বুধবার-২১শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি-১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঐন্দ্রজালিক জ্যোতি

বাবার চেয়ে শ্বশুর বড়!

আহমাদ ইউসুফ শরীফ

সপ্তাহ দুয়েক আগে আম্মাকে নিয়ে ৩ দিনের জন্য তাবলীগের মাস্তুরাত জামাতে গিয়েছিলাম।
জামাতে পুরুষ সাথী ছিলেন ৮ জন। তম্মধ্যে আমার পরিচিত ও শ্রদ্ধেয় একজন (অব:) অধ্যাপক ছিলেন। স্যারের তিন মেয়ে এক ছেলে। সবার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বড় জামাতাও তাবলীগের মজবুত সাথী। জামাইয়ের আব্বা আরও মজবুত এবং বুজুর্গ সাথী।
তো এক সকালে অধ্যাপক মহোদয় গল্পে গল্পে বললেন, “বড় মেয়ের জামাই নতুন বাসায় ওঠবে, সবকিছু রেডি; সেসময় আমি ছিলাম কাকরাইল। সে কাকরাইল থেকে আমাকে নিয়ে আসছে দুআ করানোর জন্য!”
আমি ঠোঁটকাটা মুখ ফসকে বলে ফেললাম, “কেনো, জামাইয়ের বাপ কি মইরা গেছে নাকি?”
স্যার হকচকিয়ে গেলেন!
আমাদের অনেক দীনি ভাই নিজের পিতার তুলনায় বেশি দীনদার, ইলমওয়ালা বা আমলদার শ্বশুর পেলে অনেক সময় পিতার চেয়ে শ্বশুরকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। শ্বশুর হিসেবে তিনি তো অবশ্যই সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। তবে কোনোভাবেই আপনার নিজের পিতার চেয়ে বেশি নন।
মনে রাখবেন, আপনার পিতা একজন সাধারণ মজদুর, চাকুরিজীবী, কৃষক বা ব্যবসায়ী হলেও আপনার জন্য তিনি আপনার বুযুর্গ শ্বশুরের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কোনোরকম বুযুর্গি ছাড়াই আপনার জন্য তার দুআ কবুল (ইনশাআল্লাহ)। এমনিভাবে কোনোরকম বুযুর্গি ছাড়াই তার জায়েজ রাগ-দু:খ আপনার জন্য আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে।
অতএব শ্বশুরকে সম্মানের জায়গায় রেখে পিতাকে অগ্রাধিকার দেয়াই সুসন্তানের পরিচয়।

 

