জামিয়া পটিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার
মজলিসে ইলমির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া আন্তর্জাতিক মানের একটি দীনী শিক্ষালয়। ইসলামী শিক্ষা-দীক্ষা ও ছাত্রদের উন্নত চরিত্র গঠনে জামিয়ার ভূমিকা অবিস্মরণীয় ও ঈর্ষণীয়।
কুতুবে জমান আল্লামা মুফতি আজিজুল হক (রহ.) ১৩৫৮ হিজরী সালে নিষ্ঠা ও ইখলাসের ওপর ভিত্তি করে ‘জমিরিয়া কাসেমুল উলুম’ নামে এটির ভিত্তি স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনিই মাদরাসার মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেন। ১৩৭৭ হিজরী সালে তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে তিনি নিজেই হযরত আল্লামা আলহাজ শাহ মুহাম্মদ ইউনুস (হাজী সাহেব হুযুর রহ.)-এর নিকট মাদরাসা পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেন। তিনি তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ও নিজ দূরদর্শী কর্মতৎপরতার মাধ্যমে মাদরাসাটিকে পরিণত করলেন বৃহত্তর জামিয়ায়। ১৪১২ হিজরী সালে তিনি তাঁর প্রভুর দরবারে গমন করেন। তাঁর ইন্তেকালের পর এ গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয় হযরত আল্লামা শায়খ হারুন ইসলামাবাদী (রহ.)-এর ওপর। তাঁর জ্ঞান ও প্রতিভা, যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে জামিয়ার উন্নতি ও অগ্রগতির নতুন ধারা সূচিত হয়। ১৪২৪ হিজরী সালে তাঁর ইন্তেকালের পর আল্লামা নুরুল ইসলাম কদীম (রহ.)-এর নিকট অর্পিত হয় জামিয়া পরিচালনার মহান দায়িত্ব। তাঁর শারীরিক দুর্বলতার দিকে লক্ষ করে ১৪২৯ হিজরী সালে তিনি নিজেই মজলিসে শুরার মাধ্যমে বিশিষ্ট ইসলামী বুদ্ধিজীবী, হাকীমুল ইসলাম আল্লামা মুফতি আবদুল হালীম বোখারী (রহ.)-এর হাতে সোপর্দ করেন এ গুরুদায়িত্ব।
তিনি ২০২০ সালে প্রথমত মজলিসে আমেলার, অতঃপর মজলিসে শুরার মাধ্যমে আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ (দা. বা.)-কে নায়েবে মুহতামিম মনোনীত করেন এবং তাঁর মাধ্যমে দীর্ঘ দুই বছর যাবৎ জামিয়ার আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়াদির আঞ্জাম দিয়ে যান। বিগত ২২শে জুন ২০২২ সালে আল্লামা বোখারী (রহ.) ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের পর জামিয়ার সংবিধান অনুযায়ী প্রথমত তিনি ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম হন, অতঃপর ৭ই জুলাই ২০২২ ইংরেজি তারিখের মজলিসে শুরার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মতে তাঁর হাতে মুহতামিমের এ গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়।
বর্তমানে আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ (দা. বা.)-এর সুষ্ঠু পরিচালনায় জামিয়া তার লক্ষ্যপানে এগিয়ে চলছে। তিনি তাঁর চিন্তা ও চেষ্টা, নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞা, মনোবল ও তাকওয়া দ্বারা জামিয়াকে শিক্ষা-দীক্ষায় বহুমুখী উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর সুন্দর ব্যবস্থাপনা, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো সুদৃঢ়করণ, আর্থিক খাতের উন্নতি সাধন ও দেশব্যাপী সুনাম অর্জনে এক অন্যান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন আল-হামদু লিল্লাহ।
আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযা (দা. বা.) মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে তিনি জামিয়া পটিয়ার গৌরবোজ্জ্বল অতীত সংরক্ষণের পাশাপাশি বর্তমানকে সমৃদ্ধ ও ভবিষ্যতকে বর্ণিল করার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর নিষ্ঠাপূর্ণ সুষ্ঠু ও সুদক্ষ পরিচালনায় জামিয়া পটিয়ায় বহুমুখী উন্নয়ন-উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। তাঁর সফলতার একটি বড় রহস্য হচ্ছে তিনি যেকোনো কাজে মজলিসে এন্তেজামিয়া ও মজলিসে ইলমির পরামর্শক্রমেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন।
তাই তাঁর হাতে সূচিত হচ্ছে জামিয়ার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সিলসিলা। জামিয়া এখন উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা জগতে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। আমরা তাঁর সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, একটি মহল জামিয়ার উন্নতি ও অগ্রগতির প্রতি ঈর্ষাণ্বিত হয়ে জামিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন ধরে অনলাইন-অফলাইনে স্বার্থপরতার বশীভূত হয়ে জামিয়ার সম্মানিত মুহতামিম সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, অবাস্তব ও ভিত্তিহীন লিফলেট প্রকাশ করছে।
তাতে জামিয়ার ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং হিতাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে জামিয়া সম্পর্কে সন্দেহ ও ভুল ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা লক্ষ করছি যে, বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন অজ্ঞাত ব্যক্তি পরিচয় গোপন করে ফেক আইডি ব্যবহার করে জামিয়া সম্পর্কে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাই সকলকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। এসবকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো যৌক্তিক ও নৈতিক ভিত্তি নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিত্তিহীন এমন অপপ্রচার দ্বারা আমরা মজলিসে ইলমির সকল সদস্য চরমভাবে ব্যথিত ও মর্মাহত হয়েছি। তাই আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সর্বসম্মতিক্রমে এর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জামিয়া প্রধানের নিকট সুপারিশ করছি। প্রয়োজনে দেশীয় আইনে এসব নোংরামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে বিনীত অনুরোধ করছি।
মজলিসে ইলমির সদস্যগণের নাম ও স্বাক্ষর
- আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ (দা. বা.)
