সমকাম (লিওয়াতত) বিশ্বের বাস্তবতা হলেও চিরসত্য হচ্ছে এটি সবচেয়ে নিকৃষ্ট যৌনপন্থা। বিশ্ব-ইতিহাসে এর দৃষ্টান্তমূলক পরিণামও চির উদাহরণ হয়ে আছে। কুরআনে হযরত লুত (আ.)-এর উম্মতদের দৃষ্টান্ত দিয়ে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সতর্ক করা হয়েছে। কারণ এটি প্রকৃতবিরোধী ও মানবপ্রজননের বিরোধীপন্থা। তবুও উম্মতে মুহাম্মদির মাঝে এর সয়লাভ বড় আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত না হলে হযরত লুত (আ.)-এর উম্মতদের থেকেও ভয়াবহ শাস্তির মুখোমুখি হতে হতো আমাদের। কিন্তু নবী (সা.) উম্মতদের প্রতি দরদ দেখিয়ে আল্লাহর দরবারে এ ধরণের শাস্তি থেকে উম্মতে মুহাম্মদিকে বিরত রাখার জন্য দোয়া করেছিলেন। এ দোয়া কবুলও করেছেন সৃষ্টিকর্তা। ফলে মুহাম্মদি উম্মতের কর্মে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠলেও এ জমিনকে ধ্বসিয়ে দেন না রহমানুর রাহীম। তাই বলে ঈমানিয়াতের বিশ্বাসী একটি দেশের মাঝে সমকামকে সাপোর্ট করে নাটক সম্প্রচার মুসলিম হিসাবে আমাদের জন্য বড় দুঃখজনক। রেইনবো নাটক আমাদের এ সমাজ ও এ দেশের জন্য নয়। নাটকটিতে সমকামকে সামাজিক স্বীকৃতির বার্তা দেওয়া হয়েছে। নাকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় দু’শিল্পী। নাটকটির স্পন্সরও করেছে গ্রামীণফোন। দেশের একজন শীর্ষ অভিনেত্রী, শীর্ষ মোবাইল কোম্পানি ও শীর্ষ টিভি চ্যানেলে এমনটি একটি নাটক সম্প্রচার একটি মুসলিম দেশের ভাবগাম্ভীর্যে বড় ধরণের আঘাত। অতীতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোন সংগঠন থেকে সমকামিতার পক্ষে প্রচার চালানো হলেও ধীরে ধীরে এর শেকড় বিস্তার লাভ শুরু করেছে।
সমকামিতার বিরুদ্ধে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ নয়, সমকামের সামাজিক ও পরকালীন ক্ষয় ক্ষতি তুলে ধরার পাশাপাশি সমকামের বিরুদ্ধে শর্ট ফিল্ম, ডকুমেন্টারি তৈরি করেও প্রচার চালানো যেতে পারে। রেইনবোর প্রতিবাদে আরেকটি প্রতিবাদি নাটক তৈরি করতে পারেন দেশের বাস্তবতাবাদী, মানবিক ও ইসলামিক ইউটিউবাররা। কোন টিভি চ্যানেল সহযোগী না হলেও ইউটিউবের মতো শক্তিশালী উন্মুক্ত মিডিয়া আছে আপনার পাশে। শুধু একটি উদ্যোগের প্রয়োজন। রেইনবো নাটকের বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন তাদের উদ্যোগও যথেষ্ট প্রশংসনীয়। নিজ নিজ জায়গা থেকে অনেকেই এর প্রতিবাদ করছেন। কেউ কেউ নাকটির স্পন্সর কোম্পানি গ্রামীণফোনেও অভিযোগলিপি পাঠিয়েছেন। কেউ কেউ বয়কট করছেন গ্রামীণফোনকে। সবই ঈমানের তাগিদ ও দেশের স্বার্থে নিঃসন্দেহে। তবে বুদ্ধিভিত্তিক প্রচারণা চালালেও এর চেয়ে বেশি কার্যকর হবে সন্দেহ নেই। সমাজে সমকামের কুফল, সামাজিক বিশৃঙ্খলা, পারিবারিক অশান্তির চিত্র আসতে পারে এসব ডকুমেন্টারিতে। যারা সমকামে জড়িত তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে বাস্তবিক পদ্ধতিও তুলে ধরা যেতে পারে। হরমোনগত কিংবা মানসিক বিকৃতির কারণে যদি কেউ সমকামে জড়িয়ে পড়েন সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চিকিৎসারও রয়েছে আধুনিক বিশ্বে। পশ্চিমা বিশ্বের অনেক চিকিৎসকই সমকামকে রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন। চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবন ফিরিয়ে আনাও সম্ভব বলে তারা মনে করেন। এসব বিষয় তুলে ধরার মাধ্যমে সমকামকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাস্তবতাকে অস্বীকার করে মোকাবেলা দুরূহ ব্যাপার কিন্তু বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এর বাস্তবিক প্রতিরোধ করাই হচ্ছে সহজসাধ্য। সমকাম যেমন মানব ইতিহাসের একটি বাস্তবতা এর প্রতিরোধ করাও সম্ভব। বিকৃত রুচিবোধের মানবিক চাহিদাকে দমন করে ধর্মীয় শক্তিতে বলিয়ান হলে সমকামীদের জীবন সুস্থ স্বভাবিকে ফিরিয়ে আনাও সম্ভব।
ওমর শাহ
ঢাকা