বৈবাহিক ধর্ষণ : ব্যাঙের মুখে সর্দির জপ

ফাহীম মুহাম্মাদ আতাউল্লাহ

নিকাহ। বিয়ে। পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি চলমান একটি ইবাদত। বাবা আদম থেকে নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ﷺ পর্যন্ত প্রায় সকল নবীর কৃত আমল। রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন, চারটি বিষয় সব নবিদের সুন্নাহ। ১. নিকাহ ২. সুগন্ধি ব্যবহার ৩. খাতনা করা ও ৪. মিসওয়াক করা।
নিকাহ রাসূলের বিশেষ সুন্নাহ। বিবাহ থেকে অনিহা রাসূলের উম্মাহ থেকে খারিজ হওয়ার কারণ।
শরীয়তে ইসলামীতে বিয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। বিয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে, অশ্লীলতা ও ব্যভিচার থেকে আপন সত্তা সংরক্ষণ করা। অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে নারীর সত্তা নাশ হওয়া থেকে রক্ষা করা। সাথে সাথে একত্ববাদে বিশ্বাসী সন্তানের দ্বারা পৃথিবী আবাদ করা। এ পবিত্র বন্ধন সম্পাদনের সাথেই সম্পৃক্ত রয়েছে পৃথিবীর নির্ধারিত স্থায়িত্ব।
বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। এ বন্ধনের দ্বারা নারীকে করা হয় নিশ্চিন্ত আর পুরুষের বল্গাহীন জীবনের দস্যিপনার পাগলা ঘোড়ার মুখে টেনে দেয়া হয় স্থিরতার লাগাম। নারীর দূর্বল ও অসহায় সত্তা খুঁজে পায় আশার আলো আর পুরুষ খুঁজে পায় শারীরিক ও মানসিক শান্তির ফোয়ারা।
বিবাহ একটি চুক্তি। পরস্পরের দ্বারা পরস্পরের দৈহিক, আত্মীক ও সামাজিক সমঝোতার চুক্তি। বিবাহ এমন সম্মন্ধ, যার দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মিলনের বৈধতা উদ্দীষ্ট হয়। বিবাহ এমন চুক্তি, যার দ্বারা স্বামী তার স্ত্রীর সাথে মিলনের অধিকার লাভ করে। এ চুক্তি পরস্পরের সম্মতিক্রমেই হয়ে থাকে। কোনো এক পক্ষের অমত থাকলে এ চুক্তি সম্পাদন হতে পারে না।
চুক্তির মাধ্যমেই পরস্পরের প্রতি পরস্পরের দৈহিক, আত্মীক ও সামাজিক অধিকার সাব্যস্ত হয়। এ অধিকার পরিবার, রাষ্ট্র, সমাজ সবার নিকট স্বীকৃত। শরীয়তে ইসলামিয়াও এই অধিকারকে সমর্থন করে।
যে জাতির বৈবাহিক জীবন যতোটা স্থিতিশীল সে জাতি জীবনাচারে ততোটা তৃপ্ত ও তুষ্ট। বৈবাহিক জীবনের শান্তি পৃথিবীর বুকে স্বর্গসুখের ছোঁয়া এনে দেয়। খুঁজে দেয় অনাবিল সুখের ঠিকানা। কুঁড়ে ঘরে বাস করেও রাজপ্রাসাদের তৃপ্তি অনুভব হয়। পক্ষান্তরে বৈবাহিক জীবনের অশান্তি জাগতিক সকল বিত্ত-বৈভবে মোড়ানো জীবনকেও করে তুলে নরকতূল্য। সুতরাং বৈবাহিক জীবনে সুখের ছোঁয়া পেতে চাইলে স্রষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত নীতিমালা অনুসরণ করেই সুখ খুঁজতে হবে। অন্যথা হলে বাহ্যত সুখী মনে হলেও প্রকৃত দাম্পত্য সুখ কখনোই অর্জন করা সম্ভব নয়।
