জামেয়া ওয়েবসাইট

বৃহস্পতিবার-১২ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি-১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি: নয়া ফিলিস্তিনের নীল নকশা

ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি: নয়া ফিলিস্তিনের নীল নকশা

ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি: নয়া ফিলিস্তিনের নীল নকশা

ড. মুহাম্মদ সাদিক হুসাইন

 

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ শুরু হয়েছে। চলছে আরব-মার্কিন-ইসরায়েল ত্রিমাত্রিক আলোচনা। কখনো গোপনে, আড়ালে-আবডালে। আবার কখনো প্রকাশ্যে। মিটিং কিংবা সামিটে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ফিলিস্তিন। যেখানে রয়েছে অসংখ্য নবী-রসূলের জন্মভূমি, মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘মসজিদে আকসা’। মধ্যপ্রাচ্যে অভিশপ্ত ইহুদিদের জীবন নির্বিঘ্ন করতেই মূলত এ দৌঁড়ঝাপ। শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি (Deal of the Century) অর্থাৎ শতাব্দীর সেরা চুক্তি। কথিত এ-শান্তিচুক্তির অর্থনৈতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিগত ২৫ ও ২৬ জুন বাহরাইনের রাজধানী মানামায়। যেহেতু চুক্তির প্রথমপক্ষ খোদ ফিলিস্তিনই ওই কর্মশালায় অংশ নেয়নি, চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ ঘনিভূত হচ্ছে সর্বত্র। যদিও বলা হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের সন্তুষ্টি কিংবা অসন্তুষ্টি; উভয় অবস্থাতেই এ-চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে। বল প্রয়োগ করে হলেও। এখানে ইসরায়েলপন্থী শক্তির মদমত্ততা সহজেই অনুমেয়।

স্মর্তব্য, বর্তমানে ইসরায়েলে ইহুদির সংখ্যা ৬৫ লাখ। বিশ্বে মোট ইহুদি জনসংখ্যা মাত্র ১ কোটি ৫০ লাখ। সংখ্যার দিক থেকে ইহুদিরা ক্ষুদ্র একটি ধর্মীয় জাতিগোষ্ঠী। অথচ বিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা ১৮০ কোটি। অর্থাৎ পৃথিবীতে মুসলিম জনসংখ্যা ইহুদির চেয়ে ১২০ গুণ বেশি। এ দেড় কোটি ইহুদি তাদের চাইতে ১২০ গুণ বেশি মুসলমানকে রীতিমত পেরেশান করে রেখেছে। কারণ শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ও যুগসচেতনতায় তারা মুসলমানদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। আর মুসলমানরা আয়েশি রাতের মখমল চাদর মুড়িয়ে অহর্নিশ ঘুমিয়ে।

১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ইহুদিরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য তাদের খ্রিস্টান বন্ধুদের নিয়ে কর্মযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। যেখানে যেখানে ইহুদি আছে তাদেরকে সংগঠিত করে। ব্যবসা-বাণিজ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। ইহুদিরা বাণিজ্য শুরু করছিল টমেটো রফতানি করে। এখন তারা বিশ্বে অন্যতম সমরাস্ত্র রফতানিকারক দেশ। ইসরায়েল রাষ্ট্রের চতুর্দিকে মুসলিম বসতি। জর্দান, ইরাক, সউদি আরব, মিসর, সিরিয়া, লিবিয়া সবই তো মুসলমানের রাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যের ৩০ কোটি মুসলমানের সঙ্গে যুদ্ধ করে ৮৭ লাখ জনসংখ্যার ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে গত ৭১ বছরব্যাপী। এভাবে একটা রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখাও তো অস্বাভাবিক ব্যাপার।

তারপরেও তারা স্বস্তিতে নেই। হামাসের চোরাগুপ্তা হামলা, ঈমানদীপ্ত মুসলমানদের ঘৃণাপ্রকাশ, মুসলিমবিশ্বের অনেকেরই রাষ্ট্রীয় অস্বীকৃতি… ইত্যাদি তাদেরকে নিয়ত উদ্বিঘ্ন করে রাখে। সবচে বড় কারণ মুসলিম জাতি জানুক না-জানুক তারা বিলক্ষণ জানে, পবিত্র কুরআন ও হাদীসের ভাষায় তাদের প্রতি নিয়মিত অভিশাপবর্ষণ তাদেরকে নিরন্তর উৎকন্ঠিত রাখে। যে-কোনো সময় এ ঘুমন্ত মুসলিম জাতি জেগে উঠতে পারে। তাই তাদের একটা শান্তির লেভেল দরকার। প্রয়োজন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির। ডিল অব দ্য সেঞ্চুরিই হতে পারে হয়তো তাদের একমাত্র মুক্তির সনদ। ২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ‘আল-কুদস’ তথা জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি, ‘গোলান’ মালভূমিকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড ঘোষণা এবং সর্বশেষ বাহরাইন-সমম্মেলন বা অর্থনৈতিক কর্মশালা.. সব একই সূত্রে গাঁথা।

আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে নতুন পরিকল্পনা শুরু হয় ইহুদি নিয়ন্ত্রিত মার্কিন প্রশাসনে। নেতৃত্ব দিয়েছে মেয়ে-জামাই ইহুদি বংশোদ্ভুত জারেড কুশনার। সহযোগিতা করেছে ইসরায়েল বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাসন গ্রিনব্ল্যাট। মার্কিন মিডিয়ায় এ-পরিকল্পনা মধ্যপ্রাচ্য-উদ্যোগ (Middle East initiative) শিরোনামে বারবার সামনে এসেছে। তবে অন্দর মহলে তা ট্রাম্প প্ল্যান (Trump Plan) বা কুশনার প্ল্যান (Kushner Plan) হিসেবে খ্যাত। বলতে পারেন ওপেন সিক্রেট।

আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি শান্তির পথে এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে সমঝোতার পথে না আসে তবে ২০৫০ সাল নাগাদ ইসরায়েলের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। কিসিঞ্জার ইহুদির সন্তান। ইসরায়েলের মঙ্গল অমঙ্গল তাকেও ভাবায়। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদির সংখ্যা ৫৭ লাখ। সংখ্যায় কম হলেও অর্থবিত্ত, জ্ঞান-বিজ্ঞানে তারাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ শ্রেণি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রায় ৭০ শতাংশের মালিক ইহুদিরা। মার্কিন অর্থনীতিও ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণে। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ইহুদিরা কৌশলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের রাষ্ট্র ইসরায়েলের অলিখিত তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করে রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে রাষ্ট্রটির পরিচর্যায় কোনও অবহেলা করেনি। প্রতিবছর ইসরায়েল রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সিংহভাগ খরচ প্রদান করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় পুরো সাহায্যই এখন মিলিটারি অ্যাসিসট্যান্স হিসেবে আসে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবহেলা করলে এ রাষ্ট্রটি টিকে থাকতো কিনা সন্দেহ।

কী আছে এ তথাকথিত ডিল অব দ্য সেঞ্চুরিতে? চুক্তির পুরোটা এখনো স্পষ্ট নয়। এর বিভিন্ন দিক রয়েছে। অর্থনৈতিক অংশের কিছুটা আলোচনায় এসেছে ২৫-২৬ জুনের মানামা সম্মেলনে। রাজনৈতিক কিছু অংশ ফাঁস করেছে ইসরায়েলি পত্রিকা ‘ইসরায়েল হাইয়োম’। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিতরণ করা নথির বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলেছে, এ নথিতে থাকা শর্তাবলির অংশবিশেষ ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপে উল্লেখও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাই ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টা জারেড কুশনার এবং ইসরাইল বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাসন গ্রিনব্ল্যাট। এ দুই জনের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর।

ফাঁস হওয়া নথি মোতাবেক, ওই চুক্তি সই হবে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা পিএলও এবং হামাসের মধ্যে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বর্তমানে দখলকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে, যার নাম হবে নয়া ফিলিস্তিন। এক বছরের মধ্যে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেবে। জেরুজালেম এখনকার মতো অবিভক্তই থাকবে। তবে শহরের দায়িত্ব ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। ইসরায়েল শহরের সাধারণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

জেরুজালেমে বসবাসরত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আনুমানিক ৪ লাখ ৩৫ হাজার। তারা হবেন নয়া ফিলিস্তিনের নাগরিক। জেরুজালেমে ইসরায়েলি পৌরসভা শহরের জমি সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকবে। নয়া ফিলিস্তিন ইসরায়েলি পৌরসভাকে কর দেবে। বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের শিক্ষাদীক্ষার দায়িত্বে থাকবে তারা। তবে সেখানে ফিলিস্তিনিরা জমি কিনতে পারবেন না। অপরদিকে পশ্চিমতীরে থাকা ইসরাইলি বসতি, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ ধরা হয়, সেগুলো ইসরায়েলের অংশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পাবে।

নথি মোতাবেক, গাজা উপত্যকার জন্য অতিরিক্ত ভূখণ্ড দেবে মিসর। সেখানে বিমানবন্দর, কারখানা, বাণিজ্যিক ও কৃষি কেন্দ্র থাকবে। কিন্তু সেখানে ফিলিস্তিনিরা বসবাস করতে পারবেন না। এ বিষয়ে পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমানে একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন গাজা ও পশ্চিম তীরের মধ্যে সংযোগের জন্য ইসরায়েলের ভেতর দিয়ে মাটি থেকে ৩০ মিটার ওপরে সংযোগ সড়ক নির্মিত হবে। এ মহাসড়কের ৫০ শতাংশ ব্যয় বহন করবে চীন। দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আমেরিকা ও ইইউ ১০ শতাংশ করে ব্যয় করবে।

