বৃহস্পতিবার-২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি-১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইন্টারনেটের ভয়াল আগ্রাসনের শিকার আজ পুরো বিশ্ব

মুহাম্মদ মিশকাত

 

পানির শ্রোতধারার ন্যায় অবিরত বয়ে যাচ্ছে সময়। কারো জন্যেই থামছে না এক মুহূর্ত। এবং সেটি থামারই নয়। কালের আবর্তনে সময়ের বিবর্তনে আল্লাহপ্রদত্ত মেধার ব্যবহারে কতকিছুই আবিস্কার করছে কুরআনেঘোষিত সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টিজীব মানবকুল। এরই ধারাবাহিকতায় ভিন্টন গ্রে ভিন্ট সার্ফ নামক ব্যক্তিটি ১৯৬৯ সালে করেছিলেন এক অদ্ভুত আবিষ্কার। আমাদের কাছে তা আজ ইন্টারনেট নামে সুবিদিত—দিবা-রজনীর নির্ঘুম সময়ের নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে এই ইন্টারনেট। বলা যায়—মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশে রূপ নিয়েছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটবিহীন নিজেকে কল্পনা করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতির চেয়ে নেতিবাচক প্রভাবই বেশি এই ইন্টারনেটের। কথায় আছে—“বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ তবে কেড়ে নিয়েছে জীবনের আবেগ।” বর্তমান বিশ্বব্যাপী অসংখ্য তরুন-যুবক ইন্টারনেটের চোরাগলিতে পদার্পন করে তাদের সুন্দর সোনালি যৌবনকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে।
নেতিবাচক দিক যেমন—
বর্তমানে মানুষ রকমারি অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে এই ইন্টারনেটের মাধ্যমেই। প্রতিনিয়ত যার হার বাড়ছে বৈ কমছে না।
উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীরা বিভিন্নভাবে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। অশ্লীল ছবি ও ভিডিও আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেদেরকে চরিত্রবিধ্বংসী কাজে জড়িয়ে ফেলছে।
শত্রুতাবশত নিরপরাধ ব্যক্তির নামে মিথ্যা রটিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড দেওয়ার মাধ্যমে মর্যাদাহানির মতো জঘন্য অপরাধ করা হচ্ছে এবং নাস্তিক ব্লগাররা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে শরীর চর্চা, খেলাধুলা ও বাইরে প্রকৃতি ছোঁয়ার অভিপ্রায় ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে এবং পরস্পর মেলা-মেশার সুযোগ হারিয়ে একাকিত্বই নিত্য জীবনের সঙ্গী হচ্ছে। ফলে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং গুরুতর অপরাধের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
নামায, কুরআন তিলাওয়াত বা যিকিরের সময় মোবাইলে নোটিফিকেশন, কল বা বার্তার আগমন মনোযোগ ছিন্ন করে দেয়। ফলে ইখলাস ও খুশু-খুজুর সাথে ইবাদত সম্পাদন করা কঠিন হয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ও গেমসের অতিরিক্ত ব্যবহারে বহু সময় এমনিই নষ্ট হয়ে যায়—যা ইবাদতের জন্য বরাদ্দ হতে পারত। ফলে নামায ক্বাযা হয়, তাহাজ্জুদ-যিকিরের ফুরসত থাকে না।
এ ছাড়াও ইন্টারনেট আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে নিয়ে আন্তর্জাতিক জীবনে নানারৈখিক অবর্ণনীয় ক্ষতি বয়ে আনছে। ইন্টারনেটের এই ভয়াল আগ্রাসন বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিশ্চিত ও ভয়াবহ হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
তাই বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে এই ভয়াল আগ্রাসনের থাবা থেকে বাঁচাতে আমাদের প্রয়োজন বাস্তবমুখী চিন্তা ও গবেষণালব্দ একনিষ্ঠ প্রয়াস।

লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