মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহসহ বিশিষ্টজনের ইন্তিকালে জামিয়া প্রধানের গভীর শোক প্রকাশ
মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.): আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার সম্মানিত পরিচালক ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী হাফিযাহুল্লাহ এক শোকবার্তায় উপমহাদেশের উলুমে নুবুওয়াতের মারকায দারুল উলুম দেওবন্দের শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরীর ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, ভক্ত-অনুরক্তদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি দুআ করেন, আল্লাহ যেন সকলকে সবরে জমিল দান করেন এবং দারুল উলূম দেওবন্দের জন্য উত্তম স্থলাভিষিক্তের ব্যবস্থা করেন।
আল্লামা বোখারী আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.)-এর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, জটিল বিষয়কে সহজভাবে উপস্থাপনার জন্য তার বিশেষ খ্যাতি ছিল। দর্শনশাস্ত্রে শাহ ওয়ালী উল্লাহ (রহ.)-এর কালজয়ী কিতাব হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগার ব্যাখ্যাগ্রন্থ রহমাতুল্লাহিল ওয়াসিআ লিখে দীনী জ্ঞান-ভাণ্ডারে অতুলনীয় সমৃদ্ধি এনেছেন। হাদীসশাস্ত্রে তুহফাতুল আলমায়ী ও তুহফাতুল কারী এবং তাফসীরে হিদায়াতুল কুরআন লিখে যে অবদান রেখে গেছেন তা জাতি কখনো ভুলতে পারেন না।
আল্লামা বোখারী বলেন, তিনি অত্যন্ত চৌকশ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আমি গতবছর তাঁর সাথে সক্ষাতের জন্য তাঁর বাসায় যাই। তখন এক পর্যায়ে আমি তাঁর কিতাব তুহফাতুল কারীর প্রশংসা করি। তিনি তাঁর সামনে প্রশংসা করাকে ভালো মনে করতেন না। যদিও আমি অতিরিক্ত প্রশংসা নয়, বরং বাস্তবতা প্রকাশ করেছি। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ না করে বলেই দিলেন, দেখো, দেখো, মাওলানা মুজে পাম্পিং কর রহাহে। যেন হাদীসের ভাষায়:
«إِذَا رَأَيْتُمُ الْـمَدَّاحِيْنَ، فَاحْثُوْا فِيْ وُجُوْهِهِمِ التُّرَابَ».
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অতিমাত্রায় প্রশংসাকারীদেরকে দেখলে তাদের চেহারায় মাটি নিক্ষেপ করবে।’
তিনি এর ওপর আমল করেছেন। তিনি আমাদেরকে খুবই মেহমানদারী করেছেন। প্রতিবারের মতো সেদিনও আমি তাঁর আন্তরিক আতিথিয়তায় মুগ্ধ হয়েছিলাম।
আল্লামা পালনপুরীর মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ একজন কিংবদন্তি আলেম দীন, দাঈ ও বহুপ্রতিভার অধিকারী আলেমকে হারিয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে উম্মাহর যে ক্ষতি হল তা পূরণ হবার নয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন এবং তাঁর খেদমাতগুলো কবুল করে যথার্থ প্রতিদান দান করুন, আমীন।
উল্লেখ্য যে, দারুল উলুম দেওবন্দের শায়খুল হাদীস ও সহীহ আল-বুখারী ভাষ্যকার আল্লামা মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী ১৯ মে ২০২০ (মঙ্গলবার) সকাল ৭টায় মোম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মুফতি সাঈদ আহমাদ পালনপুরী ১৪ মে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে মোম্বাইয়েরএকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিউতে) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে ইন্তেকাল করেন তিনি।
আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়ব (রহ.): আল-জামিয়া আল-আরাবিয়া জিরির মুহতামিম, পীরে কামেল আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়ব সাহেবের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)। এক শোকবার্তায় আল্লামা বোখারী বলেন, আল্লামা মুহাম্মদ তৈয়ব সাহেব ছিলেন বহু গুণে গুণান্বিত একজন বুযুর্গ ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন কওমী অঙ্গনের একজন যোগ্য অভিভাবক। তাঁর সঠিক দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হতো এদেশের বহু দীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তিনি আমাদের জামিয়া পটিয়ার মজলিসে শুরার সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। বিভিন্ন জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য বড় সহায়ক ছিলো। তাঁর মৃত্যুতে জামিয়া পটিয়াসহ দেশের অনেক দীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একজন যোগ্য অভিভাবক হারিয়েছে।
তিনি জামিয়া পটিয়ার বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রতি বছর তাশরীফ আনতেন। তাঁর ওয়ায-উপদেশে উপকৃত হতো দেশ ও জাতি। তাঁর অসাধারণ গাম্ভীর্যপূর্ণ ওয়াজ-নসীহতে সকলেই অনুপ্রাণিত হতো। তাঁর আন্তরিকতাপূর্ণ দুআয় সকলের চোখ অশ্রু সিক্ত হতো। তাঁর আবেগী আলোচনায় আবেগাপ্লুত হতো অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তাঁর হেদায়াতি আলোচনায় পথ খুঁজে পেতো অসংখ্য পথহারা মানব সন্তান। তাঁর নুরানি চেহরা দেখে মুগ্ধ হতো যে কেউ। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা কিছুতেই পূরণ হওয়ার নয়।
আমরা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকাহত পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ তাঁর খেদমাতগুলো কবুল করুন, তাঁর স্মৃতি বিজড়িত প্রতিষ্ঠানের হেফাজত করুন এবং ভুল-ক্রটিগুলো ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মকাম দান করুন, আমীন।
উল্লেখ্য যে, দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া জিরির মহাপরিচালক গত ২৪ মে ২০২০ (রবিবার) দিবাগত রাত ১টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তিকাল করেন। রমযান মাসের শেষ দশকে ইতেকাফ শেষে অসুস্থ হয়ে পড়েন মাওলানা শাহ মুহাম্মদ তৈয়ব সাহেব। তাঁকে রোববার রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অসুস্থ শরীর নিয়েই ঈদের দিনের আগের তাৎপর্যপূর্ণ রাতের নফল নামায পড়ছিলেন তিনি। নামাযের এক সময় সেজদারত অবস্থায় তিনি ইন্তিকাল করেন।
শায়খুল হাদীস আল্লামা ইদরীস (রহ.): আল-জামিয়াতুল আরাবিয়া নসীরুল উলূম (নাজির হাট বড় মাদরাসা)-এর মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ ইদরীস সাহেবের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)। এক শোকবার্তায় আল্লামা বোখারী (দা. বা.) বলেন, নাজিরহাট বড় মাদরাসা দেশের একটি প্রাচীনতম দীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানকার শায়খুল হাদীস ও মুহতামিম ছিলেন আল্লামা মুহাম্মদ ইদরীস সাহেব। তিনি সেখানে প্রায় ১৬ বছর যাবৎ মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ হাদীস বিশারদ, প্রাজ্ঞ পরিচালক এবং একজন খোদাভীরু মুখলিস ব্যক্তিত্ব। জীবনের সর্বক্ষেত্রে তিনি একনিষ্ঠতার সাথে কাজ আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। তিনি মাদরাসার জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যান। তাঁর অক্লান্ত মেহনত-প্রচেষ্টায় নাজির হাট বড় মাদরাসার পড়ালেখা এবং আর্থিক অগ্রগতি উভয় ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।
আল্লামা বোখারী বলেন, আমি নাজিরহাট বড় মাদরাসার শুরা কমিটির সদস্য। মজলিসে শুরায় মাদরাসার আর্থিক ও একাডেমিক রিপোর্ট পেশ করা হত। তিনি প্রায় ১৬ বছর যাবৎ মাদরাসা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। এ দীর্ঘ সময়ে তাঁর কোনো অনিয়ম চোখে পড়েনি। তিনি আমাকে খুবই ভালবাসতেন। আমাদের জামিয়া পটিয়ায় তাশরীফ আনতেন। জামিয়ার বার্ষিক সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ দিক-নিদের্শনা ও পরামর্শ দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হত। তিনি একজন দক্ষ আলেমে দীন ও বিজ্ঞ হাদীস বিশারদ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়া বড় দুষ্কর।
