হেযবুত তওহীদের কুফরি আকীদা: একটি পর্যালোচনা
সম্পাদনায়: মাওলানা মুফতি মানজুর সিদ্দীক
তত্ত্বাবধায়ক: ফতোয়া বিভাগ, আল জামেয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
যুগে যুগে ইসলামের শত্রুরা চেষ্টা করে আসছে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহকে চিরতরে মিটিয়ে দিতে। তাদের ঈমান ও আকীদাকে হরণ করে নিজেদের অনুসারী বানাতে। কিন্তু কালপরিক্রমায় একথা তারা বুঝতে পেরেছে যে, ইসলাম ও ইসলামের চিরন্তন শিক্ষাকে জোর-জবরদস্তি ও অত্যচার- নিপীড়নের মাধ্যামে বিকৃত বা মিটিয়ে দেওয়া কখনো সম্ভব নয়। তাই তারা বেছে নিয়েছে ভিন্ন একটি পথ। স্বয়ং মুসলিমদের মধ্য হতেই এমন সব ব্যক্তিকে তারা দাঁড় করিয়ে দেয়, যারা ইসলামকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে। শত্রুদের দেখানো পথে ধীরে ধীরে সাধারণ মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করে ইসলামের গণ্ডির বাইরে নিয়ে যায়।
এ সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতার একটি প্রকটিতরূপ বর্তমান সময়ের আলোচিত কথিত ‘হেযবুত তওহীদ’ দলটি। ১৯৯৪ সালে বায়াজীদ খান পন্নী নামক এক হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের হাত ধরে এর আত্মপ্রকাশ। এ ব্যক্তিটি জীবনে অনেক ব্যবসায় বিনিয়োগ করে প্রায় সবকটিতে বিফল হয়ে সর্বশেষ ধর্মব্যবসায় নেমে পড়ে। সারা বিশ্বে মুসলিমদের ক্রমাগত দুর্দশা ও নিপীড়িত দশাকে হাতিয়ার বানিয়ে সে প্রচার চালায় যে,
‘এই ইসলাম চৌদ্দশ বছর পূর্র্বের ইসলাম নয়। রাসূল (সা.)-এর ইনতিকালের ১০০ বছর পর ইসলাম বিকৃতির ধারা আরম্ভ হয়ে বর্তমানে তা আর স্বরূপে অবশিষ্ট নেই। বর্তমানে প্রচলিত ইসলাম চরম বিকৃতির ফলে তাঁর আনীত ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এমনকি ইসলামের কালিমাটা পর্যন্ত বিকৃত হয়ে স্রষ্টার সার্বভৌমত্ব এতে বাকি নেই। দীনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের ধারণা পাল্টে গেছে।’[1]
বাহ্যত আকবরের দীনে এলাহীর ভাবধারা এদের কর্মকাণ্ডে লক্ষণীয়। এদের স্লোগান হচ্ছে ‘সবধর্মের মূলকথা সবার ঊর্ধ্বে মানবতা।’ এদের আহ্বান:
‘হে দুনিয়ার মানুষ তোমরা হিন্দু, খ্রিস্টান, ইহুদি হও, তোমরা নাস্তিকতার পরিচয় দাও, মুসলমান দাবি করো, তোমরা যে ধর্ম, যে বর্ণ হও, পাহাড়ি হও, মরু অঞ্চলের মেরু অঞ্চলের হও. তোমরা যে-ই হও, তোমরা যদি হিযবুত তাওহীদের ডাকে সাড়া দাও, তবে তোমরা জান্নাতী। তোমাদের জান্নাতে যাওয়ার জন্য আর কোথাও যাওয়া লাগবে না।’[2]
উক্ত ভাবধারার সাথে সাথে এরা কাদিয়ানিদের কৌশলে কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করে। বরং এদের কার্যকৌশল আরো ধুরন্ধর প্রকৃতির। কাদিয়ানিরা খতমে নুবুওয়তকে অস্বীকার করে গোলাম কাদিয়ানিকে নবীর আসনে বসিয়ে দিয়েছিল। এরা সরাসরি খতমে নুবুয়তকে অস্বীকার না করে রাসূল (সা.)-কে শেষ নবী হিসেবে মান্য করে। তবে তাঁর ইউনিভার্সাল কিছু গুণাবলি ও সর্বস্বীকৃত কর্মের বিষয়ে অপব্যাখ্যা, বিকৃতি ও অস্বীকারের আশ্রয় গ্রহণ করে তাদের ধর্মবিকৃতির পথ সুগম করে রাখে। যেমন-
‘আল্লাহ আদম (আ.) থেকে শুরু করে তাঁর প্রত্যেক নবী-রসুল (আ.)-কে পাঠিয়েছেন একটিমাত্র উদ্দেশ্য দিয়ে তাহলো যার যার জাতিরমধ্যে আল্লাহর তওহীদ ও তাঁর দেওয়া জীবনব্যবস্থা দীন প্রতিষ্ঠা করা। শেষ নবীকে পাঠালেন সমস্ত মানব জাতির ওপর এই দীন প্রতিষ্ঠা করার জন্য (সুরা ফাতাহ: ২৮, সুরা তওবা: ৩৩, সুরা সফ: ৯)। পূর্ববর্তী নবীদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব তাঁরা অনেকেই তাদের জীবনেই পূর্ণ করে যেতে পেরেছিলেন, কারণ তাদের দায়িত্বের পরিসীমা ছিল ছোট। কিন্তু এই শেষ জনের দায়িত্ব হলো এত বিরাট যে এক জীবনে তা পূর্ণ করে যাওয়া অসম্ভব।’[3]
এর মাধ্যমে যদিও নবী (সা.)-এর শেষ নবী হওয়াটা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে কিন্তু তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পালন করার কুরআনী স্বীকৃতি থাকা সত্ত্বেও তারা মনগড়া ব্যাখ্যা বানিয়ে পন্নী সাহেবের জন্য একটা ফোঁকর বের করা হয়েছে যাতে করে সে সাবধানে কার্যসিদ্ধি করতে পারে। একই বইয়ে রাসূল (সা.)-এর রাহমাতুল্লিল আলামীন হওয়া নিয়ে তারা লেখা হয়েছে,
‘বিশ্বনবীর ওপর আল্লাহর দেওয়া দায়িত্বকে যারা মাঝপথে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন, তারা আল্লাহর দেওয়া বিশ্বনবীর উপাধি, ‘রাহমাতুল্লিল আলামীন’-কেও পূর্ণ হতে দেন নি; অর্থাৎ তিনি এখনও ‘রাহমাতুল্লিল আলামীন’ হননি। ব্যাখ্যা করছি- ‘রাহমাতুল্লিল আলামীন’ শব্দের অর্থ হলো (পৃথিবীর) জাতিসমূহের ওপর (আল্লাহর) রহমত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আজ পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখুন দেখি। কোথায় সে রহমত? পৃথিবীর সর্বত্র অশান্তি, হাহাকার, অন্যায়, অবিচার, যুদ্ধ, রক্তপাত, বুকভাংগা দুঃখ। মানুষের ইতিহাসে বোধ হয় একত্রে একই সঙ্গে দুনিয়ার এত অশ্রু, এত অশান্তি কখনো ঘটেনি। নবী করিমের আগেও বোধহয় পৃথিবীর একখানে অশান্তি থাকলে অন্যখানে খানিকটা শান্তি থাকতো। বিজ্ঞানের কল্যাণে আজ পৃথিবী ছোট, আজ একই সঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে যে রক্তারক্তি-অশান্তি হচ্ছে তা ইতিহাসে বোধ হয় আর কখনো হয়নি।’[4]
