জামেয়া ওয়েবসাইট

শনিবার-৩০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি-৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল-জামিয়ার দিন-রাত

আল-জামিয়ার-দিন-রাত

জামিয়ার প্রবীণ উস্তাদ বিশ্ববরেণ্য আরবি সাহিত্যিক আল্লামা মীর খলীলুর রহমান আল মাদানী (রহ.) আর নেই; শোকাহত জামিয়া

১২ ডিসেম্বর ২০১৯ (বৃহস্পতিবার) রাত ১২:৫০ মিনিটে জামিয়ার প্রবীণ উস্তাদ, বিশ্ববরেণ্য আরবি সাহিত্যিক আল্লামা মীর খলীলুর রহমান আল মাদানী (রহ.) ইনেত্মকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পটিয়া মাদরাসাস্থ বাসভবনে দীর্ঘদিন প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে রব্বে কারিমের ডাকে সাড়া দিয়ে ইহকাল ত্যাগ করেন। তাঁর ইনেত্মকালের খবর ছড়িয়ে পড়লে জামিয়া জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ওই দিন দুপুর ২টায় জামিয়ার মসজিদ সংলগ্ন মাঠে তাঁর জানাজার নামায অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জামিয়ার প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ আহমদুল্লাহ সাহেব (দা. বা.)। জানাজা শেষে মাকবারায়ে আজিজিতে তাঁকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে হুযুরের বয়স হয়েছিল ৬৬বছর। তিনি ৪ছেলে, স্ত্রী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। জানাজার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে জামিয়া প্রধান আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (দা. বা.) বলেন, আল্লামা মীর খলীলুর রহমান আল মাদানী (রহ.) ছিলেন আরবি ভাষার একজন পণ্ডিত ও বড় মাপের সাহিত্যিক। ১৯৮৮ সাল থেকে প্রায় ৩২ বছর পটিয়া মাদরাসার উচ্চতর ফিকহ, তাফসীর ও আরবি সাহিত্যের একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জামিয়ায় বড় শূন্যতা বিরাজ করছে। এ শূন্যতা পূরণ হবে না। আল্লামা মুফতি আবদুল হালিম বোখারী সাহেব (দা. বা.) জামিয়ার সকল ছাত্র-শিক্ষকের পক্ষ থেকে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। ক্ষণজন্মা রসবোধসম্পন্ন আল্লামা খলীলুর রহমান আল মাদানী (রহ.) ছিলেন ভয়ভীতিহীন ঈমানী বলে বলিয়ান একজন প্রাজ্ঞ ইসলামি ব্যক্তিত্ব। যিনি সর্বদা ইনসাফ ও সত্যের পক্ষে কথা বলতেন র্নিভীক কণ্ঠে। সজীব কণ্ঠের অধিকারী প্রাণবন্ত একজন মানুষ ছিলেন তিনি। ছাত্রদের অনুপ্রেরণা যোগাতেন। উদ্বুদ্ধ করতেন। উজ্জিবীত করতেন। তাদের স্নেহ ও ভালবাসায় আপন করে নিতেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা আবারও মুরব্বি হারা হলাম। মুসলিম উম্মাহ আরও একজন বিরল প্রজ্ঞাবান বর্ষীয়ান আলেমে দীনকে হারালো। আরবি সাহিত্যের এই প্রবাদ পুরুষকে মুসলিম উম্মাহ আজীবন স্মরণ করবে। তিনি বেঁচে থাকবেন তাদের হৃদয়ের মনিকোঠায়। তাঁর মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহর জীবনে সৃষ্টি হয়েছে এক গভীর ক্ষত। দেশ মাতৃকার এই বরেণ্য আলেমের অমস্নান স্মৃতি তাদের বেদনার্ত করবে। হে আল্লাহ! আপনার প্রিয় বান্দাকে রহমতের শীতল ছায়ায় আবৃত করে চিরস্থায়ী জান্নাতের মেহমান করে নিন। আমিন।