শরীয়তের বিধান অত্যন্ত চমৎকার।
১. নফকা-সোকনা তথা খোর-পোষ বহনের দায়িত্ব স্বামীর; স্ত্রীর নয়। স্ত্রীর ইনকাম খাওয়া শুরু করলেই ঘটবে বিপত্তি।
২. স্ত্রী যেমন স্বামীর সুখের জন্য নিজের স্বপ্ন-সাধকে কোরবানী করে, তেমনি স্বামীকেও করতে হবে সেক্রিফাইস।
৩. স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অধিকারের চেয়ে ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ, বৈবাহিক জীবন এক-দু’দিনের জন্য নয়; আমরণের সম্পর্ক।
৪. শরীয়ত স্ত্রীকে বলে, শরীয়ত কর্তৃক বৈধ কোনো সমস্যা না থাকলে স্বামীকে স্ত্রী মিলনে বাধা দিলে অভিশপ্ত হতে হবে। আবার স্বামীকে বলে, স্ত্রীকে শারিরিক ও মানসিকভাবে পরিপূর্ণ প্রস্তুত করেই মিলনে লিপ্ত হও।
শরীয়তের প্রতিটি বিধানই সুন্দর। শরঈ বিধান পরিপূর্ণ অনুসরণ করলে “বৈবাহিক ধর্ষণ” শব্দটিরই জন্ম হতো না। যারা এ শব্দের জন্মদাতা তারা চায় স্মরণকালের আগে থেকে চলে আসা এই নিয়মকে ভেঙে দিতে।
তারা চায় সমাজকে কুলাঙ্গার ও জারজ সন্তানের দ্বারা ভরপুর করে দিতে। যদি তা-ই না চাইতো, তাহলে পুরুষের একাধিক বিয়েকে কেনো তারা সম্মতি দিচ্ছে না? পুরুষ একাধিক বিয়ে করলে তো, বৈবাহিক ধর্ষণ (শব্দটির সাথে একমত নই) কমে আসতো।
সমাজ ব্যবস্থা বলে, যতো ইচ্ছে পরকিয়া করো, সমস্যা নেই। একাধিক বিয়ে করলেই সমস্যা। কর্ম ক্ষেত্রে নারীকর্মী তার পুরুষ কলিগ বা বস কর্তৃক যতোই যৌন-হেনস্থার শিকার হোক সমস্যা নেই। শুধু স্বামী তার বৈধ মনোবাঞ্ছা পূরণে চাপাচাপি করলেই সমস্যা।
গত চৌদ্দশত বছরে এজাতীয় কোনো শব্দের সাথে জাতি পরিচিত ছিলো না। ইদানিং ‘প্রথম আলো’ এ শব্দের আমদানি ঘটিয়েছে। তারা চায় বহুকাল থেকে চলে আসা এই সমাজ ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে একটি জারজ ও কুলাঙ্গারেপূর্ণ সমাজ জাতিকে উপহার দিতে। তারা চায় প্রভূর এই পবিত্র জমিন হয়ে উঠুক যিনা-ব্যভিচারের অভয়ারণ্য। হারামযাদার লীলাভূমি।
সময় থাকতেই যদি তাওহীদি জনতা প্রতিবাদী না হয়, যদি ইমাম-খতীব ও সভ্যসমাজ জাগ্রত না হয়, সচেতন জনতা যদি সোচ্চার না হয়, তাহলে শয়তানের দোসররা শিকড় গেঁড়ে বসবে। নখর-থাবার ছিন্নভিন্ন করে দিবে আমাদের সোনার দেশের তাহযীব তামাদ্দুনকে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ইসলাম ও মুসলিম কৃষ্টি-কালচার । অবিশ্বাস ও অনাস্থার বীজ বপন হবে তাদের হৃদকন্দরে। তখন ভাঙনের খেলায় মেতে ওঠা হবে সময়ের ব্যপার। তাই! জাগুন! জেগে উঠুন!! আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন।।