আমরা দুআ করি, আল্লাহ যেন তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করেন, তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসের উচ্চ মকাম দান করেন, তাঁর খেদমাতগুলো কবুল করেন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের হেফাজত করেন। আর তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ যেন তাঁদেরকে সবরে জমীল নসীব করেন, আমীন।
উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রামের নাজিরহাট বড় মাদরাসার মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ ইদরীস ২৮ মে ২০২০ (বুধবার) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেছেন।
প্রবীণ আলেমে দীন মাওলানা নুরুল ইসলাম (রহ.): কক্সবাজার জেলার প্রবীণ আলেমে দীন, বড় মহেশখালী নতুন বাজার এমদাদিয়া কাসেমুল উলুম (বড় মাদরাসা)-এর মুহতামিম মাওলানা নুরুল ইসলাম সাহেবের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস, আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)। আল্লামা বোখারী এক শোকবার্তায় মরহুমের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর উচ্চ মর্যাদার জন্য মহান প্রভুর দরবারে কায়মনোবাক্যে দুআ করেন।
এক বিবৃতিতে আল্লামা বোখারী বলেন, মাওলানা নুরুল ইসলাম (রহ.) ছিলেন একজন দক্ষ পরিচালক, সদালাপী, উদারমনা ও বিজ্ঞ আলেমে দীন। তাঁর দক্ষ পরিচালনায় নতুন বাজার বড় মাদরাসার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মাদরাসার আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি পড়ালেখার উন্নয়নের প্রতি তাঁর তীক্ষ্ণ নজর ছিল। তাই, দিনদিন মাদরাসার পড়ালেখা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হয়েছে। তিনি খুবই একনিষ্ঠতা ও দক্ষতার সাথে মাদরাসা পরিচালনা করেছেন। তাঁর ইন্তিকালে মাদরাসা পরিচালনা জগতে বড় শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
আমরা তাঁর মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং তাঁর ভক্ত-অনুরক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমাবেদনা জানাচ্ছি। আল্লাহ তাআলা তাঁর খেদমতগুলো কবুল করত তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সু-উচ্চ মাকামে সমাসীন করুন, আমীন।
উল্লেখ্য যে, মাওলানা নুরুল ইসলাম গত ৬ জুন ২০২০ (শনিবার) আনুমানিক রাত ৮ ঘটিকার সময় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।
মাননীয় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী হাফেয শেখ আবদুল্লাহ (রহ.): গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম-এর সম্মানিত মুহতামিম, হাকীমুল ইসলাম আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)। তিনি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। মহান প্রভুর দরবারে দুআ করেন, আল্লাহ তাআলা যেন তাদের সকলকে সবরে জামিল এবং জাতিকে উত্তম স্থলাভিষিক্ত দান করেন।
এক শোকবার্তায় আল্লামা বোখারী বলেন, আমার সাথে শেখ মুহাম্মদ আবদুল্লাহর ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক ও হৃদ্যতা ছিল। তিনি আলেম-ওলামাকে আন্তরিকভাবে ভালবাসতেন। আমাকেও খুবই শ্রদ্ধা ও সম্মান করতেন। ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়েই তিনি আমার কাছে পরামর্শ চাইতেন। বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামের মতামতকে গুরুত্ব দিতেন।
