শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানীর হাদীস গবেষণা: জনৈক লা-মাযহাবীর মূল্যায়ন
[শায়খ আবদুল্লাহ আল-দাওয়ীশ সউদী বংশোদ্ভুত একজন বিদগ্ধ মুহাদ্দিস। উদারপন্থি লা-মাযহাবী আলিম ও পণ্ডিত ব্যক্তিত। ইবনে হাজার আল-আসকালানী (রহ.)-রচিত ফতহুল বারীর সফল টীকাকার। শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানীর বিশিষ্ট গুণগ্রাহী ও একান্ত অনুরক্ত। হাদীস ও রিজালশাস্ত্রে একজন স্বাধীন চিন্তাধারার অধিকারী। তিনি শায়খ আল-আলবানীর হাদীসগবেষণায় সুতীক্ষè নিরীক্ষা পরিচালনা করে তার ত্রুটি-বিচ্যুতি শোধরে দেন। উগ্রবাদী সালাফীদের শায়খ আলবানীর তাকলিদ ও অনুসরণ বিষয়ে সতর্কীকরণ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি تنبيه القارئ على تقوية ما ضعفه الألباني শিরোনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। যাতে বিষদ গবেষণার মাধ্যমে ২৯৬টি হাদীসকে সহীহ বলে প্রমাণ করেন যে সকল হাদীসকে শায়খ আলবানী যয়ীফ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আবার تنبيه القارئ لتضعيف ما قوّاه الألباني শিরোনামে ১৪টি হাদীসকে যয়ীফ সাব্যস্ত করেন, যেগুলোকে শায়খ আলবানী সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। যা শীঘ্রই গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে গ্রন্থের ৫-১১ ক্রমিকের হাদীস আলোচনা করা হলো]
আবিদুর রহমান তালুকদার
হাদীস: এক
وَعَنْ جَابِرٌ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ: «إِذَا أُدْخِلَ الْـمَيِّتُ الْقَبْرَ مَثَلَتْ لَهُ الشَّمْسُ عِنْدَ غُرُوْبِهَا فَيَجْلِسُ يَمْسَحُ عَيْنَيْهِ وَيَقُوْلُ: دَعوْنِيْ أُصَلِّيْ». رَوَاهُ ابْن مَاجَهْ
‘হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মৃত ব্যক্তিকে কবরে সমাহিত করার পর সূর্যকে তার সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করা হবে যেনো তা অস্তগামী হচ্ছে। সে দু’চোখ মোচতে মোচতে বসবে এবং বলবে, আমাকে নামায আদায়ের সুযোগ দাও।’’
শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী এ হাদীস সম্পর্কে বলেন, ‘সম্ভবত এ হাদীসের সনদ হাসান স্তরের।’
শায়খ আবদুল্লাহ আল-দাওয়ীশ বলেন, ‘হাদীসটি সহীহ। হাফিয শিহাবুদ্দীন আল-বুসীরী (রহ.) বলেন, ‘এ হাদীসের সনদ হাসান।’’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, হাসান সনদে এ হাদীসের আরেকটি شاهد রয়েছে,
حَدَّثَنَا مُجَاهِدُ بْنُ مُوْسَىٰ، وَالْـحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَا: ثنا يَزِيْدُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ، قَالَ: … فَذَكَرَ الْـحَدِيْثَ إِلَىٰ أَنْ قَالَ: فَيُقَالُ لَهُ: اجْلِسْ فَيَجْلِسْ، قَدْ مُثِّلَتْ لَهُ الشَّمْسُ قَدْ دَنَتْ لِلْغُرُوْبِ، فَيُقَالُ لَهُ: أَخْبِرْنَا عَمَّا نَسْأَلُكَ فَيَقُوْلُ: دَعُوْنِيْ حَتَّىٰ أُصَلِّيَ فَيَقُوْلُ: إِنَّكَ سَتَفْعَلُ، فَذَكَرَ الْـحَدِيْثَ.