মহাপরিচালক, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
- হযরতুল আল্লামা মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহ (দা. বা.)
শায়খুল হাদীস, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
- হযরতুল আল্লামা মাওলানা আমীনুল হক (দা. বা.)
সদরে মুহতামিম, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
- হযরতুল আল্লামা মাওলানা আবু তাহের নদভী (দা. বা.)
নায়েবে মুহতামিম, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
- হযরতুল আল্লামা মুফতি জসীমুদ্দিন (দা. বা.)
নাযেমে তালিমাত, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
- হযরতুল আল্লামা মাওলানা যাকারিয়া আজহারী (দা. বা.)
সহকারী নাযেমে তালিমাত, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
ইত্তেহাদুল মাদারিসের যৌথসভা অনুষ্ঠিত
গত ১০ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ মোতাবেক ২৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া চট্টগ্রামে দারুল হাদীস মিলনায়তনে আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের সাধারণ, শুরা ও পরীক্ষা কমিটির যৌথসভা তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি, শায়খুল হাদীস ও ফকীহুদ্দীন হযরত আল্লামা মুফতী আহমাদুল্লাহ (দা. বা.)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ যৌথসভায় উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের সম্মানিত মহাসচিব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ (দা. বা.)।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপস্থিত ইত্তেহাদ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইত্তেহাদের এসব আয়োজন গতানুগতিক কোনো অনুষ্ঠান নয়। সেইসাথে ইত্তেহাদ একক কর্ম পরিচালনার মাধ্যমে পরিচালিত কোনো কর্মক্ষেত্র নয়, বরং ইত্তেহাদ সবার, তাই সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অর্জিত কোনো সফলতার কৃতিত্বে যেমনভাবে সবারই অংশীদারিত্ব আছে, তেমনি অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ব্যর্থতার দায়ও সকলের ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সেসব সফলতা-ব্যর্থতাকে সামনে রেখে পরস্পর পরামর্শ আদান প্রদানের জন্যই আমাদের আজকের এ আয়োজন।
উপস্থিত মুহতামিমবৃন্দকে তাঁদের গুরুদায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে মাদরাসা পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততার পরিচয় দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থায় পরিচালনা প্রধানের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক, ভিসি, প্রিন্সিপালসহ নানা ধরণের শব্দ ব্যবহার করা হলেও কওমি মাদরাসায় পরিচালনা প্রধানের ক্ষেত্রে ‘মুহতামিম’ শব্দ ব্যবহৃত হয়। এটি ‘হাম’, পেরেশানি, অত্যাধিক ফিকির এবং অনেক বেশি দায়িত্বশীলতার প্রতি ইঙ্গিত বহন করে।
তিনি মাদরাসার আসাতিযা ও সংশ্লিষ্টদেরকে যোগ্য থেকে যোগ্যতর করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদরিবুল মুআল্লিমীনসহ ইত্তেহাদের নানামুখী পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন। বক্তব্যের সমাপ্তিলগ্নে তালীমের পাশাপাশি দীনি মেজাজ তৈরির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
উদ্বোধনী বক্তব্যের পর আঞ্জুমানের দফতর সম্পাদক মাওলানা সাঈদুল হক বার্ষিক হিসাব বিবরণী পেশ করলে উপস্থিত সকলে এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর তিনি যৌথসভার মূল এজেন্ডার বিষয়ে উপস্থিত সকলের উন্মুক্ত পরামর্শ ও মতামত গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের সহ-সভাপতি ও জামিয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়ার নায়েবে মুদীর মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলিল। তিনি তাঁর বক্তব্যে ইত্তেহাদকে আরও বেগবান করতে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট ও লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করে আঞ্জুমানের বর্তমান মহাসচিবের সার্বিক কর্মকাণ্ডের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
যৌথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী জামিয়া মাদানিয়া সিলোনিয়ার মুহতামিম মাওলানা সাইফুদ্দীন কাসেমী, ফেনী দাগনভূঞা আশরাফুল উলুম মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা মুহিউদ্দীন, কক্সবাজার রামু রাজারকুল মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুহসিন শরিফ, ধাউনখালি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুসলিম, জামিয়া টেকনাফের মুহতামিম মুফতী কেফায়েতুল্লাহ শফিক, চট্টগ্রাম জামিয়া মোজাহেরুল উলুম-এর মুহতামিম মাওলানা লুকমান হাকিম, টেকনাফ হ্নীলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আফসার, চন্দ্রঘোনা ইউনুসিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নিযামুদ্দীন ও মহেশখালী ঝাপুয়া মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা ফয়যুল্লাহ প্রমুখ।
সভায় ইত্তেহাদ অধিভুক্ত সকল মাদরাসার মুহতামিম, নাযেমে তালিমাত ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলবৃন্দ উপস্থিত থেকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত পেশ করেন। অনুষ্ঠানের শেষে বিগত ১৪৪৩-৪৪ হিজরী শিক্ষাবর্ষের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় বিভিন্ন মারহালায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নগদ ৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
আল-জামিয়া পটিয়ায় সপ্তাহব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত
১২ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ তাহফীজুল কুরআন সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত হয়েছে। দেশের সর্বত্রে আরবি লাহানে বিশুদ্ধ তেলাওয়াতের যোগ্য লোক গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুগযুগ ধরে ইমাম-মুয়াজ্জিন, আলেম-হাফেজ ও নূরানী মুআল্লিমদের জন্য কুরআন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ২৩শে সেপ্টেম্বর শনিবার থেকে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ায় সপ্তাহব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হলো। প্রশিক্ষণ কোর্সে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৮৩ জন শিক্ষকমণ্ডলি অংশগ্রহণ করেন। কোর্স শেষে সকলকে সনদপত্র প্রদান করা হয়। সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তাহফীজুল কুরআন সংস্থার সম্মানিত মহাসচিব ও আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার সুযোগ্য মুহতামিম আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ (দা. বা.)।
তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আপনারা হলেন কুরআনের খাদেম। যে যাই মনে করুক না কেন, আল্লাহর রসুল (সা.)-এর ভাষায় কুরআনের খাদেমরাই হলেন সময়ের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। তাই আপনাদেরকে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিতে হবে। আপনার সুনাম মানে সকল আলেম-হাফেজের সুনাম। অনেক সময় কারো একটি ভুলের কারণে, কোন একজনের দুর্নামের কারণে, মানুষ গোটা আলেম সমাজের দুর্নাম করে থাকে। অতএব আমাদেরকে সর্তক থাকতে হবে। উন্নত চরিত্র এবং কোমল ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে প্রহার করা একেবারেই পরিহার করতে হবে। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে, আনন্দ-আহ্লাদের মাধ্যমে ছাত্রদের মন জয় করে নিতে হবে। বকাঝকা এবং রূঢ় ব্যবহারের পরিবর্তে সুন্দর ও বিনম্র ভাষায় তাদেরকে অনুগত করার চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, এ সংক্ষিপ্ত কোর্সে হয়ত সবকিছু আয়ত্ত করা আপনাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে নিঃসন্দেহে আপনাদের মধ্যে নিজেদের দুর্বলতা উপলব্দি করার অনুভুতি জাগ্রত হয়েছে। নিজের তিলাওয়াতকে সুন্দর ও হৃদয়াগ্রাহী করার একটি প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। এটিই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, ইনশা আল্লাহ।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ তাহফীজুল কুরআন সংস্থা জামিয়া পটিয়ার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি সংস্থা। এ সংস্থার অধীনে হাফেজ সাহেবনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। পূর্বে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জামিয়া পটিয়ায় এসে প্রশিক্ষণ নিতে হত। কিন্তু বর্তমানে টেকনাফ, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, মিরশ্বরাই ও ফেনী ইত্যাদি স্থানেও সংস্থার তত্ত্বাবধানে তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বশেষ জামিয়া পটিয়ায় সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্সটি আজ সমাপ্ত হলো।
সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামিয়ার সদরে মুহতামিম আল্লামা আমিনুল হক (দা. বা.), মাওলানা হাফেজ আখতার, মাওলানা বুরহানুদ্দীন, মাওলানা সলিমুদ্দীন মাহদি, মাওলানা হাফেজ জালালুদ্দীন ও মাওলানা কামালুদ্দীন প্রমুখ।