এভাবে তাঁকে রাহমাতুল্লিল আলামীন বানানোর জন্য ওরা তাদের কথিত এমামুয যামানের ‘প্রয়োজনীয়তা’ ও তার ‘মোজেজার অনস্বীকার্যতা অনস্বীকার্যতাÕ প্রমাণ করার প্রায়াস পেয়ে থাকে। নিম্নে আমরা ঈমান ও ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক তাদের কতিপয় মারাত্মক কুফরি আকীদা পর্যালোচনা করে দেখবো:
এক. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থ আল্লাহ ছাড়া কোন বিধানদাতা নেই। আল্লাহ ছাড়া যে উপাস্য নেই করা হয় সেটা হলো ইহুদি-খ্রিস্টানদের করা অর্থ। যেটা সম্পর্কে কুরআনে কোন ইঙ্গিত নেই।[5]
পর্যালোচনা: তাদের এ আকীদা বহুশ্বেরেবাদের সমার্থক। এ আকীদা লালন করার ফলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুশরিকদের জন্য তাদের ধর্মে থেকেই এই দলে যোগ দেওয়ার দ্বার উন্মুক্ত থাকে। অথচ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
اِنَّنِيْۤ اَنَا اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعْبُدْنِيْ١ۙ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكْرِيْ۰۰۱۴
‘নিশ্চয় আমিই আল্লাহ। আমি ব্যতিত আর কোন ইলাহ নেই। তাই ইবাদত করো কেবল আমারই এবং আমার স্মরণে সালাত কায়েম করো।’[6]
এ আয়াতে সুস্পষ্ট ঘোষণা করা হয়েছে যে আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং একমাত্র আল্লাহর উপাসনাই করতে বলা হয়েছে। আর এই কুলাঙ্গারগুলো বলছে নাকি আল্লাহর সাথে অন্যদের উপাসনাও করা যাবে।
দুই. ইসলামে পর্দা বলতে কিছু নেই। কুরআনে পর্দা সম্পর্কিত একটি আয়াতই কেবল আছে। যেটা উম্মুল মুমিনীনদের জন্য খাস। এমনকি বর্তমান পদ্ধতিকে উপহাস করে তারা এটিকে বাক্সবন্দী বলে উল্লেখ করে। তাদের দাবি হলো আলেমগণ এই পর্দাপ্রথা চালু করে নারীদের অধিকার খর্ব করেছে এবং তাদের মেরে ফেলেছে।[7]
পর্যালোচনা: পর্দা ইসলামের অন্যতম একটি বিধান। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন আয়াতে পর্দার আলোচনা করেছেন। যেমন- সুরা আন-নূরের ৩০, ৩১ ও ৬০ আয়াতে, সূরা আল-আহযাবের ৩২, ৫৩, ৫৯ আয়াতে পর্দার বিধানের আলোচনা করেছেন। আর আয়াতসমূহ উম্মাহাতুল মুমিনীনের জন্য খাস হওয়ার দাবি করা নিতান্তই অবান্তর। নিম্নোক্ত আয়াতসমূহে আমরা সেটিই দেখতে পাবো:
يٰۤاَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ وَبَنٰتِكَ وَنِسَآءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيْبِهِنَّ۠١ؕ ذٰلِكَ اَدْنٰۤى اَنْ يُّعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ١ؕ وَكَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا۰۰۵۹
‘হে নবী! আপনি বলুন আপনার স্ত্রীবর্গকে, মেয়ে সন্তানদেরকে এবং মুমিন মহিলাদেরকে তারা যেন নিজেদের ওপর চাদর জড়িয়ে রাখে, এটি তাদেরকে স্বাধীন মুসলিম নারী হিসেবে চিনতে সহায়ক, ফলে তারা উত্যক্তের শিকার হবে না। আর আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল, চির দয়াময়।’[8]
وَقُلْ لِّلْمُؤْمِنٰتِ يَغْضُضْنَ مِنْ اَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوْجَهُنَّ وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ اِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ١۪ وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اٰبَآىِٕهِنَّ اَوْ اٰبَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اَبْنَآىِٕهِنَّ۠ اَوْ اَبْنَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ ۪ ۰۰۳۱
‘(হে নবী)! আপনি মুমিন মহিলাদেরকে বলুন, তারা যেন দৃষ্টি অবনত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থনকে হেফাজত করে। আর যেন তারা নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ হতে না দেয় তবে স্বাভাবিক প্রকাশ ব্যতিত এবং ওড়না দিয়ে যেন তাদের বক্ষদেশ জড়িয়ে রাখে। আর তারা যেন তাদের শোভা প্রদর্শন করে একমাত্র তাদের স্বামীর জন্য।’[9]
সহীহ আল-বুখারী শরীফের হাদীসে উক্ত আয়াতের আমলী অবস্থার বর্ণনা এসেছে যে,
عَنْ عَائِشَةَ i، كَانَتْ تَقُوْلُ لَـمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ: [وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ۪ ۰۰۳۱] {النور: 31} «أَخَذْنَ أُزْرَهُنَّ فَشَقَّقْنَهَا مِنْ قِبَلِ الْـحَوَاشِي فَاخْتَمَرْنَ بِهَا».
