সমস্যা ও সমাধান
ফতওয়া বিভাগ
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
মোবাইল: ০১৮৫৬-৬১৮৩৬৭
ইমেইল: daruliftapatiya@gmail.com, পেইজলিংক: fb.com/islamiclaw.patiya
আকীদা-বিশ্বাস
সমস্যা: মাহে রবিউল আউয়াল আগমন করলে আমাদের দেশে কিছু মুসলমানদেরকে দেখা যায় প্রচুর অর্থ ও শ্রম ব্যয় করে জাঁকজমকপূর্ণভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করে এবং যারা মিলাদুন্নবী উদযাপন করে না তাদেরকে কাফের-মুশরিকসহ বিভিন্ন ঘৃণ্য উপাধিতে ভূষিত করে থাকে। এ ব্যাপারে আমার জানার বিষয় হলো, মিলাদুন্নবী উদযাপন করার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী? এবং যারা তা উদযাপন করে না তাদেরকে কাফের বা মুশরিক বলা যাবে কি না? জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
সমাধান: রবিউল আউয়াল মাসে রাসুল (সা.)-এর জন্ম উপলক্ষে ঈদে মিলাদুন্নবী এবং ইন্তেকাল উপলক্ষে শোকদিবস পালন করা ইসলামী শরীয়তে তার কোন ভিত্তি নেই এবং ঐ দিনকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত বিদআত ও কুপ্রথাসহ শরীয়ত পরিপন্থী কার্যকলাপ প্রচলিত আছে, তার সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্কও নেই। বরং মুসলমানদের উচিত ওই দিন বিদআত রুসুমাত থেকে বিরত থেকে অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করা। সহীহুল বুখারী: হাদীস: ২৬৯৭, আল-মাদখাল: ১৮৫, ইমদাদুল মুফতিয়্যিন: ১/১৭৪, কিফায়াতুল মুফতি: ১/১৪৫
সমস্যা: অনেকে রাসুল (সা.)-এর নাম শুনলে বৃদ্ধাঙ্গুলিতে চুমু খেয়ে সেই আঙুল দ্বারা চোখ মালিশ করে থাকে এবং এটাকে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি ও সাওয়াবের কারণ মনে করে। তারা এ আমলের ওপর দলিলও দিয়ে থাকে। আমার প্রশ্ন হলো, নবী (সা.)-এর নাম শুনে এমন করা শরীয়তসম্মত কি না?
মুহাম্মদ ওনাইস
সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: হাদীস শরীফে নবী করীম (সা.)-এর নাম শুনে দরূদ শরীফ পাঠ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনো মজলিসে একাধিকবার নবী (সা.)-এর নাম মুবারক শ্রবণ করলে প্রত্যেকবার দরূদ শরীফ পড়া মুস্তাহাব; একবার পড়া ওয়াজিব। তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এটাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। মনগড়া কোনো পন্থায় সম্মান প্রদর্শন শরীয়ত সমর্থন করে না। তদ্রূপ নবী (সা.)-এর নাম শুনে আঙ্গুল চুম্বন করে সেই আঙুল দ্বারা চোখ মালিশ করা শরীয়ত স্বীকৃত নয়। সুতরাং এ আমলকে মুস্তাহাব মনে করা বিদআত ও গুমরাহী। কেননা হাদীসে এ আমলের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তদোপরি এ বিষয়ে যে হাদীসটি পাওয়া যায় তা নিতান্তই অগ্রহণযোগ্য ও যয়ীফ তথা দুর্বল হাদীস বলে হাদীস বিশারদগণ মত ব্যক্ত করেছেন। পক্ষান্তরে ইসলামের স্বর্ণযুগে তথা সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবয়ে তাবেঈন, মুহাদ্দিসীন, মুফাসসিরীন ও ফকীহগণের কেউই রাসুল (সা.)-এর প্রতি সম্মানপ্রদর্শনের জন্য এধরনের আমল করেছেন বলে প্রমাণ নেই। রদ্দুল মুহতার: ১/২৯৮, ইমদাদুল ফতওয়া: ৫/২৫৯, ইমদাদুল আহকাম: ১/১৮৮, ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১/১৮৬
