জামেয়া ওয়েবসাইট

রবিবার-২৪শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি-২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১২ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সমস্যা ও সমাধান ফতওয়া বিভাগ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

সমস্যা ও সমাধান ফতওয়া বিভাগ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

সমস্যা সমাধান
ফতওয়া
বিভাগ

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

মোবাইল: ০১৮৫৬-৬১৮৩৬৭

ইমেইল: daruliftapatiya@gmail. com

পেইজলিংক: Facebook. com/Darul-ifta-Jamia-Patiya

 

তাহারাত-পবিত্রতা

সমস্যা: আমার মুত্রথলিতে একটি জটিল রোগ হওয়ায় সেখানে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর আমার প্রশ্রাবের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পেটের ডান পাশে ছিদ্র করে একটি ব্যাগ লাগানো হয়; যেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রশ্রাব এসে যায়। যা এক ঘণ্টা পর পর ব্যাগের নিচের ছিদ্র দিয়ে বের করে ফেলে দেওয়া হয় এবং ওই ব্যাগটি এক সপ্তাহ পর পর পরিবর্তন করতে হয়।

আমার জানার বিষয় হচ্ছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পবিত্রতার জন্য আমার করণীয় কী? এবং ব্যাগ পরিবর্তন করার পর আমার করণীয় কী? শরীয়তের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।

মোঃ আবদুস সামাদ

কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম

সমাধান: আপনি যখন উক্ত রোগ থেকে কোনোভাবে আরোগ্য লাভ করতে পারছেন না, অপরদিকে প্রতিনিয়ত থলিতে প্রশ্রাব জমা হতে থাকে, এমনকি ফরজ নামাযসমূহ পড়ার সময়েও উক্ত প্রশ্রাবের রোগ থেকে পবিত্র হয়ে আদায় করার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাই আপনাকে শরয়ী মাজুর (অক্ষম) হিসেবে গণ্য করা যাবে। আপনি মুত্রথলির প্রশ্রাবসহই প্রতি ওয়াক্তের জন্য নতুন নতুন অযু করে নামায পড়বেন এবং থলি পরিবর্তন করার কারণে আপনাকে কিছুই করতে হবে না। দুররুল মুখতার: ১/৫০৪, আলমগীরী: ১/১৪, বাহরুর রায়িক: ১/২১৫

সমস্যা: একটি জীবন্ত পাখি উত্তপ্ত গরম পানির পাত্রে পড়ে মারা যাওয়ার পর কী পরিমাণ সময় অতিবাহিত হলে পানিকে নাপাক বলে গণ্য করা যাবে? সে হিসেবে বর্তমানে মুরগিকে ড্রেসিং করার পূর্বে গরম পানিতে রাখার কারণে মুরগিটি খাওয়া হারাম হয়ে যাবে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হবো।

আনসারুল্লাহ

মহেশখালী, কক্সবাজার

সমাধান: জীবন্ত পাখি গরম হোক কিংবা ঠাণ্ডা অল্প পানিতে পড়ে মারা যাওয়ার সাথে-সাথে পানি নাপাক হয়ে যাবে। বর্তমান সময়ে মুরগি ড্রেসিং করার জন্য যেহেতু মুরগি জবাই করে গরম পানিতে রাখা হয়, তাই এ মাসআলাটি ভিন্ন, এতে কয়েকটি পদ্ধতি হতে পারে: ১. মুরগি জবেহ করার পর যদি নাড়িবুড়িসহ তার শরীরের সমস্ত নাপাকি দূর করে গরম পানিতে রাখা হয়, সাথে পানিও পাক হয়, তো মুরগি যতক্ষণ রাখা হোক না কেন, মুরগি পাক বলে গণ্য হবে, খাওয়াও হালাল হবে। ২. যদি গরম পানি নাপাক হয়, কিংবা নাড়িবুড়ি বের না করে মুরগি গরম পানিতে রাখা হয়, অতঃপর পানিতে যদি মুরগি এই পরিমাণ সময় রাখা হয় যাতে গোস্ত সিদ্ধ হয়ে গোস্তের মধ্যে নাপাকি প্রবেশ করেছে, অথবা ভেতরের নাড়িবুড়ি ফেঠে গোস্তের মধ্যে তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে বলে প্রবল ধারণা করা হয়, তাহলে উক্ত মুরগি নাপাক এবং তা খাওয়া হারাম। ৩. মুরগি জবাই করার পর যদি নাড়িবুড়ি বের না করে অল্প সময় গরম পানিতে রাখা হয়, যার ফলে নাপাকি গোস্তের মধ্যে প্রবেশ করে না, কিংবা ভেতরের নাড়িবুড়ি ফেঠে গোস্তের মধ্যে তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে না, তাহলে মুরগি নাপাক হবে না এবং তা খাওয়াও হালাল। আর বর্তমান সময়ে মুরগি ড্রেসিং করার জন্য যে গরম পানি রাখা হয়, প্রথমত তা একেবারে ফুটন্ত টগবগে গরম হয় না, দ্বিতীয়ত গরম পানিতে বেশি সময় রাখা হয় না, বরং মাঝামাঝি গরম পানিতে ২০ থেকে ৩০ সেকেণ্ড সময় পানিতে রাখা হয়, তাই গরমের প্রভাব পশমের ছিদ্র এবং চামড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, গোস্ত এবং নাড়িবুড়ি পর্যন্ত পৌঁছায় না। সুতরাং ড্রেসিংয়ের পূর্বে মুরগি প্রচলিত নিয়মানুযায়ী গরম পানিতে রাখা হলে তা নাপাক হবে না এবং খাওয়া সম্পূর্ণ হালাল, তবে পশম উপড়ানোর পর মুরগি ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া উত্তম। দুররুল মুখতার: ১/৩৫, হিদায়া: ১/৪২, মাজমাউল আনহুর: ১/৩৬

