আসছে ধেয়ে শেষ
হ. ম. সাইফুল ইসলাম মনজুর কবিতা
দারুণখেলা জগৎমেলা জমছে ভালো বেশ,
ওরে আসছে ধেয়ে শেষ!
হুররে হুয়া হুররে হুয়া প্রবলজোরে হাঁক
আনন্দে কর নাচন শুরু তাকধিনাধিন তাক!
করতালি র্মা করতালি,
একসাথে তোল কুচকাওয়াজের পা’র তালি,
উঠুক কেঁপে মাটি-মানুষ উঠুক কেঁপে দেশ,
ওরে আসছে ধেয়ে শেষ!
কোথায় তোরা কিশোর-যুবক জম রে সবাই এসে,
আসল মজা সব হারাবি থাকিস যদি শেষে।
আধমরারা থাকুক পিছে,
মরুক পড়ে পায়ের নিচে।
তোরা সবাই সন্মুখে ছুট, পারলে লাগা রেস,
ওরে আসছে ধেয়ে শেষ!
শঙ্কাও ভয় শেষ হয়েছে রক্ত গেছে ঢের,
প্রান্তে এখন শোষণ পীড়ন সকল জালিমের।
গড়বি তোরাই নতুনকিছু, নতুন পরিবেশ,
ওরে আসছে ধেয়ে শেষ!
ন্যায় উদ্ধারে
চল জোরপায়ে চোখে ডান-বায়ে লাভনাই দেখে,
কে যে বলল ছি! থুথু মারল কি চল দূর রেখে।
ওরা বোধহীন বল খুব ক্ষীণ সব হুশহারা,
দেখে জোরগতি খেয়ে ভীমরতি যাবে সবমারা।
তুই শের-নর নাই নাই ডর নাশ পরগাছা,
যারা কান্দেরে পড়ে ফান্দেরে চল র্ধ বাঁচা।
তোর পা’র ভরে যদি খুনঝরে তবে ঝরতে দে,
যারা দুশমন কেনো খোশমন রবে! মরতে দে।
ন্যায় উদ্ধারে তুই যোদ্ধারে নওবীর সেনা,
চল নির্ভয়ে জোর সব লয়ে মার শোধ দেনা।
চেপে র্ধ টুটি যারা ভর-খুঁটি শত অন্যায়ে,
ওরা যাক ভেসে মরে নিজদেশে ঝড়-বন্যায়ে।
ঘাড়ে তোর দায় এই বসুধায় করা ন্যায় খাড়া,
হিতে মানবের যত দানবের ভেঙে শিরদাঁড়া।
জাতি দুর্জয় চায় তূর্যয় যেতে হাত রেখে,
চল জোরপায়ে চোখে ডান-বায়ে লাভনাই দেখে।
আমরা কি স্বাধীন?
মুনাওয়ার শাহাদাত
আমরা কি আদৌ স্বাধীন হয়েছি?
নাকি স্বাধীনতার খোলসে পরাধীনতার গ্লানি বয়ে চলেছি?
যদি সত্যিই আমরা স্বাধীন হই;
তবে আজো কেন অত্যাচারীর ভয়ে
মিথ্যে অভিযোগের গ্লানি মাথা পেতে লই?
আজো কেন কথা বলতে অন্যের পারমিশন নিতে হয়?
আজো কেন দেখতে হয়,মিথ্যের জোরে সত্যের পরাজয়?
আজো কেন শুনি সন্তানহারা মায়ের বুকফাটা করুন আর্তনাদ?
স্বামীহারা নববধূর ঘন ঘন মূর্চা আর চন্দ্রামুখে অমাবশ্যার চাঁদ?
আজো কেন বুড়িগঙ্গায় ভেসে ওঠে আমার ভা’য়ের গলা কাটা লাশ?
আজো কেন দিন-দুপুরে রক্তাভ তরলে সিক্ত হয় স্বাধীন(!) ভূমির ঘাস?
আজো কেন রক্তচোষা জালিমের আদেশে বিনা দোষে হই খুন?
কেন হতে হয় গুম,উপরওয়ালার স্বার্থে পান হতে খসলেই চুন?
কেন আজো সীমান্তে রোজ নি®পাপ নিথর দেহ মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে?
আজো রক্তের নোনা সুবাস(!) কেন বাতাসে ভেসে ভেসে প্রবেশ করে নাকে?
তবু আমরা নিরাশ নই,স্বপ্ন দেখি আজো;
একদিন লাখো শহীদের এই দেশ হবেই সত্যিকারের স্বাধীন,
সেদিন মাজলুমের ঘৃণার ঘূর্ণিঝড়ে ধূলিস্যাৎ হবে ঠিকই জালিমের রাজও!
বর্ষাবরণ
শিখর চৌধুরী
বছরান্তে ঐ দ্যাখো আবার বাদলা এসেছে
নীল আকাশকে কালো পর্দায় ঢেকে ফেলেছে
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে একী খেলায় মেতেছে
বাংলা নির্সগের এ আবাসভূমিতে সংসার পেতেছে।
আমার টেবিল রাখা কবিতা উঠিয়ে এনেছে
দক্ষিণ হাওয়ার পবন আমার কাব্যে লেগেছে।
এখন আমার দিকে হাসে ফিসফিসিয়ে সে,
বলে, এবার আমায় নিয়ে কাব্য রেখ রে,
আমি বসি, কাব্য লিখতে, ঈশান কোণেতে,
কোন পাখি যেন ডেকে ওঠে পাশের বনেতে,
আমার লেখায় ঘর পেতেছে কদম ফুলের বাস
প্রকৃতিতে উড়ছে দ্যাখো; সজীব রেণুর রাশ।
চারিদিকে বাদল যৌবনে, কী যে হবে বন্দনার রূপ
তাই ভেবে আমার কলম রইলো বসে চুপ।