আজিজী বাগের সুরভিত ফুল…
[আল্লামা মুফতি আবদুল হালিম
বোখারী (রহ.) স্মরণে শোকগাথা]
হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর
আল্লাহর হুকুমে অটল-অবিচল
ইবাদত-বন্দেগীতে যত্নবান
সুন্নাতে নবভীর আমলকারী অবিকল
জীবনধারায় তাকওয়াবান।
আকাবিরীনের প্রতিচ্ছবি
আজিজী বাগের সুরভিত ফুল
বিলিয়েছেন দীনের সুরভি
নেই কোনো তাঁর তুল!
ইলমে নবভীর নিশান হাতে
শহর- নগর, গঞ্জ-গ্রাম
সফর করেছেন দিবারাতে
অবিরত-অবিরাম।
ছাত্রজীবনের বিরল প্রতিভা
শিক্ষকতা জীবনের আদর্শ উস্তায
ইলমী আকাশের উজ্জ্বল আভা
মুমিন জনতার সরতাজ।
তাফসিরের ক্ষেত্রে বিদগ্ধ যিনি
হাদীসের মসনদেও ছিলেন প্রাজ্ঞ
তর্কশাস্ত্রেও খ্যাতিমান তিনি
ফিকহশাস্ত্রেও ছিলেন বিজ্ঞ।
ভাষাজ্ঞানেও এক বিদগ্ধজন
দক্ষতা ছিলো আরবী, বাংলা, ইংলিশে
সততই মধুর ছিলো মুখের বচন
উর্দু, ফার্সিও ছিলো যাঁর প্রজ্ঞায় মিশে।
কওমি, আলিয়া, কলেজ, ভার্সিটি
সব শিক্ষাঙ্গনে যাঁর কৃতিত্ব
তাঁরই জন্মে ধন্য স্বদেশের মাটি
ছিলো যাঁর বিরল পাণ্ডিত্য।
সংগঠন ও প্রশাসনিক কর্মধারায়
সুদক্ষতার দুর্লভ উদাহরণ
ইলমে নবভীর বিকাশধারায়
যেন হেরার আলোর উদগীরণ।
তিনি ছিলেন হাজী সাহেব হুজুরের
রেখে যাওয়া আমানাহ
ছিলেন তিনি সদর সাহেব হুজুরের
আধ্যাত্মিক চেতনা।
ওয়াজ ও আত্মশুদ্ধির ময়দানে
প্রখ্যাত খতীব ও সাচ্ছা পীর
বাতিল হঠানোর আন্দোলনে
যেন এক ঈমানদীপ্ত বীর।
রাজনৈতিক অঙ্গনেও যিনি
আকাবিরীনের পদাঙ্ক অনুসারী
খতীবে আযমের শিষ্য তিনি
মোদের আল্লামা বোখারী।
ইসলামী নেজাম প্রতিষ্ঠার
চৌকস এক সেনানী
দৃষ্টান্ত তিনি তাকওয়া, নিষ্ঠার
আলোকময় যাঁর জিন্দেগানি।
বিনয়, ভদ্রতা, চৌকস বুদ্ধিমত্তা
অন্যতম চারিত্রিক ভূষণ যাঁর
ছিলো উচ্চ মর্যাদা ও আপন স্বকীয়তা
তবে ছিলো না কোন অহঙ্কার।
চলে গেলেন তিনি অনন্ত পারাপারে
শায়িত হলেন কবরে চিরনিদ্রায়
আল্লাহ রেখো তাঁকে জান্নাতী গুলজারে
এমন দোয়ায় জানিয়েছি চিরবিদায়।
পথ চলেছি অবিরত
মুহাম্মদ ইসমাঈল বুখারী
একা আমি বড়ো একা
পথ চলেছি অবিরত
চলার পথে সদাই দেখি
দুঃখ-বেদন শত শত।
তবে আমি জানি শুধুই
চলতে হবে সমুখপানে
তাইতো সবই হজম করি
নীরব মনে সরব ধ্যানে।
কারো প্রতি নেই অভিযোগ
এমনকি নেই অনুযোগও
জীবন চলার পথে পথে
পাই গো যদি দুঃখ শতও।
ক্ষণকালের এই জীবনে
থাকবোই বা বেঁচে কদিন
তাইতো আমার নেই দুঃখ
নাইবা আসুক ফিরে সুদিন।