সালাত-নামায

সমস্যা: আমরা একটি প্রাইভেট পাওয়ার প্লান্টে চাকুরি করি। এই প্লান্টে ৯০-১০০ জন লোক কাজ করে। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অফিস লকডাউন করে রাখায় অফিসারদের একটানা ৮ দিন অফিসে এবং ৮ দিন বাসায় থাকতে হচ্ছে আর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী বা এধরনের শ্রমিক-বাবুর্চিদের টানা ১ মাস অফিসে এবং একমাস বাসায় থাকতে হবে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বলে: ১. অফিসে থাকাকালীন আমাদের জুমার পরিবর্তে যোহরের নামায পড়তে এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামায প্রার্থনাগারে আদায় করতে। ফলে অফিসারগণ মাসে ২/৩ জুমা ও অন্যরা ৪ জুমার নামায আদায় করতে পারিনা। ২. বাসায় থাকাকালীন পাঁচ ওয়াক্তের নামায ঘরের ভিতরে এবং জুমার নামায করোনা-পোশাক পরিধান করে মসজিদে আদায় করতে বলে। ৩. তা ছাড়াও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে আমরা বঞ্চিত। বর্তমান অবস্থায় উপর্যুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা করলে কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে মুফতিয়ানে কেরামের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার জন্য বলেন। তাই আমার জানার বিষয় হলো: যখন লকডাউন সারা দেশে ছিল, তখন যেভাবে উল্লিখিত আদেশগুলো আমাদের ওপর ছিল, বর্তমানে সারাদেশে স্বাভাবিক চলা-ফেরা লেন-দেনসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও জুমা আদায়ের অনুমতি হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের অফিসে কর্মরতদের জুমার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষের আদেশ মতো আমরা জুমার নামায আদায় না করে, যোহর আদায় করলে গুনাহগার হবো কি?

মোঃ আল-আমিন

কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম

সমাধান: জুমার নামায সহীহ হওয়ার জন্য মসজিদ শর্ত নয়। বরং যে কোন জায়গায় চারজন বা এর চেয়ে বেশি হলে এবং জুমার ইমাামতি করার মতো মানুষ থাকলে, সেখানে জুমার নামায সহীহ হয়ে যায়। আর যেখানে জুমার নামায পড়া সহীহ হবে সেখানে যোহরের নামায পড়া যাবে না। উল্লিখিত প্রশ্নসমূহের উত্তর ক্রমানুসারে নিম্নে প্রদত্ত হলো। ১. আপনাদের প্রাইভেট পাওয়ার প্লান্টে জুমার নামায পড়ার সুযোগ ও ব্যবস্থা থাকলে, সেখানে যোহরের নামায পড়া জায়েয হবে না। তাই আপনাদের প্রার্থনাগারে জুমার ব্যবস্থা করে নিতে হবে। ২. বর্তমান পরিস্থিতির পরিপেক্ষিতে সরকারি নির্দেশ পালনের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঘরে পড়া জায়েয আছে। কিন্তু সম্ভব হলে ফরজ নামায মসজিদে আদায় করবে। ৩. করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত হলে কোন অসুবিধা হবে না। বাংলাদেশ সরকার বর্তমান পরিস্থিতির পরিপেক্ষিতে মসজিদে গিয়ে জুমার নামায আদায় করার অনুমতি দিয়েছে। তাই আপনাদের কোম্পানিরও জুমার নামায আদায় করার অনুমতি দেওয়া তার দীনী দায়িত্ব ও কর্তব্য। নতুবা সে আল্লাহর নিকট জুমার নামাযের মতো মুসলমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ নামায পালনে বাধা দেওয়ার কারণে গুনাহগার হবে। এবং কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। (সূরা জুমা: ০৯, আবু দাউদ: ১০৬৭, খুলাসাতুল ফতওয়া: ১/২১২, আহসানুল ফতওয়া: ১/১২২

