শুভ্র পোশাক
মোহাম্মদ আবদুল ওয়াছেয়
শুভ্র পোশাক ভদ্র পোশাক দেখতে লাগে বেশ
শুভ্র পোশাক আরাম পোশাক পরলে জুড়ায় রেশ৷
আলেম সমাজ-ভদ্র সমাজ স্বস্তি ফিরে পায়;
শুভ্র পোশাক পরলে তাদের মনটা জুড়ে যায়৷
শুভ্র পোশাক পরে সবাই দুই ঈদের দিনে
শুভ্র পোশাক সবার মনে আনন্দ আনে৷
মুযদালিফা, মক্কা, মিনা সাজে শুভ্রতায়,
হজ্ব মৌসুমে ইহরাম বাঁধে শুভ্র পোশাক গায়৷
শুভ্র পোশাক স্বপ্নে দেখে পুরোহিত বলে
শুভ্র পোশাক নবীর পোশাক ইসলাম যে বলে৷
স্বপ্নে এসে কেউবা বলে তাদের দলে হও
শুভ্র পোশাক পরে তুমি ধন্য এবার হও৷
হরেক রকম স্বপ্ন দেখি অসত্যে ভরা
এটাও হয়ত! কুহক ছলের কোন পায়তারা৷
তাগিদ দিয়ে বললেন তিনি আবারও এসে
শুভ্র পোশাক পরে সাজো তাদেরই বেশে৷
খ্রিস্টধর্মে ছিল যাহার লক্ষ লক্ষ ফ্যান
ঈমান এনে নামটা তাহার ইবরাহীম রিচম্যান৷
মুসলিম হয়ে আরবদ্বীপে আনন্দে তিনি
চৌদ্দ বছর গির্জাতে যাজক ছিলেন যিনি৷
শুভ্র সাজে সেজে এবার মরুর ভূমে সে
যে ভূমিতে দয়াল নবী কাঁদিতেন বসে৷
শুভ্র সাজে সাজাও প্রভু! সকল পাপীকে
রাতে দিনে মগ্ন যেজন নাফরমানিতে৷
শুভ্র পোশাক নয়তো শুধু শুভ্র অন্তর চাই!
নিত্য দিনের পাপের লাগি প্রভু! ক্ষমা চাই৷
আজ হবে বাঘবলি
মুজতাহিদ ফারুকী
ওৎ পেতে আছে মস্ত বাঘ
পথে যেতে হঠাৎ থেমেছি, দাঁড়িয়েছি রুদ্ধশ্বাস
টানটান নিষ্কম্প সজাগ
সব পেশি আগুনের নিয়মে নরম
আক্রান্ত হওয়ামাত্র বজ্রচেরা বিদ্যুতের মতো ক্ষিপ্রতায়
খেলতে হবে অবিকল্প মরণের খেলা
একলা বাউয়াল জানে বাঘবনে শিকারির অরিজব্দ কলা।
হাতিয়ার আছে বটে ঝকঝকে পাগালের দা
বলির পাঠার ধর এক কোপে নামে মার থানে
আজ জাগে জিন্দাপীর,
অন্ধকার বাদাবনে জাগে গণদেবতা সরব
আজ বনবিবির উঠানে বাঘবলি হবে।
ক্রনোলজি
মুসা আল হাফিজ
নিশ্বাস দরকার। ঘুমও দরকার।
কিন্তু এমন রজনী আসবে, যখন
নিজের স্বাভাবিক নিশ্বাসের শব্দে ঘুমানো যাচ্ছে না!
চোখ দরকার। চেহারাও দরকার।
কিন্তু এমন উপসংহার আসবে,যখন ‘প্রিয়—চেহারায়
চোখের জন্য জমা আছে শুধু বিষ!
দাঁত দরকার। জিহ্বাও দরকার।
কিন্তু সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার খেতে
জিহ্বাকেই হয়তো কামড়ে দেবে দাঁত!
মগজ দরকার। শরীরও দরকার।
কিন্তু মগজটি উলঙ্গ হয়ে গেলে শরীরে
লজ্জা লাগাবার কোনো পোশাক জগতে মিলবে না!
ইলহাম দিও
আলাউদ্দিন কবির
চেরাগ হতে বিদ্যুতে
মাটি হতে চৌকিতে
ঘর থেকে বিল্ডিংয়ে
মফস্বল থেকে সিটিতে
কী সুকৌশলে আনলে প্রভু সময়ের সাথে
তোমার এই পাপীতাপী কৃতঘ্ন বান্দাকে!
চোখে জল ছলকায়
ভাবনারা দোল খায়
পৃথিবীর জলসায়
কতো রূপ কতো রঙ
করুণায় প্রিয় করে দিলে প্রভু আমাকেও
কী করে শোকর হবে, দিও ইলহাম দিও!