‘হযরত আয়েশা (রাযি.) বলতেন, যখন وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰى جُيُوْبِهِنَّ۪ ۰۰۳۱ আয়াতটি নাযিল হয় মহিলারা তখন তাদের পরিধেয় চাদর চিরে ওড়না হিসেবে ব্যবহার করতে লাগলেন।’[10]
তিন. রাসূলে করীম (সা.) আল্লাহর দেওয়া রিসালাতের দায়িত্ব পুরো করতে পারেননি। তাই তাকে রাহমাতুল লিল আলামীন বলা যাবে না।[11]
পর্যালোচনা: নাউযু বিল্লাহ। নবী (সা.)-এর ওপর এত বড় অপবাদ দিতে একজন কাফেরের কলজে কেঁপে উঠার কথা। রিসালাতের দায়িত্ব পালনের সীমারেখা আল্লাহ নিজেই টেনে দিয়েছেন। আল্লাহ পাক বলেন,
يٰۤاَيُّهَا الرَّسُوْلُ بَلِّغْ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ١ؕ وَاِنْ لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهٗؕ ۰۰۶۷
‘হে রাসূল! আপনার রবের পক্ষ হতে আপনার ওপর যা নাযিল করা হয় তা আপনি (লোকদের নিকট) পৌঁছে দিন। আর যদি তা না করেন তবে আপনি আল্লাহর রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেননি।’[12]
আবার পরিশেষে আল্লাহ তাআলাই ঘোষণা দিচ্ছেন যে,
اَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْاِسْلَامَ دِيْنًاؕ ۰۰۳
‘আজ তোমাদের জন্য আমার দীন পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’[13]
আর আল্লাহ তাআলা নিজেই তার প্রিয়নবীকে রাহমাতুল্লিল আলামীন ঘোষণা করলেও এরা মানতে নারাজ। কারণ তাতে তাদের এমামের দূরভিসন্ধি সফল হবে না।
وَمَاۤ اَرْسَلْنٰكَ اِلَّا رَحْمَةً لِّلْعٰلَمِيْنَ۰۰۱۰۷
‘আমি তো আপনাকে পুরো জাহানের জন্য রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি।’[14]
চার. দাজ্জাল বলতে কিছু নেই। এটা হচ্ছে, ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতা।[15]
পর্যালোচনা: সহীহ আল-বুখারীতে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ k، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ: «أُرَانِي اللَّيْلَةَ عِنْدَ الْكَعْبَةِ، فَرَأَيْتُ … وَإِذَا أَنَا بِرَجُلٍ جَعْدٍ قَطَطٍ، أَعْوَرِ الْعَيْنِ الْيُمْنَىٰ، كَأَنَّهَا عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ، فَسَأَلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقِيْلَ: الْـمَسِيْحُ الدَّجَّالُ».
‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রাতে আমি কাবার নিকটে স্বপ্নে দেখি…, অতঃপর আরেকজন লোককে দেখি উস্কোখোস্কু চুলে, তার ডান চোখ ছিল কানা, দেখতে যেনো ফুলে উঠা আঙ্গুর বিচির ন্যায়। আমি জানতে চাইলাম এ কোন ব্যক্তি? বলা হলো, মসীহে দাজ্জাল।’’[16]
এর দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, দাজ্জাল কোনো বায়বীয় পদার্থ নয়, বরং এর সুনির্দিষ্ট অস্তিত্ব রয়েছে। অন্য হাদীসে এসেছে,
عَنْ أَنَسٍ h، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: «مَا بُعِثَ نَبِيٌّ إِلَّا أَنْذَرَ أُمَّتَهُ الْأَعْوَرَ الْكَذَّابَ، أَلَا إِنَّهُ أَعْوَرُ، وَإِنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بِأَعْوَرَ، وَإِنَّ بَيْنَ عَيْنَيْهِ مَكْتُوبٌ كَافِرٌ».
‘হযরত আনাসা ইবনে মালিক (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) বলেন, ‘এমন কোনো নবী আসেননি যিনি তাঁর উম্মতকে কানা দাজ্জালের সম্পর্কে সতর্ক করেননি। জেনে রেখো! সে তো একটা কানা, পক্ষান্তরে তোমাদের প্রভু এমনটি নন। আর তার উভয় চোখের মাঝখানে কাফির লেখা থাকবে।’’[17]
তার মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশও তিনি দিয়ে গিয়েছেন। যাতে করে উম্মত গাফেল অবস্থায় তার ভয়াবহ ফিতনার সম্মুখীন হয়ে না যায়। বিশ্বের তাবৎ জাতি দাজ্জালের আবির্ভাবের জন্য পথ চেয়ে বসে আছে এবং তাকে স্বাগত জানানোর জন্য তারা সার্বিক প্রস্তুতিও গ্রহণ করে রেখেছে। এদিকে এরা চাচ্ছে মুসলিম জাতি যেন এই ভয়াবহ ফিতনা সম্পর্কে বেখবর হয়ে থাকুক আর অতর্কিতভাবে এ ফিতনার সম্মুখীন হয়ে যাক। আল্লাহ সকলকে হেফাযত করুন।
পাঁচ. হিন্দুদের সনাতন ধর্ম হলো আল্লাহর বর্ণিত ‘দীনুল কাইয়িমা’ তথা শ্বাশত দীন ও চিরন্তন ধর্ম। আর এটাই হলো তাওহীদ।[18]
পর্যালোচনা: সুরা আল-বাইয়িনাতের পূর্ণাঙ্গ আয়াতটি দেখুন,
وَمَاۤ اُمِرُوْۤا اِلَّا لِيَعْبُدُوا اللّٰهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ١ۙ۬ حُنَفَآءَ وَ يُقِيْمُوا الصَّلٰوةَ وَيُؤْتُوا الزَّكٰوةَ وَذٰلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِؕ۰۰۵
‘তাদেরকে কেবলই আদেশ করা হয়েছিলো আল্লাহর ইবাদত করতে, সকল বক্রপথ থেকে বিরত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তার জন্য এবং সালাত কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে। আর তাই হচ্ছে দীনুল কাইয়িমা তথা মধ্যপন্থী ও ন্যায়নিষ্ঠ দীন।’[19]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন শিরকমুক্ত ইবাদতকে ‘দীনুল কাইয়িমা’ ঘোষণা করেছেন আর এরা মূর্তিপূজা আর যাবতীয় শিরকের আখড়াকে বলছে চিরন্তন ধর্ম! নাউযু বিল্লাহ।
ছয়. বায়াজীদ খান পন্নী সরাসরি আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি।[20]
পর্যালোচনা: নিশ্চয় এ ‘মনোনয়ন’ নির্বাচন শেষে নির্বাচিত ব্যক্তির মনোনয়নপত্র কুড়িয়ে পেয়ে পথের পাগলের ‘আমি মনোনয়ন পেয়েছি’ বলে লাফানোর মতো। আর এসব ‘স্বমনোনীত ভণ্ডদের’ সম্পর্কে রাসূল (সা.) চৌদ্দশ বছর পূর্বেই খবরদার করে গিয়েছেন:
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: «لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّىٰ تَلْحَقَ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِيْ بِالْـمُشْرِكِينَ، وَحَتَّىٰ يَعْبُدُوا الْأَوْثَانَ، وَإِنَّهُ سَيَكُوْنُ فِيْ أُمَّتِيْ ثَلَاثُوْنَ كَذَّابُوْنَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ وَأَنَا خَاتَمُ النَّبِيِّينَ لَا نَبِيَّ بَعْدِيْ».