ছোটবেলা থেকেই তিনি হযরত মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী (রহ.)-এর সান্নিধ্যে বড় হয়েছেন। তিনি কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। আলেম-ওলামাদের সঙ্গে গভীর হৃদ্যতা ছিল তাঁর। তিনি বিনয়ী ও ধর্মভীরু ব্যক্তি ছিলেন। ধর্মপ্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর খুব স্বল্পসময়ে তিনি ধর্মীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করেছেন।
আল্লামা বোখারী বলেন, গত বছর হজের সফরে শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আমাদের সফরসঙ্গী ছিলেন। তখন তিনি অনেকবার আমার রুমে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আমার খুব কাছে কাছে থাকতেন। তিনি আমাদের প্রতি যে আবেগ, আন্তরিকতা, হৃদ্যতা ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা কখনো ভুলার নয়। সত্যিই তার মৃত্যুতে আমরা একজন আলেমবান্ধব মন্ত্রী হারালাম। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট দুআ করি, আল্লাহ যেন তার ক্রটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করেন এবং জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন, আমীন।
উল্লেখ্য যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ১৪ জুন ২০২০ (শনিবার) রাত পৌনে ১২টার দিকে ইন্তিকাল করেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শনিবার রাত ১০টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আইসিউতে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
আলহাজ আহমদ শফী (রহ.): পটিয়া থানার অন্তর্গত শোভনদণ্ডী রশিদাবাদ আরফা করীম উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা, শফি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিডেটের সম্মানিত স্বত্ত্বাধিকারী, বিশিষ্ট দানবীর ও সমাজসেবক আলহাজ আহমদ শফী সাহেব ১৬ জুন ২০২০ (মঙ্গলবার) আনুমানিক বিকাল ৪ ঘটিকার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর ইন্তিকালে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ) গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি মরহুমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর মাগফেরাত কামনা করেন।
আল্লামা বোখারী বলেন, আলহাজ আহমদ শফী সাহেব একজন আলেমবান্ধব ও দীনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি আমাদের জামিয়া পটিয়ার সাথে গভীর সম্পর্ক রাখতেন। সত্যিই তাঁর মৃত্যুতে জামিয়া পটিয়া একজন একনিষ্ঠ হিতাকাঙ্ক্ষীকে হারিয়েছে।
জামিয়া প্রধান আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)সহ জামিয়ার সকল ছাত্র-শিক্ষক তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত ও মর্মাহত। আমরা মরহুমের মাগফিরাত কামনা করি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করি। হে আল্লাহ! আপনি দয়া করে তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন এবং তাঁর পরিবার-পরিজনকে সবরে জমীল নসীব করুন, আমীন।
মাওলানা মুসা (রহ.): রাঙ্গুনিয়া থানাধীন আল-জামিয়াতু কোরআনিয়া আজীজুল উলুম ইউনুসিয়া চন্দ্রঘোনা মাদরাসার মুহতামিম, কর্মঠ ও মেধাবী আলেমে দীন, মাওলানা মুসার ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার সম্মানিত মুহতামিম আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)।
গণমাধ্যমে দেয়া এক শোকবার্তায় আল্লামা বোখারী বলেন, মাওলানা মুসা ছিলেন আমার প্রিয় ছাত্র। তিনি জামিয়া পটিয়ায় দাওরায়ে হাদীস পড়াকালীন সময়ে অত্যন্ত সুন্দর ও শুদ্ধভাবে হাদীসের ইবারত পড়তেন। তার ইবারত পাঠে বিমুগ্ধ হতো সকল উস্তাদ-মুহাদ্দিস। তিনি তাঁর আদব ও শিষ্টাচার, খেদমাত ও সেবার মাধ্যমে শিক্ষকমণ্ডলীর নৈকট্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। খোদাপ্রদত্ত প্রতিভা ও নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে জামিয়া পটিয়ার শীর্ষ মেধাতালিকায় নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন।