রাজনীতিটাই কদমবুচির
মাওলানা রুহুল আমিন
জ্ঞান সাধনা বই ম্যাগাজিন
সত্যভাষণ সবই ছাড়ি,
দুই হাতে নাও তেলের শিশির
বগলে নাও ডিকশনারী।
খোশামোদের তোষামোদের
শব্দগুলো রপ্ত করো,
সুযোগ পেলেই তেলের শিশি
উপুড় করে মালিশ করো।
জ্বি হুজুরের দলে ভিড়ে
দাও জুড়ে গান কর্তা খুশির,
বুঝলে কি না এখন দেশে
রাজনীতিটাই কদমবুচির।
অলসতা মারাত্মক ব্যাধি
সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম
কঠোর পরিশ্রমে অধিক মনোযোগে করে যে অধ্যয়ন,
ফলায় রত্ন মানিক ফলায় সোনার ফসল যা করেছিল বপন।
সময় অমূল্যধন জীবনে কখনো আসিবে না ফিরে,
হোক না যে রাজমন্ত্রী তবুও সময় তাকে গ্রাস করিবে ধীরে।
অধম মূর্খ যে জন সময়ের মূল্য সে বুঝিবে না কভু,
করিলেও বেত্রাঘাত লজ্জা ভয় নাহি তার যাই বল না তবু।
নীতিহীন অলস যে সে তো ধ্বংসের দ্বারে আক্রান্ত এ রোগে,
আপাদমস্তকে তার বিষের ছড়াছাড়ি এই রোগে খায় তারে।
অতীতের মহাজন আলস্য জড়তা দিয়েছে বিসর্জন,
শত মহা কীর্তি রেখে গেছে তারা ধন্য তাদের জীবন।
অনাহার-অনাদর ত্যাগ-তিতিক্ষা শত করিয়াছে বরণ,
তাই মর্যাদার মুকুট পড়িয়াছে শিরে পাইছে উঁচু আসন।
যে সব মহাপুরুষ আলস্য জড়তা করেছিলেন কুরবান,
তারাই সকল যুগে বৈরি পরিবেশেও হয়েছেন মহীয়ান ।
যারা আল্লাহর পথে করিবে পরিশ্রম তাদেরই উঁচু সম্মান,
যুগে-যুগে তারাই মহা নিখিল বিশ্বে উড়াবে জয় নিশান ।
উদ্যোগ পরিশ্রম আর মনোযোগের পোশাক যে করে পরিধান,
সব কালে সব দেশে বরেণ্য সে জন আর ভয়হীন সাহসী প্রাণ ।
কঠোর পরিশ্রমী বুঝে সময় রত্ন তো মহা মূল্যবান,
ইহার মূল্য দিলে যতই কঠিন হোক না/হবেই তার সমাধান।
জ্ঞানীর জীবন
মাহমুদুল হাসান নিজামী
পৃথিবীটা সাজিয়ে দেন
দার্শনিক যে গুণীজন,
অগোছালো থেকে যায়
সেই মনীষীর জীবন।
ব্যতিব্যস্ত থাকেন যিনি
জ্ঞানের আলো দর্শনে,
শরৎকাল
উমর ফারুক
ভাদ্র আশ্বিন দুমাস জুড়ে
চলে শরৎকাল
কাশবনেরা সেজে ওঠে
সুঘ্রাণ ছড়ায় তাল।
দিনের বেলা সাদাটে মেঘ
থাকে নীলাকাশে
সাদা সাদা বক উড়ে যায়
দখিনা বাতাসে।
শরৎ আসে শোভা নিয়ে
হাসে শিউলি ফুল
বিলে ঝিলে সবখানেতে
ফোটে শাপলা ফুল।
তামান্না
ইমরান বিন তালিব
আসিবে যখন বিদায়ী বেলা,
মরণ ঘণ্টা বাজিবে যবে;
দেখা দিও মোর ওগো প্রিয়নবী
চুপিচুপি শুধু মোরে।
বাতায়নে মোর দাড়াবে যখন,
খোদার গায়েবি দূত;
দুচোখ বহিয়া গড়িবে পানি,
একি সাকরাতে মউত!
শিয়রের পাশে ধ্বনিবে যখন,
তেলাওয়াতে কোরআন;
প্রেমানুরাগি আত্মা যবে
হইবে রে লবেজান;
তবে, তৃষার্ত এই আঁখিযুগল;
তব্ দিদারে সিক্ত হউক,
মরনজ্বালা রুখিতে তো নয়,
এ আমার মনোশোউক!!