ভোটারের দায়িত্ব ও ভোট
সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ
[সাম্প্রতিককালে ভোট ও নির্বাচন সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রসার লাভের পরিপ্রেক্ষিতে আকাবির ওলামায়ে কেরামের এ সম্পর্কিত অবস্থান তুলে ধরার নিমিত্তে বাংলাদেশের ওলামায়ে দেওবন্দের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও মুরব্বি আলেম মুজাহিদে আযম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) বিরচিত ‘ভোটারের দায়িত্ব ও ভোট সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ’ শীর্ষক পুস্তিকাটি মাসিক আত-তাওহীদের পাঠকদের উদ্দেশে পরিবেশতি হলো। পুস্তিকাটি বিশ্বকল্যাণ পাবলিকেশন্স প্রকাশিত ‘আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) গ্রন্থাবলী’র তৃতীয় খণ্ডের ১২৭-১৩৬ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে। পুস্তিকাটির বানান ও ভাষা অপরিবর্তিত।]
আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.)
লেখক: মুজাহিদে আযম, সদর সাহেব হুযুর
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
نَحْمَدُهُ وَنُصَلِّيْ عَلَىٰ رَسُوْلِهِ الْكَرِيْمِ.
ভোটারগণের দায়িত্ব ও শপথ
আমি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক, আমি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাধীন মুসলমান নাগরিক। আমি একজন ভোটার। রাষ্ট্রের মুসলমান ভোটারের গুরুদায়িত্ব এবং ভোটার ও ভোটের মূল্য সম্বন্ধে আমি সম্পূর্ণ সজাগ।
কুরআনের হুকুম: ‘বিশ্বস্ত সৎকর্মীকে ভোট দাও।’
সহীহ হাদীসের হুকুম: ‘অযোগ্য পাত্রকে ভোট দেওয়া কিয়ামতের আলামত, গোনাহে কবীরা।’
ইসলামী শরীয়তের হুকুম: ‘নিজের ভোটের জন্য ক্যানভাস করা, পয়সা ব্যয় করা এবং ভোট দেওয়ার জন্য পয়সা লওয়া, দাওয়াত খাওয়া উভয়ই হারাম।’
আমার ঈমান এই যে, একমাত্র ‘ইসলামী নেজাম’, শরীয়তী শাসন ও শরীয়তী আদল ও ইনসাফ, সততা ও সুবিচার এবং ইসলামী অর্থনৈতিক সাম্য ব্যতিরেকে না দুনিয়াতে শান্তি আসিতে পারে, না দেশের উন্নতি ও মর্যাদা হইতে পারে। যাহারা নিজেরা ইসলামবিরোধী, আল্লাহবিরোধী কাজ করে, রাসূলের আদর্শের বিরুদ্ধে চলে, ঘুষ খায়, মিথ্যা কথা বলে, পক্ষপাতিত্ব করে, নামায পড়ে না, পর্দা মানে না, যাকাত দেয় না, গরীবেরা না খাইয়া মরে, আর তারা জুয়া খেলায়, তাস খেলায় মত্ত, তাহাদের দ্বারা কি কখনও ইসলামী নেজাম, আল্লাহর শরীয়ত কায়েম হইয়া সারা দুনিয়ার সামনে মুসলিম দেশের গৌরব বৃদ্ধি হইতে পারে? কখনওই না।
আমার ঈমান এই যে, আমার ভোটের মূল্য অনেক বেশি। ইহা লক্ষ লক্ষ গরীবের রুজির, শিক্ষার, স্বাস্থ্যের এবং সর্বপ্রকার উন্নতির দরদী লোকের জন্য সাক্ষ্য। ইহা আল্লাহর পবিত্র আমানত, যদি আমি এই আমানতে খেয়ানত করিয়া টাকার লোভে, জানের ভয়ে, আত্মীয়তার খাতিরে বা বংশ, বর্ণ, ডিগ্রী বা অর্থ দেখিয়া, সত্য যোগ্যতা ও সততা না দেখিয়া মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়া অযোগ্য পাত্রকে, ঘুষখোর, মিথ্যাবাদী, গরীব-শোষককে ভোট দেই, তবে আমি নিশ্চয়ই খোদা ও রাসূলের নিকট বিশ্বাসঘাতক মহাপাপী এবং দেশবাসীর নিকট অতি বড় ধোঁকাবাজ প্রমাণিত হইব। ইহা জানিয়া, বুঝিয়া, খোদাকে হাজির-নাজির জানিয়া শপথ করিতেছি যে,