জামিয়া থেকে ফারেগ হওয়ার পর তাকে জামিয়া টেকনাফে শিক্ষক হিসেবে পাঠিয়েছিলাম। সেখানে খুবই সুনামের সাথে কয়েক বছর পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। অতঃপর রাঙ্গুনিয়া কোদালা মাদরাসায় দীর্ঘদিন যাবৎ খেদমাত আঞ্জাম দিয়ে যান। পরবর্তীতে চন্দ্রঘোনা ইউনুসিয়া মাদরাসার সঙ্কটময় অবস্থায় তাকে মুহতামিম হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা, আত্মত্যাগ, কর্মকৌশল ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে মাদরাসাটিকে উন্নতির শীর্ষে উপনীত করেন। স্বল্পসময়ে তিনি মাদরাসার আকাশচুম্বী অট্টালিকা ও নতুন আঙ্গিকে ভবন-নির্মাণের মাধ্যমে রচনা করলেন মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের এক গৌরবময় নিদর্শন।
শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও শিক্ষা-দীক্ষায় মাদরাসাটিকে পরিণত করেন একটি আদর্শ মাদরাসায়। বর্তমানে আনজুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস (কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে)-এর উল্লেখযোগ্য মাদরাসারসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো চন্দ্রঘোনা ইউনুছিয়া মাদরাসা। এই মাদরাসার সার্বিক উন্নতি-অগ্রগতির পেছনে মাওলানা মুসার ভূমিকা ও অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি খুবই সামাজিক, উদার, বিনয়ী ও অতিথিপরায়ণ ছিলেন। তিনি যে কোন বিষয়ে আমার কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে চলতেন। তার আচার-ব্যবহার, আদব-শিষ্টাচার ও ভক্তি-ভালবাসায় সদা অন্তর প্রশান্তি অনুভব করতো। তার মৃত্যুতে সত্যিই আমরা জামিয়া পটিয়ার ছাত্র-শিক্ষক সকলেই শোকাহত ও মর্মাহত।
আমরা তাঁর মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-অনুরক্ত এবং সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। হে আল্লাহ! দয়া করে তাঁর খেদমতগুলো কবুল করুন, তার প্রতিষ্ঠানের জন্য উত্তম কার্যনির্বাহির ব্যবস্থা করুন এবং তার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন, আমীন।
উল্লেখ্য যে, তিনি গত ২৬ জুন ২০২০ (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ২.৩০ মিনিটে ইন্তিকাল। জুমাবার বিকাল ৩টায় তার একমাত্র সুযোগ্য সন্তান হাফেয মাওলানা মরগুবুর রহমানের ইমামতিতে জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর উক্ত মাদরাসার কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন পশ্চিম পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
জামিয়া পটিয়ার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচারে মজলিসে ইলমির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
সম্প্রতি ফেসবুকের একটি গ্রুপে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দীনী প্রতিষ্ঠান জামিয়া পটিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করায় মাদরাসার মজলিসে ইলমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। জামিয়া পটিয়ার মজলিসে ইলমির ছয় সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানান তাঁরা।
বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, একটি মহল বেশ কিছুদিন ধরে জামিয়ার উন্নতি ও অগ্রগতির প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে জামিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় কিছুদিন পূর্বে এক ব্যক্তি ‘জামিয়া পটিয়া হৃদয়ে’ নামক একটি গ্রুপে জামিয়া প্রধান ও মজলিসে ইলমির বিরুদ্ধে স্বর্থপরতার বশীভূত হয়ে মিথ্যা, বানোয়াট, অবাস্তাব ও ভিত্তিহীন লেখালেখির মাধ্যমে স্ট্যাটাস প্রকাশ করা হয়েছে।