সমস্যা: মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের খতম এবং গরু-মহিষ জবাই করে লোকজন দাওয়াত দিয়ে বিশা, ত্রিশা ও চল্লিশা করা জায়েয আছে কি? এ ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কী? জানালে উপকৃত হবো।
আবদুল আজীজ
মালিবাগ, ঢাকা
শরয়ী সমাধান: মৃত ব্যক্তির জন্য দিন-তারিখ নির্দিষ্ট করে দাওয়াতের আয়োজন করা ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা বিদআত ও বর্জনীয়। তবে তিন দিনা চার দিনা ত্রিশা ও চল্লিশার মতো তারিখ নির্ধারণ না করে মৃত ব্যক্তির ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে গরিব মিসকীনদের খানা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা যায়। ফতহুল কদীর: ২/১০২; ইমদাদুল আহকাম: ১/২০৬
তাহারাত-পবিত্রতা
সমস্যা: কয়েকদিন পূর্বে আমি গরু জবাই করে গোস্ত ইত্যাদি কাটার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এ অবস্থায় যোহরের নামাযের সময় হয়ে গেলে আমি তাড়াতাড়ি করে নামায আদায় করতে মসজিদে চলে যাই। নামায আদায় করার পর আমার শরীর এবং কাপড়ের বিভিন্ন অংশে রক্ত দেখতে পাই। আমি নিশ্চিত যে, সেই রক্ত গরু জবাই করার সময়ের রক্ত নয়; বরং গোস্তের ভেতর এবং হাড্ডির ভেতরে থাকা রক্ত। এ অবস্থায় আমার নামায শুদ্ধ হয়েছে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
মু. হিফজুর রহমান
মুনশিগঞ্জ, ঢাকা
শরয়ী সমাধান: জেনে রাখতে হবে যে, হালাল প্রাণীর প্রবাহমান রক্ত যা জবাই করার সময় বের হয় তা নাপাক। এছাড়া অন্যসব রক্ত পাক। তাই প্রশ্নে উল্লিখিত আপনার কথা মতে যখন তা গরু জবাইয়ের রক্ত নয়; বরং গোস্তের ভেতরে থাকা রক্ত। তাই সেই রক্ত নাপাক নয়। সুতরাং আপনার নামায শুদ্ধ হয়ে গেছে। পুনরায় আদায় করতে হবে না। মাজমাউল আনহুর: ১/৩২, আল-বাহরুর রায়েক: ১/২২৯, কাযী খান: ১/১০
সমস্যা: এক রাতে এশার নামাযের পূর্বে খাওয়া-দাওয়া করে বিছানায় শুয়ে নামাযের অপেক্ষায় ছিলাম। হঠাৎ হালকা ঘুম এসে যায়। তবে রুমের ভেতর অন্যদের চলা-ফেরার শব্দ আমি উপলব্ধি করতে পারছিলাম। এক পর্যায়ে আযান হলে আমি লাফ দিয়ে উঠে যাই এবং মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করি। এমতাবস্থায় আমার নামায শুদ্ধ হয়েছে কি না? জানিয়ে উপকৃত করবেন।
মু. জুনাইদ
সাতক্ষিরা
শরয়ী সমাধান: উল্লেখ্য যে, আমাদের হানাফী মাযহাবের ফকিহগণ সেই ঘুমকে অযু ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য করেছেন, যে ঘুমের কারণে মানুষের উপলব্ধি শক্তি হারিয়ে যায় এবং তার নিতম্বI জমিনে স্থির থাকে না। তবে যদি ঘুম এমন না হয়, বরং হালকা ঘুম যার কারণে সে অন্যদের কথাবার্তা শুনতে পায়। তখন সেই ঘুম দ্বারা অযু ভঙ্গ হয় না। প্রশ্নে উল্লিখিত ঘটনায় আপনি যেহেতু সেই ঘুমে মানুষের চলা-ফেরার শব্দ উপলব্ধি করতে পেরেছেন। বিধায় আপনার অযু ভঙ্গ হয়নি এবং তা দ্বারা যে নামায আদায় করেছেন তা সহীহ হয়েছে। আল-মুহিতুল বুরহানী: ১/৬৯, হিন্দিয়া: ১/১২, আহসানুল ফতওয়া: ১/৪৭৩
সমস্যা: শীতকালে প্রচণ্ড শীতের কারণে আমার পা জীর্ণশীর্ণ হয়ে যায়। তাই আমি শীতকালে মৌজা ব্যবহার করি। ফলে প্রতি নামাযের সময় অযু করার জন্য মৌজা খোলা আমার জন্য কষ্টকর। তাই আমার জানার বিষয় হলো আমাদের দেশে বাজারে প্রচলিত সুতা ও তুলার তৈরি যে মৌজাগুলো পাওয়া যায় সেসব মৌজার ওপর মাসেহ করা বৈধ হবে কি?