- আমি ভোট দিবার কালে কাহারও ভয়ে ভীত বা প্রলোভনে প্রলুব্ধ হইব না। বংশের, বর্ণের, ডিগ্রীর, টাকার বা দলের পরওয়া করিব না। টাকা ছড়াছড়ির বা মটর গাড়ীর দৌড়াদৌড়ির পরওয়া করিব না। মিথ্যা প্রোপাগান্ডা বা ধুঁয়াধার বক্তৃতায় আমি ভুলিব না। আমি আমার ভোট খোদা-রাসূলের হেদায়েত অনুসারে আমার এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সৎ, সবচেয়ে বেশি বিশ্বস্ত, সবচেয়ে বেশি গরীব-দরদী, সবচেয়ে বেশি খোদাভীরু যে প্রমাণিত হইয়াছে, শুধু তাহাকেই দিব। অন্য কাহাকেও দিব না।
- আমি ইহাও অঙ্গীকার করিতেছি যে, প্রত্যেক এলাকার মধ্যে সৎকর্মী খুঁজিয়া বাহির করিবার জন্য এবং প্রকৃত সৎকর্মীকে কামিয়াব বানাইবার জন্য যে সমস্ত সৎ লোক এবং যে সমস্ত সৎ প্রতিষ্ঠান চেষ্টা করিবে আমি তাহাদিগকে পূর্ণ সমর্থন এবং পূর্ণ সহযোগিতা করিব।
- আমি ইহাও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমি নিজে যে বিষয়ের অঙ্গীকার করিতেছি দেশের অন্যান্য মুসলমান ভাইদিগকেও এইরূপ অঙ্গীকারে আবদ্ধ করিবার জন্য যথাসম্ভব প্রাণপণে চেষ্টা করিব।
- আমি ইহাও অঙ্গীকার করিতেছি, যদি কোন এলাকায় সৎকর্মী না পাওয়া যায়, আর কোন ঘুষখোর, বে-নামাযী, মিথ্যাবাদী, জালেম দাঁড়ায়, তবে তাহাকে কিছুতেই ভোট দিব না। কারণ জালেম, ঘুষখোর ভোট পাইয়া যে সব ঘুষ খাইবে বা অন্যায় করিবে আমি ভোট দিলে তাহার অংশীদার খোদার দরবারে আমাকেও হইতে হইবে।
[ভোটারের দায়িত্ব]
আমার ঈমান-আকীদা এই যে, কুরআন-হাদীসের হুকুম অনুসারে, শরীয়তের হুকুম অনুসারে,
- যে ব্যক্তি নিজে কোন পদের জন্য প্রার্থী হইবে, নিজের পদের জন্য নানারূপ তোড়জোড় করিবে।
- যে ব্যক্তি ইলেকশনে জিতিবার জন্য টাকা-পয়সা খরচ করিবে।
- যে ব্যক্তি কোন দলের দোহাই দিয়া, বংশের দোহাই দিয়া বা দেশের দোহাই দিয়া ভোট নিতে চাহিবে।
- যে ব্যক্তি টাকা দিয়া ভোট কিনিতে চাহিবে।
- যে দাওয়াত খাওয়াইয়া অথবা মটরে চড়াইয়া ভোট নিতে চাহিবে।
- যে ব্যক্তি ইসলামী শরীয়ত এবং ইসলামী সুশাসন, সুবিচার (ইসলামী নেজাম) সম্বন্ধে অনবগত বা বে-ইলম হইবে।
- যে ব্যক্তি ইসলামের মূল আকীদা—তাওহীদ, রিসালাত এবং কিয়ামতের বিচার সম্বন্ধে সন্দিহান হইবে।
- যে ব্যক্তি আল্লাহ, রাসূল, কুরআন, হাদীস এবং ইসলাম ধর্মের সঙ্গে এতদূর বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছে যে, ইসলামের বুনিয়াদ কয়টিও (কালেমা, নামায, রোযা, যাকাত ও হজ্জ) রীতিমত আন্তরিক মহব্বত ও ভক্তির সহিত আদায় করিতে অভ্যস্ত নয়।
- যে ব্যক্তি সামাজিক জীবনে এবং ব্যক্তিগত জীবনে, বিচার-আচারে, কায়-কারবারে, ক্ষমতা প্রয়োগ, ইসলামী সততা, ধর্মপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, নিঃস্বার্থতা, উদারতা এবং ত্যাগের পরিচয় দেয় নাই।
