বৃহস্পতিবার-২২শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি-২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমস্যার-সমাধান -ফতওয়া বিভাগ-আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া

সমস্যা ও সমাধান ফতওয়া বিভাগ আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম

বিদআত-কুসংস্কার

সমস্যা: আমাদের এলাকায় শামসুদ্দীন নামক এক ব্যক্তি অনেক কথাবার্তার মধ্যে হযরত মুয়াবিয়া (রাযি.)-কে মুনাফিক বলে ফেললেন। বাস্তবে হযরত মুয়াবিয়া (রাযি.) কি মুনাফিক ছিলেন? যদি না হয়, উক্ত ব্যক্তি ইসলামের গণ্ডির ভেতরে আছে কিনা জানিয়ে বাধিত করবেন।

আবুল হাছনাত

ফিরিঙ্গি বাজার, চট্টগ্রাম

সমাধান: প্রকাশ থাকে যে, নবী করিম (সা.)-এর কোন সাধারণ সাহাবী সম্পর্কেও অসম্মানসূচক উক্তি যথা- মুনাফিক ইত্যাদি বলা বড় গুনাহ এবং আল্লাহর অভিশাপের কাজ। নবী করিম (সা.) হাদিস শরিফে তাঁর কোন সাহাবীকে কটূক্তিকারী সম্পর্কে আল্লাহ তাআলার লানত ও অভিশাপের কথা ব্যক্ত করেছেন। এরকম আল্লাহ তাআলা কুরআন শরিফে সকল সাহাবায়ে কেরামের প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির কথা ঘোষণা করেছেন এবং তারা আল্লাহ তাআলার নিকট সফলকাম হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি হযরত মুয়াবিয়া (রাযি.)-কে মুনাফিক বলেছে সে যদিও কাফির হবে না, কিন্তুশরিয়তের দৃষ্টিতে বড় গুনাহগার ও ফাসিক হিসেবে গণ্য হবে।তাই তাকে তাওবা করতে হবে। সহীহ আল-বুখারী: ১/৫১৮, ফতহুল মুগীস: ৩৭৫, রসায়েলে ইবনে আবেদীন: ১/৩০৮

সমস্যা: আমাদের এলাকায় একটি বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে যায়। ব্যাপার হচ্ছে, কিছু মানুষ বলছে যে, রাসুল (সা.) নুরের তৈরি। হযরত রাসুল (সা.) সৃষ্টিগতভাবে মাটির তৈরি না নুরের তৈরি? জানিয়ে বাধিত করবেন। আর সম্প্রতিকালে দেখা যাচ্ছে যে, একশ্রেণির লোক ওলামায়ে দেওবন্দীকে ওয়াহহাবী বলে বেড়াচ্ছে। আসলেই কি ওলামায়ে দেওবন্দ ওয়াহহাবী? আর ওয়াহহাবী শব্দটির প্রচলন কখন থেকে শুরু হয় জানতে চাই।

নাজমুল ইসলাম কাওসার

পূর্ব ব্যক্ষন্দী, নরসিংদী

সমাধান: নবী করিম (সা.) নুরের তৈরি কিনা? মূলত এ প্রশ্নটি বিভ্রান্তকর ও প্রতারণামূলক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আসলে বাতিলপন্থি কিছু স্বার্থবাদী, নামধারী মৌলভীরা মুসলিমসমাজে এ ধরণের অবান্তর প্রশ্নাদি সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ফায়দা হাসিল করতে চায় এবং মুসলিমসমাজে নানাবিধ আত্মকলহ ও মতবিরোধ সৃষ্টি করে তাদের ঐক্যশক্তিকে বিনষ্ট করার পিছনে লেগেছে। এ ধরণের কোন মাসআলা কবরে প্রশ্ন করা হবে না এবং মাসআলাটি ঈমান-আকিদা ও বিশ্বাস সম্পর্কিতও নয়, বরং তা মহানবী (সা.)-এর সৃষ্টির একটি রহস্য। তাছাড়া কুরআন ও হাদিস শরিফের আলোকে দেখা যায় যে, নবী করিম (সা.)-কে শারীরিক ও দৈহিকভাবে মানুষ ও মানব হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। যার স্বপক্ষে কুরআন শরিফের বহু আয়াত এবং শত শত হাদিস শরিফে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে, যা অস্বীকার করা পবিত্র কুরআন শরিফের উক্ত আয়াতসমূহকে অস্বীকার করার নামান্তর। যার অপরাধে অস্বীকারকারীকে কঠোর পরিণাম ভোগ করতে হবে। যথা- সুরা আল-ইসরার ৯৩ আয়াত: قُلْ سُبْحَانَ رَبِّيْ هَلْ كُنْتُ اِلَّا بَشَرًا رَّسُوْلًاؒ۰۰۹۳ এভাবে সুরা আল-কাহাফের আয়াত: قُلْ اِنَّمَاۤ اَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوْحٰۤى اِلَيَّ ۚ ۰۰۱۱۰ এ ধরনের কুরআন শরিফের অকাট্য প্রমাণাদি দ্বারা পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তাআলা নবী করিম (সা.)-কে মানব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। অবশ্য কিছু কিছু আয়াত ও হাদিস যেগুলোর মধ্যে নবী করিম (সা.)-কে নুর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সে সম্পর্কে আমাদের তাফসীর বিশারদগণ তার বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