তাতে জামিয়ার ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষন্ন হয়েছে এবং হিতাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে জামিয়া সম্পর্কে সন্দেহ ও ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করছি যে, বেশ কিছুদিন ধরে ‘জামিয়া পটিয়া হৃদয়ে’ নামক ফেইসবুক ফেইজ থেকে জামিয়া সম্পর্কে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাই এই ফেইজটি সম্পর্কে সকলকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিত্তিহীন এমন অপপ্রচার দ্বারা আমরা মজলিসে ইলমীর সকল সদস্য খুবই দুঃখিত ও মর্মাহত। তাই আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সর্বসম্মতিক্রমে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জামিয়া প্রধানের নিকট সুপারিশ করছি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ইসলামের প্রচার-প্রসার, শিক্ষার্থীদেরকে দীনী শিক্ষা-দীক্ষা ও উন্নত চরিত্র গঠনে জামিয়ার ভূমিকা চিরস্মরণীয় ও ঈর্ষণীয়।
হযরত মুফতি আযীযুল হক (রহ.) ১৩৫৮ হিজরী সালে এখলাস ও তাকওয়ার ভিত্তিতে ‘জমিরিয়া কাসিমুল উলুম’ নামে এটির ভিত্তি স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনিই মাদরাসার প্রধান পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৩৭৭ হিজরী সনে তাঁর ইন্তিকালের পূর্বে তিনি নিজেই হযরত আল্লামা আলহাজ শাহ মুহাম্মদ ইউনুস (রহ.)-এর নিকট মুহতামিমের গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেন। তিনি নিজ ঈমানী শক্তি ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে মাদরাসাটিকে পরিণত করলেন বৃহত্তর জামিয়ায়।
১৪১২ হিজরী সালে তিনি প্রভুর দরবারে গমন করেন। তার ইন্তেকালের পর এ গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয় হযরত আল্লামা শায়খ হারুন ইসলামাবাদী (রহ.)-এর ওপর। তার জ্ঞান ও প্রতিভা, যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে জামিয়ার উন্নতি ও অগ্রগতির নতুন ধারা সূচিত হয়।
১৪২৪ হিজরী সালে তার ইন্তেকালের পর আল্লামা নুরুল ইসলাম কদীম সাহেব (রহ.)-এর নিকট অর্পিত হয় জামিয়া পরিচালনার মহান দায়িত্ব। তাঁর শারীরিক দুর্বলতার দিকে লক্ষ্য করে ১৪২৯ হিজরী সনে তিনি নিজেই মজলিসে শুরার মাধ্যমে বিশিষ্ট ইসলামী বুদ্ধিজীবী, হাকীমুল ইসলাম আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)-এর হাতে সোপর্দ করেন এ গুরুদায়িত্ব।
বর্তমানে আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ)-এর সুষ্ঠু পরিচালনায় জামিয়া তার লক্ষ্যপানে এগিয়ে চলছে। তিনি তার চিন্তা ও চেষ্টা, নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞা, মনোবল ও তাকওয়া দ্বারা জামিয়াকে শিক্ষা-দীক্ষায় বহুমূখী উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন জামিয়া পটিয়া উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা জগতে সমাদৃত। সুন্দর ব্যবস্থাপনা, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো সুদৃঢ়করণ, আর্থিক খাতের উন্নতি সাধন ও দেশব্যাপী সুনাম অর্জনে এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে।
উল্লেখ্য, জামিয়া প্রধান আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (হাফিযাহুল্লাহ) যেকোনো কাজে স্বেচ্ছাচারিতাকে বরাবরই এড়িয়ে চলেন এবং মজলিসে ইন্তেজামিয়া ও মজলিসে ইলমীর পরামর্শক্রমেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। তাই তার হাতে সুচিত হচ্ছে জামিয়ার গৌরবোজ্জল ইতিহাস। আমরা তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