- যে ব্যক্তি সামঞ্জস্যশীল (সইসামী) জীবনযাপনে, আয়-ব্যয়ে, পাক-নাপাক, জায়েয-নাজায়েয, হালাল-হারাম বাছিয়া চলিতে অভ্যস্ত নহে।
- যে ব্যক্তি মিথ্যা, ধোঁকা, সুদ, ঘুষ, ইয়াতীম, বিধবা ও বিদেশীর উপর জুলুম, মাদরাসা, স্কুলের বা সমিতির তহবিল তছরুফ, আমানতে খেয়ানত, অন্যায় মতে ভাগ-বাটোয়ারা, তরফদারী, পক্ষপাতিত্ব, স্বার্থপরতা, স্বজন-তোষণ, ব্ল্যাক মার্কেটিং, মদ্যপান, যিনা, বেপর্দা, নাচ, তাস, সিনেমা, গান-বাদ্য ইত্যাদি বে-শরা ইসলামদ্রোহী ও সমাজদ্রোহী কাজে মত্ত এবং খ্রিস্টানী, হিন্দুয়ানী চাল-চলনে অভ্যস্ত।
- যে ব্যক্তি সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে মত পোষণ করে বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়া সত্য মিথ্যা, হক না-হকের পরওয়া করে না বা কমিউনিস্ট মতাবলম্বী অথবা যুক্ত বাংলাদেশের মত এখনও পোষণ করে।
- যে ব্যক্তি একবার আমানতের বোঝা মাথায় লইয়া সে আমানতে গরীবদের খেদমত না করিয়া নিজের স্বার্থসিদ্ধি করিয়া বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দিয়াছে।
- যে ব্যক্তি মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও কুরআন-হাদীসের আইন জারি করিতে ইতস্তত বোধ করে, আমেরিকার ধনতন্ত্রবাদ কিংবা রাশিয়ার ধর্মহীন কমিউনিজমকে পছন্দ করে।
- যে ব্যক্তি জনসেবার কাজে অকর্মা বা শুধু বাকবিতণ্ডা করে কিন্তু কাজের বেলায় কিছুই করে না, এরূপ প্রমাণিত হইয়াছে।
এই সমস্ত দোষ বা ইহার মধ্যে কোন একটি দোষ যাহার মধ্যে আছে, সে রাষ্ট্রের যে কোন দায়িত্বপূর্ণ পদে চাই—ইউনিয়ন কাউন্সিল, ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল, এসেম্বিলী, গণপরিষদ ইত্যাদির মেম্বারীর পদের এবং দায়িত্বপূর্ণ কোন অফিসারের পদের সম্পূর্ণ অযোগ্য। এইরূপ অযোগ্য দুষ্টু লোককে দায়িত্বপূর্ণ কোন পদে আনয়ন করার কাজে দিল দিয়া, দেমাগ দিয়া, কলম দিয়া, একটা কথা বলিয়া, দুইটি পয়সা দিয়া, সময় দিয়া, ভোট দিয়া, ফলকথা এই যে আদৌ কোনরূপ সহায়তা করা গোনাহে কবীরা-মহাপাপ এবং স্ট্রেটের কোন দায়িত্বপূর্ণ পদ পাওয়া হইতে এরূপ অযোগ্য, দুষ্টু লোককে না কামিয়াব করিবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা জিহাদের সমতুল্য সওয়াবের কাজ।
কুরআন-হাদীসের রৌশনীতে আমার ইহা আকীদার দর্জাতে দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, স্ট্রেটের কল্যাণ এবং মর্যাদা তখনই হইতে পারে যখন দেশের নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব, মেম্বারী, মন্ত্রীত্ব, অফিসারত্ব যাহাদের মধ্যে নিম্নলিখিত গুণগুলি আছে তাহাদিগকে দান করা হইবে:
- যাহারা বর্তমান উন্নতির যুগের উন্নত ধরনের জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, এই শয়তানী যুগের শয়তানীও বুঝিতে পারে এবং তাহা হইতে দেশকে রক্ষা করিতে পারে। কুরআন-হাদীস হইতে বর্তমান যুগের সঙ্গে খাপ খাওয়াইয়া ইসলামী নেজাম, শরীয়তী সুশাসন, সুবিচার বুঝিয়া তদনুযায়ী রাষ্ট্রকে গঠিত ও পরিচালিত করিবার পারদর্শিতাও রাখে।
- যাহারা ইসলামী নেজামে, একমাত্র কুরআন-হাদীসের, একমাত্র শরীয়তী সুশাসন এবং সুবিচারেই যে সুখ-শান্তি এবং প্রকৃত উন্নতি নিহিত আছে এইরূপ অটল বিশ্বাস, বিশাল জ্ঞান এবং দৃঢ় আমলী যিন্দেগীও রাখে।
- যাহারা ইসলামের বুনিয়াদী আকীদাগুলির উপর কামেল ঈমান রাখেন এবং ইসলামের আহকাম-আরকানগুলি রীতিমত পালন করেন। যথা নামায, রোযা, যাকাত, পর্দা, হজ্জ, ইসলাম প্রচার ইত্যাদি।
- যাহারা ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে ইসলামী আদব, আখলাক এবং শরীয়তের অনুশাসন, আল্লাহর নীতি এবং রাসূলের আদর্শ মানিয়া চলিতে অভ্যস্ত।
- যাহারা যাবতীয় কবীরা গোনাহ হইতে বাঁচিয়া থাকিতে অভ্যস্ত। যথা জুয়া, শরাব, যিনা, ঘুষ, মিথ্যা মোকাদ্দমা, মিথ্যা সাক্ষ্য, আমানতে খেয়ানত ইত্যাদি।
- যাহারা কুরআনের আদেশ অনুসারে হকের ভিত্তির উপর একতাবদ্ধ হইয়া থাকিতে অভ্যস্ত, দলাদলি বা পার্টি পলিটিক্স বা হক না-হক বিচার না করিয়া পক্ষ সমর্থনে অনভ্যস্ত, মন সদা হকের উপর রাখিতে প্রস্তুত।
- যাহারা ইসলামের খেদমত করিতে, কওমের খেদমত করিতে, গরীবের উপকার করিতে অভ্যস্ত, উৎসুক, দরদমন্দ।
- যাহারা এতদূর প্রতিভা ও যোগ্যতা রাখেন যে, সময়ের সমস্যাগুলির সমাধান কুরআন-হাদীস, ইজমা-কিয়াস হইতে বাহির করিতে সক্ষম।
- যাহারা ক্ষমতা বা পদের লোভী নন, কেবল খেদমত করিতে প্রস্তুত।
- এখন আর ব্রিটিশ রাজত্ব নাই, ইংরেজী রাষ্ট্রভাষা নাই। এখন আমাদের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। কাজেই ইংরেজী ডিগ্রীর আদৌ দরকার নাই। অবশ্য বাংলা বা ইংরেজীতে বিষয়গুলি বুঝিতে এবং বুঝাইতে ক্ষমতাও রাখেন এবং সাহসও রাখেন এবং লোভে বা ভয়ে টলমল না হইয়া প্রলোভনের জায়গায় বা ভীষণ ভয়ের জায়গায় অটল-অবিচল, সত্য ও ন্যায়ের উপর স্থিরপদ থাকিতে পারেন এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার প্রতিশোধ স্ট্রেটের পদের দ্বারা না নেন, ব্যক্তিগত আত্মীয়তা মিত্রতার প্রতিদান দেশের জনগণের আমানতের মালের দ্বারা না দেন; এই সমস্ত গুণাবলী যাহাদের মধ্যে আছে তাহাদের খুঁজিয়া বাহির করিয়া তাহাদের হাতে ক্ষমতা ও নেতৃত্ব-কর্তৃত্বের আমানত সোপর্দ করা অনেক বেশি সওয়াবের কাজ এবং কওমের অতি বড় খেদমত। পক্ষান্তরে এরূপ কাজে চেষ্টা না করা এত বড় পাপ এবং গোনাহ যে, তাহার ফল সমস্ত জাতির উপর এবং গোটা রাষ্ট্রের উপর পড়িবে।
ইহার উপর আমার ঈমান আছে যে, আমি উপরে যে শপথ এবং অঙ্গীকার করিলাম ইহা পূর্ণ না করিলে কিয়ামতের ময়দানে আহকামুল হাকিমীনের দরবারে আমার নিকট উহার সওয়াল হইবে।
আমি আল্লাহ তাআলার নিকট তাওফীক চাই, যাহাতে আমি আমার এই অঙ্গীকার পূর্ণ করিতে পারি এবং দ্বীনের এতটুকু খেদমত করিতে পারি।
১. প্রশ্ন: অযোগ্য পাত্রকে ভোট দেওয়া কি?