আর হক্কানি ওলামায়ে দেওবন্দেরকে ওয়াহহাবী বলা যা একেবরেই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অপবাদ ছাড়া আর কিছু নয়। কেননা মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাবের সাথে দেওবন্দী আলেমগণের কোন সম্পর্ক নেই এবং তাঁরা তাকে চিনেনও না। তার কোন জীবন চরিত বা রচিত কোন কিতাবাদী আমাদের মাদরাসাসমূহে পড়ানো হয় না। কেননা মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাবের মাযহাব সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলেন, তিনি কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না তথা গাইরে মুকাল্লিদ ছিলেন। অথচ আমাদের দেওবন্দী ওলামায়ে কেরাম সবাই হানাফী মাযহাবের মুকাল্লিদ। তাছাড়া মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব সম্পর্কে ফতওয়ায়ে শামীতে উল্লেখ আছে যে, তিনি সৌদি আরবের বর্তমান নজদি হুকুমতের একজন ধর্মীয় সংস্কারক ছিলেন এবং তিনি সেই সময় এক দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে সৌদি আরবের সাবেক তুর্কি শাসনামলে যত মাযার ও দরগাহ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেসবের মধ্যে নবী করিম (সা.)-এর রাওযা মুবারকের ওপর সবুজ গম্বুজ ব্যতীত সব মাযার ও দরগাহ তিনি ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেন। আমাদের দেশের হক্কানি ওলামায়ে কেরাম যখন শিরিক-বিদআত ও কবরপুজার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন তখন তাদের এ দীনী ও ইসলামি আন্দোলনকে প্রতিরোধ করার জন্য এবং সরলমনা মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করার হীনমানসে বাতিলপন্থি, স্বার্থবাদী, মাযারপূজারি, বিদআতি মৌলভীগণ দিশেহারা হয়ে হক্কানি ওলামায়ে দেওবন্দের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাবের সাথে তুলনা করে মুসলিমসমাজে ওয়াহহাবী নামের প্রচার করতে আরম্ভ করে। কেননা বাতিলপন্থি, স্বার্থবাদী, পেটপূজারি, নামধারী মৌলভীরা তাদের হীন ও অবৈধ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য সদা-সর্বদা তাদের কথাবার্তায়, কাজেকর্মে, ওয়াযে ও বক্তৃতায় হক্কানি দেওবন্দী ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে লেগেই রয়েছে। আল্লাহ পাক তাদেরকে হেদায়ত দান করুন। সুরা আল-কাহাফ: ১১০, বোখারী শরিফ: ১/১৫৭, সুরা ইউনুস: , মুসলিম শরিফ: ২/২৪৫, সুরা আত-তওবা: ৩০

সমস্যা: কিছু লোক আহলে মারিফাত বলে প্রকাশ করে এবং কখনো কখনো হালকা বানিয়ে একত্রিত হয়ে উন্মত্ততায় গান-বাজনাসহকারে রঙ্গনাচ করে এবং ঢোল-তবলা ইত্যাদি বাাজিয়ে আল্লাহর যিকির, না’তে রাসুল (সা.) এবং প্রেমাষ্পদ কবিতা ইত্যাদি পড়ে। আকাবিরকে তাঁদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরে আল্লাহর মত (متصرف في الأمور) যেকোন বিষয়ে স্বেচ্ছায় হস্তক্ষেপের অধিকারী এবং অদৃশ্যের সংবাদদাতা হিসেবে জানে। তাদের কিছু আকাবির নিজেদেরকে শরিয়তের আহকাম পালন হতে মুক্ত মনে করে এবং শরিয়তকে জরুরি মনে করে না এমনকি অনেক সময় শরিয়তকে অস্বীকারও করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কথা বলে থাকে। উক্ত জামায়াত ও তাদের উল্লিখিত আকিদা এবং অসৎকাজের শরয়ী হুকুম কী? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

মু. আবদুল হক

গোবিন্দারখিল

সমাধান: উল্লিখিত জামায়াত ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট এবং তাদের আকিদাও ভ্রান্ত। কেননা ইসলামে শরিয়ত ব্যতীত মারিফাতের দাবি করার কোন সুযোগ নেই। কুরআন-হাদিস, নববী যুগ, সাহাবায়ে কেরাম, তাবিঈন, তবয়ে তাবিঈন এবং মুজতাহিদ ইমামগণের সুনালি যুগে তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর হালকা বানিয়ে, একত্রিত হয়ে উন্মত্ততায় গান-বাজনাসহকারে রঙ্গনাচ করা এবং ঢোল-তবলা ইত্যাদি বাাজিয়ে আল্লাহর যিকির, না’তে রাসুল (সা.) এবং প্রেমাষ্পদ কবিতা ইত্যাদি পড়াও বৈধ নয়। কেননা শরিয়তের দৃষ্টান্ত দুধের মতো এবং মারিফাত ও হাকিকতের দৃষ্টান্ত ঘি ও মাখনের মতো। ঘি ও মাখন যেভাবে দুধ ব্যতীত হয় না, তেমনিভাবে শরিয়ত ব্যতীতও মারিফাত ও হাকিকত অর্জিত হয় না। মাজমুআতুল ফাতাওয়া: ২/১৯৭, সুরা আল-আ’রাফ: ১৮৮, ফিকহুল আকবর: ১৮৫, বাহরুর রায়িক: ২/৩২১

 

তাহারাত-পবিত্রতা

সমস্যা: বর্তমানে অধিকাংশ সন্তান সিজারের মাধ্যমে ভূমিষ্ট হচ্ছে। আর সিজার করে সন্তান ভূমিষ্ট হলে নিফাস (সন্তানপ্রসব পরবর্তী সময়ে নির্গত রক্ত) আসে না। বরং কিছু রক্ত পেট অপারেশনের সময় নির্গত হয়। জানার বিষয় হলো, অপারেশনের সময় নির্গত রক্ত নিফাস হিসেবে গণ্য হবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

ফাইয়াজ আমিন

ফতেয়াবাদ, হাটহাজারী

সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে যে, সন্তানপ্রসব করার জন্য অপারেশনের সময় পেট থেকে যে রক্ত বাহির হয় তা নিফাস হিসেবে গণ্য হবে না; যদি তা মহিলাদের লজ্জাস্থান দিয়ে নির্গত না হয়। অবশ্য, লজ্জাস্থান থেকে নির্গত হলে তা নিফাস হিসেবে গণ্য হবে। শরহুল বিকায়া: ১/১২১, বাদায়িউস সানায়ি: ১/১৫৭, মাবসুতে সারাখসী: ৩/৩৯০

সমস্যা: সাধারণ ক্ষতের কারণে ব্যান্ডেজকৃত অংশে যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত জায়গা ব্যান্ডেজের আওতায় চলে আসে তাহলে পুরা ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করা বৈধ হবে কি?

মু. আতাউল্লাহ

আগরাবাদ

সমাধান: আমাদের ফিকহ-ফতওয়ার বিভিন্ন কিতাবাদিতে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, যদি পুরো ব্যান্ডেজ খুলে ক্ষতস্থানের আশপাশ ও অতিরিক্ত ব্যান্ডেজকৃত সুস্থাংশ ধুয়ে নিলে ক্ষতস্থানের কোন সমস্যা না হলে সুস্থাংশ ধুয়ে নেবে এবং অসুস্থাংশের ওপর মাসেহ করবে। আর যদি সমস্যা বা ক্ষতি হয় তাহলে ব্যান্ডেজকৃত সুস্থ-অসুস্থ পুরো অংশেই মাসেহ করবে। আর যদি ব্যান্ডেজ খুলতে সমস্যা না হয় বরং ক্ষতস্থানে সরাসরি মাসেহ সমস্যা হয় তাহলে সুস্থাংশের ব্যান্ডেজ খুলে তা ধোয়ে নেবে। সুতরাং এক কথায় বলা যায় ব্যান্ডেজ খুলে সুস্থাংশ ধোয়া যদি ক্ষতিকর মনে হয় তাহলে পুরো ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করা বৈধ হবে; অন্যথায় বৈধ হবে না। বাদায়িউস সানায়ি: ১/৫৮, আল-মুহিতুল বুরহানী: ১/২৫০, ফতওয়া তাতারখানিয়া: ১/৪২৪

 

সালাত-নামায

সমস্যা: আমাদের এলাকায় দেখা যায়, মুয়াজ্জিন সাহেব যখনই ইকামত আরম্ভ করেন তখনই মুসল্লিগণ দাঁড়িয়ে যান। চট্টগ্রামে এসে দেখলাম, যখন হাইয়া আলাস সালাত বলেন তখন দাঁড়ান। এখন আমার জানার বিষয় হলো, মুসল্লিগণ কোন সময় দাঁড়াবে? তথা শরিয়ত আমাদেরকে কি নির্দেশ দেয়?

মোঃ আরিফ

মৃধাপাড়া, লোহাগাড়া

সমাধান: প্রশ্নে বর্ণিত সমস্যার সমাধান হচ্ছে, আমাদের ফিকহ-ফতওয়ার কিতাবাদিতে এসেছে, মুয়াজ্জিন ইকামত দেওয়ার সময় যখন হাইয়া আলা সালাত বলবে তখন মুছল্লিগণ দাঁড়িয়ে কাতারবন্দী হবে, তার অর্থ এ নয় যে, তার পূর্বে দাঁড়ানো খেলাফে সুন্নত, বরং তার অর্থ হচ্ছে কাতারে দাঁড়ানোর সময় হাইয়া আলাস সালাত থেকে দেরি না করা। যেমন- তাহতাবীতে তা পরিস্কারভাবে ব্যখ্যা করে দেওয়া হয়েছে। কেননা ইকামতের প্রথম থেকে দাঁড়ানো উত্তম, যাতে জামায়াতের কাতার ঠিক করতে অসুবিধা না হয়। সুনানে আবু দাউদ: ১/৯৭, ফাতহুল বারী: ২/১০০, শরহে বিকায়া: ১/৫৫, হাশিয়ায়ে হালবী: ১৮০

সমস্যা: মাগরিবের আযানের পর জামায়াত শুরু হওয়ার পূর্বে যদি সময় পাওয়া যায় তাহিয়াতুল মসজিদ দুই রাকাআত আদায় করা যাবে কি? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

আবদুল মালেক

হালিশহর, চট্টগ্রাম

সমাধান: আমাদের হানাফী মাযহাব মতে মাগরিবের আযানের পর জামায়াত শুরু হওয়ার পূর্বে যদি সময় থাকে তাহিয়াতুল মসজিদ বা অন্য যেকোন নামায আদায় করা জায়িয, তবে আদায় না করা উত্তম। কারণ হাদিস শরিফে মাগরিবের নামায সূর্যাস্তের পর অবিলম্বে আদায় করার তাগিদ এসেছে এবং এটিই অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরামের আমল। তাই আযানের পর নামায না পড়ে তাসবীহ পাঠ করাই উত্তম। সুনানে আবু দাউদ: ১/৬০, সুনানে তিরমীযি: ১/৪২, রসায়িলুল আরকান: ৫৯, হাশিয়াতুত তাহতাবী: ১২৪

সমস্যা: ফরয কিংবা নফল নামাযে শেষ বৈঠক না করে যদি কেউ দাঁড়িয়ে যায় তখন তার করণীয় কী?

নুরুল-আবছার

আনোয়ারা, চট্টগ্রাম

সমাধান: ফরয কিংবা নফল নামাযে শেষ বৈঠক ফরয, তাই কেউ শেষ বৈঠক না করে দাঁড়িয়ে গেলে তার করণীয় হল, যদি ফরয নামায হয় তাহলে পরের রাকাতের সিজদা করার পূর্বে স্মরণ হলে, সাথে সাথে বসে যাবে এবং তাশাহহুদ পড়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফেরাবে। যদি পরের রাকাতের সিজদা করে ফেলে, তখন ফরযিয়্যাত বাতিল হয়ে তার নামায নফল হয়ে যাবে। আর যদি নফল নামায হয়, তখনও পরের রাকাতের সিজদা করার পূর্বে স্মরণ হলে বসে যাবে। আর স্মরণ না হলে সেই রাকাতের সাথে আরেক রাকাআত মিলাবে এবং উভয় অবস্থায় সাহু সিজদা করা ওয়াজিব। রদ্দুল মুহতার: ২/৯১, হিদায়া: ১/১৫৯, ফতওয়ায়ে কাজীখান: ১/১২০

সমস্যা: রেল অথবা বাসে সফরকালীন নামাযের সময় হলে ড্রাইভার যদি গাড়ি না থামায় এবং গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পৌঁছতে ওয়াক্ত চলে যাওয়ার আশংকা হয় এবং গাড়িতে ভিড় বা মানবসৃষ্ট অন্য কোন ওযরের কারণে যদি দাঁড়ানো বা কিবলামুখী হওয়া সম্ভব না হয় তখন করণীয় কী?

মু. শফিক আহমদ

শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ

সমাধান: এ ব্যাপারে উসুল বা মূলনীতি হলো, মানবসৃষ্ট ওযরের কারণে কোন ফরয সাকেত বা রহিত হয় না; বরং শুধু আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত কোন ওযরের কারণেই রহিত হতে পারে। সুতরাং রেল ও বাসের ভিড়সহ অন্যান্য ওযর সবই মানবসৃষ্ট। তাই এর ফলে রুকু-সেজদা কিয়াম বা দাঁড়ানো, কিবলামুখী হওয়ার ফরয ছাড়ার কোনই সুযোগ নেই। তাই এমতাবস্থায় ফরয-ওয়াজিবের যতটুকু পাবন্দী সম্ভব হয়, ততটুকু রক্ষা করে নামায আদায় করে নেবে এবং প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে গেলে পুনরায় পড়ে নেবে। আন-নাহরুল ফায়িক: ১/১৪০, রদ্দুল মুহতার: ১/৪১৪, আলমুহীতুল বুরহানী: ১/১৬৪, আহসানুল ফতওয়া: ৪/৮৮

