বুধবার-২১শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি-২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীদের পাতা ও শিক্ষা পরামর্শ বিভাগ

পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শায়খ আলী তানতাভী (রহ.)-এর মূল্যবান উপদেশ

[প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা! আপনাদের বার্ষিক পরীক্ষা খুবই সন্নিকটে। পরীক্ষা সামনে আসলে সাধারণত শিক্ষার্থীরা অন্য কোন বিষয়ে পড়তে চায় না। তাই পরীক্ষা বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ লেখা আপনাদের সামনে পেশ করছি। লেখাটি পড়ার পূর্বে লেখকের সামন্য পরিচয় উল্লেখ করা সমুচিত মনে করছি।

শায়খ আলী ইবনে মুসতাফা আত-তানতাভী (রহ.) সমকালীন আরব মুসলিমবেশ্বের ক্ষণজন্মা এক ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯০৯ সালে দিমাশকের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুফতি মুস্তাফা তানতাভী রহ. দিমাশকের ইফতা বোর্ডের প্রধান মুফতি ছিলেন। শায়খ আলী তানতাভী (রহ.) উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত একটি আলোকিত পরিবারে জন্মলাভের সুবাদে বাল্যকাল থেকেই পড়া-লেখায় মনোনিবেশ করেন। আরবি, তুর্কি ফারসি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি ইসলামি আইনশাস্ত্রসহ জ্ঞানের বহু শাখায় বুপত্তি অর্জন করেন। ইসলাম মুসলমানদের পক্ষে সুদীর্ঘ নব্বই বছর নিরবচ্ছিন্ন কলম সংগ্রামের পর ১৮জুন ১৯৯৯ সালে প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। জাতির জন্য তিনি চল্লিশেরও বেশি মূল্যবান গ্রন্থ, কয়েকশ গবেষণাধর্মী সাহিত্য প্রবন্ধ রেখে যান। আল্লাহ তাঁকে জান্নতুল ফিরদাউসের উচ্চু মকাম দান করুন, আমীন।]

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা! শায়খ আলী তানতাভী (রহ.) এই মূল্যবান উপদেশগুলো প্রদান করেছিলেন তাঁর এক বন্ধুর পুত্রকে। যিনি তোমাদের মতো শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থী ছিলো। তাঁর বন্ধুর পুত্র উক্ত লেখা থেকে অনেক উপকৃত হয়েছিল। আশা করি আপনারাও উপকৃত হবেন। তাহলে আর দেরি না করে পড়ুন:

প্রারম্ভিকা

একদিন মাগরিবের কিছুক্ষণ পূর্বে আমার এক বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। তাঁর পুত্র আমাকে সালাম করল। তখন তার চেহরা ছিল হলদে বর্ণের। চেহারায় দুর্বলতার ছাপ স্পষ্ট অনুভব করলাম। আমি বললাম, ভালো আছো তো? উত্তরে তার পিতা বললেন, তার কোন সমস্যা নেই। সে ঘুমিয়ে ছিল তো! তাই এমন দেখাচ্ছে। আমি বললাম, অসময়ে ঘুমাবে কেন? উত্তরে তার পিতা বললেন, যেন রাত্রিজাগরণ করতে পারে। সে প্রতি রাতে দু’টা পর্যন্ত জাগ্রত থাকে।

আমি বললাম, কেন?

উত্তরে তার পিতা বললেন, যেন পরীক্ষার প্রস্তিুত নিতে পারে।

আমি বললাম, আল্লাহর পানাহ! এটা তো পরীক্ষায় ফেল করার সহজতম পথ।

আমি আমার ছাত্র জীবনে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চতর) অনেক অসংখ্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। কোন পরীক্ষায় ফেল করিনি। বরং আমি সকল পরীক্ষায় কৃতকার্য ও অগ্রবর্তীদের মধ্যে থাকতাম। পরীক্ষার দিনগুলোতে অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ঘুমাতাম।

ছেলেটি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, আপনি বেশি ঘুমাতেন?

আমি বললাম, হ্যাঁ, এ ছাড়া আর কী? পরীক্ষা একটি প্রতিযোগিতা। তুমি কি কোন ক্রীড়াবিদ, মুষ্ঠিযোদ্ধা কিংবা কুস্তিগীরকে প্রতিযোগিতার রাতগুলোতে জাগ্রত থেকে নিজের দেহকে দুর্বল করতে দেখেছ? না শক্তিশালী ও উদ্যমী অবস্থায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য পনাহার ও বিশ্রাম করতে দেখ?