উত্তর: অযোগ্য পাত্রকে ভোট দিয়ে নেতৃত্বের পদে বসাইবার চেষ্টা করা গোনাহে কবীরা, আমানতে খেয়ানত এবং কিয়ামতের আলামত। যেমন সহীহ হাদীসে আছে,
«إِذَا وُسِّدَ الْأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ».
‘অযোগ্য পাত্রকে কর্তৃত্বের পদ দান করা কিয়ামতের আলামত (গোনাহ কবীরা)।’[1]
কুরআন শরীফে বর্ণিত আছে,
اِنَّ اللّٰهَ يَاْمُرُكُمْ اَنْ تُؤَدُّوا الْاَمٰنٰتِ اِلٰۤى اَهْلِهَاۙ ۰۰۵۸
‘স্বয়ং আল্লাহ পাক তোমাদের আদেশ করিতেছেন যে, তোমরা যাবতীয় আমানতগুলিকে (বিশেষত লক্ষ লক্ষ লোকের জীবন-মরণ, ইহকাল-পরকালের সমস্যার আমানতগুলিকে) যাহারা তাহার যোগ্য ও সত্য অধিকারী তাহাদের কাছে পৌঁছাইয়া দাও!’[2]
২. প্রশ্ন: পদের জন্য দাঁড়ানো জায়েয কিনা?
উত্তর: নিজের পদের জন্য নিজে দাঁড়ানো জায়েয নহে। হাদীস শরীফে আছে,
«طَالِبُ التَّوْلِيَةِ لَا يُوَلَّى».
অর্থ: ‘যে নিজের জন্য পদ দাবি করিবে তাহাকে পদ দান করা যাইতে পারে না।’[3] অবশ্য জনগণের খেদমতের জন্য, গরীব-দুঃখীর দুঃখ মোচনের জন্য নিজকে পেশ করা জায়েয আছে।
আমরা আদর্শবাদী শরীয়তের সততার আদর্শ এবং সম্পূর্ণ সদিচ্ছা নিয়া জনসাধারণের মধ্যে সত্যিকার জ্ঞান দান করার জন্য এই প্রবন্ধ প্রকাশ করিতেছি। ভোটারের দায়িত্ব বুঝিয়া শরীয়তের হুকুম পালনে সজাগ থাকিতে পারে। সর্বদা মনে রাখিতে হইবে, ময়দানে কিয়ামতে হাজির হইয়া আল্লাহর কাছে সারাটি জীবনের সমস্ত কাজের হিসাব দিতে হইবে।
ভোট সম্পর্কে শরীয়তের নির্দেশ
৩. প্রশ্ন: ১. ভোট কাহাকে বলে? ২. ভোট সম্পর্কে শরীয়তের কোন হুকুম আছে কিনা? ৩. থাকিলে তাহা কিরূপ?
উত্তর:
- ভোট শব্দের শাব্দিক অর্থ মত বা রায়। পরিভাষায় ভোট দেওয়ার অর্থ কাউকে তাহার সততা, বিশ্বস্ততা ও যোগ্যতার সাক্ষ্য দিয়া তাহাকে প্রতিনিধিত্বের পদের জন্য সমর্থন করা।
- মানুষের প্রত্যেকটি কওল, ফেয়েল ও ইরাদা প্রত্যেকটি কাজ কথা এবং মত সম্পর্কে শরীয়তের পাঁচটি হুকুমের মধ্য হইতে একটি না একটি হুকুম নিশ্চয়ই আছে। কোন একটি কথা, কাজ বা রায়ও শরীয়তের হুকুমের থেকে খারেজ বা বাহিরে নহে। শরীয়তের পাঁচটি হুকুম এই—মানুষের প্রত্যেকটি কাজ, কথা এবং রায় ১. হয় ওয়াজিব হইবে, না হয় ২. মুস্তাহাব হইবে, না হয় ৩. হারাম হইবে, না হয় ৪. মাকরূহ হইবে, ভোটারগণ যাহাতে ভোটের মূল্য, ভোটারের দায়িত্ব বুঝিয়া শরীয়তের হুকুম পালনে সজাগ থাকিতে পারে। সর্বদা মনে রাখিতে হইবে, ময়দানে কিয়ামতে হাজির হইয়া আল্লাহর কাছে সারাটি জীবনের, সমস্ত কাজের হিসাব দিতে হইবে, না হয় ৫. মুবাহ হইবে।
- যদি ইসলামের দাবি এবং জনগণের ন্যায্য দাবি পেশ করার বিশ্বস্ত, যোগ্য একমাত্র লোক পাওয়া যায় এবং তিনি কোন অনৈসলামিক দলভুক্ত না হন তবে তাহাকে প্রতিনিধিত্বের পদে বরণ করা ওয়াজিব।
