জামেয়া ওয়েবসাইট

মঙ্গলবার-১লা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি-৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্যের বিকাশধারা

ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ

আরাকান অঞ্চলটি বর্তমানে মিয়ানমারের ‘রাখাইন স্টেট’ নামে পরিচিত একটি প্রদেশ। এটি এক সময়ের স্বাধীন রাজ্য এবং মুসলমানদের শান্তিময় বাসস্থান ছিল। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে বার্মারাজা বোদাপায়া আরাকান দখল করে বার্মার অধীনে নেন। এর আগে প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর ধরে আরাকানের স্বাধীন সত্তা, সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা ও রাজনৈতিক ঐতিহ্যের ইতিহাস পাওয়া যায়। ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খান কর্তৃক দখল করার আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলও আরাকানের অধীনে ছিল। ফলে চট্টগ্রামে মুসলমানদের প্রভাব বৃদ্ধির সাথে সাথে আরাকানেও তা সম্প্রসারিত হয়ে পড়ে।

সময়ের ধারাবাহিকতায় মুসলমানরা এখানকার অর্থনীতি, সমাজ, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে একটি অভিনব এবং স্বতন্ত্র অধ্যায় বিনির্মাণে সক্ষম হয়েছিল। অদ্যাবধি এখানকার মোট জনগোষ্ঠীর একটি অংশ ইসলামের অনুসারী। তাদের মধ্যে থাম্ভইক্যা, জেরবাদী, কামানচি, রোহিঙ্গা প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন নামে মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা তাদের মধ্যে বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী।

রোহিঙ্গারাই আরাকানের প্রথম বসতি স্থাপনকারী মূল ধারার সুন্নি মুসলমান। জন্মগতভাবেই তারা আরাকানের নাগরিক, তাদের হাতেই পরিপুষ্টি অর্জন করেছে আরাকানের ইতিহাস-ঐতিহ্য। মহাকবি আলাওলসহ মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের বড় বড় কবিরা আরাকানের রাজধানী ম্রাহেংয়ে সাহিত্য চর্চা করেছেন এবং আরাকানের রাজধানীকে তাদের সাহিত্যে রোহাঙ ও রোসাঙ নামে উল্লেখ করেছেন। এ রোহাঙের অধিবাসীদেরকেই রোহিঙ্গা বলা হতো। আরাকানে বাংলা সাহিত্য চর্চাকারীদের মধ্যে দৌলত কাজী অন্যতম।

চট্টগ্রামের রাউজান থানার সুলতানপুর গ্রামের কাজি বংশের সন্তান কবি দৌলত কাজী আরাকানে বাংলা সাহিত্য চর্চা করেন। এমনকি তিনি আরাকানে রাজসভার কাজির পদেও নিযুক্ত ছিলেন। তিনি শুধু মধ্যযুগীয় বাঙালি মুসলমান কবিদের মধ্যেই শ্রেষ্ঠ নন, প্রাচীন বাংলার শক্তিমান কবিদের মধ্যেও তিনি একজন শ্রেষ্ঠকবি। বাস্তববাদী এ কবি মধ্যযুগকে পেছনে ফেলে সমকালীন আধুনিকতা বিনির্মাণের জন্য সাহিত্যের গতানুগতিক পথ মাড়িয়ে বাস্তবতার নিরিখে মানবীয় প্রেমকে উপজীব্য করে সতী ময়না ও লোর চন্দ্রানী কাব্য করেন। তিনি আরাকানের রাজা থিরি থু ধম্মার রাজত্বকালের (১৬২২-১৬৩৮ খ্রি.) মধ্যেই তার লস্কর উজির আশরাফ খানের আদেশ ও পৃষ্ঠপোষকতায় এ কাব্য রচনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তিনি তার কাব্য সমাপ্ত করার আগেই মাত্র ৩৮ বছর বয়সে মারা যান। তার কাব্যে বন্দনা, মহাম্মদের সিফত এবং রোসাঙ্গের রাজার প্রশস্তি অংশে কবি মূলত তার বিশ্বাসের প্রতিধ্বনিই তুলেছেন। দৌলত কাজী তার কাব্যের তৃতীয় পর্বে ‘রোসাঙ্গের রাজার প্রশস্তি’ শীর্ষক রাজার বন্দনা রচনা করেছেন। রাজার প্রশস্তির পাশাপাশি লস্কর উজীর আশরাফ খানের পরিচয়, চারিত্রিক বিশ্লেষণ, ইসলামের প্রতি তার আনুগত্য ও ভালোবাসার চিত্র, রাজনৈতিক দক্ষতা, সততা, ইসলামের প্রসার ও প্রভাবে তার অবদানসহ বিভিন্ন বিষয়ের আলোকপাত করেছেন। কবির ভাষায়:

শ্রী আশরফ খান / ধর্মশীল গুণবান

মুসলমান সবার প্রদীপ

সে রসুল-পরসাদে / গুরুজন আশীর্বাদে

রাজসখা ইউক চিরঞ্জীব ॥ (সতী ময়না ও লোর চন্দ্রানী)

মধ্যযুগীয় বাংলাসাহিত্যের শ্রেষ্ঠকবি মহাকবি আলাওল। তিনি আরাকানে অশ্বারোহী সৈন্য পদে চাকরি করলেও অচিরেই তিনি আরাকানের মুসলিম মন্ত্রীদের সুনজরে আসেন এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই ১৬৫১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৭৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই তাঁর কাব্যগুলো রচনা করেন। তাঁর রচিত পদ্মাবতী যা আরাকানরাজ থদো মিংদারের (১৬৪৫-১৬৫২ খ্রি.) শাসনামলে রাজসভার প্রভাবশালী অমাত্য ও কবি কোরেশী মাগন ঠাকুরের অনুরোধে ১৬৫১ খ্রিস্টাব্দে রচনা করেন। ‘সৎকীর্তি মাগনের প্রশংসা’ অংশে কবি আরাকানের অমাত্যসভা কর্তৃক মুসলমানদের জ্ঞান চর্চা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ইসলামের প্রভাব বিশ্লেষণের প্রয়াস পেয়েছেন। কবির ভাষায়:

ওলামা সৈদ শেখ যত পরদেশী / পোষন্ত আদর করি বহু স্নেহবাসি ॥

কাহাকে খতিব কাকে করন্ত ইমাম/নানাবিধ দানে পুরায়ন্ত মনস্কাম ॥ (পদ্মাবতী)

কিংবা

বহু মুসলমান সব রোসাঙ্গে বৈসেন্ত/সদাচারী কুলীন পণ্ডিত গুণবন্ত ॥ (পদ্মাবতী)

এখানে কবি আলাওল আরাকানের রাজধানী ম্রাহেঙকে রোসাঙ্গ নামে উল্লেখ করেছেন। এ ক্ষেত্রে গবেষক ড. আহমদ শরীফ মন্তব্য করেন যে, আঞ্চলিকভাবে উচ্চারণগত পাথর্ক্যরে কারণে হ অক্ষরটি স হিসেবে উচ্চারিত হয়ে রোহাঙ শব্দটি রোসাঙ্গ উচ্চারিত হয়েছে। আরাকানের রাজসভায় জ্ঞানীদের ব্যাপক কদর ছিল। ওলামা, সৈয়দ, শেখ সবাইকে সম্মান দিয়ে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পদে সমাসীন করা হতো। এভাবেই আরাকানে মুসলমানদের বিস্তৃতি ঘটেছে।

মহাকবি আলাওল আরাকানের রাজা সান্দা থু ধম্মার (১৬৫২-১৬৮৪ খ্রি.) শাসনামলে আরাকানের সৈন্যমন্ত্রী মুহাম্মদ সোলায়মানের পৃষ্ঠপোষকতায় দৌলত কাজী রচিত অসমাপ্ত সতী ময়না-লোর চন্দ্রানী কাব্যটি সমাপ্ত করেন। সমকালীন আরাকানের প্রশাসনে মুসলিম প্রভাব ও উদার নৈতিক মূল্যবোধ এ কাব্যের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। মূলত এটি ছিল কবির মৌলিক রচনা। তিনি আরাকানের রাজা সান্দা থু ধম্মার শাসনামলে স্বীয় প্রধান অমাত্য মাগন ঠাকুরের পৃষ্ঠপোষকতায় সয়ফুল মুলুক বদিউজ্জামাল রচনা শুরু করেন। কবির রচিত হামদ-নাত অংশের চরণগুলোতে কবির অন্তরাত্মার লালিত ইসলামের সুমহান আদর্শ, বিশ্বাস অনুভূতি, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও ভাবৈশ্বর্য ফুটে উঠেছে। আলাওল ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে আরাকানের মুখ্য সেনাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ খানের আদেশ ও পৃষ্ঠপোষকতায় সপ্তপয়কর কাব্যটি রচনা করেন।