‘হযরত সাওবান (রাযি.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ আমার উম্মতের কতিপয় গোত্র মুশরিকদের সাথে মিলিত হয়ে মূর্তিপূজা না করে। আর আমার উম্মতের মধ্যে ত্রিশজন ডাহা মিথ্যুকের আগমন হবে। তারা প্রত্যেকেই নিজেকে আল্লাহর মনোনীত নবী ঘোষণা করবে অথচ আমিই শেষ নবী আামর পর আর কোন নবী আসবে না।’’[21]
সাত. শ্রী কৃষ্ণ, রামচন্দ্র, গৌতম বুদ্ধ এরাও নবী রাসূল ছিল। তাদের নামের শেষে (আ.) বলা যাবে।[22]
পর্যালোচনা: এদের নবী হওয়া কোন নির্ভরযোগ্য দলীল প্রমাণ দ্বারা সাব্যস্ত নয়। তাদের মাঝে প্রচলিত কাহিনী অনুসারে বড়জোর সাধক বা দার্শনিক বলা যেতে পারে। কুরআন হাদীসে এর ন্যূনতম ইঙ্গিতও আসেনি। তাই এদেরকে নবী বলা যাবে না।
আট. হেযবুত তাওহীদের সদস্যদের সম্মান নবী-রাসূলদের থেকেও বেশি। জান্নাতে এদের মার্যাদা দেখে নবীগণও হিংসা করবে।
পর্যালোচনা: এটা নতুন কোন দাবি নয়। এই একই দাবিই করে গিয়েছিলো তাদের পূর্বসূরি কাদিয়ানিরা। আল্লামা ইহসান ইলাহী জহীর কাদিয়ানি পুত্র মাহমুদ আহমদের সূত্রে বর্ণনা করেন,
‘আমার পিতা বলেন যে, তিনি আদম, নুহ, ঈসা থেকে উত্তম। কেননা আদমকে শয়তান জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিল কিন্তু বনী আদম জান্নাতে যাবেন। আর হযরত ঈসা (আ.)-কে ইহুদিরা শূলিতে চড়িয়েছিল, আর তিনি ক্রুশ ভাঙেন। হযরত নুহ (আ.)-এর বড় পুত্র হিদায়ত থেকে বঞ্চিত ছিল, কিন্তু তার পুত্র হিদায়তপ্রাপ্ত।’[23]
বর্তমানে এসে তাদের মানসপুত্ররা একই দাবি করবে এতে অবাক হওয়ার কী আছে। তাদের হাশরও একই সাথে হবে ইন শা আল্লাহ।
নয়. বায়াজীদ খান পন্নীর ভাষণ কুরআনের আয়াতের সমমর্যাদার।[24]
পর্যালোচনা: আল্লাহ তাআলা তার দিনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। তার চিরন্তন ঘোষণা:
اَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْاِسْلَامَ دِيْنًاؕ ۰۰۳
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসেবে মনোনীত করেছি।’[25]
এরপর যদি কেউ আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন অহী আসার দাবি করে তবে নিঃসন্দেহে তা চরম মিথ্যা ও শয়তানের পক্ষ থেকে। আল্লাহ বলেন,
وَاِنَّ الشَّيٰطِيْنَ لَيُوْحُوْنَ اِلٰۤى اَوْلِيٰٓـِٕهِمْ۠ لِيُجَادِلُوْكُمْ١ۚ وَاِنْ اَطَعْتُمُوْهُمْ۠ اِنَّكُمْ لَمُشْرِكُوْنَؒ۰۰۱۲۱
‘নিঃসন্দেহে শয়তান গোপনে শিক্ষা দেয় তার অনুসারীদেরকে তোমাদের সাথে অযথা তর্ক বাঁধানোর জন্য। যদি তোমরা তাদের অনুসরণ করো তাহলে তোমরাও মুশরিক হয়ে গেলে।’[26]
সুতরাং সাধু সাবধান!