সে বলল, তাহলে পড়বো কখন?

আমি বললাম, পড়ার সময় অনেক আছে। বিশ্রাম গ্রহণ করে উদ্যমের সাথে এক ঘণ্টা পড়া-লেখা করা ক্লান্ত ও তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় চার ঘণ্টা পড়া-লেখার চেয়ে অধিক ফলদায়ক। কারণ, ক্লান্ত অবস্থায় পড়া মুখস্থ করলে মনে হবে তুমি মুখস্থ করেছো, বাস্তবে তা মুখস্থ হয় না। সে বলল, এই যদি হয় আপনার প্রথম উপদেশ তাহলে আপনার দ্বিতীয় উপদেশ কী?

আমি বললাম, প্রথমে নিজেকে চিনো, তারপর কীভাবে পড়বে তা নির্ধারণ করো।

কিছু কিছু ছাত্র ‘দৃষ্টিসম্পন্ন’ হয়। পরীক্ষার হলে কিতাবের পৃষ্ঠা ও প্রশ্নের স্থান তাদের চোখের সামনে ভাসতে থাকে। তারা তা স্মরণ করত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে।

আবার কিছু ছাত্র ‘শ্রবণসম্পন্ন’ হয়। শিক্ষককের আওয়াজ তার কানে বাজতে তাকে। তারা সেগুলো স্মরণ করতঃ পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিপিবদ্ধ করে।

অতএব তুমি যদি ‘দৃষ্টিসম্পন্ন’ হয়ে থাকো তাহলে একাকি বসে পড়ো এবং গভীর অধ্যয়নে মনোনিবেশ করো। পক্ষান্তরে তুমি যদি ‘শ্রবণসম্পন্ন’ হয়ে থাকো তাহলে তোমার মতো একজন সহপাঠীর সাথে তাকরার করো। তাকে অনুরোধ করো সে যেন তোমাকে পাঠগুলো পড়িয়ে শোনায়।

সে বলল, আমি ‘দৃষ্টিসম্পন্ন’ না ‘শ্রবণসম্পন্ন’ তা কীভাবে জানবো?

আমি বললাম, আমি এমন দশটি শব্দ লিখবো যেগুলোর মধ্যে কোন সামাঞ্জস্য নেই। যেমন- বই, মিনার, সতের, হারুনুর রশীদ। আমি সেই শব্দগুলোকে মাত্র একবার তোমাকে পড়ে শোনাব। সেগুলোর মধ্য থেকে যা তোমার স্মরণে থাকে সেগুলো তুমি লিখবে। এরপর আবার এমন দশটি শব্দ লিখব এবং তোমাকে একবার সেগুলো দেখাবো। সেগুলোর মধ্য থেকে যা তোমার স্মরণে থাকে তুমি সেগুলো লিখবে। শোনা দ্বারা তোমার যদি বেশি স্মরণ থাকে তাহলে তুমি ‘শ্রবণসম্পন্ন’। অন্যথায় তুমি ‘দৃষ্টিসম্পন্ন’।

সে বলল, আপনার তৃতীয় উপদেশ কী?

আমি বললাম, পাঠসমূহের বৈচিত্রের প্রতি লক্ষ রেখে নিজের জন্য একটি রুটিন তৈরি করবে। আমার ধারণা মতে, পড়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো, প্রথমে পুরো কিতাবটি একবার দ্রুত পড়ে নিবে। তারপর কিতাবের এক এক পরিচ্ছেদ বুঝে বুঝে পড়বে। নিজে নিজে পড়ার সময় অবশ্যই তোমার হাতে পেন্সিল রাখবে। গুরুত্বপূর্ণ বাক্যের নিচে পেন্সিল দিয়ে দাগ দেবে। অপ্রয়োজনীয় ব্যাখ্যার ওপর হালকা দাগ দেবে। আর সমন্বিত অনুচ্ছেদের দিকে তীর চিহ্ন দিয়ে ইঙ্গিত করবে। তারপর আসে পুনরাবৃত্তির পর্ব। কিতাবটি হাতে নিয়ে নির্জন পথে হাঁটতে থাকো। এক একটি করে কিতাবের সবক’টি বিষয় স্মরণে আনতে চেষ্টা করো। কল্পনা করো, তুমি এখন পরীক্ষার হলে, আর এ প্রশ্নের উত্তর তোমার কাছে চাওয়া হয়েছে। যদি বুঝতে পার, উত্তর তোমার স্মরণে আছে, তাহলে সামনে অগ্রসর হও। অন্যথায় কিতাব খুলে শুধু দাগ দেয়া বাক্য ও অনুচ্ছেদগুলো আবার পড়ো। তাহলে ভুলে যাওয়া বিষয়গুলো স্মরণে আসবে। আর যদি দেখ, বিষয়টি তোমার কিছুই স্মরণ আসছে না, তাহলে পুরো পরিচ্ছেদটি পুনরায় পড়ো।