নিকাহ-তালাক

বিগত ৮ জানুয়ারি ২০০২ (বুধবার) জনৈক ব্যক্তির সাথে পাঁচ তোলা স্বর্ণ মোহর নির্ধারণ করে শরয়ী সাক্ষীদের উপস্থিতিতে উম্মে কুলসুম নামক এক মেয়ের আকদে নিকাহ সম্পন্ন হয়েছিল। আকদের পর সাথে সাথে কাবিননামা সম্পূর্ণ করার কথা আগে থেকেই উভয় পক্ষের মাঝে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটাও সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, মোহর নগদ-বাকিতে সর্বমোট পাঁচ লক্ষ টাকা। কিন্তু আকদের পর বরের পক্ষ কাজী অফিসে গিয়ে পূর্বের কথা থেকে সরে আসে এবং উভয়ের মাঝে মতবিরোধের কারণে বৈঠক স্থগিত করা হয়।

পরবর্তিতে ১০ জানুয়ারি ২০০২ (জুমাবার) বিয়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু উভয়ের মাঝে মতবিরোধ হওয়ার কারণে কাবিননামা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। তখন বরপক্ষকে কনের পরিবার জানিয়েছিল যে, কাবিননামা প্রস্তুত না হলে জুমাবার মেয়ে নিতে পারবেন না। তাই আপনারা জুমাবারের পূর্বে কাবিননামা প্রস্তুত করার চেষ্টা করুন। কিন্তু বরের পক্ষ নির্ধারিত পরিমাণে জুমাবারের পূর্বে কাবিননামা প্রস্তুত করেনি। তাই জুমাবার মেয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি এবং তাদের (স্বামী-স্ত্রীর) মাঝে (خلوة صحیحہ) নির্জতনতাও পাওয়া যায়নি।

এদিকে বরের পক্ষ সেই দিন কিংবা তার পূর্বে অন্য এক পরিবারের মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করে ফেলে। তারপর কনেপক্ষ চেয়েছিল যে, বরের কাছ থেকে একটি লিখিত তালাকের চিঠি পাওয়া উচিত, যাতে এটি প্রয়োজনের সময় কাজে আসে। ছেলের কাছে প্রস্তাব করা হলে ছেলে বিভিন্ন প্রকারের অজুহাত দেখিয়ে লিখিত তালাকের চিঠি দিতে রাজি হয়নি। এভাবে প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলে পরবর্তিতে মেয়েটি বাধ্য হয়ে মৌখিক তালাক গ্রহণ করার জন্য রাজি হয়। অতঃপর বর উম্মে কুলসুমকে ফোনে এক তালাকে বায়েন দেয়।

এখন মুফতি সাহেবদের কাছে জানার বিষয় হল যে, ১. উম্মে কুলসুমের ওপর ইদ্দত ওয়াজিব হবে কি? ২. বরের ওপর উম্মে কুলসুমের খোরপোষ বহন করা ওয়াজিব হবে কি? ৩. হাফেজ বরের ওপর মোহর আদায় করা ওয়াজিব হবে কি? যদি ওয়াজিব হয়, তাহলে পূর্ণ মোহর ওয়াজিব হবে, না অর্ধেক? শরীয়তের আলোকে দলিলসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