তোহফা মহাকবি আলাওলের একটি অন্যতম বিখ্যাত ও উপদেশমূলক কাব্যগ্রন্থ। গ্রন্থটি ১৬৬৩-৬৪ খ্রিস্টাব্দে কবি আলাওল আরাকানের মহামাত্য মুহম্মদ সোলায়মানের আদেশে এর কাব্যানুবাদ সম্পন্ন করেন। কাব্যটি আলাওলের অনূদিত কাব্য হলেও অন্যান্য কাব্যের মতো এখানেও তিনি অনুবাদের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা রক্ষা করেছেন। এছাড়াও সিকান্দরনামা আলাওলের শেষ কাব্যগ্রন্থ। কবি আলাওল আরাকানের রাজা থিরি থু ধম্মার (১৬৫২-৮৪ খ্রি.) প্রধান অমাত্য নবরাজ মজলিশের আদেশ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৬৭১ থেকে ১৬৭৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এটি রচনা করেন। অনূদিত কাব্য হলেও এটি যেমন ছিল স্বাধীন ও ভাবানুবাদ তেমনি কাব্যের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব রচনাও বিদ্যমান।

কোরেশী মাগন ঠাকুরও মধ্যযুগের একজন মৌলিক কবি। মৌলিক রচনার সঙ্কটকালে কোরেশী মাগন ঠাকুরের চন্দ্রাবতী কাব্য একটি বিরল উদাহরণ। কবির উদ্ধারকৃত চন্দ্রাবতীর ভণিতা অংশ উদ্ধার না হওয়ায় তার ব্যক্তিগত পরিচয়ের বিষয়টি প্রচ্ছন্ন রয়ে গেছে। তবে যেহেতু কবি আলাওল কোরেশী মাগন ঠাকুরের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৬৪৬-১৬৫১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেছেন এবং তখন তাঁকে আরবি-ফার্সি ভাষায় পারদর্শী, বর্মি ও সংস্কৃত ভাষার পণ্ডিত, ভেষজ ও যাদু বিদ্যায় দক্ষ এবং কাব্য ও নাট্যকলায় অনুরাগী বলে উল্লেখ করেছেন। হয়তো আলাওলের পদ্মাবতী কাব্য রচনার পরে ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর পূর্ব মূহূর্তে তিনি এ কাব্য রচনা করেন। যদি আগেই রচনা করতেন তবে আলাওল তার পদ্মাবতী কাব্যে এ বিষয়ে উল্লেখ না করে ছাড়তেন না।

কবি দৌলত কাজীর সমসাময়িক কালের কবি ছিলেন মরদন। ঐতিহাসিক আবদুল করিম তাঁর নাম মরদন নুরুদ্দীন বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরাকানের রাজা থিরি থু ধম্মা ওরফে সিকান্দার শাহ দ্বিতীয়ের শাসনামলে (১৬২২-১৬৩৮ খ্রি.) কাব্য চর্চা করেন। কবি মরদন কর্তৃক উপস্থাপিত আরাকানের কাঞ্চি নগরে মুসলিম ও হিন্দু বসতির পরিচয় পাওয়া যায়। বিশেষত মুসলমান প্রভাব খুব বেশি লক্ষ্যণীয়। কবির ভাষায়:

ভুবনে বিখ্যাত আছে রোসাঙ্গ নগরী / রাবনের যেহেন কনক লঙ্কাপুরী ॥

সে রাজ্যেত আছে এক কাঞ্চি নামে পুরী/ মুমীন মুসলমান বৈসে সে নগরী ॥

আলিম মৌলানা বৈসে কিতাব কারণ / কায়স্থগণ বৈসে সব লেখন পড়ন ॥

(নসিবনামা আহমদ শরীফ সম্পাদিত)

কাব্যাংশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, রোসাঙ্গ নগরী অর্থাৎ আরাকানের রাজধানী ম্রোহংয়ের কাছাকাছি কোনো পুরী বা নগর ‘কাঞ্চিপুর’; এখানে মুসলমান ও হিন্দুদের মিলনমেলা। মুমিন-মুসলমান, আলিম মাওলানা মজলিশে মিলিত হয়ে পবিত্র কুরান-হাদিস আলোচনা করে থাকেন। সেই সাথে হিন্দু কায়স্থরাও মিলিত হয়ে লেখাপড়া করে থাকেন। কাব্যের এ অংশে বৌদ্ধদের কোনো বিবরণ দেয়া হয়নি। বিষয়টি তো এমনটিও হতে পারে যে, ম্রোহংয়ের পাশের যেসব স্থানে গৌড়ীয় সৈন্যদের বসবাসের জন্য সেনাছাউনি নির্মাণ করা হয়েছে তারই কোনো একটি বসতির নাম কাঞ্চি; যেখানে বাংলা থেকে আগত গৌড়ীয় মুসলমান ও হিন্দু সৈনিকদের বংশধররাই বসবাস করে থাকেন। সুতরাং এটা আরাকানেরই কোনো অংশ বলে ধরে নেয়া যায়।