‘হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইরশাদকৃত পূর্বের হাদীস বর্ণনা করে বলেন, ‘মৃত ব্যক্তিকে বলা হবে, উঠে বসো। সে উঠে বসবে। তখন সূর্যকে এমন আকৃতিতে দেখা যাবে যেন তা অস্ত যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। তাকে বলা হবে, আমাদের প্রশ্নসমূহের উত্তর দাও। সে বলবে, আমাকে নামায আদায় করার সুযোগ দিন। তাকে বলা হবে, তুমি অচিরেই তা করার সুযোগ পাবে।’ তিনি হাদীসখানা শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।’
তিনি বলেন, এ হাদীসের রাবীগণ (ثقات) অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। মুহাম্মদ ইবনে আমরের ব্যাপারে সামান্য অভিযোগ থাকলেও হাদীসটি হাসান স্তরের নীচে নয়। এ হাদীসটি হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাযি.) থেকে বর্ণিত হাদীসের সঙ্গে যুক্ত হলে সহীহের স্তরে পৌঁছে যায়। গ্রন্থকার যিলালুল জুন্নাহ কিতাবে হাদীসটি সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি সহীহ ইবনি সুনানে মাজাহ কিতাবে হাদীসটি হাসান বলে মত প্রকাশ করেছেন।
হাদীস: দুই
وَعَن مُعَاذِ الْـجُهَنِيِّ: أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ: «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ وَعَمِلَ بِمَا فِيْهِ أُلْبِسَ وَالِدَاهُ تَاجًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْءُهُ أَحْسَنُ مِنْ ضَوْءِ الشَّمْسِ فِيْ بُيُوْتِ الدُّنْيَا لَوْ كَانَتْ فِيْكُمْ فَمَا ظَنُّكُمْ بِالَّذِيْ عَمِلَ بِهَذَا؟» رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُوْ دَاوُدَ
‘হযরত মুআয আল-জুহানী (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে তার মাতা-পিতাকে কিয়ামতের দিন এমন একটি মুকুট পরিধান করানো হবে যার উজ্জ্বলতা হবে পৃথিবীর সূর্যের আলোর চেয়ে অধিক। যদি এমন ব্যক্তি আল-কুরআনের বিধান মতে আমলও করে থাকে তবে তার ব্যাপারে তোমাদের কী ধারণা?’’
শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী এ হাদীস সম্পর্কে বলেন, ‘হাদীসটি যয়ীফ।’
শায়খ আবদুল্লাহ আল-দাওয়ীশ বলেন, ‘শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানীর বক্তব্য সঠিক নয়, বরং হাদীসটি হাসান অথবা সহীহ। এ হাদীসের অর্থবোধক হাদীসসমূহ সম্পর্কে সম্ভবত তিনি ছিলেন অনবহিত। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-বর্ণিত নিম্নের হাদীসটি উপর্যুক্ত হাদীসের (قوي) শক্তিবর্ধক হিসেবে বিবেচিত:
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا بَشِيْرُ بْنُ الْـمُهَاجِرِ، حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا عِنْدَ النَّبِيِّ ﷺ، فَسَمِعْتُهُ يَقُوْلُ: «… يَلْقَى الْقُرْآنُ صَاحِبَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حِيْنَ يَنْشَقُّ عَنْهُ قَبْرُهُ كَالرَّجُلِ الشَّاحِبِ، فَيَقُوْلُ لَهُ: هَلْ تَعْرِفُنِيْ؟ فَيَقُوْلُ: مَا أَعْرِفُكَ؟ فَيَقُوْلُ: أَنَا صَاحِبُكَ الْقُرْآنُ الَّذِيْ أَظْمَأْتُكَ فِي الْـهَوَاجِرِ وَأَسْهَرْتُ لَيْلَكَ، وَإِنَّ كُلَّ تَاجِرٍ مِنْ وَرَاءِ تِجَارَتِهِ، وَإِنَّكَ الْيَوْمَ مِنْ وَرَاءِ كُلِّ تِجَارَةٍ فَيُعْطَى الْـمُلْكَ بِيَمِيْنِهِ، وَالْـخُلْدَ بِشِمَالِهِ، وَيُوْضَعُ عَلَىٰ رَأْسِهِ تَاجُ الْوَقَارِ، وَيُكْسَىٰ وَالِدَاهُ حُلَّتَيْنِ لَا يُقَوَّمُ لَـهُمَا أَهْلُ الدُّنْيَا فَيَقُوْلَانِ: بِمَ كُسِيْنَا هَذَا؟ فَيُقَالُ: بِأَخْذِ وَلَدِكُمَا الْقُرْآنَ».
‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট উপস্থিত থাকাবস্থায় একদিন শুনতে পেলাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কুরআনঅলাকে কবরে সমাহিত করার পর আল-কুরআন তাঁর সঙ্গে দুর্বল ব্যক্তির আকারে সাক্ষাৎ করবে। তাঁকে বলবে, তুমি কি আমাকে চেনো? সে উত্তর দেবে, আমি তো আপনাকে চিনি না। আল-কুরআন উত্তরে বলবে, আমি তোমার সঙ্গী আল-কুরআন। যে তোমাকে গরমের দিনে পিপাসার্ত করতো, রাতে রাখতো বিনিদ্র।
ব্যবসায়ীরা সাধারণত লাভের আশায় বসে থাকে। তুমি আজকে তোমার ব্যবসার মুনাফা লাভ করেছো। অতঃপর তাঁর ডান হাতে রাজত্ব দেওয়া হবে এবং বাম হাতে দেওয়া হবে তার স্থায়িত্ব। তাঁর মাথায় পরিধান করানো হবে সম্মানের মুকুট। তাঁর মাতা-পিতাকে এক জোড়া বস্ত্র পরিধান করানো হবে। দুনিয়াবাসীরা কখানো তার মূল্য নির্ধারণ করতে পারে না। তাঁদেরকে প্রশ্ন করা হবে, এ পোষাক কীসের বিনিময়ে লাভ করেছো? তাঁদের পক্ষে উত্তর দেওয়া হবে, তোমাদের সন্তানের কুরআন শেখানোর কারণে।’’
এ হাদীসের সনদ ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর শর্তসাপেক্ষ সহীহ। তিনি বশীর ইবনে মুহাজিরের বরাতে হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইমাম আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম (রহ.) হাদীসটি বর্ণনা করার পর সহীহ বলে মন্তব্য করেন। ইমাম শামসুদ্দীন আয-যাহাবী (রহ.)ও তাঁর সাথে একমত পোষণ করেন। হাফিয নুরুদ্দীন আল-হায়সামী (রহ.) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-এর বরাতে হাদীসটি বর্ণনা করার পর বলেন, ‘সহীহ হাদীসের বর্ণনাকারীরাই হলেন এ হাদীসের রাবী।’ তিনি হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.), হযরত আবু উমামা (রাযি.) ও মু‘আয ইবনে জাবাল (রাযি.) বর্ণিত হাদীসসমূহ شواهد হিসেবে বর্ণনা করেন। সুতরাং হাদীসটি হাসানের নিম্ন স্তরের হতে পারে না। সহীহের স্তরে উন্নীত হওয়াও অসম্ভব নয়। আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।’
হাদীস: তিন
وَعَنْ مَحْمُوْدَ بْنَ لَبِيْدٍ، قَالَ: أَخْبَرَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ عَنْ رَجُلٍ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلَاثَ تَطْلِيْقَاتٍ جَمِيْعًا، فَقَامَ غَضْبَانَ، ثُمَّ قَالَ: «أَيُلْعَبُ بِكِتَابِ اللهِ b وَأَنَا بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ»؟ حَتَّىٰ قَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا أَقْتُلُهُ؟ رَوَاهُ النَّسَائِيُّ
‘হযরত মাহমুদ ইবনে লাবীদ (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট এমন একজন ব্যক্তি সম্পর্কে সংবাদ পৌঁছলো যে, সে তার স্ত্রীকে একসঙ্গে তিন তালাক দিয়েছে। এ খবর শোনার পর তিনি রাগান্বিত হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, ‘আমার জীবদ্দশায় আল্লাহর কিতাব নিয়ে খেল-তামাশা শুরু হয়ে গেলো?’ এমন সময় একজন লোক দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি কি তাকে হত্যা করে ফেলবো?’
শায়খ নারিুদ্দীন আল-আলবানী বলেন, ‘এ হাদীসের রাবীগণ নির্ভরযোগ্য। তবে মাখরামা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেননি।’
তিনি যয়ীফুজ জামিয়িস সগীর (২/২৫২)-এ হাদীসটি যয়ীফ বলে মন্তব্য করে।
শায়খ আবদুল্লাহ আল-দাওয়ীশ বলেন, ‘অনেক মুহাদ্দিস হাদীসটি শক্তিশালী হবার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। শায়খ আলবানী বর্ণিত কারণ সম্পর্কে তারা বলেন, কোনো হাদীস শক্তিশালী হওয়ার বিপক্ষে এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে না। হাফিয ইবনুল কাইয়িম আল-জাওযিয়া (রহ.) এ হাদীস আলোচনার পর বলেন, ‘হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রহ.)-এএর শর্তসাপেক্ষ সহীহ।’ তিনি তাঁর দাবির পক্ষে এ প্রমাণ উপস্থাপন করেন,
فَإِنَّ ابْنَ وَهْبٍ قَدْ رَوَاهُ عَنْ مَخْرَمَةِ بْنِ بُكَيْرٍ بِنْ الْأَشَجِّ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: سَمِعْتُ مَحْمُوْدَ بْنَ لَبِيْدٍ، فَذَكَرَهُ.
