শুক্রবার-১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি-১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাযহাব অনুসরণের অপরিহার্যতা

মুফতি জসিমউদ্দীন

الحمد لله، نحمده ونستعينه، ونستغفره، ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا، من يهده الله فلا مضل له، ومن يضلله فلا هادي له، ونشهد أن لا إلٰه إلا الله ونشهد أن سيدنا وسيدنا ومولانا محمد عبده ورسوله، أرسله بالحق بشيرًا ونذيرًا وداعيًا إلى الله بإذنه وسراجًا منيرًا، اللّٰهم صل علىٰ محمد النبي الأمي وآله وأصحابه وبارك وسلم، أما بعد! فأعوذ با لله من الشيطان الرحيم، بسم الله الرحمٰن الرحيم: [يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اَطِيْعُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَ اُولِي الْاَمْرِ مِنْكُمْۚ ۰۰۵۹] {النساء: 59}.

یہ رشیدی باغ ہو اور قاسمی گلزار ہ

یہ ضمیری فیض کا ایک خوشنما دربار ہو

সম্মানিত সদরে মজলিস, উপস্থিত ওলামায়ে কেরাম ও বেরাদারানে ইসলাম! আজকে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার বার্ষিক সভা। আমাদের আকাবিরগণ যে কয়েকটি মাদরাসা ইখলাসের সাথে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এর মধ্যে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া অন্যতম। দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার পূর্বে ইংরেজরা এদেশের অজস্র মাদরাসা বন্ধ করে দিয়েছিলো।

অতঃপর হাজার হাজার ওলামায়ে কেরামের শাহাদতের পর আকাবিরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বপ্নযোগে প্রিয়নবী (সা.)-এর দেখানো ম্যাপ অনুযায়ী দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জামিয়া আহলিয়া মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর জামিয়া আরাবিয়া জিরি, তারপর জামিয়া পটিয়া।

এভাবে একের পর একশত-সহস্র কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে কওমি মাদরাসার মাধ্যমে দীনের হেফাজত ও দীনপ্রচারের এ মহান কাজ অব্যাহত আছে এবং কেয়াতত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

সম্মানিত উপস্থিতি! আমাদের আকাবির সবাই একে অপরের সাহায্য সহযোগিতা করে যেভাবে দীনের খেদমত করেছেন এবং মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাদেরকেও এবং আমাদের পরবর্তী সবাইকে কেয়ামত পর্যন্ত সেইভাবে কাজ করার তওফিক দান করুন, আমিন।

আমাকে মাহফিল এন্তেজামিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ‘তাকলীদে আয়িম্মা’ (দীনের ওপর চলার জন্য চার ইমামের কোনো একজনের অনুসরণ করা) সম্পর্কে কিছু কথা বলার জন্য। দেখুন, ‘তাকলীদে আইম্মা’ এটি কী জিনিস? আমি সেসম্পর্কে কোনো ভুমিকা ছাড়াই আলোচনা করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদ ইরশাদ করেন,

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اَطِيْعُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَاُولِي الْاَمْرِ مِنْكُمْۚ ۰۰۵۹

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে মেনে চলো এবং আল্লাহর রসুলকে মেনে চলো এবং তোমাদের মধ্যে যারা ‘উলুল আমর’ আছেন তাদেরকে মেনে চলো।’[1]

উলুল আমর কাকে বলে? হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.), হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাযি.), হযরত হাসান বসরী (রহ.) ও আতা ইবনে আবু রাবাহ (রহ.) প্রমুখ বড় বড় সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণ উলুল আমরের তাফসীর করেছেন উলুল ফিকহি ওয়াল ইলমি’। অর্থাৎ ইলম ও ফিকহের অভিজ্ঞ আলেমগণ হলেন উলুল আমর।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ তাআলার অনুসরণ করো, আল্লাহর রসুলের আনুগত্য করো এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রদত্ত ফিকহবিদ ও আহলে ইলমদের অনুসরণ করো।’

দেখুন, কুরআনের তাফসীর হলো হাদীস। আর হাদীসের তাফসীর হলো ফিকহ। এজন্য বলা হয়েছে ‘উলুল ফিকহি ওয়াল ইলমি’। ইলম ও ধর্মীয় জ্ঞান রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে সাহাবায়ে কেরাম গ্রহণ করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরাম থেকে তাবেয়ীগণ গ্রহণ করেছেন। এভাবে তবে-তাবেয়ীন এবং মুজতাহিদ ইমামগণ ধারাবাহিকভাবে অর্জন করে এসেছেন।