দশ. যারা হেযবুত তাওহীদ করবে তারা সন্দেহাতীতভাবে জান্নাতী। অন্যরা সবাই জাহান্নামী।[27]
পর্যালোচনা: যে দীনের সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা, সে দীনকে বিকৃত বলে পরিত্যাগ করে কুফর-শিরকে ভরা দল করে জান্নাতের ঠিকাদারি নিয়ে নেওয়া! একেই বলে চোরের মায়ের বড় গলা। আল্লাহ বলেন,
وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْاِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ١ۚ وَهُوَ فِي الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ۰۰۸۵
‘আর যে ইসলাম ব্যতিত অন্য কোন ধর্ম পালন করতে চায়, তাহলে কখনো তা গ্রহণ করা হবে না। আর সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’[28]
এগার. কিয়ামাতের দিন কবিরা গোনাহ তথা ব্যভিচার, চুরি ইত্যাদির কোন হিসেব দেওয়া লাগবে না।[29]
পর্যালোচনা: খ্রিস্টধর্মের মিশনারিরাও তাদের ধর্মের অনুসারীদেরকে একই সুবিধা দিয়ে থাকে। যতই করো চুরি-ডাকাতি, খুন-খারাবি, যিনা-ব্যভিচার শুধু আমাদের ধর্ম গ্রহণ করো এবং জাস্ট ফাদারের কাছে এসে একটু কনফেস তথা স্বীকারোক্তি দিলেই ব্যস কিসসা খতম। যিশু তো সকল মানবজাতির গোনাহের বোঝা একাই মাথায় নিয়ে গত হয়ে গেছেন। পরকালে তাই আর কোন চিন্তা নেই। কিন্তু আল্লাহ বলেন,
وَالَّذِيْنَ لَا يَدْعُوْنَ مَعَ اللّٰهِ اِلٰهًا اٰخَرَ وَلَا يَقْتُلُوْنَ النَّفْسَ الَّتِيْ حَرَّمَ اللّٰهُ اِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُوْنَ١ۚ وَمَنْ يَّفْعَلْ ذٰلِكَ يَلْقَ اَثَامًاۙ۰۰۶۸ يُّضٰعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ وَيَخْلُدْ فِيْهٖ مُهَانًاۗۖ۰۰۶۹
‘ইবাদুর রহমান হচ্ছে তারাই… যারা আল্লাহর সহিত অন্য কোন ইলাহের নিকট প্রার্থনা করে না, আল্লাহর নিষেধকৃত প্রাণহরণ করে না তবে ন্যায়সঙ্গত কারণ ব্যতিত এবং যিনায় লিপ্ত হয় না। আর যে এসব মন্দকর্ম করবে সে শাস্তির সম্মুখীন হবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুন করে দেওয়া হবে আর সে সেথায় অপদস্থ অবস্থায় চিরকাল থাকবে।’[30]
বারো. রোযা না রাখলে আল্লাহ তাআলা মানুষকে জাহান্নামে দেবেন না এবং কোন শাস্তিও দেবেন না।[31]
পর্যালোচনা: ইসলামের মৌলিক পঞ্চস্তম্ভের একটি হচ্ছে সাওম তথা রোযা রাখা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيْۤ اُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَالْفُرْقَانِ١ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُؕ ۰۰۱۸۵
‘রামাযান মাস, যে মাসে নাযিল করা হয়েছে আল কুরআন। যা মানবজাতির জন্য হিদায়ত, সুপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্য নির্দেশক। তোমাদের যে ব্যক্তি এ মাসে উপনীত হবে সে যেন রোযা রাখে।’[32]
সুস্পষ্ট আদেশ যাতে ভিন্ন ব্যাখ্যার কোনো অবকাশ নেই। সেই রোযার যদি এই অবস্থা হয় তাদের ‘এসলামে’ তাহলে অন্যান্য বিধানের কি হাশর হবে অনুধাবন করতে কষ্ট হয় না। মহান আল্লাহর ঘোষণা:
وَلَا تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَهٗ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوٰىهُ وَكَانَ اَمْرُهٗ فُرُطًا۰۰۲۸ وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ١۫ فَمَنْ شَآءَ فَلْيُؤْمِنْ وَّمَنْ شَآءَ فَلْيَكْفُرْ١ۙ اِنَّاۤ اَعْتَدْنَا لِلظّٰلِمِيْنَ نَارًا١ۙ اَحَاطَ بِهِمْ سُرَادِقُهَا١ؕ وَاِنْ يَّسْتَغِيْثُوْا۠ يُغَاثُوْا بِمَآءٍ كَالْمُهْلِ يَشْوِي الْوُجُوْهَ١ؕ بِئْسَ الشَّرَابُ١ؕ وَسَآءَتْ مُرْتَفَقًا۰۰۲۹
‘(হে নবী!) আপনি সে ব্যক্তির অনুসরণ করবেন না যার অন্তরকে আমি আমার বিধান হতে গাফেল করে দিয়েছি এ অবস্থায় যে সে তার প্রবৃত্তির অনুগামী হয় এবং কর্মে সীমালঙ্ঘন করে। আপনি বলে দিন, এটি তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে আগত সত্যবিধান; সুতরাং যার ইচ্ছে সে বিশ্বাস স্থাপন করবে আর যার ইচ্ছা সে কাফির রয়ে যাবে। নিশ্চয় আমি অবিচারকারীদের জন্য এমন আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি যার প্রাচীর তাদেরকে বেষ্টন করে রাখবে।’[33]
তের. দাড়ির সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।[34]
পর্যালোচনা: ইসলামের সাথে দাড়ির সম্পর্ক অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। রাসূল (সা.) অমুসলিমদের সাথে মুসলিমদের সাদৃশ্য মিটিয়ে মুসলিমদের স্বাতন্ত্র্য ফুটিয়ে তোলার নিমিত্তে দাড়ি লম্বা করার আদেশ প্রদান করেন। সহীহ আল-বুখারীতে এসেছে,
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «خَالِفُوا الْـمُشْرِكِيْنَ: وَفِّرُوا اللِّحَىٰ، وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ»، وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ: «إِذَا حَجَّ أَوِ اعْتَمَرَ قَبَضَ عَلَىٰ لِـحْيَتِهِ، فَمَا فَضَلَ أَخَذَهُ».
‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযি.) হতে বর্ণিত তিনি নবী করীম (সা.) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো, দাঁড়িকে লম্বা করো এবং মোচ খাটো করো।’ হযরত ইবনে ওমর (রাযি.) যখনই হজ কিংবা ওমরা করতেন দাঁড়িকে মুঠি করে ধরে মুষ্ঠির বাহিরের অংশ কেটে ফেলতেন।’’[35]
চৌদ্দ. চলচ্চিত্র নির্মাণ, গান, বাদ্য, নৃত্য, চিত্রাঙ্কন, ভাষ্কর্য নির্মাণের কোনটাই হারাম নয়, সবই হালাল।[36]
পর্যালোচনা: প্রকৃতপক্ষে এদের অ্যাজেন্ডাই হচ্ছে ইসলামের নিষিদ্ধ বিষয়াবলিকে উন্মুক্ত করে মানুষের প্রবৃত্তিকে উসকে দিয়ে ইসলামের গণ্ডী থেকে বের করে আনা। তাই তো ইসলামের যাবতীয় নিষিদ্ধ বিষয় কে সিস্টেম পাল্টানোর নাম দিয়ে হালকা করার চেষ্টায় মগ্ন এরা। উপর্যুক্ত বিষয়াবলি ইসলামে সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ। এর দলীল:
তফসীরে ইবনে কসীরে এসেছে,
عَنْ أَبِي الصَّهْبَاءِ: أَنَّهُ سَأَلَ ابْنَ مَسْعُوْدٍ عَنْ قَوْلِ اللهِ: [وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ ١ۖۗ ۰۰۶] {لقمان: 6}، قَالَ: الْغِنَاءُ، وَكَذَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَجَابِرٌ وَعِكْرِمَةُ وَسَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ وَمُجَاهِدٌ وَمَكْحُوْلٌ وَعَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ وَعَلِيُّ بْنُ بَذِيْمَةَ.