ইমাম ইবনুল কাইয়িম আল-জাওযিয়া (রহ.) আরও বলেন, ‘মাখরামা ইবনে বকীর (রহ.)-এর নির্ভরযোগ্য হবার বিষয়টি সন্দেহাতীত। ইমাম মুসলিম (রহ.) তাঁর সহীহ মুসলিমে মাখরামা স্বীয় পিতা থেকে বর্ণিত হাদীস দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
যারা তাঁকে স্বীয় পিতা থেকে শোনার বিষয়ে অভিযুক্ত করেছেন তাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মাখরামা তাঁর পিতা থেকে নির্দিষ্ট একটি কিতাবের হাদীস হয়তো শেনেননি।’
আবু তালিব বলেন, ‘আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-কে মাখরামা সম্পর্কে প্রশ্ন করেছি, তিনি উত্তরে বললেন, ‘মাখরামা নির্ভরযোগ্য।’’
আবু বকর ইবনে আবু খায়সামা বলেন, ‘আমি ইয়াহইয়া ইবনে মাঈনকে বলতে শুনেছি, মাখরামা ইবনে বুকাইরের নিকট তাঁর পিতার একটি পুস্তক ছিল, যা তিনি শোনেননি।’
তিনি আব্বাস আল-দুওয়ারীর বরাতে বলেন, ‘তিনি দুর্বল রাবী। তিনি তাঁর পিতা থেকে একটিমাত্র কিতাবের হাদীস শোনার সুযোগ লাভ করেননি।’
ইমাম আবু দাউদ (রহ.) বলেন, ‘তিনি তাঁর পিতা থেকে শুধুমাত্র বিতর নামায সংক্রান্ত হাদীসটি শোনেননি।’
সাইদ ইবনে আবু মারয়াম (রহ.) তাঁর মামা মুসা ইবনে সালামা (রহ.) থেকে বর্ণনা করে বলেন, ‘আমি মাখরামার নিকট এসে তাঁকে এ মর্মে প্রশ্ন করলাম যে, আপনার পিতা কি আপনার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি আমার পিতার সাক্ষাৎ পাইনি। তবে এগুলো হলো তাঁর কিতাব।’’
পিতার সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া সত্ত্বেও তিনি কিভাবে বর্ণনা করলেন এর সমাধার দ্বিবিধ:
১. পিতার কিতাবখানা তাঁর নিকট সংরক্ষিত ছিল। সুতরাং তাঁর নিকট থেকে শুনে বর্ণনা করা অথবা দেখে বর্ণনা করার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। শায়খের লিখিত কোনো গ্রন্থের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে তা থেকে দেখে বর্ণনা করা মুখস্ত বর্ণনার চেয়ে অধিকতর নিরাপদ। এ কর্মনীতি ছিল সাহাবায়ে কেরাম এবং তাঁদের পরবর্তী যুগের আলিমদের।
রাসূলুল্লাহ (সা.) স্বীয় পত্র দিয়ে রাজা-বাদশাহদের নিকট প্রতিনিধি প্রেরণ করতেন। এটি প্রমাণ হিসেবে গৃহীত হতো। ইসলামি রাষ্ট্রের গভর্নরদের নিকট তার ফরমানসমূহ ছিল লিখিত আকারে। তারা এটিকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করে সে অনুযায়ী আমল করতেন।
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাযি.) হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাযি.)-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পত্র হস্তান্তর করলেন। তিনি তা নিয়ে গেলেন এবং সমগ্র উম্মাত সে মতে আমল করলেন। আমর ইবনে হাযমের নিকট লিখিত পত্রটিও ছিল ঠিক অনুরূপ।
হযরত ওমর (রাযি.)-এর পরিবারের নিকট সংরক্ষিত সাদাকাহ সম্পর্কিত তার প্রদত্ত পত্রও দলিল হিসেবে গৃহীত। পূর্ব ও পরবর্তী যুগের সকল আলিম পরস্পরের প্রতি লিখিত পত্রাবলি দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। যার নিকট পত্রটি প্রেরিত হয়েছে, তিনি শুধুমাত্র এটুকু বলতেন, ‘আমার নিকট অমুক ব্যক্তি এই পত্র পাঠিয়েছে এবং অমুক আমাকে এ বিষয়ে সংবাদ দিয়েছে।’
লিখিত বিষয় দ্বারা দলিল গ্রহণ করা বাতিল সাব্যস্ত হলে ইসলামি শরীয়তের দলিল-দস্তাবেজ উম্মাতের নিকট খুব অল্প পরিমাণই অবশিষ্ট থাকবে।
যুক্তির নিরিখে বিবেচনা করলে দেখা যায়, স্মরণশক্তির চেয়ে লিখিত বিষয়ের ওপর নির্ভরতা থাকে বেশি। স্মৃতি কখনো বিস্মৃত হতে পারে। কিন্তু লিখিত বস্তু কখনো হারিয়ে যায় না। অতীতকালের আহলে ইলমদের কেউ লিখিত বস্তু দ্বারা দলিল গ্রহণকে প্রত্যাখ্যান করেননি। এ কথা কেউ বলেননি, সে আমার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত করেনি, তার কথা গ্রহণযোগ্য নয়। লিখিত দলিল গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেন। তবে শর্ত হলো লেখাটি যথাযথভাবে প্রমাণিত হতে হবে।