- যদি একাধিক লোক যোগ্য ও বিশ্বস্ত পাওয়া যায়, তবে যিনি অধিক ইসলাম দরদী, অধিক গরীব দরদী হইবেন, তাহাকে সমর্থন করা হইবে মুস্তাহাব।
- মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হারাম, গোনাহে কবীরা, মহাপাপ। অযোগ্য বা অসৎ, অবিশ্বস্তকে যোগ্য, সৎ ও বিশ্বস্ত বলিয়া সাক্ষ্য দেওয়া মিথ্যা সাক্ষ্য। অযোগ্য পাত্রকে প্রতিনিধিত্ব দান করাও ভীষণ পাপ-কিয়ামতের আলামত। আত্মীয়তার খাতিরে বা দলপুষ্টির খাতিরে বা দেশী-খেশী হওয়ার খাতিরে অযোগ্য, অসৎ বা দুর্নীতিপরায়ণ বা ধর্মদ্রোহীকে প্রতিনিধিত্বের পদের জন্য বরণ করাও অতি বড় মহাপাপ-হারাম।
- যদি কেহ একবার অবিশ্বস্ত প্রমাণিত হইয়া থাকে অথচ আগামীতে বিশ্বস্ত দলভুক্ত হইয়া বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করে এবং তার চেয়ে অধিক বিশ্বস্ত লোক না পাওয়া যায়, তবে তাহাকে ভোট দেওয়া হইবে মাকরূহ।
- যোগ্যতা এবং বিশ্বস্ততা বুঝা কঠিন। যদি কাহারও অবিশ্বস্ততা না হইয়া থাকে অথচ সে যদি বিশ্বস্ত থাকার অঙ্গীকার করে এবং তাহার চেয়ে অধিক বিশ্বস্ত (প্রমাণিত) লোক মওজুদ না থাকে, তবে তাহাকে ভোট দেওয়া হইবে মুবাহ।
৪. প্রশ্ন: নিজের জন্য নিজে পদ চাওয়া জায়েয আছে কি না?
উত্তর: নিজের জন্য, নিজের কর্তৃত্বের, নেতৃত্বের পদ চাওয়া জায়েয নহে, মাকরূহ। দশজনের উচিত যোগ্য, সৎ লোক জানা থাকিলে তাহাকে ডাকিয়া আনিয়া পদ দান করা। কিন্তু যদি দেশের লোকেরা যোগ্য, বিশ্বস্ত লোক সন্ধান করিতে না পারিয়া অযোগ্য, অবিশ্বস্ত লোক নির্বাচন করিয়া বসে এবং সেই সমাজে বিশ্বস্ত, যোগ্য লোক বিদ্যমান থাকে তবে হকের আওয়াজ বুলন্দ করার জন্য সেই যোগ্য, বিশ্বস্ত লোকের নিজের জন্য পদ চাওয়া জায়েয আছে।
৫. প্রশ্ন: যদি অসৎ, অবিশ্বস্ত লোককে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদা চাওয়া হয় তবে সেরূপ চাওয়া দুরস্ত কিনা এবং সেরূপ ওয়াদা দেওয়া দুরস্ত কিনা এবং সেরূপ ওয়াদা পালন করা দুরস্ত কিনা?
৬. প্রশ্ন: যাহাদিগকে দাঁড় করান হইয়াছে যদি তাহাদের মধ্যে কাহাকেও বিশ্বস্ত, ধার্মিক ও সৎকর্মী বলিয়া অনুমিত না হয়, তবে ভোটটাকে কি নষ্ট করিয়া দেওয়া উচিত?
উত্তর: যদি কুফর ও ইসলামের মোকাবেলা না হয়, তবে বিশ্বস্ত লোক না পাইলে মোটে কাউকে ভোট না দিয়া খামুশ থাকা উচিত তবুও জালেমের সাহায্যকারী হওয়া উচিত নহে। কেননা যে ব্যক্তি ভোটের দ্বারা জয়ী হইয়া পদ অধিকার করিয়া জনগণের রক্ত শোষণ করিবে, ইসলামী শরীয়তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়া আইন প্রণয়ন করিবে, তাহার যত পাপ হইবে সেই পাপের অংশীদার এই ভোটদাতা ব্যক্তির হইতে হইবে। সুতরাং এরূপ ক্ষেত্রে চুপ থাকিলে অন্তত জালেমের সহায়তা করায় যে পাপ সেই পাপ হইতে রক্ষা পাওয়া যাইবে।
৭. প্রশ্ন: জাতীয় স্বার্থ এবং ধর্মীয় স্বার্থ উদ্ধার করা বৃহত্তর ফরয, তাহার পরিবর্তে ক্ষুদ্র স্বার্থ উদ্ধার করা জায়েয আছে কি?
