দৈনিক রুটিনের মাধ্যমে ভালো ছাত্র হওয়ার উপায়
সাইফুল ইসলাম
কিভাবে ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় খুঁজবেন? এর উপায় অনেক। তার মধ্যে সহজতর পদ্ধতিগুলো জানা থাকলে যে কোন ছাত্রই হয়ে উঠতে পারেন ভালো ছাত্র। প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অনেক দামী আর বৈচিত্রময়। তাই এই মুহূর্তগুলোকে কাজে লাগানোই হচ্ছে প্রতিভাবান লোকেরদের কাজ। ছাত্র জীবনেও এরকম একটি বৈচিত্রময় কাল অতিক্রম হয়। একে অনেক ছাত্র সাজিয়ে ফেলেন নিজেদের মত করে। যার ফলাফল নিশ্চিত কামিয়াবি ও ভালো রেজাল্ট। আর এই আয়োজনের নাম হল প্রতিদিনের রুটিন অথবা ডেইলি রুটিন। কিভাবে ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় অনুশীলন করতে গেলে কতগুলি মৌলিক বিষয় আসে। তার মধ্যে একটি অবশ্যই ডেইলি রুটিন। এছাড়াও আছে সহায়ক অনেক কাজ। তবে ডেইলি রুটিনের অনেক সুবিধা আছে। যে কোন খারাপ ছাত্রকেই ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় বাতলে দিতে পারে। এই লেখায় আমি তাই শুধু ডেইলি রুটিন নিয়েই আলোচনা করেছি।
একটি ডেইলি রুটিন শুরু হতে পারে ঘুম থেকে উঠার পরপর-ই। এটা সকালে যে কোন মুহূর্ত হতে পারে। তবে সূর্য ওঠার আগে হলে ভালো হয়। কারণ এই সময়ে শরীরের ইন্দ্রীয়গুলো ভালো কাজ করে। কিভাবেভালো ছাত্র হওয়ার উপায় অনুশীলন করবেন তা একটি রুটিন আপনাকে দিতে পারে। একটি ট্রেনের ইঞ্জিনের চেয়ে বেশি বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
কিভাবে ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় বের করা যায় তা বিশ্লেষন করছি
প্রথমেই একটি ডেইলি রুটিনের জন্য যা করতে পারেন তা হচ্ছে,
পরিকল্পনা তৈরি: নিজে নিজেই যেহেতু আপনি একটি রুটিন বানাবেন তাই নিজে থেকেই পরিকল্পনা করুন। কিভাবে সাজালে ভালো হয়, কোন কাজের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে এসব মাথায় রেখে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করে ফেলুন। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে যান।
সময় ভাগ করা: সময়কে ভাগ করে নেয়ার পর তা দিয়ে দিনের একেক টি কাজ পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারাই রুটিনের কাজ। যদি ব্যর্থ হয় তবে রুটিন ভ্যালু লেস হয়ে যায়। তাই একটি রুটিন কখনোই এলোমেলো হতে পারে না সফলতার জন্যে। সময়ের কাজ সময়ে করতে পারার একটা চর্চা করতে হবে।
সময় ভাগ করে ফেললে আপনার রুটিনের জন্য সহজ হয়ে যাবে। তবে এমন সময় নিয়ে আসবেন না যে সময়ে আপনি কোন নির্দিষ্ট কিছুই করতে পারবেন না। যেমন আপনি মনে করলেন যে দুটা কাজের ফাঁকে ১০মিনিট সময় আছে অন্য একটি কাজ করে ফেলা যায়। হ্যাঁ, করে তো ফেলা যায় তবে তা যেন বড় কোন কাজ না হয় সে দিকেই খেয়াল রাখতে হবে। ডেইলি রুটিনের জন্য অবশ্যই পাঁচ মিনিটের বেশি সময় লাগে এমন সব কাজ সময়ের মধ্যে ধরতে হবে।
সময় পরিমাপ: প্রত্যেক কাজের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে। যেমন আপনি একটি হোমওয়ার্ক করতে আপনার হয়ত ৩০ মিনিট সময় লাগে। তাহলে আপনার রুটিনে ত্রিশ মিনিটের কম সময় নেয়া বোকামি হবে। এজন্য প্রত্যেক কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় পরিমাপ করতে হয়। রুটিন করার আগে এই সময়জ্ঞান আপনাকে অর্জন করে নিতে হবে।
রুটিন স্থায়ীকরণ: প্রারম্ভিক পর্যবেক্ষনের জন্য আপনি একটি খসড়া রুটিন দিয়ে শুরু করতে পারেন। যেমন নাহু-সারফ বা হাদীসের জন্য প্রতিদিন এক ঘণ্টা। কিন্তু কিছুদিন (প্রায় এক মাসের) মধ্যে দেখলেন যে একঘণ্টা অনেক কম হচ্ছে। আপনার আরও বেশি সময় দরকার। তাহলে
আরও বাড়িয়ে নিতে পারেন। বাড়িয়ে নিলে যদি মনে হয় যে এবার ঠিক আছে তখন সেটা স্থায়ী ডেইলি রুটিন হিসেবে নিন। এভাবে খসডা থেকে আপনি স্থায়ী রুটিনে অনেক কাজে সময় কমাতেও পারেন।
উদাহরণ আপনার গোসলে প্রতিদিন ৩০ মিনিট সময় লাগে। আপনি চাইলে আরও দ্রুত গোসল সারতে পারেন। তখন হয়ত ৭মিনিটের মধ্যেই গোসল শেষ, একে স্থায়ী রুটিনে নিন। আর এই সাত মিনিটের বাইরে আর যাওয়া যাবে না। এটাই আপনার ইফিসিয়েন্সি বা দক্ষতা। কাজে দিন দিন দক্ষতা বাড়ে। তাই সময় আমাদের দিন দিন বাড়তে থাকে, কারণ কাজের জন্য সময় কম লাগে। এভাবেই আপনি অনেক বেশি কাজ শেষ করতে পারবেন। যিনি সেরা তিনি অবশ্যই আমাদের চেয়ে দ্রুত কাজ করেন।
রুটিন পরিবর্তন: এটা লাগবেই। কোন রুটিনেই আপনি জীবন ধরে রাখতে পারবেন না। তার জন্য বৈচিত্র নিয়ে আসতে হয়। তিনমাসে ছোটখাট পরিবর্তন করতে পারেন। আবার বছরে নতুন প্ল্যানিংকালে অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারেন। কোন কোন ক্ষেত্রে চিকিৎসা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণেও পরিবর্তন লাগতে পারে। পরিবর্তনকে উন্নতি হিসেবে নিন। যেমন আপনার সাধারণ জীবন থেকে উন্নত জীবন। নিজেই বের করুন কী করলে আপনি আরও উন্নত জীবন পাচ্ছেন।
আশা করছি এভাবেই আপনি একটি ডেইলি রুটিনের মধ্যে দিয়ে নিজেকে আরও উন্নত এবং মেধাবী করতে পারবেন।
বিন্দুবিহীন শোকগাথা
[দারুল উলুম দেওবন্দ ভারতের শায়খুল হাদীস ও আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী (১৯৪২-২০২০ খ্রি.)-এর স্মরণে বিন্দুবিহীন কবিতা]