মজলিসে ইলমীর সদস্যগণের মধ্যে রয়েছেন, ১. মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (দা. বা.), ২. মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহ (দা. বা.), ৩. মাওলানা আমীনুল হক (দা. বা.), ৪. মুফতি শামসুদ্দিন জিয়া (দা. বা.), ৫. মাওলানা আবু তাহের নদভী (দা. বা.) ও ৬. মুফতি জসীমুদ্দিন (দা. বা.)।
জামিয়ার পরবর্তী আর্ন্তজাতিক ইসলামি মহাসম্মেলন ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার পরবর্তী আর্ন্তজাতিক ইসলামি মহাসম্মেলন আগামী ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে ইন শা আল্লাহ। উক্ত তারিখে কোনো দীনী মাহফিল সভা সম্মেলনের দিন ধার্য না করার জন্য জামিয় প্রধান আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বুখারী (দা. বা.) আহ্বান জানান।
করোনা ভাইরাস নিয়ে শায়খুল ইসলাম আল্লামা তকী উসমানীর পরামর্শ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আজকাল পুরো দুনিয়ার মধ্যে করোনা ভাইরাসের আলোচনা চলছে। বলা হচ্ছে যে এটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এটাকে ঠেকানো বা তা থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। কোনো কোনো হযরত মনে করছেন এ ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া তাওয়াক্কুলের খেলাফ বা বিপরীত। একথা সঠিক নয়। এমনকি রাসূল সা. আদেশ করেছেন যে, এরকম পরিস্থিতিতে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
রাসূল (সা.) তায়াউন বা মহামারির ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন, যখন কোনো জায়গার মধ্যে মহামারি আসে তখন কেউ যেনো বের না হয় এবং বাইরের কেউ যেনো ভেতরে না যায়। এ পরিস্থিতিতে এ ধরনের ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা খোদ শরীয়তেরই চাহিদা। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আমাদের সরকার সুস্থ থাকার লক্ষ্যে যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা পালন করা অবশ্য কর্তব্য। আমাদের ভালোর জন্যই এটা মানা জরুরি। কোনো সরকার যখন কল্যাণকামিতার স্বার্থে কোনো নির্দেশনা দেন তখন তা মেনে চলা আবশ্যকীয়।
বিশেষ করে যেখানে বড় সম্মেলন হয় সেখানে এই ভাইরাসের প্রভাব বা লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। এরকম কোনো সম্মেলন না করা বা পিছিয়ে দেওয়া উচিত। যেমনি বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠান। মূলত এর জন্য বড় কোন আয়োজন না করে সুন্নত হলো সংক্ষেপে সম্পন্ন করা। যদি বিয়ে করাই লাগে, তাহলে যেনো সংক্ষেপে করা হয়। জুমা ও অন্যান্য নামাযের জামাতের ক্ষেত্রেও এ বিষয়গুলো যেন লক্ষ্য রাখা হয় যে, সুন্নাত ঘরে আদায় করে মসজিদে আসবে। নামায শেষে ঘরে ফিরে পরের সুন্নত আদায় করবে। মসজিদে পড়বে না। বরং সুন্নত ঘরে পড়াই বেশি সওয়াব ও উত্তম। দ্বিতীয় বিষয় হলো অযু ঘরে করে আসবে।
ইমাম সাহেবদের প্রতি কথা হলো, আপনারা জুমা এবং অন্যান্য জামাত সংক্ষেপে পড়াবেন। জরুরতের সময় সংক্ষেপ কেরাত পড়া উত্তম। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা এসেছে যে, যদি ভাইরাস বেশি ছড়িয়ে পড়ে তখন মুসাফাহা থেকে বেঁচে থাকবেন। এরকম নির্দেশনা আসলে এটি মানাও জরুরি। এরকম প্রত্যেক কাজ যা ফরজ বা ওয়াজিব নয় এই মহামারি থেকে বাঁচার লক্ষ্যে তা ত্যাগ করলে কোন সমস্যা নেই। এই কোরোনা ভাইরাসকে গুরুত্ব দেওয়া নিজের জন্য যেমন জরুরি, অন্যের জন্যও উপকারী। যা রাসূল (সা.)-এর নির্দেশনারই মোতাবেক। তার ওপর আমাদের আমল করা জরুরি।
অনুবাদ : ইবাদ বিন সিদ্দিক