২. এক দল মুহাদ্দিসের দাবি হলো, মাখরামা তার পিতা থেকে শোনেননি। আর এক দলের দাবি মতে তিনি শুনেছেন। বরং তিনি আরও বর্ধিত ও সুদৃঢ় জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। এ বিরোধ মীমাংসায় আবদুর রহমান ইবনে আবু হাতিম (রহ.) বলেন, আমার পিতাকে মাখরামা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন, ‘তিনি হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইবনে আবু উয়াইস বলেন, আমি ইমাম মালিক (রহ.)-এর কিতারে এ বিষয়টি স্পষ্টরূপে পেয়েছি, পিতা থেকে রেওয়ায়াতকৃত হাদীস সম্পর্কে আমি মাখরামকে প্রশ্ন করলাম, তিনি শপথ করে বলেন, মসজিদের রবের শপথ করে বলছি, আমি আমার পিতা থেকে শুনেছি।’
হাফিয ইবনে হাজার আল-আসকালানী (রহ.) বলেন, ‘আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি তাঁর পিতা থেকে কিছু কিছু শুনেছেন।’ তিনি আরও বলেন, তিনি তাঁর পিতার কিতাব থেকে বর্ণনা করেন। আহমদ ইবনে মাঈন ও শানকীতী এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
ইমাম মুসলিম (রহ.) মাখরামা কর্তৃক তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত অনেক হাদীস সংকলন করেছেন। ইমাম মুসলিম (রহ.) বর্ণিত হাদীস গ্রহণের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর ওলামায়ে কেরাম ঐকমত্য পোষণ করেন। তবে হাদীস প্রত্যাখ্যানের যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা। আশ্চর্যের বিষয় হলো, গ্রন্থকার গায়াতুল মারাম কিতাবে এটিকে সহীহ বলে মত প্রকাশ করেছেন।
হাদীস: চার
حديث: «يَجِيءُ الْقُرْآنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَالرَّجُلِ الشَّاحِبِ، فَيَقُوْلُ: أَنَا الَّذِيْ أَسْهَرْتُ لَيْلَكَ، وَأَظْمَأْتُ نَهَارَكَ». قال في ضعيف الجامع (5ك)، ضعيف تخريج الطحاوية (ص 126).
‘কিয়ামতের দিন আল-কুরআন দুর্বল ব্যক্তির আকারে আগমন করবে এবং কুরআনঅলাকে বলবে, আমিই রাতের বেলায় তোমার ঘুম কেড়ে নিয়েছি এবং দিনের বেলায় তোমাকে পিপাসার্ত রেখেছি।’
ইমাম হাকিম বলেন, ‘হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর শর্তসাপেক্ষে সহীহ।’ ইমাম যাহাবী (রহ.) এ হাদীস সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। আল-বুসীরী (রহ.) আল-যাওয়ায়িদ কিতাবে বলেন, ‘এর সনদ সহীহ।’
এ হাদীসের ব্যাপারে আমার বক্তব্য হলো, হাদীসটি সহীহ। কেননা এ হাদীসের রাবী বশীর ইবনুল মুহাজির একজন সত্যবাদি ও গ্রহণযেগ্য রাবী (لين الحديث)। হাফিয ইবনে হাজার আল-আসকলানী (রহ.) তাকরীবুত তাহযীব হাদীস সম্পর্কে অনুরূপ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এ ধরণের হাদীস হাসান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এটি সহীহ হবার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে شرح الطحاوية-এর টীকায় বিষদ আলোচনা করা হয়েছে। তবে হাফিয ইবনে হাজার আল-আসকলানী (রহ.)-এর বক্তব্য সঠিক নয়। মূলত হাদীসটি সহীহ। কেননা বশীর ইমাম মুসলিম (রহ.)-এর রাবী। এ হাদীসের আরও شواهد রয়েছে। হাদীসটি সহীহ হওয়ার পক্ষে অনেক প্রমাণ রয়েছে। নিচের হাদীসটি প্রণিধানযোগ্য:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «يَجِيءُ الْقُرْآنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَالرَّجُلِ الشَّاحِبِ، يَقُوْلُ لِصَاحِبِهِ: هَلْ تَعْرِفُنِيْ؟ أَنَا الَّذِيْ كُنْتُ أُسْهِرُ لَيْلَكَ، وَأُظْمِئُ هَوَاجِرَكَ، وَإِنَّ كُلَّ تَاجِرٍ مِنْ وَرَاءِ تِجَارَتِهِ، وَأَنَا لَكَ الْيَوْمَ مِنْ وَرَاءِ كُلِّ تَاجِرٍ».