وَقَالَ الْـحَسَنُ الْبَصْرِيُّ: نُزِلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ: [وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ١ۖۗ ۰۰۶] {لقمان: 6} فِي الْغِنَاءِ وَالْـمَزَامِيْرِ.
وَقِيْلَ: أَرَادَ بِقَوْلِهِ: [يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ ١ۖۗ ۰۰۶] {لقمان: 6}: اشْتِرَاءَ الْـمُغَنِّيَاتِ مِنَ الْـجَوَارِيْ.
وَقَالَ الضَّحَّاكُ فِيْ قَوْلِهِ تَعَالَى: [وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ ١ۖۗ ۰۰۶] {لقمان: 6}، قال: يَعْنِي الشِّرْكُ، وَبِهِ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، وَاخْتَارَ ابْنُ جَرِيْرٍ أَنَّهُ كُلُّ كَلَامٍ يَصُدُّ عَنْ آيَاتِ اللهِ وَاتِّبَاعِ سَبِيْلِهِ.
وَقَوْلُهُ: [لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ١ۖۗ ۰۰۶] {لقمان: 6}، أَيْ: إِنَّمَا يَصْنَعُ هَذَا لِلتَّخَالُفِ لِلْإِسْلَامِ وَأَهْلِهِ.
وَقَوْلُهُ تَعَالَىٰ: [وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاؕ ۰۰۶] {لقمان: 6}، قَالَ مُجَاهِدٌ: وَيَتَّخِذُ سَبِيْلَ اللهِ هُزُوًا يَسْتَهْزِئُ بِهَا، وَقَالَ قَتَادَةُ: يَعْنِي وَيَتَّخِذُ آيَاتِ اللهِ هَزُّوًا، وَقَوْلُ مُجَاهِدٍ أَوْلَىٰ.
وَقَوْلُهُ: [اُولٰٓىِٕكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ۰۰۶] {لقمان: 6}، أَيْ: كَمَا اسْتَهَانُوا بِآيَاتِ اللهِ وَسَبِيْلِهِ أُهِيْنُوْا يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي الْعَذَابِ الدَّائِمِ الْـمُسْتَمِرِّ.
সংক্ষেপে উক্ত আয়াতে লাহবুল হাদীসের তাফসীর ইবনে আব্বাসসহ অন্যান্য জুমহুর মুফাসসিরদের মতে গান-বাদ্য। তেমনিভাবে টাকা দিয়ে গায়িকা ভাড়া নিয়ে আসাও এর অন্তর্ভুক্ত। আয়াতের শেষে তাদের জন্য লজ্জাদায়ক শাস্তির কথা এসেছে।[37]
সহীহ আল-বুখারীতে এসেছে,
عَنْ عُبَيْدِ اللهِ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ k أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ: «إِنَّ الَّذِيْنَ يَصْنَعُوْنَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُقَالُ لَـهُمْ: أَحْيُوْا مَا خَلَقْتُمْ».
‘হযরত ইবনে ওমর (রাযি.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেন, ‘যারা এসকল ছবি-ভাষ্কর্য তৈরি করে, কিয়ামাতের দিন তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে তোমরা যা সূষ্টি করেছ তা এবার জীবিত করো।’’[38]
পনের. মিসওয়াক, টুপি, পোষাক, কোন কাজের ডান দিক থেকে শুরু করাসহ তাওয়াতুর ও সহীহ সনদে বর্ণিত সকল সুন্নাতকে রাসূল (সা.)-এর ব্যক্তিগত অভ্যাস বলে মানুষের জন্য অপ্রয়োজনীয় সাব্যস্ত করে এবং অস্বীকার করে।
পর্যালোচনা: রাসুলের সুন্নাত হলো ঈমানের দুর্গ, ইসলামের সৌন্দর্য। ইসলামের দুশমনরা মুসলিমদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া, যাকাত দেওয়া, রামাযানের রোযা রাখা, ঈদ পালন করা ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিত নয়। কিস্তু সুন্নাত নিয়েই তাদের যত মাথাব্যথা। সুন্নাতের কথা বললেই সে হয় মৌলবাদী, দাঁড়ি-টুপি, জুব্বা-পাগড়ি মানেই সে জঙ্গিবাদী, জেহাদের কথা বললেই সে সন্ত্রাসী। এভাবেই তারা সুন্নাতকে আক্রমণ করে। কারণ তারা ভালো করেই জানে যদি এই উম্মাহ সুন্নাতের ওপর উঠে যায় তাহলে তাদেরকে পথহারা করা কখনো সম্ভব হবে না। সুনানে তিরমিযীতে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: «سِتَّةٌ لَعَنْتُهُمْ وَلَعَنَهُمُ اللهُ وَكُلُّ نَبِيٍّ كَانَ: الزَّائِدُ فِيْ كِتَابِ اللهِ، وَالْـمُكَذِّبُ بِقَدَرِ اللهِ، وَالْـمُتَسَلِّطُ بِالْـجَبَرُوْتِ لِيُعِزَّ بِذَلِكَ مَنْ أَذَلَّ اللهُ، وَيُذِلَّ مَنْ أَعَزَّ اللهُ، وَالْـمُسْتَحِلُّ لِـحُرُمِ اللهِ، وَالْـمُسْتَحِلُّ مِنْ عِتْرَتِيْ مَا حَرَّمَ اللهُ، وَالتَّارِكُ لِسُنَّتِيْ».