সমস্যা: জনৈক ইমাম সাহেব কুরআন পাকের তিলাওয়াতের সময় বেশকিছু হরফ সঠিকভাবে আদায় করতে পারে না বা ইচ্ছাকৃত আদায় করে না। বিশেষ করে ز, ص ও س এ তিন হরফের স্থানে কখনো  ت পড়ে আবার কখনো ث পড়ে থাকে। যেমন- اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَۙ۰۰۵-এর স্থানে إهدنا التراط  বা إهدنا الثرات পড়ে, نَسْتَعِيْنُؕ۰۰۴-এর স্থানে نتتعين বা نثتعين পড়ে। অথচ এ ইমামের পিছনে বিজ্ঞ হাফেয, আলেম, মুফতীগণ নামায পড়ে থাকে। আর কোন কোন সময় শুধু জনসাধারণরা পড়ে থাকে। এখন আমার জানার বিষয় হলো, এমতাবস্থায় মুক্তাদিগণের নামাযের হুকুম কী? এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির করণীয় কী?

মু. আবদুল্লাহ

বাকলিয়া, চট্টগ্রাম

সমাধান: যে ইমাম কেরাতের মধ্যে প্রশ্নে উল্লেখিত বর্ণনা মতে লাহানে জলী (স্পষ্ট ভুল) করে থাকে, সে ইমামতের যোগ্য নয়। তার পিছনে শুদ্ধভাবে পাঠকারী ব্যক্তি যদি নামায পড়ে থাকে, কারো নামায সহীহ হবে না। আর যদি শুধু উক্ত ভুলকারী ইমামের মতো ব্যক্তিরা নামায পড়ে, তখন তাদের নামায সহীহ হবে। সুতরাং মসজিদের মুতাওয়াল্লী বা মসজিদ কমিটির দীনী দায়িত্ব হচ্ছে, এ ধরনের অশুদ্ধ কুরআন পাঠকারী ইমামতের অযোগ্য ইমামকে যথাশীঘ্রই অব্যাহতি দিয়ে তার পরিবর্তে একজন সহীহ-শুদ্ধ কুরআন পাঠকারী আলেমে দীনকে ইমাম নিযুক্ত করা। নতুবা তাদেরকে মুসল্লিগণের নামায নষ্ট করার জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। ফতওয়ায়ে আলমগীরী: ১/৮৬, ফতওয়ায়ে কাসিমিয়া: ৯/৬০৩, আল-মুহীতুল বুরহানী: ১৩৬৬

সমস্যা: শরিয়তে জুমার নামাযের দ্বিতীয় আযানের জবাব দেওয়া বা না দেওয়া প্রসঙ্গে শরয়ী বিধান কী? বিস্তারিত জানালে চির কৃতজ্ঞ থাকব।

মাও. জুবাইর হোছাইন

ডলুকুল, বাঁশখালী

সমাধান: আমাদের হানাফী মাযহাব মতে জুমুআর নামাযের দ্বিতীয় আযানের উত্তর দেওয়া মাকরুহ। কেননা খুতবার জন্য ইমাম মিম্বারে বসার পর থেকে খুতবা শেষ করা পর্যন্ত নীরব থাকা এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শোনা ওয়াজিব। খুতবা চলাকালীন নামায, দরূদ ও অন্যন্য জিকির এবং যে কোন কথাবার্তা নিষিদ্ধ। সুতরাং জুমুআর দ্বিতীয় আযানের জবাাব মুখে উচ্চারণ করে দেয়া যাবে না, তবে মনে মনে দিতে পারবে। সহীহ মুসলিম: ১/২৮১, হিদায়: ১/১৫১

যাকাত-সাদাকাত

সমস্যা: যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য নেসাব পূর্ণ হওয়ার পর এক বছর অতিবাহিত হওয়ার যে শর্ত রয়েছে, তা গণনা করার পদ্ধতি কী? শরিয়তের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।

রাকিবুল হাসান

চাঁদপুর

সমাধান: যে দিন আপনি যাকাতের নেসাব তথা-সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা তার সমতুল্য মূল্যের মালিক হবেন সেই দিনটি কোন মাসের কত তারিখ তা স্মরণ রেখে চন্দ্র তারিখ হিসেবে বছর গণনা শুরু করবেন। পরবর্তী বছর ঠিক ওই মাসের সেই তারিখ আগমন করলে এক বছর পূর্ণ হবে এবং ওইদিন যাকাত আদায় করা আপনার ওপর ওয়াজিব হবে। তবে কোন কারণে সেই দিন আদায় করতে না পারলে পরবর্তীতে অল্প-অল্প করে আদায় করারও সুযোগ রয়েছে। ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ৩/১৩৪, ফতওয়ায়ে আলমগীরী: ১/১৭০, বাদায়িউস সানায়ি: ২/৭৭

সমস্যা: মাদরাসার জন্য যাকাতের টাকা উসুল করে মাদরাসায় জমা না করে তামলিক করা ব্যতীত যদি উক্ত যাকাতের টাকা দ্বারা যাকাত উসুলকারী তার জন্য ভিসা বানিয়ে নেয় তা জায়িয বা বৈধ হবে কিনা? এবং যাকাতদাতাদের যাকাত আদায় হবে কিনা বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

মুহাম্মদ তাওফিক

আনুয়ারা, চট্টগ্রাম

সমাধান: উল্লেখিত বিষয়ে বর্তমান অনেক ফুকাহায়ে কেরামের মত হচ্ছে, মাদরাসার মুহাসসিলের নিকট যাকাতের টাকা উপর্যুক্ত মাদরাসার ফকির-মিসকিনদের উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করার সাথে সাথে তামলিকের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। কেননা যে মাদরাসার মুহাসসিল বা মুহতামিম সদকা-যাকাতের টাকা উসুল করে সে ওই মাদরাসার ফকির-মিসকিনদের পক্ষ থেকে উকিল তথা প্রতিনিধি হয়ে থাকে এবং ফকির-মিসকিনদের উকিল বা প্রতিনিধির হাতে যাকাত-সদকার টাকা দিলে ফকির মিসকিনদের হাতে দেওয়ার মতো, لأن يد الوكيل يد المؤكل (অর্থাৎ উকিলের কবজা মুআক্কিলের কবজার মত)। তাই যাকাত-সদকার টাকা মুহাসসিলগণ গ্রহণ করার সাথে সাথে তামলিকের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে এবং যাকাতদাতাগণের যাকাত আদায় হয়ে যাবে। অতঃপর সে যদি মাদরাসার ফকির-মিসকিনদের স্বার্থে সেই টাকা ব্যবহার করে তা জায়িয ও সহিহ হবে। সুতরাং মুহাসসিল যে পুনরায় উপর্যুক্ত মাদরাসায় অবস্থানরত ফকির-মিসকিনদের স্বার্থে যাকাতের টাকা দিয়ে ভিসা করে থাকে তাতে কোন অসুবিধা হবে না, বরং এটা জায়িয ও বৈধ হবে। কেননা ওই টাকাগুলো উক্ত মাদরাসার ফকির-মিসকিনদের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। জাওয়াহিরুল ফাতওয়া: ১/৫৭, ফতওয়ায়ে শামী: ২/২৬৯, আস-সুনানুল কুবরা লিল-বায়হাকী: ৫/৫০২