 

প্রধান উপদেষ্টা সমীপে খোলা চিঠি

মাওলানা আরিফ বিন হাবীব

বরাবর
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ!
বিষয় : ‘নারী সংস্কার কমিশন’
স্যার, ভিন্ন ঘরনার মানুষ আপনার কাছে বিভিন্ন দাবি পেশ করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে দাবিগুলো পূরণ করার আগে আপনাকে মনে রাখা উচিত এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী, তাই মুসলমানদের মনে কোনো বিষয়ে আঘাত করা মানে এদেশের বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীকে আঘাত করা।
সম্প্রতিকালে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ কিছু নারী আপনার কাছে ‘নারী সংস্কার কমিশন’ নামে ৩১৮ পৃষ্ঠাব্যাপী একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
একজন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ হিসেবে উক্ত বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা সাহেব এবং বাইতুল মোকাররমের খতীব সাহেবের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।
তারপরও একজন মুসলিম হিসেবে সংক্ষেপে কয়েকটি সাংঘর্ষিক বিষয় আপনার কাছে পেশ করছি।
এক.
‘সম্পত্তিতে সমান উত্তরাধিকার’
উক্ত প্রতিবেদনের একাদশতম অধ্যায়ের ১১.৩.১ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘সম্পত্তিতে নারী পুরুষের সমান অধিকার’ যা সরাসরি কুরআনের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ
“আল্লাহ তোমাদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, পুরুষের অংশ দুই নারীর সমান।” -আন নিসা – ১১
দুই.
‘বহু বিবাহ রোধ’ ‘বহু বিবাহ প্রথা বিলুপ্ত’
পঞ্চম অধ্যায়ের ৩.২.৩ এর ‘খ’ অনুচ্ছেদ এবং তৃতীয় অধ্যায়ের ৩.২.৩.১.১ এর ‘গ’ অনুচ্ছেদে উক্ত দাবিগুলো করা হয়েছে।
এটি সূরা নিসার ৩নং আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক।
فَانۡکِحُوۡا مَا طَابَ لَکُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ مَثۡنٰی وَثُلٰثَ وَرُبٰعَ
“নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের পছন্দ হয় বিবাহ কর দুই-দুইজন, তিন-তিনজন অথবা চার-চারজনকে।” আন নিসা – ৩
নোট.
একটি বিষয় এখানে পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, শর্ত সাপেক্ষে ইসলাম পুরুষের জন্য একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখার বৈধতা দিয়েছে, এ বিষয়ে আলাদা লেখা প্রয়োজন।
গোটা বিশ্বের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নারীদের সংখ্যা পুরুষদের সংখ্যার চেয়ে বেশি। যদি প্রত্যেক পুরুষ শুধু একজন নারীকে বিয়ে করে, তাহলে তার অর্থ এই দাঁড়াবে যে কিছু নারীকে স্বামী ছাড়াই থাকতে হবে, যা তার ওপর এবং সমাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করবে। এটি তার জীবনকে সংকীর্ণ করার পাশাপাশি তাকে বিপথগামিতার দিকে পরিচালিত করতে পারে। এবং এর মাধ্যমে সমাজে অনাচারের পথ প্রশস্ত হতে পারে।
এ ছাড়া বহু কল্যাণ রয়েছে, প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করার অনুরোধ রইল।
তিন.
‘শরীর আমার, সিদ্ধান্ত আমার’
এটি দশম অধ্যায়ে রয়েছে। এই অংশটিও কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক।
اَلَا لَہُ الۡخَلۡقُ وَالۡاَمۡرُ
“স্মরণ রেখ, সৃষ্টি ও আদেশ দান তাঁরই কাজ।” আল আ’রাফ – ৫৪
চার.
নারীদের অসুস্থ হওয়া কুসংস্কার, কুপ্রথা, ইত্যাদি বলা। (দশম অধ্যায়ঃ ১০.২ অনুচ্ছেদ)
এটির দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সূরা বাকারার ২২২ নং আয়াতকে চ্যালেঞ্জ করা।
وَیَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡمَحِیۡضِ ؕ قُلۡ ہُوَ اَذًی ۙ فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ۙ وَلَا تَقۡرَبُوۡہُنَّ حَتّٰی یَطۡہُرۡنَ ۚ فَاِذَا تَطَہَّرۡنَ فَاۡتُوۡہُنَّ مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَکُمُ اللّٰہُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَیُحِبُّ الۡمُتَطَہِّرِیۡنَ
“লোকে আপনার কাছে হায়য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলে দিন, তা অশুচি। সুতরাং হায়যের সময় স্ত্রীদের থেকে পৃথক থেক এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তারা পবিত্র না হয়, ততক্ষণ তাদের কাছে যেয়ো না (অর্থাৎ সহবাস করো না)। হাঁ যখন তারা পবিত্র হয়ে যাবে, তখন তাদের কাছে সেই পন্থায় যাবে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই সকল লোককে ভালোবাসেন, যারা তাঁর দিকে বেশি বেশি রুজু করে এবং ভালোবাসেন তাদেরকে, যারা বেশি বেশি পাক-পবিত্র থাকে।”