মুহাম্মদ রফিক

টেকনাফ, কক্সবাজার

সমাধান: উল্লিখিত ঘটনায় আকদ নেকাহের পর সহবাস বা خلوة صحیحہ পাওয়া যায়নি। আর স্বামী মৌখিকভাবে মোবাইলের মাধ্যমে তার স্ত্রী উম্মে কুলছুমকে এক তালাকে বায়েন দিয়েছে। তাই বায়েন তালাক স্ত্রীর ওপর পতিত হয়ে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই ১. উম্মে কুলসুমের ওপর ইদ্দত ওয়াজিব হবে না। যেহেতু সহবাসের পূর্বে তালাক হয়ে গেছে। ২. সহবাসের পূর্বে তালাক হয়ে যাওয়ার কারণে স্ত্রী উম্মে কুলসুমের ওপর যখন ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব নয়। তাই তার ভরণপোষণ ও খরচ স্বামীকে বহন করতে হবে না। ৩. আকদে নিকাহের কারণে স্বামীকে অর্ধেক মোহর আদায় করতে হবে। সূরা আল-আহযাব: ৪৯, সূরা আলবাকারা: ২৩৭, দুররুল মুখতার: ৪/২৩৪ হিদায়া: ১/৩২৪

সমস্যা: মুহতারাম আপনার সমীপে আমার বিনিত প্রশ্ন এই যে, স্বামী তার সহধর্মিনীকে প্রবাসে অবস্থানরত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় তালাকের বাক্য উচ্চারণ করেছে। স্বামীর দাবি হলো, সে স্ত্রীকে বলে ‘তোমাকে এক তালাক, তোমাকে এক তালাক’ দুইবার তালাক শব্দ উচ্চারণ করেছে। পক্ষান্তরে স্ত্রীর দাবি হলো, স্বামী ‘তোমাকে এক তালাক’ বাক্যটি দুইবার বলার পর তৃতীয়বারও বলেছে যে, ‘তোমাকে দুই তালাক’। স্ত্রী তার দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করেনি, কিন্তু স্বামী নিজ দাবির পক্ষে বেশ কয়েকবার আল্লাহর নামে কসম করেছে। এখন আমার জানার বিষয় হলো, উল্লিখিত বিবাদে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্য থেকে কার কথাটি গ্রহণযোগ্য হবে এবং তাদের মধ্যকার বিবাদমান এই বিষয়ে কী সমাধান দেওয়া হবে? পরিশেষে তাদের জন্য করণীয় কী হবে? অনুগ্রহপূর্বক এই সমস্যার সমাধান জানিয়ে আমাদেরকে কৃতার্থ করবেন।

আবদুর রহীম

বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে যে, সংখ্যা উল্লেখ করে যদি তালাক দেওয়া হয়, তখন সংখা হিসেবে তালাক গণ্য করা হয়। স্বামী যেহেতু মোবাইলের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে সম্বোধন করে ‘তোমাকে এক তালাক’ শব্দটি প্রকাশ্য ভাষায় দুইবার উচ্চারণ করেছে, তাই স্ত্রীর ওপর দুই তালাকে রজয়ী পতিত হয়ে গেছে। সুতারাং স্বামী যদি তালাকের সাধারণ ইদ্দত তিন হায়েয তথা মাসিক স্রাবের সময়ের ভেতর রজাআত (ফিরিয়ে নেওয়া) করে ফেলে অর্থাৎ মুখে একথা বলে যে, আমি তোমাকে আমার আকদে-নেকাহের মধ্যে ফিরিয়ে নিলাম। তখন তাদের বিয়ে পূর্বের মতো বহাল হয়ে যাবে, কিন্তু স্বামী আর এক তালাকের মালিক থাকবে। আর যদি ইদ্দতের ভেতর রজাআত না করে, তাহলে তার স্ত্রীর ওপর বায়েন তালাক পতিত হয়ে যাবে। আর রজাআতের সুযোগ থাকবে না। বরং কমপক্ষে বর্তমান বাজারমূল্য হিসেবে ২৫০০ (আড়াই হাজার টাকা) মোহরানা ধার্য করে, স্ত্রীর সম্মতিক্রমে, দুই সাক্ষীর উপস্থিতিতে আকদে-নেকাহ নবায়ন করতে হবে। কিন্তু স্ত্রী যে দাবি করছে, স্বামী আরও অতিরিক্ত দুই তালাক দিয়েছে, তার স্বপক্ষে যেহেতু শরিয়তসম্মত কোনো প্রমাণ নেই, তাই তার দাবি গ্রহণযোগ্য হবে না। কিন্তু তা যদি স্ত্রী নিশ্চিতভাবে বলতে পারে, তখন ওই স্ত্রীর জন্য সেই স্বামীর সাথে সংসার করা জায়েয ও বৈধ হবে না, বরং যেকোন উপায়ে ওই স্বামী থেকে পৃথক হয়ে যেতে হবে। আর যদি স্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলে বা সে ব্যাপারে সন্দেহ হয়, তখন তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি এবং তার জন্য অন্য পুরুষের সাথে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয ও বৈধ হবে না। সূরা আল-বাকারা:, সহীহ মুসলিম: ২/৩৩, রদ্দুল মুহতার: ৯/২৬৬ কিতাবুন নাওয়াযেল: ১৩/২৪১