’তিকাফ-রোযা

সমস্যা: রোযা রাখার জন্য সেহরী খাওয়ার মুস্তাহাব সময় কোনটি? জানালে চিরকৃতজ্ঞ হবো।

মুহাম্মদ আশরাফ

পটিয়া, চট্টগ্রাম

সমাধান: পুরো রাত তথা-সূর্যাস্ত থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত রাতের সময়কে ছয় অংশে ভাগ করে শেষাংশে সেহরী খাওয়া মুস্তাহাব। যেমন- রাত যদি বার ঘন্টার হয়, তখন শেষ দুই ঘন্টার মধ্যে সেহরী খাওয়া মুস্তাহাব হবে।

বি. দ্র. সুবহে সাদিক হচ্ছে, সেই বিস্তৃত শুভ্র রেখা যা পূর্বদিগন্তে সূর্যোদয় পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকে। সুবহে কাযিব ধর্তব্য নয়। সুবহে কাযিব  সেই শুভ্রতা, যা (উর্ধ্ব-অধঃভাবে) পূর্বাকাশে প্রকাশিত হয়। পরে আবার অন্ধকার ছেয়ে যায়। সুবহে কাযিব হতে ফজরের ওয়াক্ত আরম্ভ হয় না এবং রোযা পালনকারীর জন্য খানা-পিনাও হারাম হয় না। আল-মু’জামুল আওসাত: ৩/১৭৯, মুসান্নাফ ইবনে আবু শায়বা: ৬/১২০, ফতওয়ায়ে শামী: ২/৪১৯, ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়: ৩/৩৫৫

সমস্যা: আমাদের দেশে রমযান মাসে বিভিন্ন সংস্থা ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হচ্ছে, এসব ইফতার মাহফিলে ইফতার করতে শরয়ীভাবে কোন সমস্যা আছে কিনা?

আয়াতুল্লাহ

রামু, কক্সবাজার

সমাধান: এক্ষেত্রে দেখতে হবে, ইফতার মাহফিলের আয়োজনে যে অর্থ ব্যয় হয় তার অধিকাংশ হালাল কিনা, যদি হালাল হয় তাহলে সেসব ইফতার মাহফিলে ইফতার করা বৈধ হবে; অন্যথায় সেখানে ইফতার করা সম্পূর্ণ নাজায়িয ও হারাম। ফতওয়ায়ে আলমগীরী: ৫/৩৪৭, ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ১৭/১৭০, মুসান্নাফ ইবনে আবু শায়বা: ৩৩৩৬৪

সমস্যা: বর্তমান সময়ে শরীরের ভেতরে ওষুধ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মাধ্যমগুলোর মধ্যে ইঞ্জেকশন অন্যতম। যা শরিরের বিভিন্ন স্থানে দেয়া হয়। তার মাধ্যমে শরিরের বিশেষ স্থানে ওষুধ পৌঁছানো হয়। আর অনেক সময় রগের মধ্যেও দেওয়া হয়, যেন রক্তের সাথে ওষুধ শরীরে বিরাজ করে। সেসব ইঞ্জেকশনের মধ্যে কিছু ইঞ্জেকশন কেবল ওষুধের কাজ দেয়; আর কিছু আছে যা খাদ্যের কাজ আঞ্জাম দিয়ে থাকে। আমার জানার বিষয় হলো, রোযাদার ব্যক্তি ওই ধরনের ইঞ্জেকশন ব্যবহার করতে পারবে কিনা?

আবদুল্লাহ

চকরিয়া, কক্সবাজার

সমাধান: খাদ্যের প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্যে রোযা অবস্থায় শক্তির ইঞ্জেকশন ব্যবহার যদিও রোযার দর্শন আর লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের পরিপন্থী, তবে যেহেতু রোযাভঙ্গের নির্দিষ্ট কারণ (তথা স্বাভাবিক পন্থায় ওষুধ বা খাদ্য পৌঁছানো) ইঞ্জেকশনে বিদ্যমান নয়, বিধায় রগ বা গোস্তে ওষুধ বা খাদ্য পৌঁছানোর দ্বারা রোযাভঙ্গ হবে না। তবে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সরাসরি পেট বা মস্তিষ্কে ওষুধ বা খাদ্য পৌঁছানো হলে রোযাভঙ্গ হয়ে যাবে। বাদায়িউস সানায়ি: ২/২৪৩, শরহে মুহায্‌যাব: ৫/৩১৪

সমস্যা: রোযাদার ব্যক্তি অযু করার সময় বা অন্য যে কোন সময় নিম গাছ দ্বারা মিসওয়াক করলে রোযা ভঙ্গ হবে কিনা?

কবীর আহমদ

 রাউজান, চট্টগ্রাম

সমাধান: রোযা অবস্থায় নিম গাছ ইত্যাদি দিয়ে মিসওয়াক করার দ্বারা রোযা ভঙ্গ হবে না এবং মাকরুহও হবে না। এটি হানাফী ফকীহগণের স্পষ্ট অভিমত। তাছাড়া ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.) থেকে মাকরুহ হওয়ার মত বর্ণিত থাকলেও তার ওপর ফতওয়া নয়। ফতওয়ায়ে আলমগীরী: ১/১৯৯, মিশকাত: ১/১৭৬, ফতওয়ায়ে শামী: ৩/৩৯৯

সমস্যা: রোযাদার ব্যক্তি রোযা অবস্থায় দাঁত পরিস্কার করার জন্য কালো মাজন ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবে কিনা?