উত্তর: জাতীয় স্বার্থ এবং ধর্মীয় স্বার্থ নষ্ট করিয়া ক্ষুদ্র স্বার্থ উদ্ধার করা হারাম। যেমন আত্মীয়তার খাতিরে বা দেশী হওয়ার খাতিরে ধর্মোদ্রোহী, ইসলামবিরোধী লোককে ভোট দেওয়া, জনসাধারণের সুখসুবিধা হরণ করিয়া নিজ স্বার্থে সরকারী অর্থ ব্যয়কারী লোককে ভোট দেওয়া।
৮. প্রশ্ন: যাহারা সাধারণত ভোট আদায়ের সময় দাওয়াত, যিয়াফত খাওয়াইয়া বা স্কুল-মাদরাসায় সাহায্যদান করিয়া ভোট আদায় করে তাহাদের সমর্থন করা জায়েয আছে কি?
উত্তর: যাহারা টাকা ব্যয় করিয়া ভোট আদায় করিয়া মেম্বার হয়, তাহারা সাধারণত যত টাকা ব্যয় করে তাহার চেয়ে অনেক বেশি গুণ টাকা লাভ করার উদ্দেশ্যেই করিয়া থাকে অথচ সেই বেশি টাকাটা হয় জাতীয় সম্পদ। জাতীয় সম্পদ নেতাদের নিকট পবিত্র আমানত। যাহারা পবিত্র আমানতে খেয়ানত করে, সেই পবিত্র আমানতের খেয়ানতকারীদের দলভুক্ত হইয়া জাহান্নামের কীটে পরিণত হইবে।
৯. প্রশ্ন: কেহ হয়ত ব্যক্তিগতভাবে নামায পড়েন, রোযা রাখেন, পর্দা পালন করেন কিন্তু তিনি এমন একটি দলের অর্ন্তভুক্ত হইয়াছেন যে, সে দল ইসলামবিরোধী আইন পাশ করাইয়াছে বা করাইবার প্রবল আশঙ্কা আছে, যেহেতু তাদের দলে শরীয়ত মান্যতার কোন বাধ্যবাধকতা নাই বা শরীয়ত বিরোধিতারও কোন নিষেধ নাই এরূপ সৎ লোককে ভোট দেওয়া জায়েয হইবে কিনা?
উত্তর: যেহেতু পরিষদের মধ্যে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার নীতি নাই, সুতরাং ব্যক্তিগতভাবে কেহ সৎ লোক হইলে যদি তাহার দলের নীতি শরীয়ত বিরোধিতায় নিষেধ না থাকে, তবে তদ্রূপ ব্যক্তিগত সৎলোককেও ভোট দেওয়া জায়েয হইবে না।
১০. প্রশ্ন: জানা আছে যে, ইসলামের পক্ষ হইতে দাবি তুলিবার যোগ্য লোক আছে কিন্তু তাহার একার কথায় কোন কাজ হইবে না একথাও জানা আছে, এরূপ ক্ষেত্রে ভোটারদের কর্তব্য কি হইবে?
উত্তর: হকের আওয়াজ মরিয়া যাইতে দেওয়া যাইবে না। হকের আওয়াজ উঠাইবে যদিও সে কামিয়াব না হইতে পারে, তবুও হকের সমর্থন করিতেই হইবে। তাহার বিপক্ষে যাওয়া হারাম হইবে।
সাবধান মুসলমান!
ভোট দেওয়া ছেলেখেলা নয়, আল্লাহর পবিত্র আমানত। সতর্ক থাকিবেন মুসলমান ভাইগণ! স্বজন-তোষণ বা অন্য কোন কারণে অযোগ্য পাত্রকে নির্বাচন, মনোনয়ন বা নিয়োগপত্র দান সম্পর্কে দুইখানা পবিত্র হাদীস:
«مَنِ اسْتَعْمَلَ رَجُلًا مِّنْ عِصَابةٍ، وَفِيْهِمْ منْ هُو أَرْضَىٰ للهِ مِنْهُ، فَقَدْ خَانَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ» (رواه الحاكم).