‘হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন আল কুরআন তার বাহকের নিকট দুর্বল ব্যক্তির আকারে উপস্থিত হবে। কুরআন ওয়ালাকে আল কুরআন বলবে, আমাকে চেনো? আমি তোমাকে রাত্রিকালীন নিদ্রায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করতাম এবং প্রচণ্ড গরমে পিপাসার্ত করে তোলতাম। ব্যবসায়ীরা লাভের আশায় ব্যবসায়কর্ম পরিচালনা করে থাকে। আমি আজকে তোমার জন্যে ব্যবসায়ের মুনাফার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি।’’
এ হাদীস ইয়াহইয়া ইবনে আবদুল আযীয নামক একজন দুর্বল রাবী আছে।
ইমাম তিরমিযী (রহ.), ইবনে খুযাইমা (রহ.) ও হাকিম (রহ.)হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইমাম হাকিম (রহ.) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। ইমাম যাহাবী (রহ.) হাদীসটি মরফু রেওয়ায়াত করেন এবং ইমাম হাকিম (রহ.)-এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন। মরফু হাদীসটি নিম্নরূপ:
عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ، عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، مَرْفُوْعًا بِلَفْظٍ: «يَجِيءُ الْقُرْآنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُوْلُ: يَا رَبِّ حَلِّهِ، فَيُلْبَسُ تَاجَ الْكَرَامَةِ، ثُمَّ يَقُوْلُ: يَا رَبِّ زِدْهُ، فَيُلْبَسُ حُلَّةَ الكَرَامَةِ، ثُمَّ يَقُوْلُ: يَا رَبِّ ارْضَ عَنْهُ، فَيَرْضَىٰ عَنْهُ».
‘কুরআনঅলা কিয়ামতের মাঠে উপস্থিত হওয়ার পর কুরআন বলবে, হে আমার রব! তাকে বস্ত্র পরিধান করানো হোক। অতঃপর তাকে সম্মানের বস্ত্র পরিধান করানো হবে। কুরআন আবার বলবে, হে আমার রব! তাকে আরো সম্মানিত করা হোক। হে আমার রব! তার ওপর আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যান। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।’
ইমাম বাযযায (রহ.) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুুল আস (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন,
«يُؤْتَىٰ بِرَجُلٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيُمَثَّلُ لَهُ الْقُرْآنُ، قَدْ كَانَ يُضَيِّعُ فَرَائِضَهُ، وَيَتَعَدَّىٰ حُدُودَهُ، وَيُخَالِفُ طَاعَتَهُ، وَيَرْكَبُ مَعَاصِيَهُ، فَيَقُولُ: أَيْ رَبِّ، حَمَّلْتَ آيَاتِي بِئْسَ حَامِلٍ، تَعَدَّىٰ حُدُوْدِيْ وَضَيَّعَ فَرَائِضِي وَتَرَكَ طَاعَتِيْ، وَرَكِبَ مَعْصِيَتِيْ».
‘কিয়ামতের মাঠে একজন ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে। কুরআন তার সামনে অভিযোগকারীর ভূমিকায় আবির্ভূত হবে, যে তার ফরযসমূহ অবহেলা করতো। তার সীমা অতিক্রম করতো। একান্ত বাধ্যগত বিষয়ে অবাধ্য হতো। নিষিদ্ধ পথে পরিচালিত হতো। অতঃপর কুরআন বলবে, হে আমার রব! আমি আপনার আয়াতসমূহ বহন করেছি। যে আমার সীমালঙ্ঘন করেছে, অবশ্য পালনীয় বিষয়ে অবহেলা করেছে, আমার আনুগত্য পরিহার করেছে এবং পাপের পথে অগ্রসর হয়েছে, সে নিকৃষ্টতম বাহক।’
হাফিয নুরুদ্দীন আল-হায়সামী (রহ.) মাযমাউয যাওয়ায়িদ কিতাবে হাদীসটি বর্ণনা করেন, এখানে ইবনে ইসহাক নামক একজন নির্ভরযোগ্য রাবী আছে। কিন্তু তিনি তাদলিস করেন। হাদীসের অবশিষ্ট রাবীগণ নির্ভরযোগ্য।
এ হাদীসের অর্থবোধক অনেক সহায়ক হাদীস থাকা সত্ত্বেও শায়খ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেন, ‘এটি যয়ীফ।’ যা হাসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চলবে….