আল বাকারা – ২২২
পাচ.
“ট্রান্সজেন্ডার”
চতুর্থ অধ্যায়ের ৪.১ অনুচ্ছেদে ‘জেন্ডার’ বলে পরোক্ষভাবে ট্রান্সজেন্ডারের বিষয়ে বলা হয়েছে, যা কুরআন ও সুন্নাহের সাথে সাংঘর্ষিক, এগুলো ইবলিসের পলিসি,
وَلَاٰمُرَنَّہُمۡ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلۡقَ اللّٰہِ
“তাদেরকে আদেশ করব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে।” আন নিসা – ১১৯
لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ‏
নবী ﷺ ওই সব পুরুষকে লা’নত করেছেন যারা নারীর বেশ ধরে এবং ওইসব নারীকে যারা পুরুষের বেশ ধরে। বুখারী- ৫৮৮৫
ছয়.
‘বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমান অধিকার'(ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ ৬.৩.১ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদ)
اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوۡنَ عَلَی النِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ اللّٰہُ بَعۡضَہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ وَّبِمَاۤ اَنۡفَقُوۡا مِنۡ اَمۡوَالِہِمۡ
“পুরুষ নারীদের অভিভাবক, যেহেতু আল্লাহ তাদের একের ওপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু পুরুষগণ নিজেদের অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে।” আন নিসা – ৩৪
নোট:-
কোন নারী পুরুষ কর্তৃক নির্যাতনের স্বীকার হলে সেখানেও ইসলামের বিধান রয়েছে, সে বিষয়ে আলেমদের থেকে পরামর্শ নিলেই চলবে।
সাত.
‘দত্তক শিশুকে গর্ভজাত শিশুর ন্যায় বিধান করা’
(তৃতীয় অধ্যায়ঃ ৩.২.২.১.৪ এর ‘খ’ অনুচ্ছেদ)
এটিও একটি জোরপূর্বক প্রস্তাবনা, কুরআন এ বিষয়ে স্পট বার্তা দিয়েছে,
وَمَا جَعَلَ اَدۡعِیَآءَکُمۡ اَبۡنَآءَکُمۡ ؕ ذٰلِکُمۡ قَوۡلُکُمۡ بِاَفۡوَاہِکُمۡ ؕ وَاللّٰہُ یَقُوۡلُ الۡحَقَّ وَہُوَ یَہۡدِی السَّبِیۡلَ
আর তোমাদের মুখের ডাকা পুত্রদেরকে তোমাদের প্রকৃত পুত্র সাব্যস্ত করেননি। এটা তো তোমাদের মুখের কথামাত্র। আল্লাহ সত্য কথাই বলেন এবং তিনিই সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। আল আহ্‌যাব – ৪
আট.
‘শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান’ (দ্বাদশ অধ্যায়ঃ ১২.৩.১১ এর ‘জ’ অনুচ্ছেদ)
এটা ইলাহী গজব ডেকে আনার প্রস্তাবনা, এই জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করলে কিছুদিন পর ধর্ষকরাও শ্রম অধিকার চেয়ে বসবে।
اَلزَّانِیَۃُ وَالزَّانِیۡ فَاجۡلِدُوۡا کُلَّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا مِائَۃَ جَلۡدَۃٍ ۪ وَّلَا تَاۡخُذۡکُمۡ بِہِمَا رَاۡفَۃٌ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۚ وَلۡیَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآئِفَۃٌ مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
“ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী তাদের প্রত্যেককে একশত চাবুক মারবে। তোমরা যদি আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখ, তবে আল্লাহর দীনের ব্যাপারে তাদের প্রতি করুণাবোধ যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত না করে। আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।” আন নূর – ২
নয়.
‘কোনো ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করে সংবিধান শুরু করা উচিৎ নয়’
এটা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলামকে হেয় করার চেষ্টা মাত্র।
اِنَّ الدِّیۡنَ عِنۡدَ اللّٰہِ الۡاِسۡلَامُ
“নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট (গ্রহণযোগ্য) দীন কেবল ইসলামই।” আলে ইমরান – ১৯
وَمَنۡ یَّبۡتَغِ غَیۡرَ الۡاِسۡلَامِ دِیۡنًا فَلَنۡ یُّقۡبَلَ مِنۡہُ ۚ وَہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ
“যে ব্যক্তিই ইসলাম ছাড়া অন্য কোনও দীন অবলম্বন করতে চাবে, তার থেকে সে দীন কবুল করা হবে না এবং আখিরাতে সে মহা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” আলে ইমরান – ৮৫
অতএব, জনাবের নিকট আকুল আবেদন এই যে, কিছু অসাধু মানুষের কুরুচিপূর্ণ চাহিদার কাছে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসকে আঘাত করে তাদেরকে কষ্ট দিবেন না।
জীবনের শেষ বেলায় এসে একজন গর্বিত মুসলিম হিসেবে সারা পৃথিবীকে ভালো কিছু উপহার দিয়ে সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকার এটাই আপনার সুবর্ণ সুযোগ।
নিবেদক
একজন বাঙালি মুসলিম
আরিফ বিন হাবিব

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