সেজন্য আল্লাহ তাআলা وَاَطِيْعُوا اُولِي الْاَمْرِ বলেননি। বরং وَاُولِي الْاَمْرِ বলেছেন এবং সেটিকে الرَّسُوْلَ -এর ওপর আতফ করেছেন। এর অর্থ হলো, রসুলুল্লাহ (সা.) যেভাবে কুরআনের ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন সে অনুযায়ী যারা ফিকহের শিক্ষা অর্জন করেছেন তাঁদের অনুসরণ করো। তাহলে বুঝা গেল, সমস্ত মুজতাহিদ ইমাম, যারা মাসআলা উদ্ঘাটন করেছেন, তারা রসুলের হাদীসসা মনে রেখেই করেছেন।

কুরআন এবং হাদীস থেকে মাসআলা উদ্ঘাটনের জন্য যারা মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন এবং সে অনুযায়ী মাসআলা বের করেছেন, তারাই হলেন মুজতাহিদ ইমাম। তাদের মতামত গ্রহণ করে চলা মানে কুরআন-হাদীসের ওপর আমল করা। তাই তাদেরকে অনুসরণ করতে হয়।

কুরআনে করীম ইসলামী জিন্দেগির জন্য একটি গাইড লাইন। যেহেতু আল্লাহ তাআলা কুরআনে করীমে সকল আহকাম বলে দিয়েছেন। আর রসুলুল্লাহ(সা.) ব্যবহারিকভাবে তা আমল করে দেখিয়ে দিয়েছেন। যেমন- আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَارْكَعُوْا مَعَ الرّٰكِعِيْنَ۰۰۴۳

‘তোমরা রুকুকারীদের সাথে রুকু করো।’[2]

কেমন করে রুকু করবেন? সেটি নবী করীম(সা.) শিক্ষা দিয়েছেন। তেমনি এমন অনেক বিষয় আছে যার সমাধান সরাসরি কুরআনেও নেই হাদীসেও নেই। সেক্ষেত্রে মুজতাহিদ ইমামগণ কুরআন-হাদীসের ওপর ভিত্তি করে এগুলোর সমাধান দিয়ে থাকেন। আর এটিকে বলা হয় ইজতিহাদ। যারা ইজতিহাদের যোগ্য তাঁদেরকে মুজতাহিদ বলা হয়।

বড় বড় প্রধান মুজতাহিদ ইমাম হলেন চারজন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলেন, ইমামে আযম আবু হানিফা (রহ.)। তিনি কুরআন-হাদীস থেকে প্রায় 13 লক্ষ মাসআলা গবেষণা করে বের করেছেন।

অতঃপর ইমাম মালেক (রহ.), ইমাম শাফেয়ী (রহ.) ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-কে ইমামে আযম বলা হয়। কারণ তিনি বয়সের দিক দিয়ে অপর তিন ইমামের চেয়ে বড় ছিলেন। যেমন- ইমাম মালেক (রহ.) ৯৫ হিজরীতে জন্ম গ্রহণ করেন। আর ইমাম আবু হানিফা (রহ.) জন্ম গ্রহণ করেন ৮০ হিজরীতে। আর তিনি মৃত্যু বরণ করেন ১৫০ হিজরীতে। আর সেই বছর ইমাম শাফিয়ী (রহ.) জন্ম লাভ করেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) ইমাম শাফিয়ী (রহ.)-এর ছাত্র ছিলেন। তাঁর জন্ম ২০৪ হিজরীতে।

আবার ইলমের দিক দিয়েও বড় ছিলেন ইমাম আবু হানিফা (রহ.)। তাঁর ইলমী গভীরতা সম্পর্কীয় একটি ঘটনা ইমাম মালিক (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে। একবার ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ইমাম মালেক (রহ.)-এর সাথে মসজিদে নববীতে বসে আলোচনা করছিলেন। তখন ইমাম মালেক (রহ.)-এর ছাত্ররা বললেন, কোথায় থেকে অপরিচিত একজন লোক এসে আমাদের শায়েখের সাথে তর্ক-বিতর্ক করছেন?! তখন ইমাম মালিক (রহ.) তাঁদেরকে বললেন, আরে তিনি হচ্ছেন ইমাম আবু হানিফা। তাঁর কাছে এত ইলম আছে যে, তিনি যদি এক টুকরো কাঠকে সোনা বলে দাবি করেন, তাহলে তিনি প্রমাণ করে দেখাতে পারবেন। আর ইমাম শাফিয়ী (রহ.) বলেন, ফিকহের ক্ষেত্রে সমস্ত মানুষ ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর পরিবার সমতুল্য। আর যদি ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর কিতাব না হতো, তাহলে আমি এত বড় ফকীহ হতে পারতাম না। আর ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) হলেন ইমাম শাফিয়ী (রহ.)-এর ছাত্র। তাহলে ইলমের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় ছিলেন আবু হানিফা (রহ.)।

