১১ সেপ্টেম্বর (সোমবার) হতে জামিয়ার সকল বিভাগে পুর্ণ উদ্যমে দরস প্রদান শুরু হয়েছে। মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে গত ২৮ আগস্ট হতে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ দু’সপ্তাহব্যাপী ছুটি কাটিয়ে ছাত্ররা নির্ধারিত সময়ে মাদরাসায় পৌঁছেছে এবং প্রথম দিনের দরসে ছাত্রদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ছাত্ররা এখন প্রাণবন্ত ও উচ্ছ্বসিত। তাঁরা নব উদ্যমে বন্ধপূর্ব সময়ের ন্যায় পাঠ চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে।
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণসংগ্রহ ও নিয়মিত কুনুতে নাযেলার আয়োজন
চলমান বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত জাতি হল আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলিমরা। গত ২৫ আগস্ট হতে ঠুনকো অজুহাতের ভিত্তিতে খড়গহস্ত হয়েছে বার্মার সেনাবহিনী, নাডাল বাহিনী ও সাম্প্রদায়িক বৌদ্ধরা। তারা তাদের ওপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ও বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করছে। আর নারীদের প্রতি চালাচ্ছে লোমহর্ষক যৌননিপীড়ন। যা ইতিহাসের সকল নিষ্ঠুরতাকে হার মানায়। তাদের এ জটিল-অমানবিক অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ও স্থায়ী আবাসন এবং জালেমদের যথোচিত শাস্তির লক্ষ্যে প্রতিদিন জামিয়ার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ফজরের নামাজে কুনুতে নাজেলা পাঠ করা হচ্ছে।
এ দিকে জামিয়া প্রধান ও শায়খুল হাদীস আল্লামা মুফতী আবদুল হালীম বুখারী (দা. বা.)-এর নির্দেশনায় এবং জামিয়ার সহকারী পরিচালক আল্লামা আবু তাহের নদভী (দা. বা.)-এর তত্ত্বাবধানে গত ১৫ ও ২৬ আগস্ট দ’দফায় ছাত্র-শিক্ষদের সমন্বিত ত্রাণসামগ্রী ও নগদ অর্থ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরে বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, জামিয়ার মুহতামিম সাহেব (দা. বা.) ইতঃপূর্বে নিজ উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
জামিয়ার সহকারী পরিচালক (দা. বা.)-এর ছাত্রদের প্রতি তারবিয়াতি বয়ান
২৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বাদে জোহর জামিয়ার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জামিয়ার রীতি অনুযায়ী (সোমবারের) তারবিয়তি জলসা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জলসায় ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসীহত পেশ করেন জামিয়ার সহকারী পরিচালক আল্লামা আবু তাহের নদভী (দা. বা.)। নসীহতের শুরুতে তিনি জামিয়ার অসুস্থ মুরুব্বীদের জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। তিনি ছাত্রদেরকে আসন্ন প্রথম সাময়িক পরীক্ষার প্রস্তুতি জন্য নিয়মিত দরসে উপস্থিত থাকতে ও তাকরারের (সামষ্টিক পাঠ) প্রতি মনোনিবেশ করতে বলেন। এবং প্রথম সারিতে উত্তীর্ণ তিন জনকে পুরষ্কৃত করার ঘোষণা দেন। পাশাপশি পড়া-লেখায় বিঘœ ঘটায় এমন সকল কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার প্রতি কঠোর নির্দেশ জারি করেন। এবং তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হওয়ার লক্ষে রাতে তারাতারি শুয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষভাবে তিনি দাওরায়ে হাদিসের ছাত্রদেরকে আল-হাইআতুল উলিয়ার পরীক্ষায় গৌরবময় ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে জামিয়ার ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রাণপণে মেহনত চালিয়ে যেতে জোর তাগিদ প্রদান করেন।
প্রথম সাময়িক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
২৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) জামিয়ার তালিমাতের পক্ষ থেকে নাজিমে তালিমাত আল্লামা মুফতি শামসুদ্দীন জিয়া (দা. বা.) ১৪৩৮-৩৯ হিজরী (২০১৭-১৮) শিক্ষাবর্ষের প্রথম সাময়িক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, মাদরাসার সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী সফর মাসের প্রথম সপ্তাহ রোজ মঙ্গলবার (৩ তারিখ সম্ভাব্য) হতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা আরম্ভ হবে। সেমতে কালক্ষেপণ না করে সময়কে কাজে লাগানোর ও সকাল-সন্ধ্যা তাকরার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তথ্যসূত্র: নূর আহমদ তালহা
জামিয়া প্রতিবেদক, মাসিক আত-তাওহীদ