পরীক্ষাভীতি পরিহার করো,সময়কে ভাগ করে পড়ো

ভয় পেয়ো না। পরীক্ষাভীতি নির্বুদ্ধিতা, ক্রটি ও ভীরুতার কারণে হয়। পরীক্ষাভীতির উৎস মাত্র একটা জিনিস। কিছু ছাত্র মনে করে কিতাব দীর্ঘ আর সময় কম। তারা পুরো কিতাব অল্প সময়ে শেষ করতে চায়। যখন দেখে যে, তা সম্ভব হচ্ছে না, তখন তাদের মধ্যে এই আতঙ্ক কাজ করে যে, পরীক্ষা সন্নিকটে, অথচ পড়া মুখস্থ করা শেষ হয়নি।

তাদের উদাহরণ হচ্ছে সেই ব্যক্তির মতো যে পায়ে হেঁটে ‘মিযযা’ (সিরিয়ার রাজধানী দিমাশকের একটি স্থানের নাম) থেকে বিমানবন্দরে যেতে চায়, অথচ তার হাতে সময় আছে মাত্র দু’ঘণ্টা। সে নিজেকে বলে, আমি কীভাবে পৌঁছবো? অথবা সে পাগলের মতো দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে এক পর্যায়ে মাটিতে পড়ে যায়, সে কখনো পৌঁছতে পারবে না। পক্ষান্তরে সে যদি সময় ও পায়ের কদম ভাগ করে এবং নিজেকে বলে, প্রতি মিনিটে আমার মাত্র একশ কদম হাঁটতে হবে, তারপর এই পরিকল্পনা অনুসারে নিশ্চিন্তে হাঁটে, তাহলে ‘মিযযা’ থেকে বিমানবন্দরের দু’ঘণ্টায় অবশ্যই পৌঁছতে পারবে এবং নিরাপদে পৌঁছতে পারবে।

কিছু কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলের সামনে দাঁড়িয়ে কিতাবের সবগুলো বিষয় মস্তিষ্কে উপস্থিত করতে চেষ্টা করে। যখন দেখে যে, সবগুলো বিষয় স্মরণে আসছে না তখন ধরে নেয়, তার পাঠ মুখস্থ হয়নি। তখন অস্থির ও উৎকণ্ঠিত হয় এবং ঘাবড়ে যায়। এটি মোটেও উচিত নয়। কারণ অনেক সময় মানুষ সববিষয় একসাথে স্মরণ করতে পারে না। যেমন মনে করো, তুমি তোমার অনেক বন্ধুর নাম জানো। কিন্তু তুমি কি এক মুহূর্তে সকলের নাম ধারাবাহিকভাবে বলতে পারবে? না, কখনো না। কিন্তু যদি সে তোমার সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, কিংবা তোমার সামনে তার বিবরণ দেয়া হয়, তাহলে তার নাম তোমার স্মরণে আসবে। সুতরাং এ মুহূর্তে স্মরণ না থাকার অর্থ এই নয় যে, তা তোমার স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেছে।

কোন পাঠ পড়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নাও

কোন পাঠ পড়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিবে। অথবা দূরবর্তী কোন বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হবে, তাহলে অবশ্যই তা তোমার মনে গেঁথে যাবে। কোন কোন ছাত্র পাঠ একবার পড়ার পর পুনরায় পড়ে, এভাবে কয়েকবার পড়ে, সে মনে করে এটি উত্তম পদ্ধতি। অথচ কাজটা হয়েছে সেই ব্যক্তির মতো যে ক্যামরার মাধ্যমে কোন ছবি তুলে, তারপর ফিল্ম না ঘুরিয়েই দ্বিতীয়বার ছবি তুলে, তাহলে হবে কী? এটাই হবে যে, উভয় ছবি নষ্ট হবে।