ফাঁস হওয়া এ নথিতে ইঙ্গিত মিলছে, চুক্তিতে অর্থায়ন করবে আমেরিকা, ইইউ ও অজ্ঞাত কিছু উপসাগরীয় দেশ। নয়া ফিলিস্তিনে বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে ব্যয়ের জন্য ৫ বছরে তিন হাজার কোটি ডলার দেওয়া হবে। এ অর্থের মধ্যে আমেরিকা ২০ শতাংশ, ইইউ ১০ শতাংশ ও উপসাগরীয় দেশগুলো ৭০ শতাংশ বহন করবে।

সবচে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, নয়া ফিলিস্তিনের কোনো সেনাবাহিনী থাকবে না। শুধু পুলিশ বাহিনী থাকবে। নয়া ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি সুরক্ষা চুক্তি সই হবে। এ চুক্তি অনুযায়ী নয়া ফিলিস্তিনকে বৈদেশিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে ইসরায়েল। বিনিময়ে ইসরায়েলকে অর্থ পরিশোধ করবে ফিলিস্তিন। প্রয়োজনে আরব দেশগুলোও ইসরায়েলকে অর্থ পরিশোধ করবে।

ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি শীর্ষক ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, চুক্তি সই হলে হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিজেদের সমস্ত অস্ত্র মিসরের কাছে জমা দেবে। বিনিময়ে হামাস নেতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ও মাসিক বেতন দেবে আরব রাষ্ট্রগুলো। পিএলও এবং হামাস এ চুক্তি সই না করলে তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে। সেক্ষেত্রে আমেরিকা এমন সব প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করবে এবং অন্যদেরকেও বন্ধ করতে বলবে যেখান থেকে ফিলিস্তিনিরা আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকে। আমেরিকা এরইমধ্যে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা ও জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি হাসপাতালে অর্থায়ন বন্ধ করেছে। যদি পিএলও চুক্তি সই করে, কিন্তু হামাস ও ইসলামি জিহাদ এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করবে ইসরায়েল, যাতে পূর্ণ সমর্থন থাকবে আমেরিকার।

মোদ্দাকথা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতামত এবং প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায়, ফিলিস্তিনিদের দিয়ে একটি তাঁবেদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় আমেরিকার ট্রাম্প প্রশাসন। পূর্ণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নয়; কেবল স্বায়ত্বশাসন দিয়েই ঘুমিয়ে রাখতে চায় জাগ্রত ফিলিস্তিনিদের। সচেতন ফিলিস্তিনিরা ইতোমধ্যেই ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাসের সাবেক প্রধান খালেদ মেশাল জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ ও তাদের সহযোদ্ধারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শতাব্দীর চুক্তির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ। তুরস্কের পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনের এক বন্ধু সম্মেলনে বক্তৃতাকালে মেশাল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনের দাবিকে হালকা করার লক্ষ্যে এ অঞ্চলের কিছু দেশকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। এ সমঝোতা তারা মেনে নেবে না, এমনকি ফিলিস্তিন নেতারা মেনে নিলেও না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি মূলত ফিলিস্তিন সেলস ডিল। এর মাধ্যমে ইহুদি নিয়ন্ত্রিত আমেরিকা উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর পয়সা দিয়ে ফিলিস্তিনকে ইসরায়েলের হাতে বিক্রয় করতে চায়। এ-চুক্তির কুশীলব ট্রাম্পের ইহুদি জামাতা ভালোই করে জানেন, এ-চুক্তির শর্তগুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনচেতা জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। কারণ তা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থবিরোধী। ফলশ্রুতিতে তারা কথিত এ শান্তির চুক্তির বিরোধিতা করবেই। আর বিরোধিতা করলেই ইসরায়েলের পথ সুগম হবে। ঘোষণা আসবে ফিলিস্তিনের অবশিষ্ট ভূখণ্ডগুলো দখল করার, আন্তর্জাতিক চুক্তি অমান্য করার খোড়া অজুহাতে। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, জাতিসংঘের তত্তাবধানে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া ও জাপানও এ-চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অনুগামী রাষ্ট্রগুলো তো আছেই। ফলে জায়নবাদী ইহুদিদের চিরায়ত জুলুম-নিপীড়ন ও দখলদারিত্ব ধীরে ধীরে বৈধতা পাবে জাতিসংঘের ছত্রছায়ায়। তখন হয়তো ফিলিস্তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় সশস্ত্র সংগ্রাম তথা জিহাদ ছাড়া অন্যকোনো পথ থাকবে না।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