ওয়াকফ

সমস্যা: মাদরাসার জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করে ফেললে তার হুকুম কী? উক্ত মসজিদ ভেঙে মাদরাসার জায়গা খালি করে দিতে হবে কি-না? মাদরাসার জায়গা পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে উক্ত ওয়াকফিয়া জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করতে পারবে কি-না? উল্লেখ্য যে, মসজিদ মাদরাসা উভয়টির ওয়াকফকারী ব্যক্তি মৃত। বর্তমানে মুতাওয়াল্লি বা কমিটি একই ওয়ারিশগণ। বিষয়টির শরীয়তসম্মত উত্তর প্রদানে বাধিত করবেন।

আবদুল্লাহ

বাথুয়া, চট্টগ্রাম

সমাধান: ওয়াকফিয়া সম্পদ সম্পর্কে ইসলামি শরীয়তের মূল বিধান হলো, যে জিনিস যে কাজের জন্য ওয়াকফ করা হয় সে কাজে ব্যবহার করা। তাই মাদরাসার জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় যে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে তা ঠিক হয়নি। তারপরও মাদরাসার ওই ওয়াকফিয়া জায়গায় যখন মসজিদ নির্মাণ করা হয়ে গেছে, তাই ওই মসজিদ আর ভাঙা যাবে না। কেননা মাদরাসার আবাসিক ছাত্র ও মুসল্লিদের জন্য মসজিদ প্রয়োজন। তাই মসজিদের জায়গার সমপরিমাণ উপযুক্ত জায়গা মাদরাসার জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া মসজিদের মুতাওয়াল্লি বা মসজিদ-কমিটির দায়িত্ব। কেননা মসজিদ মাদরাসা উভয়ের মূল উদ্দেশ্য প্রায় এক ও অভিন্ন। উমদাতুল-কারী: ৩/২৩৫, আলমগীরী: ২/২৯০

সমস্যা: আমাদের একটা পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে, যা ছোট হওয়ার কারণে সম্প্রসারণ করার প্রয়োজন হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো, পাশের জায়গাটা একটি মহিলা মাদ্‌রাসার নামে ওয়াকফকৃত। তো জানার বিষয় হলো মাদরাসার নামে ওয়াকফকৃত জায়গায় কবরস্থান করা যাবে কি-না? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

ছগির হোসেন চৌধুরী

নাছিরাবাদ, চট্টগ্রাম

সমাধান: মাদরাসা মুসলমানের দীনী কল্যাণের জন্য ব্যবহার করা হয়, সে হিসেবে মাদরাসার নামে ওয়াকফকৃত জায়গা যদি মাদরাসার প্রয়োজন না হয়, এলাকাবাসীর প্রয়োজনে ওয়াকফকারী বা মুতওয়াল্লি অথবা মাদরাসা কমিটির অনুমতিক্রমে কবরস্থান করা যেতে পারে। কেননা মাদরাসা এবং কবরস্থান উভয়টা মুসলমানের দীনী কল্যাণে ব্যবহার করা হয়। উমদাতুল কারী: ৩/৪৩৫, রদ্দুল মুহতার: ৪/৫৮২, আলমগীরী: ২/৪৯০

হেবা-দানপত্র

আমার জানার বিষয় হলো, ১. কোন ব্যক্তি জীবদ্দশায় (স্ট্রোক অবস্থায়) নিজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করার শরয়ী হুকুম কী? ২. কোন ব্যক্তি জীবদ্দশায় নিজের সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে কাউকে বাদ দিয়ে তাদের অজান্তে বিশেষ কাউকে কোনো বাহানায় দিতে পারবে কি-না? ৩. সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের বেশি কোন দীনী কাজে দান করতে পারবে কি-না?