‘হযরত আয়িশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘ছয় প্রকার ব্যক্তির ওপর আামর অভিশাপ এবং সকল নবীর অভিশাপ: ১.আল্লাহর কিতাবে বৃদ্ধিকারী। ২. আল্লাহর নির্ধারিত তরদিরকে মিথ্যাপ্রতিপন্নকারী। ৩. আল্লাহ যাকে অপদস্থ করেছেন তাকে সম্মানিত করার লক্ষ্যে ক্ষমতা জবরদখলকারী। ৪. আল্লাহ কর্তৃক হারামকৃত বিষয় কে হালাল জ্ঞানকারী। ৫. আমার পারিবারবর্গের বিয়য়ে আল্লাহর হারামকৃত বিধানকে হালাল জ্ঞানকারী। ৬. আর আমার সুন্নাতকে পরিত্যাগকারী।’’[39]
ষোল. বর্তমানের মুসলিম যারা আছে তারা সবাই কাফির মুশরিক ও বিকৃত ইসলামের অধিকারী। যে বিকৃতির ধারা শুরু হয়েছিল রাসূল (সা.)-এর ইনতেকালের ৬০/৭০ বছর পর।[40]
পর্যালোচনা: আল্লাহ তাআলা বলেন,
اِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَاِنَّا لَهٗ لَحٰفِظُوْنَ۰۰۹
‘নিঃসন্দেহে আমি এই কুরআন নাযিল করেছি, আর আমিই এর যথাযথ সংরক্ষণকারী।’[41]
কুরআন কোন নিছক শব্দের নাম নয়, বরং কুরআন একই সাথে শব্দের গ্রন্থনা, সুরের দ্যোতনা, ভাব ও মর্মের ব্যঞ্জনা। আর কুরআনের মর্ম বিশ্লেষণই হলো হাদীস। আর ফিকহ হলো কুরআন ও হাদীসের সারনির্যাস। আমরা দেখছি কুরআনের শব্দে বা মর্মে কোন বিকৃতি আসেনি। রাসূলের যুগে যে কুরআন আমাদের যুগেও সে একই কুরআন বিদ্যমান। এরপরও যারা বলে ইসলাম বিকৃত হয়েছে প্রকৃত প্রস্তাবে তারাই ধিকৃত হয়ে জাহান্নামের কীটে পরিণত হয়েছে।
তাওহীদের নাম দিয়ে এসব ঈমান বিধ্বংসী আকীদা লালন ও প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার সম্মানিত প্রধান মুফতী ও মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেয আহমদুল্লাহ সাহেব (দা. বা.)সহ সকল মুফতিয়ানে কেরামের ঐকমত্যে এক ঐতিহাসিক ফতোয়া ঘোষণা করেন:
জামিয়া পটিয়ার ঐতিহাসিক ফতোয়া
‘হিযবুত তওহিদের প্রচারিত কথাগুলো পরিষ্কার শরীয়তপরিপন্থী। ইসলাম এসবের কোনটাকে সমর্থন করে না। যারা এ রকম আকীদা-বিশ্বাস করবে এবং কুরআন হাদীস পরীপন্থী এ রকম কাজ করবে তারা পরিষ্কার ইসলাম ধর্মের গণ্ডির বের হয়ে কাফির ও মুরতাদ হিসেবে গণ্য হবে। তারা কোন অবস্থাতেই মুসলমান হিসেবে গণ্য হতে পােেরনা। তাদের সব কথাগুলি কুফরি আকীদা ও কুফরি কথা। আর তারা বেঈমান হয়ে তাদের স্ত্রীগণ যদি মুসলমান হয়ে থাকে তখন তাদের ওপর তালাক পতিত হয়ে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের সাথে কোন মুসলমানের বৈবাহিক সম্পর্ক জায়েয ও সহীহ হবে না এবং তাদের জবাইকৃত পশুপাখি হালাল হবে না। তারা অমুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ জাতি থেকে আরো মারাত্মক। তারা মুসলমান জাতির জন্য হুমকি স্বরূপ| সাধ্যমত তাদের দমন কারার ব্যবস্থা করা প্রত্যেক মুসলমানের দীনী ও ধর্মীয় দায়িত্ব।’
ইসলামে এসব ধর্মত্যাগী মুরতাদদের একমাত্র শাস্তি হল প্রাণদণ্ড। কোন প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তি যদি কোন প্রাকার জোর জবরদস্তির শিকার না হয়ে স্বেচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তন করে এবং তা থেকে ফিরে আসতে সম্মত না হয় তাহলে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে সমস্ত ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমত রয়েছে। হাদীসে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: «لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ، يَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنِّيْ رَسُوْلُ اللهِ، إِلَّا بِإِحْدَىٰ ثَلَاثٍ: الثَّيِّبُ الزَّانِيْ، وَالنَّفْسُ بِالنَّفْسِ، وَالتَّارِكُ لِدِيْنِهِ الْـمُفَارِقُ لِلْجَمَاعَةِ».
‘হযরত আবদুল্লহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, কেবল তিন কারণেই আল্লাহর একত্ববাদ ও আমার রিসালাতের সাক্ষ্য দেওয়া সত্ত্বেও কোন মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করা হলাল। যথা- ১. বিবাহিত ব্যাভিচারীকে, ২. হত্যার বদলে হত্যাকারীকে, ৩. ইসলাম ত্যাগকারীকে (মুসলমানদের পক্ষত্যাগীকে)।’’[42]
عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ: أُتِيَ عَلِيٌّ h بِزَنَادِقَةٍ فَأَحْرَقَهُمْ، فَبَلَغَ ذَلِكَ ابْنَ عَبَّاسٍ، فَقَالَ: لَوْ كُنْتُ أَنَا لَـمْ أُحْرِقْهُمْ، لِنَهْيِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ: «لَا تُعَذِّبُوْا بِعَذَابِ اللهِ» وَلَقَتَلْتُهُمْ، لِقَوْلِ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ: «مَنْ بَدَّلَ دِينَهُ فَاقْتُلُوْهُ».