মু. সালেম আজিজ
চকরিয়া, কক্সবাজার
শরয়ী সমাধান: মৌজার ওপর মাসেহ করার জন্য তা চামড়া বা চামড়ার মতো বস্তু দ্বারা তৈরিকৃত হতে হবে এবং তার জন্য কিছু শর্তও রয়েছে। বর্তমান প্রচলিত যে সকল মৌজা সুতা, তুলা ইত্যাদি দ্বারা তৈরি করা হয় সেসব মৌজাতে শর্তগুলো পাওয়া যায় না। তাই প্রচলিত সুতা ও তুলার তৈরি মৌজার ওপর মাসেহ করা বৈধ হবে না। কিতাবুল আসল লিস সাইবানী: ১/৯১ বাদায়েউস সানায়ে: ১/৮৩; রদ্দুল মুহতার: ১/২৭০, তাতার খানিয়া: ১/৪০২
সমস্যা: বিনীত নিবেদন এই যে আমার ঘরে ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। ওরা যখন তখন তোষক ও কম্বলে পেশাব করে দেয়। পবিত্র করার জন্য তোষক ধোয়া সম্ভব নয়। কারণ কম্বল বারবার ধুলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই কম্বল এবং তোষক পবিত্র করার সঠিক পদ্ধতি কী হতে পারে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
সলিম উদ্দীন
কুতুবদিয়া, কক্সবাজার
শরয়ী সমাধান: আমাদের হানাফি মাযহাব মতে ছোট বাচ্চাদের পেশাব অন্যান্য পেশাবের মতো। তাই যে কোন ধরনের পেশাব বেড বা কম্বলে লাগলে তা পরিস্কার করার একমাত্র মাধ্যম হলো ধুয়ে ফেলা। কেননা এ জাতীয় সরঞ্জামগুলো পেশাব ইত্যাদি লাগলে চুষে নেয়। পানি ছাড়া নাপাকি বের করার জন্য অন্য কোন পন্থা শরীয়তের পক্ষ থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি। তাই সার কথা হলো কম্বল বা বেড যদি ধোয়া সম্ভব না হয় তখন এর মধ্যে এ পরিমাণ পানি ঢালবে যতক্ষণ নাপাকী দূর হওয়ার দৃঢ বিশ্বাস না হবে। কাপড় থেকে রুই বের করা জরুরি নয়। বরং সম্ভব হলে কম্বল বা মোটা তোষকের যে স্থানে নাপাকী লেগেছে সেই স্থানে পানি ঢেলে দিয়ে তোষক ঝুলিয়ে রাখবে পানির ফোটা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত। এভাবে তিনবার করলে পাক হয়ে যাবে। আর যদি তাও সম্ভব না হয় তখন নাপাকির স্থানে পানি ঢেলে দিয়ে কোন মোটা কাপড় বা শোষক বস্তু দ্বারা পানিগুলো চুষে নিবে। এই ভাবে বার বার করার দ্বারা নাপাকি দূর হয়ে যাওয়ার দৃঢ wek^vm হয়েগেলে অর্থাৎ নাপাকির গন্ধ বা চিহ্ন দূর হয়ে গেলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। বাদায়িউস্ সানায়ে: ১/২৫০, আল-জাওহারাতুন্ ন্ায়্যিরাহ: ৫৫ ইমদাদুল ফাতওয়া: ১/১০৪ কিতাবুল ফাতওয়া: ২/৮০
সালাত-নামায
সমস্যা: আমি যে মাদরাসায় লেখা-পড়া করি, সেখানে একটি জামে সমজিদ আছে এবং তার আশে-পাশে অনেক সমজিদ রয়েছে অন্য সমজিদগুলোতে এশার জামায়াত হয় ৭টা বাজে। পক্ষান্তরে আমাদের মসজিদে হয় ৮টা ৩০ মিনিটে এ-ক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হলো উভয় মসজিদের আযানের জবাব দিতে হবে? না যেকোন এক মসজিদের আজানের জবাব দিলেও চলবে? এবং কোন মসজিদের আযানের জবাব দিতে হবে? জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
মু. শরীফুল ইসলাম
চাগলনাইয়া, ফেনী
শরয়ী সমাধান: আমাদের ফিকহে হানাফীর অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে আযানের জবাব দেয়া মুসতাহাব। তবে কেউ কেউ সুন্নাত বা ওয়াজিব হওয়ার মত ব্যক্ত করেছেন। যদি আজান দুই বা ততোদিক মসজিদে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দেয়া হয়, এ অবস্থায় প্রথম মসজিদ, তা নিজ মহল্লার মসজিদ হোক বা অপর মহল্লার হোক তার জবাব দিতে হবে। তবে সব আযানের জবাব দেয়া উত্তম। যদি একাদিকে মসজিদের আযান এক সাথে শোনা যায় তখন জবাব দেওয়ার সময় নিজ মহল্লার আযানের জবাবের নিয়্যত করবে। তাই আপানি প্রথমে যে আযান শুনবেন তার জবাব দিতে হবে; চাই তা মাদরাসার মসজিদের হোক বা অন্য কোন মসজিদের। রদ্দুল মুহতার: ২/৬৭, ফাতহুল কদীর: ১/২১৭ মারাকিয়ুল ফলাহ: ১১৩, আহসানুল ফাতওয়া: ২/২৯২