আমরা ইমাম আবু হানিফার মাযহাবকে অনুসরণ করি। কেউ কেউ বলে, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) হাদীস জানেন না? অথচ ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর একনিষ্ঠ ছাত্রছিলেন ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.)। তিনি অসংখ্য সহীহ হাদীসের পাশাপাশি প্রায় 20000 মতান্তরে 40000 জাল হাদীসও জানতেন।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর নিকট ৭০০০০ হাদীসের মধ্য থেকে নির্বাচিত হাদীস সংকলন হলো কিতাবুল আসার যা হাদীসের প্রসিদ্ধ কিতাবাদির মধ্যে অন্যতম ও সর্বজন স্বীকৃত। এ কিতাবের ৪০টি নুসখা আছে। এর মধ্যে সাতটি প্রসিদ্ধ। বলা হয়, এটি সর্বপ্রথ মহাদীসের কিতাব। তাই তারা ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-কে প্রথম হাদীস সংকলনকারী বলেছেন।

আবার অনেকে বলে, হানাফী মাযহাবে হাদীসের ওপর আমল করা হয় না। অথচ ইমাম আবু হানিফা (রহ.) কুরআন-হাদীসের ওপর এমনভাবে আমল করেছেন, অন্য কোনো মাযহাবে যার দৃষ্টান্ত নেই। যেমন- এক হাদীসে আছে, রসুলুল্লাহ (সা.) তাকবীরে তাহরীমার সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়েছেন। অপর এক হাদীসে আছে, তিনি সীনা পর্যন্ত হাত উঠিয়েছেন। দেখুন, আহলে হাদীস যারা তাকলীদ মানে না এবং কোনো মাযহাবের অনুসরণকরে না, তারা বলেন, আমরা সীনা পর্যন্ত হাত উঠানোর হাদীসটি মানি, অন্যটি মানি না। কিন্তু ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন, কোনোটিই বাদ দেওয়া যাবে না। উভয়টি রসুলের হাদীস, তথা সহীহ হাদীস। অতএব মহিলারা সীনা পর্যন্ত হাত উঠাবে এবং পুরুষরা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে। এভাবে উভয় হাদীসের ওপর আমল হয়ে যায়।

কথিত নামধারী আহলে হাদীসরা বলেন, আমরা মাযহাব মানি না। সরাসরি হাদীস মানি। তারা বলে, ইমামকে মানলে শিরক হবে!! তাহলে তারা কি পাঁচ ওয়াক্ত নামায ইমামের পিছনে পড়ে না? নাকি একাকি পড়ে? নামাযের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যদি ইমামের পিছনে, তার অনুসরণ করে পড়াটা আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় হয় এবং রসুলের তরীকা অনুযায়ী হয়, এটা যদি মানো, তাহলে যারা নামাযের মাসআলা কুরআন-হাদীস থেকে বের করেছেন, তাদের মানলে শিরক হবে কেন?

যেকোনো বিষয়ে তারা বলে, এটা কি বুখারীতে আছে? হাদীসে আছে?

আচ্ছা, তারা কি এটা বুখারীতে অথবা অন্য কোনো হাদীসে দেখাতে পারবে যে, রসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে ইমামদেরকে বেতন দেওয়া হতো? বেতন ও খানা দিয়ে ইমাম রাখা হতো? এ রকম একটা হাদীস তারা দেখাতে পারবে? যদি হাদীসে না থাকে, তাহলে তারা টাকা নিয়ে ইমামতি কীভাবে করছে? ও আচ্ছা!! পকেটের সময় ঠিক! হাদীস লাগে না?

