যার জন্ম দেওয়া হয় যখন জওহরলাল নেহরু ঘোষণা করেন যে স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রভাষা হবে হিন্দি। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে হিন্দিকে বেছে নেওয়া হয় এ কারণে যে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনসমষ্টির শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐতিহ্যের মাধ্যম হলো হিন্দি। ভাষার প্রশ্নে ভারতে তখন থেকেই শুরু হয় বিতর্কের ঝড় এবং ১৯৪০ সালে গৃহীত লাহোর প্রস্তাবের পরেও বিভিন্নভাবে তা অব্যাহত থাকে। ভারতের মুসলমানদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ওঠে, মুসলমানদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও পরিপোষণের কী হবে? তাই তাঁরা দাবি করেন, মুসলমানদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মাধ্যম উর্দুকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এ দুইয়ের মধ্যস্থতা করে রায় দিয়েছিলেন, আমাদের রাষ্ট্রভাষা হবে হিন্দুস্তানি। আরবি বর্ণমালায় লিখিত হলে তা হবে উর্দু এবং দেব নাগরি বর্ণমালায় লিখিত হলে তা হবে হিন্দি। এভাবে সংকীর্ণতার তীর ঘেঁষে, জনতার প্রতি উদাসীন থেকে শিল্প-সাহিত্যের কোনো বিবেচনা মনে না রেখে শুধু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর ভর করে রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় সর্বভারতীয় পর‌্যায়ে এবং উদ্যোগ গ্রহণ করেন গান্ধী, নেহরু ও জিন্নাহর মতো নেতারা। এসব প্রভাবশালী নেতার জন্য হাজারো প্রতিবাদ সত্ত্বেও স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রভাষা হয় হিন্দি এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হয় উর্দু।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে সেই সূত্র ধরেই, স্বাধীন পাকিস্তানে, পরাধীন ভারতের সাম্প্রদায়িক টানাপড়েনের দুর্ভেদ্য জঞ্জালকে পুঁজি করেই পাকিস্তানের নেতারা জোর করে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর উর্দুকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যদিও তাঁরা জানতেন পূর্ব পাকিস্তানের লেখক, বুদ্ধিজীবী তথা সাধারণ জনগণ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভাষার প্রশ্নটি বিবেচনা করবে না। কারণ ভাষার প্রশ্নে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্টের আগেই বেশ কজন কবি ও লেখক সুস্পষ্ট মতপ্রকাশ করেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। ১৯৪৩ সালে মোহাম্মদী পত্রিকায় পূর্ব বাংলার খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী আবুল মনসুর আহমদ ‘পূর্ব পাকিস্তানের জবান’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে লিখেছিলেন, ‘উর্দু নিয়ে এই ধস্তাধস্তি না করিয়া আমরা সোজাসুজি বাংলাকেই যদি পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় ভাষারূপে গ্রহণ করি, তবে পাকিস্তান প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা মুসলিম বাংলার শিক্ষিত সম্প্রদায় নিজেরাই পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক ও শিল্পকে রূপায়ণে হাত দিতে পারিব। জাতির যে অর্থ, শক্তি সময় ও উদ্যম উর্দু প্রবর্তনে অপব্যয় হইবে তাহা যদি আমরা শিল্প-সাহিত্যে নিয়োজিত করি তবে পূর্ব পাকিস্তানকে আমরা শুধু ভারতে নয়, সমগ্র জগতের একটি শ্রেষ্ঠ দেশে পরিণত করিতে পারিব’ (মাসিক মোহাম্মদী, কার্তিক ১৩৫০)

১৯৪৬ সালে মাসিক সওগাতে (আশ্বিন, ১৩৫৪) পূর্ব বাংলার খ্যাতনামা কবি ফররুখ আহমদ ‘পাকিস্তান: রাষ্ট্রভাষা ও সাহিত্য’, শীর্ষক এক প্রবন্ধে লেখেন, ‘পাকিস্তানের অন্তত পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা যে বাংলা হইবে এ কথা সর্বজনসম্মত হইলেও আমাদের এই পূর্ব পাকিস্তানেরই কয়েকজন তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তি বাংলা ভাষার বিপক্ষে এমন অর্বাচীন মত প্রকাশ করিয়াছেন যাহা নিতান্তই লজ্জাজনক। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষায় রূপান্তরিত করিলে ইসলামী ঐতিহ্যের সর্বনাশ হইবে এই তাহাদের অভিমত। কী কুৎসিত পরাজয়ী মনোবৃত্তি এর পেছনে কাজ করিয়াছে এ কথা ভাবিয়া আমি বিস্মিত হইয়াছি।’