আবদুল হামিদ

কৈখাইন, আনোয়ারা

সমাধান: রোযা অবস্থায় যেকোন ধরনের মাজন, টুথপেস্ট ইত্যাদি ব্যবহার করা মাকরুহ। তবে মিসওয়াক করতে পারবে। সুতরাং রোযা অবস্থায় যেকোন ধরনের মাজন, টুথপেস্ট ইত্যাদির ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত। ফাতওয়ায়ে শামী: ৩/৩৯৫, ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ৩/৩৫৯, ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম: ৬/৪০৪

সমস্যা: রোযা অবস্থায় হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটানোর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হবে কি না? যদি ভঙ্গ হয় তাহলে কাযা-কাফফারা উভয়টা ওয়াজিব হবে কি?

আবু তাহের

সোনাগাজী, ফেনী

সমাধান: হস্তমৈথুনের দ্বারা বীর্যপাত হলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে, তবে এক্ষেত্রে কেবল কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। মুসান্নাফ ইবনে আবু শায়বা: ৪/১৯২, ফতওয়ায়ে আলমগীরী: ১/২০৫, ফতওয়ায়ে তাতারখানিয়া: ৩/৩৮৭

সমস্যা: যদি কোন রোযাদার ব্যক্তির স্বয়ংক্রিয়ভাবে বমি হয় বা ওই ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আঙ্গুল ঢুকিয়ে বমি করে, তাহলে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে তার রোযার হুকুম কি?

নুরুল আলম

কিশুরগঞ্জ

সমাধান: রোযা অবস্থায় স্বয়ংক্রিয় বমি হলে তার দ্বারা রোযা ভঙ্গ হয় না, চাই তা মুখ ভর্তি হোক না কেন। তবে জেনে-শুনে রোযার কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি আঙ্গুল ঢুকিয়ে মুখ ভর্তি বমি করে তাহলে তার দ্বারা সর্বসম্মতিক্রমে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি মুখ ভর্তি না হয় তাহলে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর মত অনুসারে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে, ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.)-এর মত অনুসারে রোযা ভঙ্গ হবে না। কতিপয় আলেম ইমাম আবু ইউসুফ (রহ.)-এর মতকে প্রধান্য দিয়েছেন। তবে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর অভিমতে সতর্কতা রয়েছে। আদ-দুররুল মুখতার: ৩/৩৯২, ফাতহুল কাদীর: ২/৩৪০, আল-বাহরুর রায়িক: ২/২৭৪

সমস্যা: রোযা অবস্থায় নাকে কোন ধরনের ওষুধ ব্যাবহার করতে পারবে কি? বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট রোগী, ইনহিলার, ইনজেকশন ম্যানথল ধোঁয়া ও গ্যাস জাতীয় বিভিন্ন প্রকার স্প্রে ব্যবহার করতে পারবে কি? যদি প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টের কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার আশংকা হয় তাহলে করণীয় কী?

মুঈন উদ্দিন

চাঁদপুর, কচুয়া

সমাধান: রোযা অবস্থায় নাকে যেকোন প্রকার ওষুধ ব্যাবহারের দ্বারা রোযা ভেঙে যায়। সুতরাং শ্বাসকষ্ট রোগীগণ রোযা অবস্থায় ইনহিলার, ম্যানথল ও গ্যাস জাতীয় স্প্রে ব্যবহার করলে তাদের রোযা ভেঙে যাবে। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হলে কোনভাবে কষ্ট করেও যদি রোযা রাখা সম্ভব হয়, রোযা রাখবে অন্যথায় রোযা ভেঙে পরে কাযা করে নেবে। তবে, ইনজেকশনের ক্রিয়া যদি পাকস্থলী অথবা দেমাগে না পৌঁছায়, তাহলে শ্বাসকষ্ট রোগীরা তা ব্যাবহার করতে পারবে। ফতওয়ায়ে শামী: ৩/৩৬৬, আদ-দুর্‌রুল মুখতার: ১/১৪৯, মাজমাউল আনহুর: ১/৩১৮, ফতওয়ায়ে হক্কানিয়া: ৪/১৭০

সমস্যা: রোযা অবস্থায় ঘরে বসে টেলিভিশনে বিভিন্ন নাটক বা ছায়াছবি দেখলে রোযার কোন ক্ষতি হবে কি?

শাহেদ

দাউদ কান্দি, কুমিল্লা

সমাধান: রোযা অবস্থায় যদি ঘরে বসে টেলিভিশনে নাটক, ছায়াছবি ইত্যাদি দেখে, এ অবস্থায় জমহুর তথা অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে রোযা নষ্ট হবে না, কিন্তু এমন ব্যক্তি রোযার সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। তবে ইমাম সুফয়ান সাওরী (রহ.)-এর মতে রোযা ভেঙে যাবে। ফতওয়া জামহুরের মতের ওপর। ফতওয়ায়ে শামী: ৫/১৪, আল-বাহরুর রায়িক: ৪/১৭৮, দরসে তিরমীযি: ২/৫৪৮

সমস্যা: রামাযান মাসে অনেক মহিলা রোযা ভাঙ্গার ভয়ে বিশেষ বড়ি সেবন করে মাসিক বন্ধ রাখে। শরিয়তে এর বিধান কী

ইবরাহীম

লক্ষ্মীপুর

সমাধান: রামাযান মাসে রোযা ভাঙ্গার ভয়ে বিশেষ বড়ি সেবন করে মাসিক অর্থাৎ ঋতুস্রাব বন্ধ রাখা জায়িয ও বৈধ। তাতে কোন অসুবিধা নেই। আল-বাহরুর রায়িক: ৩/৩১৫, ফতওয়ায়ে শামী: ২/৩৮০, ইমদাউল মুফতিয়ীন: ২/৭৫

সমস্য: যদি কোন কারণে ই’তিকাফ ভেঙে যায়, তাহলে তার কাযা কি ওয়াজিব হবে?