এমন কোন কিছু উপভোগ করবে যা তোমাকে পরীক্ষার চিন্তা থেকে বিরত রাখবে

পরীক্ষার রাতে বিশ্রাম নিবে। কিতাবের পড়া রেখে দিয়ে কোন হাল্কা গল্পে চোখ বুলাবে। কিংবা তোমার পরিবার বা বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ করবে। কিংবা এমন কোন কিছু উপভোগ করবে যা তোমাকে পরীক্ষার চিন্তা থেকে বিরত রাখবে। সম্ভব হলে পরীক্ষার রাতে ৯ ঘণ্টা বা ১০ ঘণ্টা ঘুমাবে। এই আশঙ্কা করবে না যে, জ্ঞাত বিষয়গুলো তোমার মাথা থেকে হারিয়ে যাবে। কারণ স্মৃতিশক্তির বিষয়টি বড় বিষ্ময়কর। বিশেষত যারা যৌবনের শুরুভাগে থাকে। শৈশব স্মৃতিতে যা অঙ্কন করা হয় তা ভুলা যায় না। গতরাতে আমি কী খেয়েছি তা ভুলে যাই। কিন্তু ৪০/৪৫ বছর পূর্বে যা ঘটেছিল তা স্মরণে থাকে। এখনো যেন তা দেখছি।

পরীক্ষার্থী হিসেবে তোমার করণীয় কী?

জেনে রেখো, পরীক্ষা একটি মানদণ্ড। তা কখনো সঠিক হয়, আবর কখনো ভুলও হয়। উত্তরপত্র নিরীক্ষণকারী একজন মানুষ। তিনি যখন স্বস্তি অনুভব করেন, উত্তরপত্র গভীরভাবে দেখেন। ক্লান্ত হলে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখেন না। তিনি যেমন উদ্যমী থাকেন, তদ্রূপ ক্লান্তও হন। নির্ভুল যেমন করেন, তেমনি ভুলও করেন। আরাম ও ক্লান্তি এবং সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির অবস্থার পরিবর্তনের কারণে একই রকম দুই খাতায় তাঁর রায় দুই রকম হয়ে যায়। যেমন এক নিরক্ষণকারীকে পরীক্ষা করা হলো এভাবে যে, তাকে কিছু উত্তরপত্র দেওয়া হলো। তিনি তা যাচাই করে নম্বর বসালেন। এরপর নম্বরগুলো মোছে তার কাছে কাগজগুলো আবার দেওয়া হলো। এবার তিনি পূর্বের নম্বরে বেশকম করলেন। এমনকি শতকরা বিশ নম্বরও বেশকম হলো। আরেক নিরীক্ষককে এভাবে পরীক্ষা করা হলো যে, তাঁকে বলা হলো, এ বিষয়ে পূর্ণ মার্ক পাওয়ার জন্য আপনি নিজেই একটি উত্তরপত্র তৈরি করুন। তিনি তৈরি করলেন। এরপর অন্যজননের হাতে সামন্য পরিবর্তন করে উত্তরপত্রটি পুনরায় লিখিয়ে তার কাছে পেশ করা হলো, তিনি অনেক কম নম্বর দিলেন।

বস্তুত নিরীক্ষকের হাতে ‘স্বর্ণের নিক্তি’ থাকে না। আবার নিরীক্ষক ষাট থেকে সত্তর বছরের বৃদ্ধও হতে পারেন। কিন্তু তাঁর দেওয়া মার্কের তারতম্যের ওপর নির্ভর করে ছাত্রের কৃতকার্যতা ও অকৃতকার্যতা। এখন তোমার করণীয় কী?

তোমার করণীয় হলো

  1. তুমি হস্তলিপি স্পষ্ট করবে। কেননা, অসুন্দর হস্তাক্ষর ও অস্পষ্ট লেখা অনেক সময় নিরীক্ষণকারীর ক্রোধ ও ঘৃণা উদ্রেক করে। ফলে খাতায় তার রায় মন্দ হয় এবং তিনি পরীক্ষার্থীকে ফেল করে দেন।
  2. বেশি বেশি শিরোনাম দিয়ে লেখবে। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক কিছু লেখা থেকে বিরত থাকবে। কখনো শিক্ষার্থী উত্তরপত্রে প্রসঙ্গত এমন বিষয় লিখে যা প্রশ্নে চাওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে সে তার জ্ঞান প্রকাশ করতে চায়। পরে এমন ভুল করে বসে যার মধ্যে তার অজ্ঞতা ফুটে উটে। আর তা তার ফেল হওয়ার কারণ হয়। এই হলো তোমার করণীয়। পরীক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে এটিই তোমার কর্তব্য। মানুষের দায়িত্ব হলো চেষ্টা ও কাজ করে যাওয়া। কিন্তু ফলাফল অনেক সময় চেষ্টা ও কাজের ওপর নির্ভরশীল হয় না। যেমন দু’জন ব্যক্তি অসুস্থ হয়। দু’জন একই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় এবং একই চিকিৎসা গ্রহণ করে। হাসপাতালে একই কামরায় থাকে এবং উভয়ের আচরণও একই রকম হয়। তারপর একজন মৃত্যুবরণ করে, অন্যজন সুস্থ হয়ে উঠে। কেন এমন হয়? আল্লাহর হুকুমে এমন হয়।