১৯৪৭ সালের জুন মাসে বাংলা ভাষা বিষয়ক প্রস্তাব শিরোনামে আবদুল হক অত্যন্ত জোরেশোরে বাংলা ভাষার দাবি তুলে ধরেন। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কেন আমাদের দেশে ইংরেজি-উর্দু-হিন্দি বলিতে বাধ্য থাকিব? আমাদের দেশে যারা বাস করে সেই সব ইংরেজ বা উর্দু-হিন্দিভাষীরা কেন বাংলা লিখতে বাধ্য হবে না?’ তিনি অবশ্য বাঙালির আত্মবিস্মৃতির ইঙ্গিত দিয়ে হীনম্মন্যতা জয়ের আহ্বান জানিয়ে বলেন, উর্দুর প্রতি কিছু ব্যক্তির দুর্বলতার মূলে রয়েছে জাতীয় পর‌্যায়ে আমাদের প্রস্তুতির অভাব। তাঁর নিজের কথায়, ‘বাঙালির জাতীয়তাবোধ এখনো পরিপূর্ণভাবে স্ফুরিত হয়নি। তার জাতীয় মর‌্যাদাবোধ এখনো অত্যন্ত কাঁচা। তার পূর্ণ জাতীয় ব্যক্তিত্ববোধ এখনো অপ্রতিষ্ঠিত।’

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র এক মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমদ এবং অধ্যাপক আবুল কাসেমের তিন নিবন্ধের সমন্বয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয় ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা: বাংলা না উর্দু?’ শিরোনামে। এসব শক্তিশালী লেখায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জাতীয় পর‌্যায়ে আন্দোলন রচনার আহ্বান সংশ্লিষ্ট ছিল। এ প্রসঙ্গে ড. এনামুল হকের যুক্তিপূর্ণ, তথ্যবহুল প্রবন্ধটি—‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার পরিপ্রেক্ষিতে উর্দু ও বাংলা’ (নভেম্বর ১৯৪৭) উল্লেখযোগ্য। এ প্রবন্ধে তিনি ইসলামী ঐতিহ্যের পরিপ্রেক্ষিতে উর্দুকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণের যুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে লিখেছেন, পাকিস্তান আন্দোলনে ধর্মীয় বিষয়টি সবার প্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু হলেও এর অন্তর্নিহিত প্রশ্নটি ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন। শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতাসহ বিভিন্ন স্বার্থকে সম্মানজনকভাবে রক্ষা করার স্বাধীনতা ছাড়া আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার বিঘ্নিত হয়। আর আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন উঠলেই সেখানে নিজেদের প্রশ্নটিও বড় হয়ে দেখা দেয়। ফলে পূর্ব পাকিস্তানিদের নিজের স্বার্থের কথা ভাবাটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি মনে করতেন, রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে পাকিস্তানি নেতাদের মনোভাব বাঙালির জীবনীশক্তির মূলে আঘাত করবে। তিনি মন্তব্য করেন, ‘উর্দু বহিয়া আনিবে পূর্ব পাকিস্তানবাসীর মরণ—রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মৃত্যু। এ রাষ্ট্রীয় ভাষার সূত্র ধরিয়া সংগঠন, ব্যবসা-বাণিজ্যে ইত্যাদি সর্ব বিষয়ে পূর্ব পাকিস্তান হইবে উত্তর ভারতীয় পশ্চিম পাকিস্তানি উর্দুওয়ালাদের সংগঠন ও শোষণের ক্ষেত্র।’

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, আবুল কালাম সামসুদ্দীন প্রমুখ পণ্ডিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার যথার্থতা সম্পর্কে লিখেছেন জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ-নিবন্ধ। সবার লেখায় এ সত্যটি পরস্ফুটিত হয়ে ওঠে যে পূর্ব পাকিস্তানে ইসলামী ঐতিহ্যের নামে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হবে অন্যায়, অসংগত, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দাপটে হয়তো খানিক দিন তা টিকিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু সচেতন জনগণের বিরোধিতার মুখে সে ব্যবস্থা কোনো দিন স্থায়ী হতে পারে না। এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের লেখাজোখা, চিন্তাভাবনা, মতবাদ ও সিদ্ধান্ত দেশের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত হয়ে জাতীয় মানস তৈরি হয় নতুন সৃষ্টির জন্য। প্রস্তুত হয় ভাষা সংগ্রামের ক্ষেত্র। বুদ্ধিজীবীদের যুক্তিবিচার মাথায় নিয়ে তারুণ্য হয় উদ্দীপ্ত। রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার অন্ধকার, বিশেষ করে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পরের অবস্থায় ক্রমে ক্রমে অপসারিত হতে শুরু করে তারুণ্যের সংগ্রামী চেতনার আলোকে। তারুণ্য প্রস্তুত হয় ঐক্যবদ্ধ, সংহত ও অজেয় প্রাণশক্তির প্রাচুর্যে। তাই দেখা যায়, চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি থেকে এ দেশের চিন্তাবিদ যুক্তিজীবীদের কলমের সরু খোঁচায় যে স্বপ্নের সূচনা হয়, পঞ্চম দশকের প্রথম ভাগেই সংগ্রামী তরুণদের তাজা রক্তের স্পর্শে তা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। একুশে ফেব্রুয়ারি সেই স্বপ্নের জীবন্ত ইতিহাস। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়।

লেখক: সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