‘হযবত ইকরিমা (রাযি.) বলেন, হযরত আলী (রাযি.)-এর নিকট কিছু যিনদীককে নিয়ে আসা হলে তিনি তাদের কে পুড়িয়ে হত্যা করলেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.)-এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি বলেন, যদি আমি হতাম তাহলে পুড়িয়ে হত্যা করতাম না। কেননা রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর আযাব দিয়ে শাস্তি দিও না।’ বরং আমি তাদেরকে সরাসরি কতল করে ফেলতাম। কেননা রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলামধর্ম পরিবর্তন করে তোমরা তাকে হত্যা করে দাও।’’[43]
তাই উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের ওপর আবশ্যক হলো এসব ইসলম বিকৃতিকারী মুরতাদদেরকে তওবা করতে বাধ্য করা। আর যদি তওবা না করে তাহলে তাদেরকে প্রকাশ্যে হত্যা করে দেওয়া। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরণের ঈমানবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে সাহস করতে না পারে। আপামর জনসাধারণের ঈমান রক্ষার্থে উপযুক্ত কতৃপক্ষের জন্য এদের বিরূদ্ধে এ ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া আশু প্রয়োজন।
লেখক: মুহাম্মদ খুবাইব রাযী
শিক্ষার্থী, ইফতা বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
[1] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), আল্লাহর মো’জেজা: হেজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩৩ হি. = ২০১১ খ্রি.), পৃ. ৯৭
[2] youtu.be/qmLzA5m6z_8
[3] মোঃ বায়াজীদ খান পন্নী, মোমেন, মুসলিম ও উম্মতে মুহাম্মদীর আকীদা, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ, পৃ. ১২
[4] মোঃ বায়াজীদ খান পন্নী, মোমেন, মুসলিম ও উম্মতে মুহাম্মদীর আকীদা, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ, পৃ. ১৮
[5] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), মহাসত্যের আহ্বান, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ, পৃ. ৮Ñ৯
[6] আল-কুরআন, সুরা তাহা, ২০:১৪
[8] আল-কুরআন, সুরা আল-আহযাব, ৩৩:৫৯
[9] আল-কুরআন, সুরা আন-নুর, ২৪:৩১
[10] আল-বুখারী, আস-সহীহ, দারু তওকিন নাজাত, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪২২ হি. = ২০০১ খ্রি.), খ. ৬, পৃ. ১০৯, হাদীস: ৪৭৫৯
[11] মোঃ বায়াজীদ খান পন্নী, মোমেন, মুসলিম ও উম্মতে মুহাম্মদীর আকীদা, পৃ. ১৯
[12] আল-কুরআন, সুরা আল-মায়িদা, ৫:৬৭
[13] আল-কুরআন, সুরা আল-মায়িদা, ৫:৩
[14] আল-কুরআন, সুরা আল-আম্বিয়া, ২১:১০৭
[15] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ৮
[16] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ৭, পৃ. ১৬১, হাদীস: ৫৯০২
[17] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ৯, পৃ. ৬০, হাদীস: ৭১৩১
[18] হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম, শোষণের হাতিয়ার, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩৫ হি. = ২০১৩ খ্রি.), পৃ. ৭০
[19] আল-কুরআন, সুরা আল-বাইয়িনা, ৯৮:৫
[20] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), আল্লাহর মো’জেজা: হেজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ২৭
[21] আত-তিরমিযী, আল-জামি‘উল কবীর = আস-সুনান, মুস্তফা আলবাবী অ্যান্ড সন্স পাবলিশিং অ্যান্ড প্রিন্টিং গ্রুপ, কায়রো, মিসর, খ. ৪, পৃ. ৪৯৯, হাদীস: ২২১৯
[22] হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম, শোষণের হাতিয়ার, পৃ. ৭২
[23] ইহসান ইলাহী যহীর, আল-কাদিয়ানিয়া: দিরাসাত ওয়া তাহলীল, দারুল ইমাম আল-মুজাদ্দিদ লিন নাশরি ওয়াত তাওযী’, কায়রো, মিসর (প্রথম সংস্করণ: ১৪২৬ হি. = ২০০৫ খ্রি.), পৃ. ৫৫
[24] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), আল্লাহর মো’জেজা: হেজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৩৪
[25] আল-কুরআন, সুরা আল-মায়িদা, ৫:৩
[26] আল-কুরআন, সুরা আল-আনআম, ৬:১২১
[27] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), আল্লাহর মো’জেজা: হেজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৬৫
[28] আল-কুরআন, সুরা আলে ইমরান, ৩:৮৫
[29] মোঃ বায়াজীদ খান পন্নী, মোমেন, মুসলিম ও উম্মতে মুহাম্মদীর আকীদা, পৃ. ৯
[30] আল-কুরআন, সুরা আল-ফুরকান, ২৫:৬৮Ñ৬৯
[31] হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম, সাওমের উদ্দেশ্য, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩৮ হি. = ২০১৬ খ্রি.), পৃ. ১৪
[32] আল-কুরআন, সুরা আল-বাকারা, ২:১৮৫
[33] আল-কুরআন, সুরা আল-কাহফ, ১৮:২৮Ñ২৯
[34] মোঃ বায়াজীদ খান পন্নী, এসলাম শুধু নামে থাকবে?, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ (১৪৩৫ হি. = ২০১৩ খ্রি.), পৃ. ১৩২
[35] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ৭, পৃ. ১৬০, হাদীস: ৫৮৯২
[36] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), এসো সিস্টেমকে পাল্টাই, তওহীদ প্রকাশন, ঢাকা, বাংলাদেশ, পৃ. ১২
[37] ইবনে কসীর, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১৯ হি. = ১৯৯৮ খ্রি.), খ. ৬, পৃ. ২৬৯
[38] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ৭, পৃ. ১৬৭, হাদীস: ৫৯৫১
[39] আত-তিরমিযী, আল-জামি‘উল কবীর = আস-সুনান, মুস্তফা আলবাবী অ্যান্ড সন্স পাবলিশিং অ্যান্ড প্রিন্টিং গ্রুপ, কায়রো, মিসর, খ. ৪, পৃ. ৪৫৭, হাদীস: ২১৫৪
[40] মুহাম্মদ রিয়াদুল হাসান (সম্পাদক), মহাসত্যের আহ্বান, পৃ. ৬
[41] আল-কুরআন, সুরা আল-হিজর, ১৫:৯
[42] মুসলিম, আস-সহীহ, দারু ইয়াহইয়ায়িত তুরাস আল-আরবী, বয়রুত, লেবনান, খ. ৩, পৃ. ১৩০২, হাদীস: ১৬৭৬
[43] আল-বুখারী, আস-সহীহ, খ. ৯, পৃ. ১৯, হাদীস: ৬৯২২