হিফজুল কুরআন ও হিফজুল হাদিস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ ও ২ মার্চ (বুধ, বৃহস্পতি ও জুমাবার) বাংলাদেশ তাহফীজুল কুরআন সংস্থার উদ্যোগে ৩ দিনব্যাপী ৩৮তম হিফজুল কুরআন শিক্ষাপ্রতিযোগিতা এবং জুমাবার ৮ম হিফজুল হাদিস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ৩৯০টি মাদরাসা থেকে ১ম (৩০ পারা) গ্রুপে ৩৬৩ জন এবং ২য় (১৫ পারা) গ্রুপে ৩৮৬ জন। মোট ৭৪৯ জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করে।
দু’পর্বে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার প্রথম পর্ব: সাধারণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে প্রথম সারিতে উত্তীর্ণ ১০ জন করে মোট ২০ জনকে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের ১৪তম বিশেষ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এবং তাদের থেকে প্রথম তিনজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ১ম গ্রুপের বিজয়ীরা: ১. মুহাম্মদ তারেক মনোয়ার বিন মুহাম্মদ জয়নাল, গারাংগিয়া হেফজখানা, সেনেরহাট, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম, ২. বদিউল হাসান বিন তৈয়বুল্লাহ, চিব্বাড়ি বায়তুশ শরফ হেফজখানা, করৈয়ানগর, সাতাকানিয়া, চট্টগ্রাম ও ৩. ইমরান কবির বিন ফয়জুল কবির, তানযিমুল উম্মাহ হিফজখানা মাদরাসা, কে-ব্লক, হালিশহর, চট্টগ্রাম। ২য় গ্রুপ বিজয়ীরা: শাকিল আহমদ বিন কফিল আহমদ, আল-কুরআন অ্যাকাডেমি কদুরখীল, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম, ২. আবদুল্লাহ আল-হাসান বিন কামাল উদ্দীন, মাইজবাড়িয়া, নূরুল উলুম মাদরাসা, কালীদহ, সদর ফেনী ও ৩. মাজহারুল ইসলাম বিন হারুনুর রশিদ। দারুল উলুম হাজী বক্স রোড, পশ্চিম ডাক্তারবাড়ি, সদর ফেনী।
আর হাদিস প্রতিযোগিতায় ১ম ও ২য় গ্রুপে যথাক্রমে ২২ জন ও ১৯ জন। মোট ৪১জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করে। এবং উভয় গ্রুপে ১ম-৫ম স্থান অধিকারী সকলকে পুরস্কৃত করাহয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সংস্থার সভাপতি; জামিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস আল্লামা আবদুল হালীম বুখারী (দা. বা.) বলেন, যখন দেশে সুন্দরী ও বেহয়াপনার প্রতিযোগিতায় চলছে, সে মুহূর্তে আমাদের এই সংস্থা কোরআনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের রহমত কামনার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মানুষ বিশুদ্ধ ও সুললিত কণ্ঠে তেলাওয়াত করার প্রতি ঝুঁকছে এবং দেশে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এবং তিনি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও জামিয়ার সাবেক মুহতামিম হযরতুল আল্লাম মাওলানা হাজী ইউনুস সাহেব রহ.-এর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। এবং সংস্থার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক; জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস হযরতুল আল্লাম মাওলানা রহমতুল্লাহ কাউসার নিজামী দা. বা.-এর দ্রুত শারীরিক সুস্থতা কামনা করেন। এবং তিনি সংস্থার স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকার লক্ষ্যে সকলের কাছে দোয়ার আবেদন করেন।
উভয় প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের বিশেষ পুরস্কার ও বাকিদের সান্ত¦না পুরস্কর এবং তাদের উস্তাদদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, বিশেষ ও সান্ত¦না পুরস্কার ও সম্মাননা বাবদ ৫,৮৮,৪৫০ টাকা এবং আগত প্রতিযোগীবৃন্দ ও উস্তাদদের সাত বেলা মেহমানদারি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৬,৬২০,৫০ টাকা। মোট ১২,৫০,৫০০ টাকা সংস্থার পক্ষ থেকে খরচ করা হয়।
খতমে দরসে বুখারী শরীফ ২০১৮ সম্পন্ন
৩০ মার্চ জুমাবার জামিয়ার কেন্দ্রীয় জামে সমজিদে ‘খতমে দরসে বুখারী শরীফ ২০১৮ সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হাদিসের দরস ও দোয়ায় শরিক হতে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রবল আগ্রহ নিয়ে বিপুল পরিমাণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়েছে।
সমাপনী বর্ষের ছাত্র এমদাদুল্লাহর সঞ্চালনা ও হাফেজ মো. তানইমের পবিত্র কুরআন মাজিদের তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সনদসহ শেষ হাদিস পাঠ করে হাফেজ আয়াতুল্লাহ। আর শেষ হাদিসের দরস প্রদান করেন, জামিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতী আব্দুল হালীম বুখারী (দা. বা.)। পরিশেষে বিদায়ী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত নসিহত ও তাদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে রব্বে কারিমের দরবারে কায়-মনোবাক্যে দোয়া পরিচালনা করেন জামিয়ার শায়খে সানি ও প্রধান মুফতি আল্লামা হাফেজ আহমদুল্লাহ (দা. বা.)।
বার্ষিক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
সম্মিলিত কওমি শিক্ষা কমিশন আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়ার পক্ষ থেকে আগামী ২৬ এপ্রিল (৯ শাবান) হতে ১৪৩৮-৩৯ হিজরীরর দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স)-এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে জামিয়ার শিক্ষাবিভাগ থেকে জামিয়ার বার্ষিক পরীক্ষা ও ‘আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল কওমিয়া’ এর পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা আগামী ১২ শাবান থেকে শুরু হওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: নূর আহমদ তালহা
জামিয়া প্রতিবেদক, মাসিক আত-তাওহীদ