রিযিক বৃদ্ধি ও ধনী হওয়ার এক পরীক্ষিত আমল
হযরত ইবনে ওমর (রাযি.) বর্ণনা করেন এক সময় জনৈক ব্যাক্তি হুযুরে আকরাম (সা.)-এর খেদমতে এসে আরয করলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! দুনিয়া আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং আমি রিক্ত হস্তে অভাব গ্রস্থ এবং অক্ষম হয়ে পড়েছি। আমার পরিত্রাণের কোন উপায় আছে কি? এর জবাবে হুযুর (সা.) বললেন তুমি কোথায় আছো? (ইহলোকে না পরলোকে) সালাতে মালায়েকা (ফেরেশতাগণের দুআ) এবং তাসবীহে খালায়েক যার বদৌলতে ফেরেশতাগণ কে রিযিক প্রদান করা হয় তা তোমার কাছ থেকে কোথায় গেল?
যে দুআ ও প্রার্থনার বরকতে ফেরেশতাকুল এবং মানবজাতি স্ব স্ব জীবিকা প্রাপ্ত হয়ে থাকে তা কি তুমি জানোনা?
সে ব্যক্তি আরয করিলো সেই দুআ কি? হুযুর (সা.) বললেন,
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ أَسْتَغْفِرُ اللهَ.
অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তার প্রশংসাগীতির সাথে তাকে স্মরণ করছি, মহান আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তার প্রশংসা বর্ণনার সাথে আল্লাহ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এই দুআ প্রত্যহ ফজরের নামাযের আগে কিংবা পরে একশত বার করে পড়তে হবে, হেটে হেটে বা এদিক সেদিক দুনিয়াবি ধ্যান নিয়ে পড়া যাবে না, এক যায়গাতে বসে পড়তে হবে। তাহলে সংসার, দুনিয়া আপনা আপনি আপনার দিকে ফিরবে, অর্থাৎ দুনিয়া আপনার কাছে হেয় ও লাঞ্ছিত অবস্থায় ধরা দেবে এবং এতদ্ভিন্ন আল্লাহ তাআলার এর এক একটি শব্দ হতে এক একজন ফেরেশতা সৃষ্টি করে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তাসবীহ পাঠে নিযুক্ত করে দিবেন এবং তার সমুদয় সওয়াব আপনি পাবেন।
অতঃপর লোকটি চলে গেল এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত ফিরে এলো না।
এরপর একদিন এসে আরজ করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.) দুনিয়া আমার কাছে এত বেশি পরিমাণে এসেছে যে তাকে কোথায় রাখবো আমি জানি না। এ মূল দুআর সাথে বুযুর্গগণ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيْمِ এই তাসবীহটি ও পাঠ করেছেন।
কারণ হাদীসে পাকের মধ্যে আছে এটি সকল গোনাহের মাগফিরাতের এবং রিযিক বৃদ্ধির সহায়ক হবে। এর মূল বক্তব্য হচ্ছে এস্তেগফার।
বলাবাহুল্য গোনাহের কারনেই মানুষের রিযিকে সংকীর্ণতা এবং সকল প্রকার দুঃখ কষ্ট বালা মুসিবত ও পেরেশানীর কারন ঘটে।
এই দুআর অনেক বরকত ও ফজিলত হাদীসের বহু কিতাবে বর্ণনা করা আছে।
এই দোআ বুখারী শরীফের সর্বশেষ হাদীসটির মূল অংশ ও বটে যার ফযীলত ফাযায়েলে যিকিরের মধ্যে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এই দুআ নিয়মিত করার দ্বারা সংসারে কোন অভাব অনটন থাকতেই পারে না
এটা একটা মহামূল্যবান বহু পরীক্ষিত দুআ ও আমাল যার সমূহ কল্যাণ ও বরকত যুগ যুগ ধরে আল্লাহ পাকের অসংখ্য, অগণিত বান্দাগণ লাভ করে আসতেছে।
তাই আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ থাকবে ফযরের নামাযটা পড়বেন এবং এই দুআ একশত বারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বরং উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে বেশি করে পাঠ করবেন, যেন নেক আমাল দ্বারা আমরা দুনিয়া ও আখেরাতের সব কল্যাণসমূহ লাভ করে মহাসৌভাগ্যশালী হতে পারি।