দু’জন ব্যক্তি দুটি দোকান খুলে। একই ধরনের পণ্য দোকানে রাখে। একই পদ্ধতিতে ব্যবসা করে। কিন্তু একজন একটি মাত্র লেনদেনে বড় ধনী হয়ে যায়। আর অন্যজন যে অবস্থানে ছিল, সে অবস্থানেই থাকে। কেন এমন হয়? আল্লাহর হুকুমে এমন হয়।

আমি চেষ্টা না করার কথা বলছি না। চেষ্টা করা অবশ্যই কাম্য। শিক্ষার্থীকে পুরো কিতাব পড়তে হবে। এমনকি সেই টীকা-হাশিয়াও পড়তে হবে অন্যরা যাকে গুরুত্ব দেওয় না। কারণ কখনো এমন স্থান থেকেও পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে।

আল্লাহর নিকট সাফল্য ভিক্ষা চাইবে

সর্বশেষ উপদেশ হলো, আর এটিই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছুর পর আল্লাহর দিকে ধাবিত হবে। আল্লাহর নিকট সাফল্য ভিক্ষা চাইবে।

হে শিক্ষার্থী! তুমি যখন তোমার প্রস্তুতি পূর্ণ করবে এবং সাধ্যের সবকিছু করবে, তখন আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করে বলবে, হে আল্লাহ, আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। কিছু বিষয় আছে যেগুলো আমি করতে অক্ষম। একমাত্র তুমি তা করতে সক্ষম। অতএব, তুমি তোমার কুদরতে আমাকে সাফল্য দান করো। আমার উত্তরপত্র কোন কঠোর নিরীক্ষণকারীর হাতে দিয়ো না, যিনি সদয় হবেন না ও দয়ার আচরণ করবেন না। অনুরূপ কোনো অমনোযোগীর হাতে দিয়ো না, যিনি সূক্ষ্‌মভাবে যাচাই করবেন না এবং দিয়ো না কোন ক্লান্ত নিরীক্ষকের হাতে, যিনি সঠিক বিচার করবেন না।

এসবের পূর্বে যে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো তুমি যদি তোমার আচরণে ও কর্মে কোন গোনাহে লিপ্ত থাক, তাহলে গোনাহ থেকে তাওবাহ করো।

হে শিক্ষার্থী! তুমি যদি তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ ও স্বভাব-চরিত্রে কোনো পাপাচারে লিপ্ত থাক এবং শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে থাক তাহলে তা থেকে ফিরে আসো। আল্লাহর হকের ব্যপারে যদি তোমার কোন ক্রটি ও অবহেলা থাকে, তবে তা বর্জন করো। অবশ্যপালনীয় কর্তব্যসমূহ পালন করো। হারাম থেকে বিরত থাকো। এটাই সফলতার পথ।

এই উপদেশ আমার পক্ষ থেকে নয়। এটি ইমাম শাফিয়ী (রহ.)-এর উস্তাদ ইমাম ওয়াকী (রহ.)-এর উপদেশ। ইমাম শাফিয়ী (রহ.) (১৫০-২০৪হি.) বলেছেন,

شَكَوتُ إِلى وَكيعٍ سوءَ حِفظي
فَأَرشَدَني إِلى تَركِ المَعاصي
وَأَخبَرَني بِأَنَّ العِلمَ نورٌ
وَنورُ اللَهِ لا يُهدى لِعاصي

‘আমি (আমার শায়খ) ওয়াকীকে আমার দুর্বল স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি আমাকে বলেন, আমি যেন পাপকাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি। তিনি বলেন, আল্লাহর ইলম হলো একটি নূর (আলো) এবং আল্লাহর নূর কোন পাপচারীকে দান করা হয় না।’