সমস্যা: জনাব আমি একজন সাধারণ চাকরিজীবী। বাসা ভাড়া করে পরিবার পরিজন নিয়ে শহরে থাকি। আমার বাসা থেকে মসজিদ কিছুটা দূরে হওয়ার কারণে ঘরে আমার স্ত্রী, ছয় বছরের একটি ছেলে ও তিন বছরের একটি মেয়ে আছে তাদেরকে নিয়ে জামায়াতের সাথে নামায আদায় করলে জামায়াতের সাওয়াব পাওয়া যাবে কি না? এবং তাদেরকে নিয়ে জামায়াতের নামায আদায়কালে দাঁড়ানোর পদ্ধতি কী হবে? সঠিক সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।
মানফুজুর রহমান
শীতাকুণ্ডা
শরয়ী সমাধান: মহল্লার মসজিদ কিছুটা দূরে হওয়ার কারণে অন্য কোন শরয়ী ওযর ব্যতীত ঘরে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে জামায়াতের সাথে নামায আদায় করলে জামায়াতের সওয়াব পাওয়া যাবে না; বরং কেউ কেউ এটিকে মাকরুহ ও বিদআতের পর্যায়ে বলেছেন। তবে চেষ্টার পরেও মসজিদে গিয়ে জামায়াত পাওয়া না গেলে বা অন্য কোন ওযর থাকলে তাদেরকে নিয়ে ঘরে জামায়াত আদায় করলে জামায়াতের সওয়াব পাওয়া যাবে। তবে তা মসজিদের জামায়াতের সওয়াবের তুলনায় কম। তাদেরকে নিয়ে জামায়াতের সাথে নামায আদায়কালে দাঁড়ানোর পদ্ধতি হলো, ছেলে সন্তানটি আপনার ডান পাশে এবং আপনার স্ত্রীও তিন বছরের মেয়েটি আপনার পিছনে দাঁড়াবে। কারণ মহিলা পুরুষ ইমামের পাশে দাঁড়ালে নামায ভঙ্গ হয়ে যায়; চাই সে স্ত্রী হোক বা অন্য কেউ। সুনানুন নাসাঈ: ১/৯২, আল-মুহীতুল বুরহানী: ১/৪৮৩বাদায়েউস সানায়ে: ১/৩৮৪, ফাতহুল কদীর: ১/৩০০ রদ্দুল মুহতার: ২/৩০৭
সমস্যা: কয়েকদিন পূর্বে আমাদের মহল্লার মসজিদে ইমাম সাহেব এশার নামাযে কিরাআত অশুদ্ধ তিলাওয়াত করেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে অশুদ্ধ তিলাওয়াতকৃত অংশটুকু পুনরায় শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করে নেন। নামায শেষে কিছু মানুষ বলতে লাগল কিরাআত অশুদ্ধ হওয়ার কারণে আমাদের নামায ভঙ্গ হয়ে গেছে। পুনরায় পড়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হলো, সেই মানুষগুলোর কথা সঠিক কি না? সঠিক সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।
আবদুল আজিজ
রাউজান, চট্টগ্রাম
সমাধান: নামাযের ভেতরে কুরআন শরীফ থেকে যা পাঠ করা হয় পুরোটাই শুদ্ধভাবে পাঠ করা আবশ্যক। যদি কোন রাকাআতে এমন অশুদ্ধ তিলাওয়াত করে ফেলে যার ফলে অর্থ সম্পূর্ণ বিকৃত হয়ে যায়। তার দ্বারা নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে তবে যদি অশুদ্ধ তিলাওয়াতের পর সেই রাকাআতে পুনরায় শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করা হয় তার দ্বারা নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। ফরয নামায হোক বা তারাবীর নামায। ফাতওয়ায়ে কাযীখান: ১/১৫৩, হাশিয়াতুত তাহতাবী: ১/২৬৭, শরহু ইবনে ওয়াহবান: ১/৪৫ ফাতওয়ায়ে আহসানুল ফাতওয়া: ৩/৪৪৫ মাহমুদিয়া: ১১/২০৭
সমস্যা: মুহতারাম বিনীত নিবেদন এই যে, কোন নামায কাযা হয়ে গেলে তার আগে পরে যে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা রয়েছে সে সুন্নাতের মুয়াক্কাদাগুলো আদায় করার শরয়ী বিধান কি?
