সময়ের চাহিদা মাআরিফুল কুরআন
খালেদ রাসেল
আমরা মাআরিফুল কুরআন কেবল নামে চিনি আর উস্তাদমুখে শুনাটাই জানি এ তাফসীর সম্পর্কে। এ তাফসীরের রচনার পেছনে আছে এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। যা আমাদের ছাত্রসমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের কাছে দৃষ্টিগোচর নয় বললে অত্যুক্তি হবে না। অথচ তা জানা আমাদের জন্য অতীব জরুরি বিষয়। আর এ জানার মাধ্যমেই জন্মাবে লক্ষ মাআরিফুল কুরআন প্রণেতা। সাধারণদের মাঝে এসব মনীষীদের কর্মতৎপরতার হিসেব দেখিয়ে ইসলামি ভাবধারার প্রতি আহ্বান জানাতে হবে। সাথে সাথে তাফসীরসাহিত্যের চর্চার মাধ্যমে জ্ঞান পিপাসাও সৃষ্টি করে তুলতে হবে। তবেই স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে স্বার্থক জীবনের দাবিদার হওয়া যাবে। এ পৃথিবী বড় বিচিত্রময়। এখানে কেউ হাসে, কেউ কাঁদে, কারো জীবন সুখের, কারো জীবন দুঃখের। কেউ জীবনকে এমনভাবে সাজান যেন পুরো দুনিয়া তার সূখে হাসে। আবার কিছু ক্ষণজন্মা এমন মানব রয়েছে যাদের সাজানো জীবনে দুনিয়া-আখেরাত হাসে। আজ উভয়কুলের ক্যারিয়ার গড়ে তোলা এক মানবের কর্মের সামান্য কিছু আলোচনা করার তাওফীক মহান আল্লাহর কাছে চাচ্ছি। যখনি আল্লাহর বাণী নিয়ে সামান্যতম দুষ্টমি শুরু হয় তখন আল্লাহ তার প্রতিকার করেই ছাড়েন। দীনকে যিন্দা করার লক্ষে যেকোনো মানবকে তৈরি করে দেন। সময়ের দাবি নিয়ে এমনি একজন পুরুষের আগমন ঘটে এ ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে। তার নাম মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ)। তার জীবনের অনবদ্য রচনা মাআরিফুল কুরআন নিয়ে কিছু আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ।
জন্ম ও পরিচয়
মুফতি মুহাম্মদ শফী ১৩১৪ হিজরীর শাবান মাস মুতাবেক ৩৫ জানুয়ারি ১৮৯৭ সালে বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের অন্তর্গত সাহারানপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি নিজ গৃহে শুরু হলেও প্রাথমিক জ্ঞান থেকে শুরু উচ্চতর পড়াশোনা বিশ্ববিখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দে শেষ হয়। তিনি শৈশব থেকে শুধু লেখাপড়াতেই মনোনিবেশ করেন। খেলাধুলা, অনর্থক গল্প-গুজবে সময় একদম ব্যয় করতেন না। তিনি জীবনের শুরু থেকে ইসলাম ধর্মীয় ভাবধারাকে আগলে ধরেন। শিক্ষকদের আদরের ছাত্রও ছিলেন। এভাবে তিনি লেখাপড়া শেষ করে এক সময় দরুল উলুম দেওবন্দে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেও তার অসাধারণ পাঠদানের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়লে উচ্চতর স্তরের শিক্ষক হয়ে হাদীসের কিতাব পড়াতে থাকেন। সাথে সাথে ফতওয়া বিভাগেও ইসলামি আইনের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এভাবে তার সুনাম খ্যাতি চতুর্দিকে পঞ্চমুখ হয়ে উঠে। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি লেখালেখি করেন। তার রয়েছে ১৫০-এর কাছাকাছি রচনা। তিনি দেশের রাজনীতিতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। বর্নাঢ্য কর্মজীবনে তিনি দারুল উলুম করাচি নামে একটি বিশাল শিক্ষা একাডেমী চালু করেন। তবে তিনি যে কারণে চির অমর হয়ে আছেন তা হচ্ছে তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন। তার জীবনে যেসব মনীষীগণ শিক্ষক ও আধ্যাত্মিক গুরুর ভূমিকা রাখেন তাঁদের মধ্যে আশরাফ আলী থানবী (রহ.), আনোয়ার শাহ কাশমিরী (রহ.), মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী (রহ.), ইযায আলী (রহ.) প্রমুখ। জীবন দর্শনে তিনি মনে করতেন আমি জীবিকা নির্বাহ করব ভিন্ন পেশা দিয়ে আর দীনের সেবা করার চেষ্টা করব বিনা বিনিময়ে। এ নিয়তে কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং ইউনানি চিকিৎসা বিদ্যাও গ্রহণ করেন। তিনি বই বাইন্ডিং করেও অর্থ উপার্জন করতেন। তিনি ৪৭ এ দেশ ভাগের সময় জন্মস্থান ত্যাগ করে বর্তমান পাকিস্তানে সপরিবারে চলে আসেন। এখানেই তিনি জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এ ক্ষণজন্মা পুরুষ ১০ শাওয়াল ১৩৯৬ মুতাবেক ৬ অক্টোবর ১৯৭৬ সালে ইহকাল ত্যাগ করে রাব্বে কারীমের ডাকে সাড়া দিয়ে চিরবিদায় গ্রহণ করেন।
মাআরিফুল কুরআন জন্মপূর্ব কথা
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ভারতবর্ষে এক মহাসমস্যার উদ্ভব হয়। তা হচ্ছে পবিত্র কুরআনের অপব্যাখ্যাসহ তাফসীর বির রায় তথা মনগড়া কুরআনিক ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রবণতা। এ সমস্যা সমাধানে ও কুরআনের মূলধারার বিশ্লেষণ অব্যাহত রাখতে হাকীমূল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানবী (রহ.) এক মহামূল্যবান তাফসীর গ্রন্থ লিখেন যা মূলধারার কুরআনিক ব্যাখ্যা রক্ষা করার ক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা পালন করে। তার রচিত তাফসীরটির নাম দেওয়া হয় “বয়ানুল কুরআন।’ তবে তিনি তা স্বল্পকায় করে লিখাতে, আলিম সমাজ বুঝতে সক্ষম হলেও সাধারণ মানুষগণ তা বুঝে উঠতে অনেক কষ্টের স্বীকার হচ্ছিল। সাধারণ মানুষদের কাছে কুরআনের তাৎপর্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি গ্রন্থটি আবার সংস্করণ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন যা তার এ উক্তি থেকে সহজে অনুমেয়:
اگر کوئی اسسٹنٹ میسر آجاے تو جی چاہتا ہوں کہ بيان القرآن کو عام لوگوکو کے افادہ کيلئے آسان زبان ميں املا کروادو اور اسکا نام تسہیل البیان رکھوں۔
‘যদি কোনো সহযোগী লোক পাওয়া যায় তাহলে আমার মন চাহিদা হল যে বয়ানুল কুরআনকে সাধারণ মানুষের উপকার ও ফায়দার জন্য সহজ ভাষায় আবার সংস্করণ করাব এবং এর নাম রাখব তাসহীলুল বয়ান।’
আল্লাহ হযরতের মনোবাসনা যেন গায়েবীভাবে কবুল করলেন। তার এ কাজের জন্য কবুল হলেন হযরত মুফতি মুহাম্মদ শফী সাহেব। তাই জনসাধারণ যাতে দুর্বোধ্য পরিভাষা, কঠিনতম বিশ্লেষণ বুঝতে পারে সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বর্তমান মাআরিফুল কুরআন রচিত হয়েছে বলা যায়।
মাআরিফুল কুরআন রচনার প্রেক্ষাপট
এ কুরআন ব্যাখ্যা গ্রন্থ রচনার পেছনে রয়েছে এক অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগের কথা। হযরত মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.) তখন প্রায় বার্ধক্যে উপনীত। তবে মহান আল্লাহ খেদমত নিতে চাইলে যেকোনো উপায়ে নিয়ে নেন। তার নজীর হযরতের এ ফসল। বিশেষজ্ঞগণ তার রচনার সময়কালকে তিনটি স্তরে ভাগ করেন।
প্রথম স্তর: মৌখিক দরস/পাঠদান,
দ্বিতীয় স্তর: বেতারে পাঠদান,
তৃতীয় স্তর: গ্রন্থাকারে রূপদান।
এ তিনটি পর্যারে মারিফুল কুরআন পাঠককুলের কাছে পৌঁছে।