মু. ইরফান

আলিকদম, বান্দারবন

সমাধান: নফল ই’তিকাফ (যেমন- মসজিদে ঢোকার সময় ই’তিকাফের নিয়তে ঢোকা) ভঙ্গ করলে তার কাযা ওয়াজিব হয় না। কেননা তা মসজিদ থেকে বাহির হওয়ার সাথে সাথে ভেঙে যায় না; বরং শেষ হয়ে যায়, তবে মান্নতের ই’তিকাফ ভেঙে গেলে যতদিনের ই’তিকাফ করার সে মান্নত করেছিলো, ততদিনের ই’তিকাফ কাযা ওয়াজিব হবে। আর রমযানের শেষের দশদিনের ই’তিকাফের কোন একদিন এতেকাফ ভেঙে গেলে যেদিন ভেঙেছে কেবল সেইদিনের কাযা করা ওয়াজিব হবে এবং তার পরের দিনগুলির ই’তিকাফ নফল হয়েগেছে। এখন চাইলে সেই দিনের কাযা রমযানের ভিতর করে নেবে বা রমযানের পর নফল রোযার সাথে কাযা করে নেবে। আহসানুল ফতওয়া: ৪/৫১২

সমস্যা: আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রথা আছে যে, মুসল্লিগণ ১০/৫ টাকা করে চাঁদা কালেকশন করে ই’তিকাফকারীকে দিয়ে থাকেন এবং ই’তিকাফ কারীরা তা খুশি মনে গ্রহণ করে থাকেন।আবার কোন কোন জায়গায় মুসল্লিদের পক্ষথেকে নির্দিষ্ট টাকা নাদিলে ই’তিকাফকারীরা ই’তিকাফ করে না। কোন কোন জায়গায় এতেকাফ করার জন্য অন্য জায়গা থেকে লোক টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে আনেন। আমার জানার বিষয় হলো উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো শরিয়তসম্মত কিনা?

সমাধান: ই’তিকাফ একটি ইবাদাত। তাই তার পারিশ্রমিক নেওয়া বা দেওয়া বৈধ নয় এবং তার জন্য মুসল্লিদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করাও বৈধ নয়। অনুরূপভাবে ই’তিকাফের জন্য বাইর থেকে লোক ভাড়া করে ই’তিকাফ করা শরিয়তসম্মত নয়। ফতওয়া তাতারখানিয়া: ৩/৪৪১, আদ-দুররুল মুখতার: ৯/৭৬, রসায়েলে ইবনে আবেদীন: ১/১৫৭, মাউসুআয়ে ফিকহিয়া: ১/২৯১

নিকাহ-তালাক

সমস্যা: আমি জনৈকা মহিলাকে বিয়ে করি এবং আমাদের সংসারে তিনটি বাচ্চা জম্ম নেয়। পরে আমাদের বনাবনি না হওয়ায় আমি তাকে তিন তালাক দিয়ে দেই। অতঃপর আমার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর অন্যত্র বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়। তবে তার দ্বিতীয় ¯^vgxI কোন এক কারণে তাকে তিন তালাক প্রদান করে। এখন আমার জানার বিষয় হচ্ছে আমি আমার সাবেক স্ত্রীকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারব কিনা?

আবুল বশর

ঈদগাহ, কক্সজার

সমাধান: প্রশ্নে উল্লিখিত ঘটনায় যখন প্রথম স্বামী তালাক দেওয়ার পর ইদ্দত শেষ করে মহিলা অন্যত্র স্বাভাবিকভাবে বিয়ে বসেছে, যদি ওই মহিলার সাথে দ্বিতীয় স্বামী সহবাস করে থাকে তাহলে দ্বিতীয় স্বামী তালাক দেওয়ার পর মহিলার ইদ্দত সমাপ্ত করে ওই মহিলা প্রথম স্বামীর সাথে পুনরায় বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে শরিয়ত মতে কোন সমস্যা নেই।

সমস্যা: দু’জন স্ত্রী থাকলে কোন কোন খাতে সমতা একান্ত জরুরি? শরয়ী সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

ডা: ফরিদুল আলম

আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

সমাধান: কোন ব্যক্তির কয়েকটি স্ত্রী থাকলে তাদের ভরণপোষণ এবং তাদের সাথে সহবাস ইত্যাদির মধ্যে সমতা রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। নতুবা আল্লাহ তাআলার নিকট কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। অবশ্য কোন স্ত্রীর প্রতি যদি আন্তরিক মায়া-মমতা বেশি থাকে তাতে অসুবিধা নাই। তার পরও ব্যবহার এবং ভরণপোষণ এবং সহবাস ইত্যাদির মধ্যে সমতা বহাল রাখতে হবে। তিরমিযী শরিফ: ১/২৪৬, মশকিলুল আসার: ১/২৪০, মুসান্নাফে ইবনে আবু শায়বা: ৪/৩৮৬

বিবিধ

সমস্যা: বর্তমান বিভিন্ন জায়গায় যে কিরাআত মাহফিল হয়ে থাকে এ ব্যাপারে আলেমদের বিভিন্ন ধরণের মতামত শুনা যায়। কতিপয় আলেম বলেন যে, কিরাআত মাহফিল করা এবং কারী সাহেবের জন্য তিলাওয়াতের হাদিয়া গ্রহণ করা বৈধ। আবার অন্য আলেমরা জোরালোভাবে তার প্রতিবাদ করে থাকে। এখন আমার জানার বিষয় হলো, শরিয়তের দৃষ্টিতে কিরাআত মাহফিল করা ও কারী সাহেব তিলাওয়াতের হাদিয় গ্রহণ করা এবং কিরাআত মাহফিলের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করা ও চাঁদা দেয়া বৈধ হবে কি না?

দ্বিতীয়ত যেমনিভাবে বিভিন্ন ইসলামী গায়কদের শিল্পীগোষ্ঠী আছে। অনুরূপভাবে বর্তমান কোথাও কোথাও কারীদের গ্রুপও রয়েছে এবং বিভিন্ন সভা-মজলিসে তারা কর্তৃপক্ষের সাথে কন্ট্রাক্ট করে যে, আমরা এতজন কারী আসব আমাদের এতটাকা দিতে হবে। আমার জানার বিষয় হলো এভাবে কন্টাক্ট করা ও মাহফিল শেষে তিলাওয়াতের বিনিময় নেওয়া জায়িয হবে কি?