মু.ওয়াহিদুল্লাহ
মীরসরাই, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: আমাদের ফিকহে হানাফীর অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরামের মতে কোন নামায কাযা হয়ে গেলে তার আগে পরে যে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা রয়েছে তা পরবর্তীতে কাযা হয়ে যাওয়া ফরয নামায কাযা করার সময় ফরযের সাথে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কাযা করতে হবে না। তবে ফজরের নামায কাযা হয়ে গেলে অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরামের মতামত হচ্ছে পরবর্তী সময়ে তা কাযা করার সময় সাথে সুন্নাতে মুয়াক্কাদার দু’রাকাআতসহ কাযা করে নেবে। তদ্রূপ সময় স্বল্পতার কারণে ফজরের সুন্নাত ছুটে গেলে সূর্যোদয়ের পর তা কাযা করার কথাও ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন। সুনানে ইবনে মাযা: ১/৮১, রদ্দুল মুহতার: ২/৫২৪, তাতার খানিয়া: ২/৩০১ আল-বাহরুর রায়েক: ২/৪৮
যাকাত-সাদাকা
সমস্যা: আমার কছে তিন লক্ষ টাকা জমা আছে। সেই টাকাগুলোর ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়ার দু’মাস আগে আরো দু’লক্ষ টাকা হাদীয়া পাই। বছর শেষ হওয়ার পর আমাকে কত টাকা যাকাত আদয় করতে হবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
নাজমুল হক
নানুপুর, ফটিকছড়ি
শরয়ী সমাধান: ফিকহ ফতওয়ার কিতাবাদি দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যাকাত আদায় করার জন্য তার কাছে যে সব সম্পদ আছে তার ওপর পূর্ণ একবছর অতিবাহিত হতে হবে। সুতরাং প্রশ্নের বর্ণনানুযায়ী আপনার কাছে যে তিনলক্ষ টাকা আছে তার ওপর বছর অতিবাহিত হওয়ার মাথায় যাকাত ওয়াজিব হবে। সাথে যে দু’লক্ষ টাকা হাদীয়া পেয়েছেন তাতে বছর অতিবাহিত না হলেও এই তিন লাখের সাথে গণ্য হয়ে তার মধ্যেও যাকাত ওয়াজিব হবে। সুতরাং আপনাকে পাঁচ লক্ষ টাকারই যাকাত আদায় করতে হবে। দুররে মুখতার: ২/২৮৮, দুরারুল হুক্কাম: ১/১৭৯ মাযমাউল আনহুর: ১/২০৭ আল-বাহরুর রায়েক: ২/২২২, আহসানুল ফাতওয়া: ৪/২৯৩
সমস্যা: আমি একজন ব্যবসায়ী। যখন যে ফলের মৌসুম আসে তখন সে ফলের ব্যবসা করি। এক মৌসুমে ব্যবসায় যা টাকা জমা হয় পরবর্তী মৌসুমের জন্য সব টাকা ব্যয় করেফেলি। অর্থাৎ সব টাকা মহাজনদেরকে দিয়ে ফেলি। এরপর তাদের কাছ থেকে অল্প অল্প করে মাল নিয়ে বিক্রি করি, যেহেতু আমার কোন দোকান নেই সেহেতু এক সাথে বেশি মাল নেওয়া হয় না। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ মাল আমার কাছে জমা থাকে না। আমার এ ব্যবসায় মাঝে মাঝে এত বেশি লোকসান হয় যার ফলে আমি মূলধন পর্যন্ত হারিয়ে ফেলি; আবার অনেক সময় দ্বিগুণ লাভ হয়ে থাকে অর্থাৎ আমার মালেরও কোনো স্থিরতা নেই। অথচ আমি লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা করি। এমতাবস্থায় আমার যাকতের বিধান কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো।
আনোয়ার জামিল
মোহরা, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: ফিকহ-ফাতওয়ার কিতাবাদি দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, ব্যবসার উদ্দেশ্যে নেওয়া যে কোন বস্তুর ওপর বছর অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই যাকাত ফরয হয়ে যায়। যদিও হাদীসের মধ্যে এ ব্যাপারে এ ধরণের সম্পদের নেসাব নির্ধারণ করার কোন বর্ণনা পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফোকাহায়ে কেরাম মালে তেজারত তথা ব্যবসায়িক পণ্যের নেসাবকে স্বর্ণ ও রূপার নেসাবের ওপর অনুমান করেছেন। সে জন্য সব অর্থ মিলিয়ে যদি রুপার নেসাব পরিমাণ হয়, তখন রুপার নেসাব অনুযায়ী হিসাব করে যাকাত প্রদান করবে। প্রশ্নালোকে আপনি ব্যবসার মাল স্বর্ণ-রূপা ও নগদ টাকা সব মিলিয়ে যেদিন নেসাব তথা (সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্য) সমপরিমাণ টাকার মালিক হবেন, সেদিন থেকে বছর গণনা শুরু করবেন। উদাহারণস্বরূপ আপনি যদি মুহাররম মাসে নেসাবের মালিক হন পরবর্তী বছর মুহাররম মাস আসলে উপস্থিত সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত আদায় করবেন; চাই বছরের মাঝখানে আপনার ব্যবসা থাকুক বা না থাকুক, ব্যবসায় লাভ হোক বা লোকসান হোক, সর্বাস্থায় বছরের শেষে যদি নেসাবের মালিক থাকেন তাহলে যাকাত ওয়াজিব হবে। এলাউস্ সুনান: ৯/৬৫, বাদায়েউস্ সানায়ে: ২/১০৯/১১০ তুহফাতুল ফুকাহা: ১/২৭২, তাতার খানিয়া: ৩/১৬৪
সমস্যা: মুহতারাম, আমি বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা করে থাকি। তার মধ্য থেকে একটা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। তার কারণ হলো সেই ব্যবসার পণ্যগুলোর চাহিদা একেবারে কমে গেছে। তাই সেগুলো আর বেক্রি হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমার সেই ব্যবসায় প্রায় পাঁচ-ছয় লক্ষ টাকার পণ্য পড়ে আছে যা বিক্রি করতে পারছি না, ফেরতও দিতে পারছি না। আমার উক্ত পণ্যের ওপর প্রতি বছর যাকাত ওয়াজিব হবে কি? এবং এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
আরশাদ আলী
ঠাকুরগাঁও
শরয়ী সমাধান: হাদীস ও ফিকহ ফতওয়ার কিতাবাদি দ্বারা একথা স্পষ্ট হয় যে, স্বর্ণ-রূপা ও বর্তমান প্রচলিত টাকা-পয়সা ব্যতীত যে বস্তুই মানুষ বিক্রি করার নিয়তে খরিদ করে তা ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে গণ্য হয় এবং সেই ব্যবসায়িক পণ্যের ওপর এক বছর অতিবাহিত হলে তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে। চাই তা বিক্রি করা হোক বা গুদামজাত করে রাখা হোক। অত এব প্রশ্নে উল্লিখিত আপনার যে প্রায় পাঁচ ছয় লক্ষ টাকার পণ্য ষ্টক হয়ে পড়ে আছে, বছর অতিবাহিত হওয়ার পর সেই পণ্যগুলোর নূন্যতম যে মূল্য বাজারে পাওয়া যাবে সে অনুযায়ী তার চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসাবে দিতে হবে। তবে হ্যাঁ, যদি সেই পণ্যগুলির মূল্য এতই কমে যায় যে, যা নেসাব পরিমাণ হয় না এবং এ ছাড়া অন্য কোন সম্পদও যদি না থাকে, তাহলে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। তবে এ ক্ষেত্রে আপনার জন্য করণীয় হলো যেকোন উপায়ে তা বিক্রি করে দেয়া বা অন্য কাউকে দান করে দেয়া। মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা:১০৫৫২; বযলুল মাজহুদ: ৮/১৬, আল-মুহিতুল বুরহানী: ২/৩৯৩, আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যা: ২৩/২৭৫
নিকাহ-তালাক
সমস্যা: সবিনয় নিবেদন এই যে, দুইজন স্ত্রী থাকলে কোন কোন খাতে সমতা রক্ষা করা একান্ত জরুরি? শরয়ী সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
ফরিদুল আলম
আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: কোন ব্যক্তির কয়েকটি স্ত্রী থাকলে তাদের ভরণপোষণ এবং তাদের সাথে সহবাস ইত্যাদির মধ্যে সমতা রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। নতুবা আল্লাহ তায়ালার নিকট কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। অবশ্য কোন স্ত্রীর প্রতি যদি আন্তরিক মায়া-মমতা বেশি থাকে তাতে অসুবিধা নাই। তার পরও ব্যবহার, ভরণপোষণ এবং সহবাস ইত্যাদির মধ্যে সমতা বহাল রাখতে হবে। সূরা আন-নিসা: ৩, তিরমীযি: ১/২১৬ শামী: ৪/৩৭৭
সমস্যা: আমার স্ত্রীর সাথে বনাবনি না হাওয়াতে তালাকের নোটিশের মাধ্যমে তালাক প্রদান করে আমি বিদেশ চলে যাই। উল্লেখ্য যে, আমি তিন তালাক মুখে উচ্চারণ করেই তালাক দিয়ে নোটিশটি পূরণ করেছি। ইসলামি শরীয়তে উক্ত তালাকের মাধ্যমে আমাদের বিবাহবন্ধন ছিন্ন হয়েছে কি না? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
মু. আবু বকর
খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: প্রশ্নে উল্লিখিত ঘটনায় আপনি যেহেতু মৌখিকভাবে তিন তালাক উচ্চারণ করার কথা স্বীকার করেছেন। তাই স্বীকারোক্তি মতে স্ত্রীর ওপর তিন তালাক পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে। তালাক দেওয়ার পর থেকে আপনাদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে মেলামেশা ও ঘর-সংসার করা পরিস্কার হারাম ও নাজায়েয এবং অন্য স্বামীর সংসার করার পূর্বে পুনরায় বিয়ে-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য যে এক সাথে তিন তালাক দিলে ইসলামী শরীয়তের মধ্যে এটা তিন তালাকই গণ্য হয়; এক তালাক নয় এবং তার মধ্যে আমাদের চার ইমামের ইজমা এবং ইমাম বোখারীর ঐক্যমত রয়েছে। সুতরাং তার মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। সূরা আল-বাকারা: ২৩০, বুখারী শরীফ: ২/৭৯১, হিদায়া: ২/৩৭৯
সমস্যা: চার বছর পূর্বে আমার সাথে তাসলিমা আক্তারের বিবাহ হয়েছে। তার সাথে ৩-৪ বছর ভালো সম্পর্ক ছিল। এরপর থেকে সে বিভিন্ন কারণে অকারণে আমার সাথে ঝগড়া ও খারাপ আচরণ করতে থাকে। খারাপ আচরণ না করার জন্য অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার পরও সে ফিরে আসছে না। তাই আমি সরকারিভাবে হলফনামার মাধ্যমে বলেছি যে, আমি হলফনামার মাধ্যমে তালাক প্রদান করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক চিরতরে ছিন্ন করলাম এখন আমার জানার বিষয় হল, আমি মৌখিকভাবে কোন তালাক প্রদান করিনি এবং আমার তালাক দেওয়ার ইচ্ছাও ছিল না। হলফনামার মাধ্যমে যে তালাক প্রদান করেছি তা পতিত হয়েছে কি না? যদি পতিত হয়ে যায় দ্বিতীয়বার সংসার করার পদ্বতি কী? জানালে খুশি হবো।
বি. দ্র. তালাক দেওয়ার পর থেকে আমার স্ত্রীর সাথে আর সহবাস হয়নি।
নাছির উদ্দীন
কচুয়া, চাঁদপুর
শরয়ী সমাধান: প্রশ্নে উল্লিখিত ঘটনায় স্বামী স্ত্রীকে লক্ষ করে লিখিতভাবে যে কঠোর শব্দ ব্যবহার করেছে অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক চিরতরে ছিন্ন করলাম। তা দ্বারা যদি স্বামী তিন তালাকের নিয়ত করে থাকে তখন স্ত্রীর ওপর তিন তালাক পতিত হবে। আর যদি তিন তালাকের নিয়ত না করে এবং তিন তালাকের নিয়ত না করার কথা শপথ করে বলে, তখন স্ত্রীর ওপর এক বায়েন তালাক পতিত হবে। তার পর তাদেরকে কমপক্ষে দুই সাক্ষীর উপস্থিতিতে নিম্ন মোহর যা বর্তমান বাজারদর হিসেবে আড়াই হাজার টাকা তা ধার্য করে আকদে নেকাহ নবায়ন করতে হবে। বাদায়েউস সানায়ে: ৩/১০, আল-বাহরুর রায়েক: ২/৯৯, আন-নাহরুল ফায়েক: ২/৩৯৮
বিবিধ প্রসঙ্গ