বস্তুত ইমামগণ পরবর্তীতে এ বিষয়টি ইজতিহাদ করে বের করেছেন যে, যে বিষয়গুলো সঠিকভাবে আদায় না করলে شعار دين অর্থাৎ দিনের নিদর্শন মিটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সে বিষয়গুলো সঠিকভাবে আদায় করা সম্ভব না হলে, ইসলামি রাষ্ট্র কিংবা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বেতনের বিনিময়ে হলেও লোক রেখে সেগুলো আদায় করতে হবে। কারণ যদি কেউ ইমামতির কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং আয়রোজগার থেকে বিরত থাকেন, তাহলে তারপরিবার-পরিজনের খোরপোষের ব্যবস্থা কীভাবে হবে? আর যদি কোনো ইমাম ও মুয়াজ্জিন না থাকে, তাহলে মসজিদে আজান হবে না, জামায়াত হবে না। এলাকাবাসী নামায ছাড়তে ছাড়তে একসময় ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে।

এজন্য ইমামগণ বলেন, নামায কায়েম করার জন্য দুই-তিনজন ব্যক্তি যারা দায়িত্বে থাকবে, তাদের বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করা ইসলামি রাষ্ট্র অথবা এলাকাবাসীর ওপর কর্তব্য। এ রকম আরও অনেক মাসআলা ইমামগণ পরবর্তীতে ইজতিহাদ করে বের করেছেন, যেগুলো স্পষ্টভাবে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত নেই। অতএব কুরআন-হাদীসের ওপর যথাযথ আমল করার জন্য মাযহাব অনুসরণ করতেই হবে।

আলোচক: সহকারীপরিচালক, দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী

অনুলিখন: নাসিরুদ্দীন

জামায়াতে দুয়াম

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

ইসলামই আল্লাহর মনোনীত ধর্ম

(পৃ. ৪১-এর ৩য় কলামের পর)

গুনাগুণ তখনই হতে পারে মানুষের মধ্যে যখন একে অপরের হক আদায় করবে, একে অপরের অধিকার কাল বিলম্ব করা ছাড়া আদায় করে দেবে, বরং নিজের অধিকারকে মুছে ফেলে হলেও অপরের অধিকারকে প্রাধান্য দেবে।

রিজিক বৃদ্ধি

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি চায় যে তার রিযিক প্রশস্ত হোক, তার হায়াত বৃদ্ধি হোক এবং খারাপ মৃত্যু থেকে তাকে হেফাযত করা হোক সে যেন আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে এবং আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে।’ অথচ আমরা এখন ভাই ভাই পরস্পর জায়গা জমি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ করি এবং এই নিয়ে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করি।

রসুল (সা.) আরও বলেন, ‘যার মধ্যে তিনটি চরিত্র থাকবে আল্লাহ তাআলা তার হিসাব-নিকাশ সহজ করবে এবং তাকে আপন রহমত দারা জান্নাতে প্রবেশ করাবে।

  • এক. তুমি ওই ব্যক্তিকে দান করো যে তোমাকে বঞ্চিত করে।
  • দুই. যে তোমার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ।
  • তিন. মানুষের সাথে ভালো আচরণ করা।’

একটি ঘটনা

খাজা নিজামুদ্দীন (রহ.)-এর কাছে তার মুরিদ এসে জিজ্ঞাসা করল যে আমার প্রতিবেশী আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, আমার চলার পথে কাঁটা দেয়, আমি তার সাথে কিরূপ আচরণ করব? তখন তিনি বললেন, যদিও সে খারাপ আচরণ করে তুমি তার সাথে ভালো আচরণ করো এটাই ইসলামের শিক্ষা।

সম্মানিত উপস্থিতি!!! উপরে উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা এটাই স্পষ্ট হয় যে আল্লাহ তাআলার কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলাম, যেই ধর্মের মাধ্যমে পরকালে মুক্তির সনদ পাওয়া যাবে, সুতরাং আমাদের উচিত এই ইসলামকে মজবুতির সাথে আঁকড়ে ধরা আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে আমাকে সহীহ আমল করার তওফিক দান করুন।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

আলোচক: মুহাদ্দিস, জামিয়া মোজাহেরুল উলুম, মিয়াখাঁন নগর, চট্টগ্রাম

অনুলিখন: মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম

জামায়াতে দুয়াম

আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

 

[1] আল-কুরআন, সুরা আন-নিসা, ৪:৫৯

[2] আল-কুরআন, সুরা আল-বাকারা, ২:৪৩

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