প্রিয় তালিবুল ইলম বন্ধুরা! লেখাটি যখন তৈরি হয়েছিল তখন আপনারা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন। আর যখন ছাপাতে যাচ্ছে তখন আপনারা আপন আপন বাড়ি-ঘরে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ অবস্থান করছেন। পরীক্ষার প্রস্তুতিকালীন সময়ে আপনাদেরকে মাদরাসার আঙ্গিনা থেকে বিদায় দিতে গিয়ে সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর কি পরিমাণ কষ্ট হয়েছে তা অনুধাবন করার জন্য এবং বন্ধের সময়গুলো যথাযথভাবে কাটানোর উদ্দেশ্যে ‘মাওলানা আবদুর রায্‌যাক’ (হাফিযাহুল্লাহ)-এর ভাষায় বলছি…

প্রিয় তালিবে ইলম শোন, তোমার কদম ছুঁয়ে বলছি

প্রিয় তালিবে ইলম! এই বন্ধ আনন্দের নয়; এটা বেদনার। এই বন্ধে উৎসব ও উপভোগের কিছু নেই, এই বন্ধে আছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আহাজারী। জাহেলদের চেপে দেয়া বন্ধ পেয়ে যদি তুমি হও আত্মহারা, যদি হও নিয়ন্ত্রণ হারা, তবে খোদার দুশমনদের লক্ষ্যই ষোলকলা পূর্ণ হবে।

দেখ! মুরুব্বিগণ চাননি পরীক্ষার এ মুহূর্তে তোমাকে চার দেয়াল থেকে বের হতে দেবে। এসময়ে এসে আসাতিযাগণ তোমার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সময় পর্যন্ত হেফাজত করতে কত কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। অথচ সেই আসাতিযাগণ আজ তোমাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য নিজের সান্নিধ্য থেকে, রুহানি আঙ্গিনা থেকে, ত্যাগ ও সাধনার নির্জনতা থেকে বের করে দিতে হচ্ছে।

প্রিয় তালেবে ইলম! কোন দরদমান ওস্তাদ, কোন হাকীকী মুদাররিস তোমাকে চোখের আড়ালে যেতে দেয়ার বেদনা সহ্য করতে পারে না। তারা তোমার জীবন সমুদ্রের এক একটি ফোটার যত্ন নিতে ব্যাকুল।

প্রিয় তালিবে ইলম! এই চেপে দেয়া বন্ধের কারণে তোমার হৃদয়ে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার কথা। আর সে ক্ষত থেকে ঝরে পড়া রক্ত অশ্রু হয়ে বয়ে পড়ার কথা। আমি তোমার ওপর কোনো বদগুমানি করছি না। আল্লাহ না করুক, তুমি যদি তার বিপরীত হও, তাহলে আমি তোমার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত।

প্রিয় তালিবে ইলম! তোমার কদম ছুঁয়ে বলছি, শোনো! এই বন্ধকে অধ্যায়নের সুযোগ মনে কর। মাদরাসায় খানাপিনাতে তোমাকে কিছুটা হলেও পেরেশানি করতে হয়, যা এখন করতে হবে না। মাদরাসায় অন্য ছাত্রদের উপস্থিতির কারণে মাঝে মাঝে তোমার নির্জনতা ভঙ্গ হয়, যা এখন হবে না।

আর সবচেয়ে বড় কথা হল, পরীক্ষার অতি নিকটতম সময়ে এসে এক পর্যায়ে তুমি আকাঙ্ক্ষা কর, যদি পড়ার জন্য আরো দু’একদিন সময় পেতাম। এখন তুমি এ সময়টি পেয়েছো। এখন গভীর সাধনায় নিমগ্ন হয়ে কঠিন সাধনা করতে থাকো। অধ্যায়নের গতি বাড়াও। আর এই জন্য কোন কিতাব অধ্যায়ন করবে কত সময়ে করবে তা নির্ধারণ কর। ইনশাআল্লাহ! তুমি কামিয়াব হবে। প্রিয় তালিবে ইলম! তোমার কদম ছুয়ে বলছি।

সলিমুদ্দিন মাহদি কাসেমী

শিক্ষাপরামর্শ

উত্তর দিচ্ছেন: সলিমুদ্দিন মাহদি কাসেমী

প্রশ্ন: বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গোটা দেশে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা ভাইরাসের তাৎপর্য কী? এটি কি এখন মহামারীতে পরিণত হয়েছে? মহামারীতে একজন মুমিনের করণীয় কী? জানিয়ে উপকৃত করবেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন, আমীন।