জামায়াতে হাপ্তুমের আরবি সীরাত প্রতিযোগিতা সেমিনার অনুষ্ঠিত

২৭ নভেম্বর ২০১৯ (রবিবার) জামায়াতে হাপ্তুমের কচিকাচাদের আরবি ভাষায় পারদর্শী করার লড়্গ্যে একটি আরবি সীরাত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন, জামিয়ার প্রবীণ উস্তাদ মাওলানা কলিমুল্লাহ (দা. বা.)। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি শামসুদ্দিন জিয়া (দা. বা.) ও আল্লাম আবু তাহের নদভী (দা. বা.) প্রমুখ। বিচারক ছিলেন আল্লামা মনজুর ছিদ্দিক (দা. বা.) আল্লামা সাবের মাসুম (দা. বা.) ও মাওলানা ইবরাহিম খলীল (হাফিযাহুল্লাহ)। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাকে যখন অনুষ্ঠানের জন্য দাওয়াত দেওয়া হয়, ভেবে ছিলাম এটি গতানুগতিক কোন অনুষ্ঠান। এখানে এসে এ ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান দেখে আমি মনে করি এ ধরণের অনুষ্ঠান ছাত্রদের যোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। ছাত্ররা মোট তিনটি বিষয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। (ক) আরবি বক্তৃতা। (খ) আরবি কথোপকথন। (গ) আরবি সংবাদ পরিবেশন। কচিকাচাদের এই অনুষ্ঠান সকলকে মুগ্ধ করেছে। অনুষ্ঠান শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ছাত্রদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।

জামায়াতে দুয়ামের উদ্যোগে আরবি সীরাত প্রতিযোগিতা সেমিনার অনুষ্ঠিত

৭ ডিসেম্বর ২০১৯ (রবিবার) জামায়াতে সিওমের শ্রেণিকক্ষে জামায়াতে দুয়ামের উদ্যোগে আরবি সীরাত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেছেন জামিয়ার প্রধান পরিচালক ও শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (দা. বা.)। বিশেষ অতিথি ছিলেন আল্লামা মুফতি শামসুদ্দিন জিয়া (দা. বা.) ও আল্লামা আবু তাহের নদভী (দা. বা.)। বিচারক ছিলেন আল্লামা মনজুর ছিদ্দিক (দা. বা.) ও আল্লামা মুহসিন আমিন (দা. বা.)। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জামায়াতে দুয়ামের তত্ত্বাবধায়ক, প্রখ্যাত আরবি সাহিত্যিক বহুগ্রন্থ প্রণেতা আল্লামা জাফর ছাদেক (দা. বা.)। সভাপতি তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, আমি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে খুবই আনন্দিত। সংশিস্নষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা সর্বোচ্চ মেহনত করে এ ধরণের অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছে। ছাত্ররা যেভাবে বিশুদ্ধ আরবি ভাষায় বক্তব্য দিয়েছে এটা তাদের অন্তরে আরবি ভাষার প্রতি গভীর ভালবাসার উজ্জ্বল প্রমাণ। হুজুর আরও বলেন, কলেজ-ভার্সিটির গ্র্যাজুয়েটরা বলে থাকে, ইংরেজি ইন্টারন্যাশনাল ভাষা। কিন্তু আমি আরবি হলো ওভার ইন্টারন্যাশনাল ভাষা। কারণ এটি ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের ভাষা। হুজুর ছাত্রদের আরবি ভাষার পারদর্শীতা অর্জনের জন্য ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করে বক্তব্য সমাপ্তি করেন। অনুষ্ঠানে ছাত্ররা মোট তিনটি বিষয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

(ক) ই’দাদি তথা প্রস্তুতিমূলক বক্তৃতা।

(খ) ইরতেজালি অর্থাৎ লটারির মাধ্যমে বিচারক কর্তৃক নির্ধারিত বিষয়ে বক্তৃতা।

(গ) নবীজি (স.)-এর সীরতের ওপর উম্মুক্ত কুইজ প্রতিযোগিতা।

অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মাধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অবশেষে জামিয়ার সহকারী পরিচালক আল্লামা আবু তাহের নদভী সাহেব (দা. বা.) দুআ ও মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

তথ্যসূত্র: আবদুর রহমান বিন ইউনুছ

জামিয়া প্রতিবেদক, মাসিক আত-তাওহীদ

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