মেশকাতুল ইসলাম

লালখান বাজার, চট্টগ্রাম

সমাধান: আপনার প্রশ্নের উত্তর ও ইসলামি সমাধান প্রশ্নক্রমানুসারে নিম্নে প্রদত্ত হলো| ১. কোন ব্যক্তি নিজ সম্পদ নিজের ওয়ারিশদের মধ্যে নিজের ইচ্ছেমতো বণ্টন করা জায়েয নেই| বণ্টন করতে চাইলে ছেলে-মেয়েদের মাঝে ইনসাফপূর্ণ বণ্টন করতে হবে। কারণ স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা নিজেই কুরআন মজিদে ওয়ারিশদের মধ্যে তরকা-সম্পত্তি বণ্টন করে দিয়েছেন| ২. কোনো ওয়ারিশকে ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কিছু ওয়ারিশকে অতিরিক্ত কিছু সম্পদ জীবদ্দশায় বণ্টন করে দেওয়া জায়েh হবে না। অবশ্য কোন নাবালেগ ওয়ারিশ থাকলে তার ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ করে বা কোনো ওয়ারিশ মাতা-পিতার বেশি খেদমত করার কারণে কিছু সম্পদ বেশি দানপত্র করে দেয়, তা জায়েয ও বৈধ হবে। কোনো গুনাহ হবে না। ৩. কোন ব্যক্তির জীবদ্দশায় সুস্থ থাকা অবস্থায় নিজের সম্পত্তির একতৃতীয়াংশের বেশি কোনো ব্যক্তিকে বা কোন ভালো কাজে দানপত্র করে দিতে পারে। তাতে কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু একতৃতীয়াংশের বেশি ওসিয়ত করতে পারবে না। এরকম করলে অন্য ওয়ারিশগণ যদি এই ওসিয়ত সম্পর্কে আপত্তি করে, তখন ওই ওসিয়ত একতৃতীয়াংশের বেশি গ্রহণযোগ্য হবে না। সূরা আন-নিসা: ১১, সুনানে তিরমিযী: ২/৩২, আলমগীরী: ৪/৩৯১

সমস্যা: আমি সউদি আরব থাকাকালীন আমার প্রথম স্ত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর সময় তিনি ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তান রেখে যান। প্রথম ছেলের বয়স ৬ বছর, দ্বিতীয় ছেলের বয়স ১৮ মাস এবং মেয়ের বয়স কেবল ৩ মাস ছিল। এ অবস্থায় আমি প্রবাস থেকে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করি। আমি এবং আমার বর্তমান স্ত্রী দুই ছেলেকে আদর স্নেহ ও মায়ামমতার মাধ্যমে অত্যন্ত যত্ন সহকারে বড় করি। বড় ছেলেকে যত্ন সহকারে পড়ালেখা করাই এবং সে হাফেজ ও আলিম হয়। এরপর শিক্ষকতার জীবন শুরু করার ১ বছর অতিক্রম করলে তাকে আমি সম্পূর্ণ নিজ খরচে বিয়ে করাই। সে আলিম হওয়া সত্ত্বেও বিয়ের পর থেকে আমার ও আমার বর্তমান স্ত্রীর সাথে বিভিন্ন প্রকার বেয়াদবি করে যাচ্ছে। তার সাত বছর কর্মজীবনে আর্থিক অবস্থা সচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও সাংসারিক কোনো খরচ দিচ্ছে না। এমনকি স্ত্রী নিয়ে কয়েকবার ঘর থেকে বের হয়ে গেছে, বর্তমানেও বাইরে থাকে। দ্বিতীয় ছেলেকেও মাদরাসায় ও স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম। কিন্তু সে পড়ালেখা না করায় তাকে আমি নিজ ফান্ড থেকে তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে দুবাই পাঠাই। প্রবাসে যাওয়ার পর কিছুদিন যোগাযোগ ছিল কিন্তু হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। দুবাই থেকে গোপনে এসে তার ভাই ও বোনের সাথে পরামর্শ করে গোপনেই বিয়ে করে ফেলে এবং পুনরায় গোপনে স্ত্রীসহ দুবাই চলে যায়। বর্তমানে তার প্রবাসজীবন ৪ বছর হয়েছে। সে এখন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক। অথচ আমাকে ঘর ও সংসার বাবৎ খরচ আগেও দেয়নি এখনও দিচ্ছে না। বরং বিভিন্নভাবে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে অনেক রকমের হুমকি দিচ্ছে। অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করছে। এও বলছে যে, ‘তোর সম্পদ আমার প্রয়োজন নেই, তোর সম্পদ আমার প্রসাবের ঢেউয়ে ভেসে যাবে’ আর বলেছে আমি মারা গেলে আমার বর্তমান স্ত্রীকে চুল ধরে টেনে-হিচড়ে ঘর থেকে বের করে দেবে, পথে-পথে ঘুরাবে। তাদের বোনকেও সম্পূর্ণ টাকা খরচ করে সসম্মানে বিয়ে দিয়েছি এবং এ পর্যন্ত দেখাশোনা করে যাচ্ছি। আমার বর্তমান স্ত্রী থেকেও ৪ কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। তাদেরকেও আমি সম্মানের সাথে বিয়ে দিয়েছি এবং এই পর্যন্ত দেখাশোনা করে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য যে, আমি দুই ছেলের নামে ঘর-ভিটা বানানোর জন্য ১৫ কড়া করে মোট ৩০ কড়া জমি ক্রয় করে দিয়েছি। যার বর্তমান মূল্য প্রতি কড়া সর্বনিম্ন ২৫,০০০ টাকা এবং তাদের বোনকেও ঘর-ভিটা বাবৎ নগদ ১,০০,০০০ টাকা প্রদান করি। বর্তমানে আমার কাছে অল্প জমি আছে। যেগুলো আমার জীবন চলার পাথেয়। অথচ আমি ও আমার বর্তমান স্ত্রী উভয়ে বার্ধক্যের জীবন পার করছি এবং খুবই অসুস্থ অবস্থায় আছি।