প্রথম স্তর: যেহেতু বায়ানুল কুরআনকে সাবলীল করার অভিপ্রায় আছে তাই তিনি এ কাজ নিরলসভাবে শুরু করেন। বাবুল ইসলাম মসজিদে ফজর নামাযের পর দীর্ঘ সাত বছর এক ঘন্টা করে দরস প্রদান করেন। এতে সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে আলিম তুলাবারাও দরস আহরণ করতে থাকে। এ পদ্বতিতে বেশ লাভবান হল কুরআনপ্রেমিকরা। এভাবে তার দরসের সাবলীল ভাষা, অর্থের বোধগম্যতা সাধারণরা সহজেই লব্ধ করতে পারছে। ফলে চতুর্দিকে তার সুনাম খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল। এদরসের উপকারিতা সম্পর্কে লেখক নিজেই বলেন এভাবে:
یہ درس قرآن امید سے زیادہ مفید ومؤثر ثابت ہوا۔ سننے والوں کی زندگی میں انقلاب کی اثار دیکھے گئے۔ احقرناکارہ کو زندگی کی ایک اچہا مشغلہ مل گیا۔ بعد نماز فجر روزانہ ایک گھنٹہ کے عمل سے سات سال میں بحمد اللہ یہ درس قرآن مکمل ہو گیا۔
‘এ কুরআনের দরস আশার চেয়ে বেশি ফলদায়ক ও প্রভাব বিস্তার করেছে বলে মনে হচ্ছে। শ্রোতাদের মাঝে বিপ্লব তথা পরিবর্তনের ধারা দেখা যাচ্ছে। এ অধমের জীবনে এ ব্যস্ত সময় পার করার সুযোগ হয়ে গেল। প্রত্যেকদিন ফজর নামাযের পর এক ঘন্টার কর্মের মাধ্যমে আল-হামদু লিল্লাহ সাত বছরের অন্তরে এ কুরআন দরস সম্পন্ন হয়েছে।’
দ্বিতীয় স্তর: ১৯৫৪ সালে radio Pakistan সাপ্তাহিক একটি কুরআন তাফসীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে মুফাসসির বা কুরআন বিশেষজ্ঞ হিসেবে দাওয়াত করেন পাকিস্তানের গ্রান্ড মুফতি মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.)-কে। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি সাপ্তাহিক দরস প্রদান শুরু করেন। অনুষ্ঠানটি এত জনপ্রিয় হয়ে উঠল যে পুরো দেশ তো বটে আফ্রিকা, ইউরোপের মানুষেরাও তা শুনতে লাগল। যেহেতু আয়োজনটি সকাল বেলা হত তাই, আফ্রিকার শ্রোতারা রেকর্ড করে রেখে পরে শুনে নিত। অনুষ্ঠানটিতে তিনি দীর্ঘ এগারো বছর দরসটি প্রদান করেন। সুরা আল-ফাতিহা থেকে শুরু করে সুরা ইবরাহীম পর্যন্ত চলে। হঠাৎ উক্ত রেডিও স্টেশনের শিডিউল পরিবর্তন হলে এ অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে পাকিস্তান নির্বাচন সময়ের কারণে দেশের অবস্থা তেমন ভালো নয়, ফলে এ গতি থমকে যায়। এ সময়ে তিনি অন্যকাজে মনোনিবেশ করেন, আর সেই সময় বাদ পড়া কিছু অংশের তাফসীর শেষ করেন।
তৃতীয় স্তর: যখন রেডিও প্রোগ্রামটি বন্ধ হয়ে যায় তখন সুধীমহলের চিঠি, মৌখিক আবেদন আসতে থাকলে তিনি উক্ত তাফসীরকৃত তেরোটি পারার মাঝে পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে প্রেসে পাঠান। সেই সাথে বৃদ্ধ বয়সে অক্লান্ত পরিশ্রম করে কিভাবে বাকিটা শেষ করা যায় আল্লাহর দরবারে দুআ করতে থাকেন। অবশেষে ১৩৯২ হিজরি ১৯৭২ সালে পূর্ণ কুরআনের তাফসীরটি শেষ করেন। এ ছিল তার জীবনে এক মহা সাফল্য। আট খণ্ডের এ তাফসীর গ্রন্থটি ৭০০০/ সাত হাজার পৃষ্ঠায় সমৃদ্ধ। উক্ত বছরেই তিনি তা ছাপা খানাতে পাঠান। ফলে কুরআন প্রেমিকরা পায় একখানা সহজ সাবলীল বাচনভঙ্গির হৃদয় জুড়ানো কুরআন ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এরপর গ্রন্থটিকে দ্বিতীয় সংস্করণে পুনরায় পরিমার্জন, পরিবর্ধন, সংযোজন ইত্যাদির মাধ্যমে আরও সুখকর পাঠ করে তুলেন। তখন এর সাথে উলুমুল কুরআন ও হাদীস তথা কুরআন ও হাদীসের মূলনীতি সংক্রান্ত একটি ভূমিকাও আনা হয়। ভূমিকাটি লিখতে বলেন স্বীয়পুত্র আল্লামা তকী উসমানীকে। তিনি এত বিশদভাবে লিখেন যে, যেন স্বতন্ত্র একটি গ্রন্থ। তখন আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফী (রহ.) অসুস্থ অবস্থায় এটির সারসংক্ষেপ করেন। এটিই মাআরিফুল কুরআনের ভূমিকা হিসেবে দ্বিতীয় সংস্করণে যোগ করা হয়। বিশাল এ বইয়ের খণ্ড বিন্যাস করেছেন এভাবে:
প্রথম খণ্ড: ১-৩ পারা,
দ্বিতীয় খণ্ড: ৪-৬ পারা,
তৃতীয় খণ্ড: ৭-৯ পারা,
চতুর্থ খণ্ড: ১০-১৩ পারা,
পঞ্চম খণ্ড: ১৪-১৬ পারা,
ষষ্ঠ খণ্ড: ১৭-২১ পারা,
সপ্তম খণ্ড: ২২-২৫ পারা,
অষ্টম খণ্ড: ২৬-৩০ পারা।
হযরতের দীর্ঘ পরিশ্রমে আজকে আমাদের সামনে বহুল প্রচলিত, বহুল সমাদৃত তাফসীর মাআরিফুল কুরআন উপস্থিত। যে তাফসীর বির রায় তথা মনগড়া তাফসীরের ফিতনার কারণে বয়ানুল কুরআন, মাআরিফুল কুরআন রচিত হয় যেন সে ফিতনা থেকে খাঁটি ঈমানদারদের আল্লাহ তাআলা রক্ষা করেছেন এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত রেখেছেন। উক্ত তাফসীর গ্রন্থটি বাংলাদেশের সফল ব্যক্তিত্ব মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দীন খান বাংলায় অনুবাদ করে এ দেশের মানুষের দীনী তৃষ্ণা নিবারণ করেন।
উল্লেখ্য যে, সউদি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সারা দেশে বিনামূল্যে এর কপি বিতরণ করা হয়। এতে করে সাধারণদের কাছে সহজ সরল সাবলীল ভাষায় কুরআনের মর্ম বাণী বুঝতে সহজ হয়। এছাড়ও মাআরিফুল কুরআন তাফসরীর গ্রন্থটি পৃথিবীর আনাচে-কানাচে বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়ে দীনদার মুসলমানদের হাজত পুরণ করছে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলছি তাদের এত পরিশ্রম সত্ত্বেও আমরা যেন সাধারণদের কাছে পুরোপুরিভাবে দীনের এ কাজ পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের যুবকরা সাহিত্যের নামে অবৈধ প্রেম অশ্লীল বিষয় বস্তুর পাঠক অথচ তার জীবনের মূল উপকরণ সে চিনতে পারছে না। তাই আমাদের যুবসমাজকে অবক্ষয়ের পথ হতে রক্ষা করতে হলে তাফসীর গ্রন্থ তথা মহান আল্লাহর দেখানো নির্দেশনা ছাড়া অন্যকোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই। একটি সমাজ একটি জাতির জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে এক তাফসীরগ্রন্থ। এ নাজুক সময়ে অবশ্যই কুরআন হাদীসের ইশারা ছাড়া ফিতনামুক্ত থাকা সম্ভব নয়। যা কুরআন বলে,
وَمَاۤ اٰتٰىكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ١ۗ وَمَا نَهٰىكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْاۚ ۰۰۷
‘রাসুল যা নিয়ে এসেছে তা মান্য কর, আর যা দিষেধ করে তা হতে বিরত থাক।’[1]
হাদীসে নবী করীম (সা.) বলেছেন,
«تَرَكْتُ فِيْكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا: كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ»
‘তোমরা পথহারা হবে যতক্ষণ কুরআন ও হাদীস আকড়ে ধরবে।’[2]
আল্লামা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন হাফিযাহুল্লাহকে প্রায় বলেন যে, এ যুগে ইসলামি জীবন ধারণের জন্য একজন মুসলমানকে অবশ্যই একটি তাফসীর গ্রন্থ, একটি হাদীস গ্রন্থ, একটি ফিকহ গ্রন্থ সংগ্রহে রাখতে হবে। তাই আসুন এ তাফসীর পাঠের মাধ্যমে নিজের জীবন পরিবর্তনের অঙ্গিকার করি। সামনের প্রজন্মের কাছে এমন আরও তাফসীর রেখে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করি এবং তাদেরকে এ তাফসীরের মর্মবাণী শেখাতে, বিলাতে, গ্রহণে, আমলে উদ্বুদ্ধ করি।
[1] আল-কুরআন, সুরা আল-হাশর, ৫৯:৭
[2] মালিক ইবনে আনাস, আল-মুওয়াত্তা, মুআস্সিসাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবনান (প্রথম সংস্করণ: ১৪১২ হি. = ১৯৯২ খ্রি.), খ. ২, পৃ. ৭০, হাদীস: ১৮৭৪