ইতি

মুহাম্মদ রিদওয়ান

শিক্ষার্থী, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

উত্তর: করোনা ভাইরাস একটি প্রাণঘাতী রোগ। এটি একটি ছোট্ট ভাইরাস যা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা যায়না, দেখতে হয় ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে, যে ভাইরাসের সাইজ ২০-২২ ন্যনোমিটার, চালের দানার লক্ষ্য ভাগের এক ভাগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ১১ মার্চ এটিকে মহামারী ঘোষণা দিয়েছে। আর বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মহামারীকে মুমিনের জন্য ‘রহমত’ ঘোষণা করেছেন,

عَنْ عَائِشَةَ h، زَوْجِ النَّبِيِّ ﷺ، قَالَتْ: سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ عَنِ الطَّاعُوْنِ، فَأَخْبَرَنِيْ: «أَنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللهُ عَلَىٰ مَنْ يَّشَاءُ، وَأَنَّ اللهَ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِّلْمُؤْمِنِيْنَ، لَيْسَ مِنْ أَحَدٍ يَّقَعُ الطَّاعُوْنُ، فَيَمْكُثُ فِيْ بَلَدِهِ صَابِرًا مُّحْتَسِبًا، يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا يُصِيْبُهُ إِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ، إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ شَهِيْدٍ».

‘হযরত আয়িশা (রাযি.) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে (মহামারী) প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তখন তিনি আমাকে বলেন, ‘এটি হচ্ছে এক ধরনের আযাব। আল্লাহ যার ওপর তা (মহামারী) পাঠাতে ইচ্ছে করেন, পাঠান। কিন্তু আল্লাহ এটিকে মুমিনদের জন্য রহমত বানিয়ে দিয়েছেন। অতএব প্লেগ রোগে আক্রান্ত (তেমনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত) ব্যক্তি যদি ধৈর্য ধরে আর এ বিশ্বাস নিয়ে নিজ শহরে (অঞ্চল) অবস্থান করতে থাকে যে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য যা নির্দিষ্ট করে রেখেছেন তা ছাড়া আর কোনো বিপদ তার ওপর আসবে না। তাহলে ওই বান্দার জন্য থাকবে শহীদের সাওয়াবের সমান সাওয়াব।’ (সহীহ আল-বুখারী: ৪/১৭৫, হাদীস: ৩৪৭৪)

অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,

«الطَّاعُونُ شَهَادَةٌ لِّكُلِّ مُسْلِمٍ».

‘প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে (তেমনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে) মৃত্যু বরণকারী প্রত্যেক মুসলিম শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবেন।’ (সহীহ মুসলিম: ৩/১৫২২, হাদীস: ১৯১৬)

অতএব, করোনার কথা শুনেই আতঙ্কিত হওয়া, ভীত-সন্ত্রস্ত্র হওয়া একজন মু’মিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। তবে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উপায়-উপকরণ অবলম্বন করাও তাওয়াক্কুলে পরিপন্থী নয়। এ ক্ষেত্রে একজন মুমিনের সর্বপ্রথম করণীয় হলো মহান রবের প্রতি মনোনিবেশ করা। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করা। তাওবা-ইস্তিগফারে আত্ম-নিয়োগ করা। সাথে সাথে বিশেষ কিছু আমলের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার জন্য বর্তমান সময়ের অনেক বিজ্ঞ ফকিহ ও মাকবুল ওলীগণ পরামর্শ দিয়েছেন। যেমন আল্লামা মুফতি তকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘তাবলীগ জামাতের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন একজন নেককার বুযুর্গ ব্যক্তি স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে সাক্ষাতে ধন্য হয়েছেন। সেই স্বপ্নে বর্তমান বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস নামক মহামারী থেকে বাঁচার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) তিনটি আমল শিখিয়ে দিয়েছেন। প্রতিদিন এগুলো পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিয়ে নিজে ও পরিবারের সদস্যদেরকে পান করালে উপকৃত হবেন ইনশা আল্লাহ।

(১) তিন বার সূরা ফাতিহা পাঠ করা,

(২) তিনবার সূরা ইখলাস পাঠ করা ও

(৩) ৩১৩ বার ﺣَﺴْﺒُﻨَﺎ اللهُ ﻭَﻧِﻌْﻢَ ﺍﻟْﻮَﻛِﻴْﻞُ পড়া। তেমনি দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন বিষয়ে আরো কয়েকটি দোআ পড়ুন…

لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِـميْنَ.