বর্তমানে আমি যে ঘর-ভিটাতে অবস্থান করছি, সেটা তাদের দুর্ব্যবহার ও বেয়াদবির কারণে আমার বর্তমান স্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে তার নামে হেবা করে দিয়েছি। এখন তারা বিভিন্ন সূত্রে আমার ওপর চাপ প্রয়োগ করছে, যেন এই ভিটা তাদের নামে করে দিই।

আমার প্রশ্ন হল, যে ঘর-ভিটা আমার বর্তমান স্ত্রীর নামে হেবা করে দিয়েছি, তা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হল কি-না? এতে আমি গোনাহগার হব কি? হেবা করার কারণে আমি পরকালে শাস্তির সম্মুখিন হব কি? এবং তাদের চাপ প্রয়োগ কতটুকু শরীয়তসম্মত? কুরআন-সুন্নাহের আলোকে বিষয়গুলোর সমাধান জানালে কৃতজ্ঞ হব।

নুর আলম

কক্সবাজার

সমাধান: প্রশ্নপত্রের বর্ণনা মতে আপনার যখন ঘর-ভিটা ছাড়া আরও কিছু চাষি জমি আছে যা আপনার মৃত্যুর পর ওয়ারিশগণ তাদের অংশানুপাতে মিরাস পাবে, তখন আপনার ঘর-ভিটা আপনার স্ত্রীর ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ করে এবং আপনার প্রথম স্ত্রীর ছেলেদের দুর্ব্যবহারের কারণে আপনার বর্তমান স্ত্রীর নামে দানপত্র করে দেওয়া ছহীহ ও শুদ্ধ হয়েছে। আশা করি তার কারণে আপনি আখিরাতে আল্লাহ তাআলার নিকট গুনাহগার হবেন না। এক্ষেত্রে তাদের চাপ প্রয়োগ শরীয়তসম্মত নয় বরং তা অন্যায় ও জুলুম। দুররুল মুখতার: ৮/৫৯৯, ফতওয়ায়ে কাসেমিয়া: ২১/২৪৫

বিবিধ

মুহতারাম, আমি আমার কিছু জায়গা মসজিদের জন্য ওয়াকফ করেছি। ওই জায়গার ওপর মসজিদ নির্মিত হয়ে কয়েক বছর ধরে জুমাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করা হচ্ছে। মসজিদের সাথে লাগানো আমার আরেকটি জায়গা আছে, ওই জায়গাটি আমি মসজিদের জন্য ওয়াকফ্‌ করিনি এবং ওই জায়গার ওপর আমি একটি ঘরও নির্মাণ শুরু করেছি। কিন্তু মসজিদের বর্তমান কমিটি আমার নির্মাণাধীন ঘরসহ ওই জায়গাটি মসজিদের দখলে নিতে চাচ্ছে। অথচ আমি দিতে রাজি নই। এ অবস্থায় মসজিদ-কমিটির জন্য জোরপূর্বক আমার জায়গাটি দখল করে মসজিদের অন্তর্ভুক্ত করা জায়েয হবে কি? কুরআন-হাদীসের আলোকে বিষয়টির সঠিক সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