অনুবাদ: ‘যদি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় কোন পদে এমন কোন লোককে নিয়োজিত, নির্বাচিত বা মনোনীত করে যে, তাহার চাইতে আল্লাহর বিচার অনুসারে অধিকতর পছন্দসই লোক সেই সমাজে বিদ্যমান থাকে তবে সেই ব্যক্তি আল্লাহর নিকট এবং আল্লাহর রাসূলের নিকট পবিত্র আমানতের খেয়ানতকারী সাব্যস্ত হইবে।’[4]
«مَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ الْـمُسْلِمِيْنَ شَيْئًا، فَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ أَحَدًا مُّحَابَاةً، فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ، لَا يَقْبَلُ اللهُ مِنْهُ صَرْفًا وَّلَا عَدْلًا حَتَّىٰ يُدْخِلَهُ جَهَنَّمَ»
(رواه الحاكم).
অনুবাদ: ‘যদি কোন ব্যক্তি মুসলিম সমাজের কোন দায়িত্বপূর্ণ নেতৃত্বের পদ পায় এবং সে যদি কোন লোককে রাষ্ট্রীয় কোন পদে যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা ও সততার মাপকাঠিতে বিচার না করিয়া আঞ্চলিকতা, আত্মীয়তা, তোষামোদ, স্বার্থ ইত্যাদির খাতিরে কাহাকেও নিয়োজিত, নির্বাচিত বা মনোনীত করে তবে তাহার উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হইবে—তাহার ফরয, নফল কোন বন্দেগী আল্লাহর দরবারে কবুল হইবে না; শেষ বিচারে আল্লাহ তাহাকে জাহান্নামে দাখিল করার আদেশ দান করিবেন।’ [5]
আল্লাহর শরীয়তের হুকুমকে আইন পরিষদের ভোটের দ্বারা বাতিল করার মত জঘন্য পাপ আর নাই। এইরূপ জঘন্য কাজে যাহারা যোগদান করিয়াছে তাহারা পরোক্ষভাবে বা অজ্ঞাতসারে খোদায়ী দাবি করিয়া বসিয়াছে। কারণ পরোক্ষভাবে তাহারা বলিয়াছে যে, খোদার আইন মানিও না, আমাদের আইন মান। এর চেয়ে জঘন্য পাপ আর কি হইতে পারে।
যাহারা শরীয়তের বিরুদ্ধে আইন পাশ করার ব্যাপারে ভোট দিয়াছেন তাহাদের চিন্তা করা উচিত যে, তাহারা বাইবেলের ভাষা বুঝেন কিন্তু কুরআন-হাদীসের ভাষা বুঝেন না। এর চেয়ে পরিতাপের বিষয় আর কি হইতে পারে? অথচ ধৃষ্ঠতাবশত শরীয়তের বিরুদ্ধে তাহারা ভোট দিতেছেন।
শরীয়ত পারদর্শী, নিঃস্বার্থ, অভিজ্ঞ আলেমদের কাছেই এ বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তাহারা তাহা করেন নাই, এটা তাহাদের ঘোর অন্যায় হইয়াছে।
যাহারা শরীয়তবিরোধী আইন পাশ করার ব্যাপারে ভোট দিয়াছেন তাহাদের চিনিয়া রাখুন, ভবিষ্যতে যাতে ধোঁকা না হয় সে জন্য সতর্ক হউন।
صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
[1] আল-বুখারী, আস-সহীহ, দারু তওকিন নাজাত লিত-তাবাআ ওয়ান নাশর ওয়াত তাওযী’, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪২২ হি. = ২০০১ খ্রি.), খ. ১, পৃ. ৩৩, হাদীস: ৫৯, হাদীসটি হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।
[2] আল-কুরআনুল করীম, ৪ ( সূরা আন-নিসা): ৫৮
[3] আল-হাসকফী, আদ-দুররুল মুখতার শারহু তানওয়ীরিল আবসার ওয়া জামিয়িল বিহার, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪২৩ হি. = ২০০২ খ্রি.), পৃ. ৩৭৮
[4] আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহায়ন, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১১ হি. = ১৯৯০ খ্রি.), খ. ৪, পৃ. ১০৪, হাদীস: ৭০২৩, হাদীসটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে।
[5] আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহায়ন, খ. ৪, পৃ. ১০৪, হাদীস: ৭০২৪, হাদীসটি হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে।