ইয়াবাসহ আটক শহীদুল্লাহ জামিয়া পটিয়ার ছাত্র নয় :
আল্লামা আবু তাহের নদভী
৫ জুন ঢাকার যাত্রাবাড়িতে ইয়াবাসহ আটক হয় টেকনাফের কথিত হাফেজ শহীদুল্লাহ। পুলিশের দাবি ২৮ হাজার পিছ ইয়াবার চালান নিয়ে তিনি টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসেন। গ্রেফতারের পর শহীদুল্লাহ পটিয়া মাদরাসা ও দেওবন্দে পড়েছে বলে জানানো হয়। তবে পটিয়া ও দেওবন্দের ঠিক কোন মাদরাসায় পড়েছে তার কথায় সেটি অস্পষ্ট। বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে কওমী মাদরাসা বিদ্ধেষী একটি চক্র কওমী আলেমদের বিরুদ্ধে নানাভাবে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে লিপ্ত হয়। তাদের অনেকে দেশের অন্যতম শীর্ষ ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা ও কওমী অঙ্গন নিয়ে জঘন্যভাবে বিদ্রুপ শুরু করে। সে সময়ে জামিয়া পটিয়ার মুহতামিম মুফতি আব্দুল হালিম বুখারী দা. বা. বিদেশে থাকায় বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দেন জামিয়ার সহকারী পরিচালক আল্লামা আবু তাহের নদভী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জামিয়া পটিয়া ও দারুল উলূম দেওবন্দের কোনো ছাত্র ইয়াবা অথবা মাদক ব্যবসা করবে! সেবন করবে! এটা নজিরবিহীন ঘটনা। আমি মনে করি এটা শুধু পটিয়া নয়, বরং পুরো কওমী মাদরাসা শিক্ষার সাথে একশ্রেণির অসাধু চক্রের অত্যন্ত পরিকল্পিত ও সুগভীর এক চক্রান্ত।’
আল্লামা আবু তাহের নদভী আরও বলেন, ইয়াবাসহ আটককৃত কথিত হাফেজ শহীদুল্লাহ নামক লোকটি জামিয়া পটিয়ার ছাত্র নয়। বিষয়টি নিয়ে জামিয়ার সহকারী পরিচালক সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে উক্ত ইয়াবাসহ টেকনাফের আটককৃত শহীদুল্লাহ নামক কোন ব্যক্তি কখনো জামিয়ার ছাত্র ছিলো বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুতরাং তাকে জামিয়ার ছাত্র বলা পুরোটাই ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক।
নতুন শিক্ষাবর্ষের ইফতেতাহী সবক ১৯ শাওয়াল বুধবার থেকে
জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার ১৪৩৯-৪০ হিজরী শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম আগামী ১৮ শাওয়াল মঙ্গলবার শেষ হবে। ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরদিন থেকে তথা ১৯ শাওয়াল ৪ জুলাই বুধবার থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের ইফতেতাহী সবক শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জামিয়ার শিক্ষাবিভাগীয় প্রধান আল্লামা মুফতী জসিমুদ্দীন কাসেমী দা. বা.। সাথেসাথে তিনি ছাত্রদের নতুন বছরের শুরুতে নিয়ত ঠিক করে ভালোভাবে লেখাপড়া করার প্রতি আহ্বান জানান, উদ্যমী ও মেহনতী হওয়ার পরামর্শ দেন।
ইত্তেহাদুল মাদারিস বোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা ও জামিয়ার বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ
৩ জুন’১৮ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ (কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড) এর মারকাযী (কেন্দ্রীয়) পরীক্ষা’১৮-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে বোর্ডের আওতাধীন মাদরাসাসমূহে মোট ছয়টি জামাতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জামাতগুলো হচ্ছে তাজবীদ (হাফছ), তাজবীদ (রেওয়ায়াত), দুয়াম/কামেলাইন; চাহারুম, শাশুম ও হাস্তুম। প্রত্যেক জামাতে যারা প্রথম হয়েছে, তারা হচ্ছে, তাজবীদ (হাফছ): মাহবুবুর রহমান বিন আনওয়ার হুসাইন, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া। তাজবীদ (রেওয়ায়াত): আবদুল ওয়ারিছ বিন আবদুছ ছামাদ, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া। দুয়াম/কামেলাইন: আরফাত হুসাইন বিন শামসুল হক, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া। চাহারুম: শোয়াইব বিন কাসেম, জামিয়া মাদানিয়া সিলোনিয়াফেনী। শাশুম: বুরহানুদ্দীন বিন জিয়াউদ্দীন, জামিয়া মাদানিয়া সিলোনিয়া ফেনী। হাস্তুম: মাহমুদুল হাসান বিন ওবাইদুল হক জামিয়া কুরআনিয়া চন্দ্রঘোনা। এ ছাড়া একই দিনে জামিয়ার গাইরে মারকাযী জামাত ও তাখাচ্ছুছাতসমূহের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য দাওরায়ে হাদিসের রেজাল্ট হাইআতুল উলয়ার অধীনে আগামী ০৫ জুলাই প্রকাশিত হবে।
জামিয়ার ২০১৯ সালের এর আন্তর্জাতিক ইসলামি মহাসম্মেলন
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার পরবর্তী আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামী ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। উক্ত তারিখে কোনো দীনী মাহফিল, সভা, সম্মেলনের দিন ধার্য না করার জন্য সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রধানদের প্রতি জামিয়া প্রধান, শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতী আবদুল হালীম বোখারী (দা. বা.) অনুরোধ জ্ঞাপন করেন।
তথ্যসূত্র: ছানা উল্লাহ রিয়াদ
জামিয়া প্রতিবেদক, মাসিক আত-তাওহীদ