নুরুল কবীর

বান্দরবন

সমাধান: কোনো ব্যক্তির নিজস্ব মালিকানা জায়গা জোরপূর্বক মসজিদের জন্য নেওয়া যায়েয ও বৈধ হবে না। যদি তার অনুমতি ও সন্তুষ্টি ছাড়া জোরপূর্বক সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়, সেটা গসবি মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে। মসজিদ হলো আল্লাহর পবিত্র ঘর, অপরের জমিন এবং এরকম জায়গা জোরপূর্বক নিয়ে মসজিদে অন্তর্ভূক্ত করা জায়েয হবে না। যদি মসজিদ বড় করার বেশি প্রয়োজন হয়, তাহলে বর্তমান মসজিদের ওপরের দিকে কয়েক তলা বাড়াতে পারে।

সমস্যা: (১. প্রশ্ন) আমি একটি হেফজখানায় চাকরি করতাম। লকডাউনের দ্বিতীয় সপ্তাহে মাদরাসার পরিচালক আমাকে বললেন, ‘আপনি যদি অন্য কোথাও এখানের চেয়ে ভালো পান তাহলে চলে যাইয়েন’। তাই মাদরাসাকর্তৃপক্ষ আমাকে লকডাউনের সময় বেতন পরিশোধ করেনি। তারপর আমি শুনতে পেলাম, দারুল উলুম দেওবন্দ ফতোয়া দিয়েছে ‘লকডাউনের সময় ২ মাসের বেতন দিতে হবে, কাউকে বিদায় করা যাবেনা, আর যদি তা করা হয় তবে তা হবে জুলুম’। এখন এই দুই মাসের বেতন আমার হক হিসেবে গণ্য হবে কি? উল্লেখ্য লকডাউন-পরবর্তীতে ওই হেফজখনায় পুনঃনিয়োগপ্রাপ্ত হই।

(২. প্রশ্ন) ২০১৮ সালের ২০ শে রমজান এক মাদরাসায় আমার চাকরি হয়। এরপর আমি সেখানে ২ বছর চাকরি করি। কিন্তু মাদরাসাকর্তৃপক্ষ আমাকে কোনো ঈদেরই বোনাসসহ ওই সময় মাদরাসায় অনুষ্ঠিত ৫টি সাময়িক পরীক্ষার ফি থেকেও বঞ্চিত করা হয়। এখন আমি কি সেই পরীক্ষা ফি ও বোনাসের অংশ পাবো?

আবদুর রহমান

কোতয়ালী, চট্টগ্রাম

সমাধান: আমাদের কওমী মাদরাসা এবং হেফজখানাগুলোতে যেসব উস্তাদ খেদমত করে থাকেন, তারা শরীয়তের দৃষ্িটতে ‘আজীরে খাস’ (বেতনভুক্ত কর্মী) হিসেবে গণ্য হয়। আজীরে খাছ গাফলতি ব্যতীত অন্য কোনো কারণে যদি কাজ করতে না পারে, তখন তা তাদের চুক্তিমত উজরত (বেতন)-এর উপযুক্ত হয়ে থাকে। তাই আপনি বর্তমান সরকারি লকডাউনের কারণে যে সমস্ত মাসগুলোতে কাজ করতে পারেননি, সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যদি আপনাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি না দিয়ে থাকে তাহলে লকডাউনের পূর্ণ বেতনের অধিকারী হবেন। আর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মাদরাসার আর্থিক দুর্বলতার কারণে আপনাকে যদি খেদমত থেকে অব্যাহতি দিয়ে থাকে তাহলে পুনঃনিয়োগ পর্যন্ত আপনি বেতন-ভাতা পাবেন না। কেননা অব্যাহতি দেওয়ার কারণে আপনার সাবেক চুক্তি বহাল থাকবে না। বোনাস কর্মচারীর হক নয় বরং তা কর্তৃপক্ষের পুরস্কার হিসেবে গণ্য হয়। তাই কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছায় বোনাস না দিলে আপনি তা দাবি করতে পারবেন না। দুররুল মুখতার: (শামীসহ) ৯/৯৫, রদ্দুল মুখতার: ৪/৩৭২ ফতওয়ায়ে মাহমূদিয়া: ২৩/১৮২

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