বুধবার-২১শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি-১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রফেশনালি কাউন্সেলিংয়ে আলেমগণ এগিয়ে আসুন

দেশের মিডল ক্লাসের একটা বড় অংশ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে যায়। রক্তের জন্য না, মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে। তাদের সবার দীন নিয়ে আন্ডারস্ট্যান্ডিং তেমন স্ট্রংও না। ওদের ওখানে গিয়ে এরা শান্তনা পায়। মানসিকভাবে চাঙ্গা হবার চেষ্টা করে। এদের অধিকাংশই নরম স্বভাবের লোকজন। দাওয়াহর জন্য তাদের ক্ষেত্র প্রস্তুত। আমাদের আশেপাশেই এমন অনেক মানুষ আছে।
ওদের ম্যান টু ম্যান মার্কেটিং অনেক পাওয়ারফুল। যারা একবার যায় তাদের একটা বড় অংশ অন্যকে রিকমেন্ড করে। পারলে ধরে নিয়ে যায়। আমার কথা হল, এখানে শারিয়্যাহ মেনে চলা কোনো ইন্সটিটিউট থাকা প্রয়োজন—যেখানে কাউকে রিকমেন্ড করা যায়। অন্তত একটা কল সেন্টার বা অনলাইন এপ্স।
সব কিছুর বিকল্প থাকতে হয় না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মুসলমানদের একটা বড় অংশ সেখানে যাচ্ছে। এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজছে। এরা একটা বিপদে পড়ে, অসুখ-বিসুখে পড়ে বা ডিপ্রেশনে পড়ে দীনের প্রতি সফট মনোভাবসম্পন্ন হয়—এরপর ওখানে গিয়ে চারটা ভালো কথা, দুটা ইসলামের কথাও শুনে। পরে ভাবে এইতো ভালো জায়গায় এসেছি। স্যাটিসফেকশন এসে যায়। ভাবে—আর বেশি অগ্রসর হবার দরকার নেই। পরে পূর্ণাঙ্গ দীনে আসা আর হয় না।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন যেমন চ্যারিটি ও কর্মসংস্থান নিয়ে ভালো কাজ করছে। তেমনি আমাদের স্কলারদের এমন একটা ইন্সটিটিউশন থাকা দরকার—যেটাতে কাউন্সেলিং এর জন্য কাউকে নিশ্চিন্তে পাঠিয়ে দেয়া যায়।
এখানে বিকল্প হচ্ছে, কোনো মাদরাসায় বড় আলেমদের কাছে পাঠানো। কিন্তু যারা যাবে এই মানুষগুলা ঠিক দীনদারও না। এরা মাদরাসায় যেতে কমফোর্টেবল না। গেলেও আমাদের অনেক মাদরাসায় এস্তেকবালের অবস্থা তেমন ভালো না। আমরা এ ফাংশন তাদের জন্য করে দিতে পারি নি।
হঠাৎ করে দু’জন বেপর্দা মহিলা ফ্যামিলি নিয়ে কাউন্সেলিং-এর জন্য গেলে তাদের হ্যান্ডেল করার ভালো সিস্টেম আমাদের নেই। পরে দেখা যাবে উল্টো খারাপ এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে ফিরবে। দ্বিতীয় বিকল্প তাবলীগে পাঠিয়ে দেয়া। কিন্তু এটাও লং টাইম কমিটমেন্ট। খুব কম অংশই এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে। আর এই শ্রেণিকে বেশি সময়ের জন্য রাজি করানোও কষ্টকর।
মূল কথা—আমাদের সাহাবায়ে কেরামের সময়ের মতো একটা সিস্টেম দরকার। মন খারাপ হলে নবীজি ﷺ এর কাছে গিয়ে বলবে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আজকে আমার মনটা ভীষণ খারাপ। যেমন, কেউ বললো—আমার তো ক্যান্সার ধরা পড়েছে! আমার মাথায় ঋণের অনেক বোঝা! আমার ছেলেটা তো আমার কথা শুনে না!… এমন। পেরেশানিতে থাকলে মন খুলে শেয়ার করবে, মনের বোঝা হালকা করবে, পরামর্শ নিবে। এই কাজটা আমাদের আলেমরাই করবে। তবে একটা প্রতিষ্ঠানের এই সিস্টেমটা প্রফেশনাললি মেইনটেইন করতে হবে। যেন একজন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল, ভার্সিটির ভিসি, এডমিশন স্টুডেন্ট এমনকি জাতীয় দলের ক্রিকেটার সবাই কম্ফোর্ট ফিল করে। সবাই নিজ নিজ সমস্যা পেশ করে পরামর্শ, সমাধান নিবে। অনেকটা ইফতা, দাওয়াহ, ইসলাহ এর ব্লেন্ড। কিন্তু একটু মডার্ন লুকিং।
কেউ এটাকে বিজনেস আইডিয়া হিসেবে নিতে চাইলে ঢাকার কয়েকটা প্রাইম লোকেশনে এমন সেন্টার খুলতে পারেন। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
দনিয়া, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