‘আল্লাহ আপনি ছাড়া কোন মা’বুদ নেই, আপনি মহান নিশ্চয় আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।’

اللّٰهُمَّ ارْفَعْ عَنَّا الْبَلَاءَ وَالْوَبَاءَ.

‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের থেকে বিপদ ও মহামারী দূর করে দিন।’

ঘর থেকে বের হওয়ার সময়:

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ، فَأَللهُ خَيْرٌ حَافِظًا وَّهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنْ.

‘পৃথিবীতে সৃষ্ট যাবতীয় অনিষ্ট হতে আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমাসমূহের আশ্রয় নিচ্ছি, আল্লাহ উত্তমরক্ষক, তিনিই দয়াবান।’

ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এবং পানাহারের সময় এই দুআ পড়বে…

بِسْمِ اللهِ الذِّيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْاَرْضِ وَلَا فِيْ السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ.

‘আল্লাহর নামের আশ্রয় গ্রহণ করি, যার নামের সাথে আসমান জমিনে কোন জিনিস ক্ষতি করতে পারে না, তিনি শ্রবণকারী ও জ্ঞানী।’

প্রতি ফরজ নামাযের পরে আয়াতুল কুরসী পড়ে নিজের শরীরে এবং পরিবারের সদস্যদের শরিরে ফুঁক দেওয়া। কোথাও যদি কোন করোনা রোগীর সাক্ষাত হয়ে যায় তখন নিম্নের দুআটি পড়বেন। ইনশা আল্লাহ তাতে আপনি আক্রন্ত হবেন না। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন রোগী/বিপদগ্রস্তব্যক্তিকে দেখে নিম্নের দুআ পাঠ করবে, সে সেই রোগ/বিপদ থেকে নিরাপদ থাকবে:

الْـحَمْدُ للهِ الَّذِيْ عَافَانِيْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ، وَفَضَّلَنِيْ عَلَىٰ كَثِيْرٍ مِّمَّنْ خَلَقَ تَفْضِيْلًا، إِلَّا عُوْفِيَ مِنْ ذَلِكَ الْبَلَاءِ.

‘সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে রোগ/বিপদ থেকে নিরাপদ রেখেছেন, যে রোগে/বিপদে আপনি আক্রন্ত হয়েছেন এবং আমাকে অনেক সৃষ্টিজীবের মধ্যে সুসম্মানিত করেছেন।’ (তিরমিযী শরিফ: ২৪৩০)

ঘোষণা

(সমস্যা নিয়ে আর নয় অস্থিরতা, সমাধানই হোক আমাদের অগ্রযাত্রা)

শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আপনাদের সহযোগিতা ও দিক-নির্দেশনার লক্ষ্যে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মুখপাত্র, ইসলামী গবেষণা ও সৃজনশীল সাহিত্য পত্রিকা মাসিক আত-তাওহীদে নিয়মিত বিভাগ ‘শিক্ষার্থীদের পাতা ও শিক্ষা পমার্শ’ চালু করা হয়েছে। উক্ত বিভাগে একদিকে থাকবে আপনাদের জন্য নিয়মিত দিক-নির্দেশনামূলক প্রবন্ধ। অপরদিকে থাকবে আপনাদের সমস্যা-সমধান নিয়ে শিক্ষা পরামর্শ।

অতএব এখন থেকে সমস্যা নিয়ে আর নয় অস্থিরতা, সমাধানই হোক আমাদের অগ্রযাত্রা’ শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাবো উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে। সুতরাং শিক্ষা বিষয়ক যে কোন সমস্যা আমাদের নিকট লিখুন এবং টেনশানমুক্ত জীবন গড়ুন। আমরা আপনার সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট থাকবো এবং অতিদ্রুত সময়ে যথার্থ সমাধান পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ইনশা আল্লাহ। আল্লাহই তাওফীকদাতা।

যোগাযোগের ঠিকানা

বিভাগীয় সম্পাদক

শিক্ষার্থীদের পাতা ও শিক্ষা পরামর্শ বিভাগ

মাসিক আত-তাওহীদ

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

ই-মেইল: hmsalimuddin22@gamil.com

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