মাও. কারী নাঈম উদ্দিন

মীরপাড়া, সাতকানিয়া

সমস্যা: আমাদের তাহকীক মতে বিভিন্ন টোন এবং লাহানে কুরআন শরিফের শুধু কিরাআত ও তিলাওয়াত করে তার বিনিময় ও পারিশ্রমিক নেয়া আমাদের হানাফী মাযহাব মতে জায়িয ও বৈধ নয়। কেননা তার দ্বারা জনগণের হেদায়তের বিশেষ কোন আশা করা যায় না; বরং আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম শরিফকে গান-বাজনার মতো করে ফেলা হয়ে থাকে। অধিকন্তু বর্তমানে কুরআন তিলাওয়াতকে উপার্জনের মাধ্যম বানিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের তাহকীক মতে কুরআন তিলাওয়াতের বিনিময় গ্রহণ করা জায়িয ও বৈধ হবে না। যেহেতু কিরাআত মাহফিলের জন্য চাঁদা দেওয়া একটি নাজায়িয কাজের সহযোগিতার শামিল, তাই তাতে চাঁদা দেওয়া ও তার জন্য চাঁদা গ্রহণ করা কোনটাই বৈধ হবে না। আর বর্তমান কারীদের গ্রুপিং ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যে কিরাআত মাহফিলের নামে কুরআন ব্যবসার নতুন প্রথা চালু হয়েছে তা বৈধ হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। শরিয়তের দৃষ্টিতে এসমস্ত কাজ সম্পূর্ণ বর্জনীয়। সুরা আল-বাকারা: ৪১ শরহু উকুদ রসমিল মুফতি: ৬৬, সুনানে বায়হাকী: ২/৫৩৩, তিরমিযী শরিফ: ২/১১৯, মুসান্নাফে ইবনে আবু শায়বা: ২/৪০১

সমস্যা: আমাদের এলাকায় ধান, গম, মাষকলাই গরু দিয়ে মাড়িয়ে শীষ থেকে পৃথক করা হয়। মাড়ানোর সময় কখনো কখনো গরু মল ত্যাগ করে যা ধান, গম, মাষকলাইয়ের সাথে মিশে যায়। আমরা জানি গরুর মল নাপাক। এখন ধান, গম, মাষকলাইকে কীভাবে পবিত্র করা যাবে? আর আমাদের ফসলসমূহ পাক হবে কি?

মুহাম্মদ আরিফ

আশুগঞ্জ, বি. বাড়িয়া

সমাধান: অপবিত্র ধান, গম ইত্যাদি পবিত্র ধান, গম ইত্যাদির সহিত মিশিয়ে যাওয়ার পর উক্ত ধান, গম ইত্যাদি হতে যখন কিছু ধোয়ে নেবে অথবা কিছু বিক্রি করে নেবে অথবা যে কোনভাবে ভাগ করলে তখন বাকীগুলি পবিত্র না অপবিত্র সন্দেহ জনক হয়ে যাবে, আর এরূপ সন্দেহ দ্বারা অপবিত্র গণ্য করা হবে না। কারণ হতে পারে যে গুলি অপবিত্র ছিল, সেই গুলি ধোয়া অথবা বিক্রি হয়ে গেছে অথবা অন্যের কাছে চলে গেছে। আল-আশবাহ ওয়ান নাযায়ির: ১০০, ফতওয়ায়ে শামী: ১/২১৮, আল-আশবাহ: ১০২

সমস্যা: কোন ব্যক্তি যদি ওমরা করে তাহলে তার ওপর হজ ফরয হয়ে যাবে কি? কোন কোন আলেম বলে থাকেন যে, তার ওপর হজ ফরয হবে। তারা কুরআনের এ আয়াত: وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَيْهِ سَبِيْلًاؕ ۰۰۹۷-এর দ্বারা দলিল পেশ করেন এবং বলেন যে, যে ব্যক্তি ওমরা করবে তার ওপর হজ করাও ফরয হয়ে যাবে। এখন আমার জানার বিষয় হল আসলে কি ওমরাকারীর ওপর হজ ফরয হয়ে যায়? যদি হয় তাহলে তার দলিল কী? আর যদি না হয় তাহলে তার দলিল কী?

মাও. জমির উদ্দিন

চকরিয়া, কক্সবাজার

সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে, যে কোন সময় ওমরা করলে ওমরাকারীর ওপর হজ ফরয হয় না। কেননা শুধু বায়তুল্লাহ শরিফ দেখলে হজ ফরয হওয়ার কথা কোন কিতাবে উল্লেখ নাই। হজ ফরয হওয়ার জন্য হজ্বের ওয়াক্ত বা সময়ের মধ্যে মক্কা শরিফ বা মসজিদে হারামে উপস্থিত থাকতে হয়। তার আগে বা পরে উপস্থিত থাকলে তার ওপর হজ ফরয হয় না। আর হজের সময় হল, আরবী শাওয়াল মাস থেকে জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত। ফতওয়ায়ে শামী: ৩/৪৫৫, ফাতওয়ায়ে আলমগিরী: ১/২১৬, হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ: ৭২৭, বাদায়িউস সানায়ি: ৩/৫১, মাউসুআতুল ফিকহিয়া: ১৭/৩৫

সমস্যা: ৩০ বছরের প্রাপ্তবয়স্ক এক যুবক মুসলমান হয়েছে। তাকে খতনা করতে হবে কি না? এবং করতে হলে কিভাবে করতে হবে? দয়া করে দলীল সহকারে সমাধান জানাবেন।

মাও. জুবাইদুল হাসান

চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম

সমাধান: স্মরণ রাখতে হবে যে, ইসলাম ধর্মে পুরুষদের জন্য খৎনা করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, তবে ওয়াজিব হওয়ার মতও রয়েছে। কিন্তু খতনা সুন্নাত হলেও শরিয়তে তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এমনকি তাকে ইসলামের অনন্য নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তাই প্রাপ্তবয়স্ক কোন বিধর্মী (যারা খতনা করে না) যদি মুসলমান হয় তাকে মুসলমান হওয়ার পর খতনা করানো উত্তম, যাতে মুসলমান হওয়ার পর কোন চাপে বা প্রলোভনে পড়ে ইসলাম ত্যাগ করার আশংকাটা কমে যায়। ফিকহবিদগণের বিশুদ্ধ মতানুযায়ী খতনার প্রয়োজনে খতনাকারীর জন্য পুরুষাঙ্গ দেখা জায়িয বলে ফতওয়া দেয়া হয়েছে। যেমন কোন মারাত্মক রোগের জন্য অপারেশন করার সময় পুরুষাঙ্গ বা সতর দেখা, এরকম মহিলাদের বাচ্চা প্রসবের সময় প্রয়োজনে তার সতর দেখা জায়িয, তদ্রূপ খতনার জন্যও জায়িয হবে। হিদায়া: ৪/৪৪৩, ফতওয়ায়ে শামী: ৫/৬৫৬

বিভাগীয় নোটিশ

দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো সমস্যার শরয়ী সমাধান জানতে আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার ফতওয়া বিভাগে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। এজন্য সরাসরি যোগাযোগ বা বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট ফোনে যোগাযোগ করুন। প্রশ্ন পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল বা ফেসবুক ফ্যান-পেইজেও।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on pinterest
Pinterest
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

সর্বশেষ