ইবনে মাজাহ, আস-সুনান, দারু ইয়াহইয়ায়িল কুতুব আল-আরাবিয়া, বয়রুত, লেবনান, খ. ২, পৃ. ১৪২৮, হাদীস: ৪২৭২
আত-তাবরীযী, মিশকাতুল মাসাবীহ, আল-মাকতাবুল ইসলামী, বয়রুত, লেবনান (তৃতীয় প্রকাশ: ১৪০৫ হি. = ১৯৮৫ খ্রি.), খ. ১, পৃ. ৫০, হাদীস: ১৩৮
আল-বুসীরী, মিসবাহুয যুজাজা ফী যাওয়াদি ইবনি মাজাহ, দারুল আরাবিয়া, বয়রুত, লেবনান (দ্বিতীয় সংস্করণ: ১৪০৩ হি. = ১৯৮৮ খ্রি.), খ. ৪, পৃ. ২৫২, হাদীস: ১৫৩৫
ইবনে জরীর আত-তাবারী, জামিউল বায়ান ফী তাওয়ীলিল কুরআন, দারু হিজর, কায়রো, মিসর (১৪২২ হি. = ২০০১ খ্রি.), খ. ১৩, পৃ. ৬৬২
আল-আলবানী, যিলালুল জুন্নাহ ফী তাখরীজিস সুন্নাহ, আল-মাকতাবুল ইসলামী, বয়রুত, লেবনান (দ্বিতীয় সংস্করণ: ১৪০০ হি. = ১৯৮০ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ৪২০, হাদীস: ৮৬৭
আল-আলবানী, সহীহ সুনানি ইবনি মাজাহ, মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, রিয়াদ, সউদী আরব (প্রথম সংস্করণ: ১৪১৭ হি. = ১৯৯৭ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ৩১, হাদীস: ১২৭০/১৫৭২
আবদুল্লাহ আদ-দাওয়ীশ, তানবীহুল কারী লি-তাকবিয়াতি মা যা’আফাহুল আলবানী, দারুল উলিয়ান, জিদ্দা, সউদী আরব (প্রথম সংস্করণ: ১৪১১ হি. = ১৯৯০ খ্রি.), পৃ. ২–৩, হাদীস: ১
(ক) আহমদ ইবনে হাম্বল, আল-মুসনদ, মুআস্সিসাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪২১ হি. = ২০০১ খ্রি.), খ. ২৪, পৃ. ৪০২–৪০৩, হাদীস: ১৫৬৪৫;
(খ) আবু দাউদ, আস-সুনান, আল-মাকতাবাতুল আসরিয়া, বয়রুত, লেবনান, খ. ২, পৃ. ৭০, হাদীস: ১৪৫৩
আত-তাবরীযী, মিশকাতুল মাসাবীহ, খ. ১, পৃ. ৬৬০, হাদীস: ২১৩৯
আহমদ ইবনে হাম্বল, আল-মুসনদ, খ. ৩৮, পৃ. ৪১–৪২, হাদীস: ২২৯৫০
আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহাঈন, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়া, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১১ হি. = ১৯৯০ খ্রি.), খ. ১, পৃ. ৭৪২, হাদীস: ২০৪৩, পৃ. ৭৪৭, হাদীস: ২০৫৪ ও পৃ. ৭৫৬, হাদীস: ২০৮৬
আল-হায়সামী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ, মাকতাবাতুল কুদসী, কায়রো, মিসর (১৪১৪ হি. = ১৯৯৪ খ্রি.), খ. ৭, পৃ. ১৫৯, হাদীস: ১১৬৩৩
আবদুল্লাহ আদ-দাওয়ীশ, তানবীহুল কারী লি-তাকবিয়াতি মা যা’আফাহুল আলবানী, পৃ. ৩–৪, হাদীস: ২
আন-নাসায়ী, আল-মুজতাবা মিনাস-সুনান = আস-সুনানুস সুগরা, মাকতাবুল মতবুআত আল-ইসলামিয়া, হলব, সিরিয়া, খ. ৬, পৃ. ১৪২, হাদীস: ৩৪০১
আত-তাবরীযী, মিশকাতুল মাসাবীহ, খ. ২, পৃ. ৯৮০–৯৮১, হাদীস: ৩২৯২