আরাকান প্রশাসন প্রভাবিত কবিদের মধ্যে সপ্তদশ শতাব্দীর শক্তিশালী মুসলিম কবি নসরুল্লাহ খোন্দকার। এ কবির তিনটি প্রধান কাব্যের সন্ধান পাওয়া যায় যথা জঙ্গনামা, মুসার সওয়াল ও শরীয়তনামা। আরাকানের অমাত্য সভার পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত কবি আবদুল করিম খোন্দকার। তিনি আরাকানেই জন্ম গ্রহণ করেন। তার প্রপিতামহ রসুল মিয়া আরাকানের রাজার ‘ট্যাক্স-কালেক্টর’ হিসেবে কাজ করেন। পিতামহ মদন আলী আরাকানের রাজার দোভাষী বা ইন্টারপ্রেটর হিসেবে রাজা ও বিদেশি বণিকদের মধ্যে পার¯পরিক কথোপকথনের অনুবাদকের কাজ করতেন। তিনি তিনটি কাব্য রচনা করেছেন যথাÑ ‘দুল্লাহ মজলিশ’, হাজার মাসায়েল এবং তমিম আনসারী। শুজা কাজী নামে পরিচিত আরাকানের সরদার পাড়ার অধিবাসী কবি আবদুল করিম অন্যতম কবি ছিলেন। তিনি ‘রোসাঙ্গ পাঞ্চালা’ নামে আরাকানের ইতিহাস সংবলিত কাব্যটি রচনা করেন। সেই সাথে ম্রোহংয়ের কবি আবুল ফজলের আদমের লড়াই; আরাকানের কাইমের অধিবাসী কাজী আবদুল করিমের রাহাতুল কুলুব, আবদুল্লাহর হাজার সওয়াল, নুরনামা, মধুমালতী, দরীগে মজলিশ; কাইমের অধিবাসী ইসমাইল সাকেব এর ‘বিলকিসনামা’; কাজী মোহাম্মদ হোসেনের আমির হামজা, দেওলাল মতি ও হায়দরজঙ্গ; আরাকানের উল্লেখযোগ্য কবি ও কাব্যগ্রন্থ।

মূলত আরাকানের রাজধানীতে হাজারো কুলীন পণ্ডিত ও গুণী ব্যক্তিদের ভিড় লক্ষ্যণীয় ছিল। তাদের মধ্যে ওলামা, সৈয়দ, শেখ প্রভৃতি যারা বিদেশী ছিলেন কিংবা স্বদেশী ছিলেন সবাইকে মুসলিম অমাত্যরা বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করে রাজ্যের উন্নতি যেমন নিশ্চিত করেছেন, তেমনি আরাকানী প্রশাসনে মুসলমানদের প্রভাব প্রতিপত্তি ও মর্যাদাকে নিশ্চিত করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে আরাকান রাজসভায় বিদেশী মুসলিম-অমুসলিম লোক আরাকানে একত্রিত হয়ে আরাকানী সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন। বিশেষত আরাকানে ইসলামের প্রসার ও প্রভাব বিস্তারে তাদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। কবি আলাওলের ভাষায়:

নানা দেশী নানা লোক / শুনিয়া রোসাঙ্গ ভোগ / আইসন্ত নৃপ ছায়াতল; আরবী মিশরী শামী / তুরকী হাবশী রুমী / খোরাসানী উজবেগী সকল॥ লাহরী মুলতানী হিন্দি/কাশ্মীরী দক্ষিণী সিন্ধী / কামরূপী আর বঙ্গদেশী; ভূপালী কুদংসরী / কান্নাই মনল আবারী / আচি কোচী কর্ণাটকবাসী॥ বহু সৈয়দ শেখজাদা / মোগল পাঠান যোদ্ধা / রাজপুত হিন্দু নানা জাতি; আভাই বরমা শাম / ত্রিপুরা কুকির নাম/ কতেক কহিমু জাতি ভাঁতি॥ (আলাওল, পদ্মাবতী, সৈয়দ আলী আহসান সম্পাদিত)।

এভাবে মধ্যযুগ কিংবা তারও আগে থেকে আরাকানে মুসলমানদের প্রভাব প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। অথচ বর্তমানে সেখানকার মুসলমানদের ভিনদেশি বলে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এটা শুধু অমানবিকই নয়, বরং জবরদখলের চরম মাত্রা। মগের মুলুকের সেই প্রবাদ যেন আজো সেখানে বাস্তাবায়ন করা হচ্ছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