সমস্যা: কোন ব্যক্তি যদি রবি অফিস থেকে ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নেওয়ার পর ইন্তেকাল করে, পরে সে সিমটা কেউ ব্যবহার না করলে তখন কি ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সটি রবি কোম্পানির হক হিসেবে গণ্য হবে? আর সেই ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স গ্রহীতার ওপর রবি কোম্পানীর হক হিসেবে গণ্য করা যাবে কি না? যদি রবি কোম্পানির হক বলে গণ্য হয়, তখন ওই হক কীভাবে আদায় করা যায়? সবিস্তারে জানিয়ে উপকৃত করবেন।
এফএসডি ইকরামুল হক
চট্টগ্রাম সরকারি স্কুল
শরয়ী সমাধান: কোন ব্যক্তি রবি অফিস থেকে ইমাজেন্সি ব্যালেন্স নেয়ার ফলে সেই টাকা তার ওপর ঋণ হিসেবে সাব্যস্ত হয়ে যায়। যা তার জন্য পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক। সেই ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স ব্যবহার করুক বা না করুক। কারণ আমরা রবি অফিস কর্তৃক জানতে পারি যে, ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নেয়ার পর ব্যবহার না করলেও তা কেটে নেয়ার কোন মাধ্যম নেই। তাই তা পরিশোধ করার মাধ্যম হলো, ওই টাকা যদি ব্যবহার না হয়ে থাকে তা ব্যবহার করার পর, আর ব্যবহার হয়েগেলে পুনরায় টাকা লোড করার পর অফিস নিজ দায়িত্বে তা কেটে রেখে দেবে। ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নেওয়ার পর ওই ব্যক্তি মারা গেলে তা মৃত ব্যক্তির ঋণ হিসেবে গণ্য হবে। তাই কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করার পর যেভাবে তার সম্পদ হতে তার ঋণ পরিশোধ করতে হয়, তেমনিভাবে ইমার্জেন্সি ব্যালেঞ্চের টাকাও তার সম্পদ থেকে পরিশোধ করতে হবে। অতপর সিম কার্ড ও তার ব্যালেন্স মীরাস তথা তরকা সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। বোখারী শরীফ: ১/৩০৫ জামেউত তিরমিযী: ১/২০৬; দুররে মুখতার: শামীর সাথে: ৬/৪৪৩
সমস্যা: আমি কারো কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ঘর তৈরি করেছি, এই মর্মে যে যতদিন পর্যন্ত টাকাগুলো আদায় করতে পারব না ততদিন লাখে ৫ হাজার করে টাকা প্রতি মাসে সুদ দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, সেই টাকা আমি ব্যাংক থেকে নেইনি বরং সাধারণ এক ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়েছি এবং আমাকে অন্য কোন শর্ত দেয়নি। এখন আমার জানার বিষয় হলো উক্ত ঘরে আমার বসবাস করা বৈধ হবে কি না?
মু. ইরফান এনায়াত
সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
শরয়ী সমাধান: যে ব্যক্তি লাখে পাঁচ হাজার টাকা মুনাফা দাবি করেছে এবং মুনাফা ভোগ করেছে তার জন্য সেই মুনাফার টাকা সুদ ও হারাম হিসেবে গণ্য হয়ে গেছে। এবং আপনার জন্য এরকম মুনাফার ওপর কর্জ নেয়া জায়েয হয়নি। কিন্তু সেই কর্জের টাকা দিয়ে যে ঘর নির্মাণ করেছেন সেখানে আপনার বসবাস করা এবং সে ঘর ব্যবহার করা আপনার জন্য জায়েয ও বৈধ হবে। লাভের ওপর কর্জ নেয়ার গোনাহ থেকে আল্লাহ তায়ালার দরবারে আপনাকে লজ্জিত হয়ে খাঁটি তাওবা করেত হবে। সূরা আল-বাকারা: ২৭৬, মুসলিমশরীফ: ২/৭২, ই’লাউস সুনান: ১৪/৫১২, কিতাবুন নওয়াযিল: ১১/২৭৯
বিভাগীয় নোটিশ
দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো সমস্যার শরয়ী সমাধান জানতে আল-জামিয়া আল- ইসলামিয়া পটিয়ার ফতওয়া বিভাগে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। এজন্য সরাসরি যোগাযোগ বা বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট ফোনে যোগাযোগ করুন। প্রশ্ন পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল বা ফেসবুক ফ্যান-পেইজেও।