ইবনে কাইয়িম আল-জওযিয়া, যাদুল মা‘আদ ফী হাদয়ি খাইরিল ইবাদ, মুআস্সিসা আর-রিসালা, বয়রুত, লেবনান (সপ্তদশ সংস্করণ: ১৪১৫ হি. = ১৯৯৪ খ্রি.), খ. ৫, পৃ. ২২০–২২২
ইবনে হাজর আল-আসকলানী, তাকরীবুত তাহযীব, দারুর রশীদ, দামিশক, সিরিয়া (প্রথম সংস্করণ: ১৪০৬ হি. = ১৯৮৬ খ্রি.), পৃ. ৫২৩, ক্র. ৬৫২৬
আল-আলবানী, গায়াতুল মারাম ফী তাখরীজি আহাদিসীল হালাল ওয়াল হারাম, মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, রিয়াদ, সউদী আরব (তৃতীয় সংস্করণ: ১৪০৫ হি. = ১৯৮৫ খ্রি.), পৃ. ১৬৪, হাদীস: ২৬১
আবদুল্লাহ আদ-দাওয়ীশ, তানবীহুল কারী লি-তাকবিয়াতি মা যা’আফাহুল আলবানী, দারুল উলিয়ান, জিদ্দা, সউদী আরব (প্রথম সংস্করণ: ১৪১১ হি. = ১৯৯০ খ্রি.), পৃ. ৪–৬, হাদীস: ৩
(ক) আদ-দারিমী, আস-সুনান = আল-মুসনদ, দারুল মুগনী, রিয়াদ, সউদী আরব, খ. ৪, পৃ. ২১৩৫–২১৩৬, হাদীস: ৩৪৩৪;
(খ) ইবনে মাজাহ, আস-সুনানখ. ২, পৃ. ১২৪২, হাদীস: ৩৭৮১;
(গ) আহমদ ইবনে হাম্বল, আল-মুসনদ, খ. ৩৮, পৃ. ৭৬, হাদীস: ২২৯৭৬ ও পৃ. ১৫৫–১৫৬, হাদীস: ২৩০৫০;
(ঘ) ইবনে আদী, আল-কামিল ফীয যুআফা, মাকতাবাতুর রাশাদ, রিয়াদ, সউদী আরব (প্রথম সংস্করণ: ১৪৩৪ হি. = ২০১৩ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ৪২৩, হাদীস: ২৮৯১;
(ঙ) আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহাঈন, খ. ১, পৃ. ৭৪২, হাদীস: ২০৪৩, হযরত বুরাইদা ইবনুল হুসাইব (রাযি.) থেকে বর্ণিত
আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহাঈন, খ. ১, পৃ. ৭৪২, হাদীস: ২০৪৩, হযরত বুরাইদা ইবনুল হুসাইব (রাযি.) থেকে বর্ণিত
আল-বুসীরী, মিসবাহুয যুজাজা ফী যাওয়াদি ইবনি মাজাহ, খ. ৪, পৃ. ১২৬, হাদীস: ১৩২৯–১৩৩১
ইবনে হাজর আল-আসকলানী, তাকরীবুত তাহযীব, দারুর রশীদ, দামিশক, সিরিয়া (প্রথম সংস্করণ: ১৪০৬ হি. = ১৯৮৬ খ্রি.), পৃ. ১২৫, ক্র. ৭২৩
আত-তাবারানী, আল-মু’জামুল আওসাত, দারুল হারামইন, কায়রো, মিসর, খ. ৬, পৃ. ৫১, হাদীস: ৫৭৬৪
আল-হায়সামী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ, মাকতাবাতুল কুদসী, কায়রো, মিসর (১৪১৪ হি. = ১৯৯৪ খ্রি.), খ. ৭, পৃ. ১৬০, হাদীস: ১১৬৩৬
(ক) আত-তিরমিযী, আল-জামি‘উল কবীর = আস-সুনান, মুস্তফা আলবাবী অ্যান্ড সন্স পাবলিশিং অ্যান্ড প্রিন্টিং গ্রুপ, কায়রো, মিসর, খ. ৫, পৃ. ১৭৮, হাদীস: ২৯১৫;
(খ) আল-হাকিম, আল-মুসতাদরাক আলাস সহীহাঈন, খ. ১, পৃ. ৭৩৮, হাদীস: ২০২৯
আল-হায়সামী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ, খ. ৭, পৃ. ১৬০–১৬১, হাদীস: ১১৬৩৬
আল-আলবানী, সহীহ সুনানি ইবনি মাজাহ, খ. ৩, পৃ. ২৩৯, হাদীস: ৩০৬৩/৩৮৪৯
আবদুল্লাহ আদ-দাওয়ীশ, তানবীহুল কারী লি-তাকবিয়াতি মা যা’আফাহুল আলবানী, পৃ. ৬–৭, হাদীস: ৪